সূরা জুমুআহ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল জুমুআহ আলমল ও ফজিলত, সূরা জুমুআহ কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা জুমুআহ নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৬২ সূরা আল – জুমুআহ

Advertisement

আজকের বিষয়: সূরা জুমুআহ সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল জুমুআহ আলমল ও ফজিলত, সূরা জুমুআহ কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা জুমুআহ নাযিলের কারন গুলো কি কি ,কুরআন ৬২ সূরা আল – জুমুআহ

নামকরণ

৯ নং আয়াতের () আয়াতাংশ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে । এ সূরার মধ্যে যদিও জুম’আর নামাযের আহকাম বা বিধি -বিধানও বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু জুম’আ সামগ্রিকভাবে এর বিষয়বস্তুর শিরোনাম নয় । বরং অন্যান্য সূরার নামের মত এটিও এ সূরার প্রতিকী বা পরিচায়মূলক নাম ।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল

প্রথম রুকূ’র আয়াতসমূহ ৭ হিজরীতে সম্ভবত খায়বার বিজয়ের সময় অথবা তার নিকটবর্তী সময়ে নাযিল হয়েছে । বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসায়ী, এবং ইবনে জারীর হযরত আবু হুরাইরা বর্ণিত একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লামের খেদমতে বসে থাকা অবস্থায় এ আয়াতটি নাযিল হয় । হযরত আবু হুরাইরা সম্পর্কে এ বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির পরে এবং খায়বার বিজয়ের পূর্বে ঈমান এনেছিলেন । ইবনে হিশামের বর্ণনা অনুসারে ৭ হিজরীর মুহাররাম মাসে আর ইবনে সা’দের বর্ণনা অনুসারে জমাদিউল উলা মাসে খায়বার বিজিত হয়েছিল । অতএব যুক্তির দাবী হলো, ইহুদীদের এই সর্বশেষ দুর্গটি বিজিত হওয়ার পর আল্লাহ তা’আলা তাদের সম্বোধন করে এ আয়াতগুলো নাযিল করে থাকবেন কিংবা খায়বারের পরিণাম দেখে উত্তর হিজাযের সমস্ত ইহুদী জনপদ যখন ইসলামী রাষ্ট্রের অনুগত হয়ে গিয়েছিল তখন হয়তো এ আয়াতগুলো নাযিল হয়েছিল ।

দ্বিতীয় রুকূ’র আয়াতগুলো হিজরাতের পরে অল্পদিনের মধ্যে নাযিল হয়েছিল । কেননা নবী(সা) মদীনা পৌছার পর পঞ্চাম দিনেই জুম’আর নামায কায়েম করেছিলেন । এই রুকূ’র শেষ আয়াতটিতে যে ঘটনার প্রতি ইংগিত দেয়া হয়েছে তা স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছে যে, আয়াতটি জুম’আর নামায আদায় করার ব্যবস্থা হওয়ার পর এমন এক সময়ে নাযিল হয়ে থাকবে যখন মানুষ দীনী উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠীত সমাবেশের আদব-কায়দা ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তখনও পুরো প্রশিক্ষণ লাভ করেনি ।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

Advertisement

ওপরে আমরা একথা বলেছি যে, এ সূরার দুটি রুকূ’ দুটি ভিন্ন সময়ে নাযিল হয়েছে । অতএব এর বিষয়বস্তু যেমন আলাদা তেমনি যাদের সম্বোধন করে নাযিল করা হয়েছে সে লোকজনও আলাদা । তবে এ দুটি রুকূর আয়াতসমূহের মধ্যে এক প্রকার সাদৃশ্য আছে এবং এ জন্য তা একই সূরাতে সন্নিবেশিত হয়েছে । সাদৃশ্য কি তা বুঝার আগে রুকূ’ দুটির বিষয়বস্তু আলাদাভাবে আমাদের বুঝে নেয়া উচিত ।

ইসলামী আন্দোলনের পথ রোধ করার জন্য বিগত ছয় বছরে ইহুদীরা যেসব প্রচেষ্টা চালিয়েছে তা ব্যর্থতায় পর্যবসতি হয়েছে এমনি এক সময় প্রথম রুকূ’র আয়াতগুলো নাযিল হয়েছিল । প্রথমত মদীনায় তাদের তিন তিনটি শক্তিশালী গোত্র রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছিল । তারা এর ফল দেখতে পেল এই যে, একটি গোত্র সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেল এবং অপর দুটি গোত্রকে দেশান্তরিত হতে হলো । অতপর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা আরবের বহুসংখ্যক গোত্রকে মদীনার ওপর আক্রমণের জন্য নিয়ে আসল কিন্তু আহযাব যুদ্ধে তারা সবাই চপেটাঘাত খেল । এরপর তাদের সবচেয়ে বড় দুর্গ বা আখড়া রয়ে গিয়েছিল খায়বারে । মদীনা ত্যাগকারী ইহুদীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাও সেখানে সমবেত হয়েছিল । এসব আয়াত নাযিল হওয়ার সময় সেটিও অস্বাভাবিক রকমের কোন সংঘর্ষ ছাড়াই বিজিত হয় এবং মুসমানদের ভূমি কর্ষণকারী হিসেবে থাকতে খোদ ইহুদীরাই আবেদন জানায় । সর্বশেষ এই পরাজয়ের পর আরবে ইহুদীদের শক্তি সম্পুর্ণ রূপে ধ্বংস হয়ে যায় । ওয়াদিউল কুরা, ফাদাক, তায়ামা, তাবুক সব একের পর এক আত্মসমর্পণ করতে থাকে । ইসলামের অস্তিত্ব বরদাশত করা তো দূরের কথা তার নাম শুনতেও যারা পছন্দ করত না, আরবের সেইসব ইহুদীই শেষ পর্যন্ত সেই ইসলামের প্রজায় পরিণত হয় । এই পরিবেশ পরিস্থিতিতে আল্লাহ তা’আলা এই সূরার মধ্যে আরো একবার তাদেরকে সম্বোধন করলেন । তাদের উদ্দেশ্যে কুরআন মজীদে উল্লেখিত এটাই সম্ভবত সর্বশেষ বক্তব্য । এতে তাদের উদ্দেশ্য করে তিনটি কথা বলা হয়েছেঃ


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


একঃ তোমরা এ রসূলকে মানতে অস্বীকার করছো এই কারণে যে, তিনি এমন এক কওমের মধ্যে প্রেরিত হয়েছেন যাদেরকে অবজ্ঞা ভরে তোমরা ‘উম্মী’ বলে থাক । তোমাদের ভ্রান্ত ধারণা এই যে, রসূলকে অবশ্যই তোমাদের নিজেদের কওমের মধ্যে থেকে হতে হবে । তোমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে ছিলে যে, তোমাদের কওমের বাইরে যে ব্যক্তিই রিসালাতের দাবী করবে সে অবশ্যই মিথ্যাবাদী । কারণ এই পদমর্যাদা তোমাদের বংশের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং ‘উম্মী’ দের মধ্যে কখনো কোন রসূল আসতে পারেন না । কিন্তু আল্লাহ তা’আলা সেই উম্মীদের মধ্যেই একজন রসূল সৃষ্টি করেছেন । তোমাদের চোখের সামনেই যিনি তাঁর কিতাব শুনাচ্ছেন, মানুষকে পরিশুদ্ধ করেছেন এবং সেই মানুষকে হিদায়াত দান করেছেন তোমরা নিজেরাও যাদের গোমরাহীর অবস্থা জান । এটা আল্লাহর করুণা ও মেহেরবানী , তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন । তাঁর করুণা ও মেহেরবানীর ওপর তোমাদের কোন ইজারাদারী নেই যে, তোমারা যাকে তা দেয়াতে চাও তাকেই তিনি দিবেন আর তোমরা যাকে বঞ্চিত করতে চাও, তাকে তিনি বঞ্চিত করবেন ।

দুইঃ তোমাদের তাওরাতের বাহক বানানো হয়েছিল । কিন্তু তোমরা এর গুরুদায়িত্ব উপলদ্ধিও করোনি, পালনও করোনি । তোমাদের অবস্থা সেই গাধার মত যার পিঠে বই পুস্তকের বোঝা চাপানো আছে কিন্তু সে কি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে তা জানে না । তোমাদের অবস্থা বরং ঐ গাধার চেয়েও নিকৃষ্ট । গাধার তো কোন প্রকার-বুদ্ধি -বিবেক নেই, কিন্তু তোমাদের বুদ্ধি-বিবেক আছে । তাছাড়া , তোমরা আল্লাহর কিতাবের বাহক হওয়ার গুরুদায়িত্ব শুধু এড়িয়েই চলছো না, জেনে বুঝে আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলা থেকেও বিরত থাকছো না । এসব সত্ত্বেও তোমাদের ধারণা এই যে, তোমরা আল্লাহর অতি প্রিয় এবং রিসালাতের নিয়ামত চিরদিনের জন্য তোমাদের নামে লিখে দেয়া হয়েছে । তোমরা যেন মনে করে নিয়েছ, তোমরা আল্লাহর বাণীর হক আদায় করো আর না করো কোন অবস্থায়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের ছাড়া আর কাউকে তাঁর বাণীর বাহক বানাবেন না ।

তিন সত্যিই যদি তোমরা আল্লাহর প্রিয়পাত্র হতে এবং এ বিশ্বাসও তোমাদের থাকতো যে , তাঁর কাছে তোমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার স্থান সংরক্ষিত আছে তাহলে মৃত্যুর এমন ভীতি তোমাদের মধ্যে থাকতো না যে, অপমান ও লাঞ্ছনার জীবন গ্রহণীয় কিন্তু কোন অবস্থায়ই মৃত্যু গ্রহণীয় নয় । আর মৃত্যুর এই ভয়ের কারণেই তো বিগত কয়েক বছরে তোমরা পরাজয়ের পর পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছো । তোমাদের এই অবস্থা -ই প্রমাণ করে যে, তোমাদের অপকর্মসমূহ সম্পর্কে তোমরা নিজেরাই অবহিত । তোমাদের বিবেক ভাল করেই জানে যে, এসব অপকর্ম নিয়ে যদি মারা যাও তাহলে পৃথিবীতে যতটা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হচ্ছো আল্লাহর কাছে তার চেয়ে অধিক লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে ।

এ হচ্ছে প্রথম রুকূ’র বিষয়বস্তু । দ্বিতীয় রুকূ’টি এর কয়েক বছর আগে নাযিল হয়েছিল । দ্বিতীয় রকূ’র আয়াতগুলো এ সূরার অন্তরভুক্ত করার কারণ হলো, আল্লাহ তা’আলা ইহুদীদের ‘সাবত’ বা শনিবারের পরিবর্তে মুসলমানদের ‘জুম’আ’ দান করেছেন । তাই তিনি মুসলমানদের সাবধান করে দিতে চান যে, ইহুদীরা, ‘সাবতে’র সাথে যে আচরণ করেছে তারা যেন জুম’আর সাথে সেই আচরণ না করে । একদিন ঠিক জুম’আর নামাযের সময় একটি বাণিজ্য কাফেলা আসলে তাদের ঢোল ও বাদ্যের শব্দ শুনে বারজন ছাড়া উপস্থিত সবাই মসজিদে নববী থেকে বেরিয়ে দৌড়িয়ে কাফেলার কাছে গিয়ে হাজির হয় । অথচ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন খোতবা দিচ্ছিলেন । তাই নির্দেশ দেয়া হয় যে, জুম’আর আযান হওয়ার পর সব রকম কেনাবেচা এবং অন্য সব রকম ব্যস্ততা হারাম । ঈমানদারদের কাজ হলো , এ সময় সব কাজ বন্ধ রেখে আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হবে । তবে নামায শেষ হওয়ার পর নিজেদের কারবার চালানোর জন্য পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার অধিকার অবশ্যই তাদের আছে । জুম’আর হুকুম আহকাম সম্পর্কিত এ রুকূটিতে একটি স্বতন্ত্র সূরাও বানান যেত কিংবা অন্য কোন সূরার অন্তরভুক্ত ও করা যেতে পারত । কিন্তু তা না করে এখানে যেসব আয়াতে ইহুদীদেরকে তাদের মর্মান্তিক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে বিশেষভাবে সেই সব আয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে । আমাদের বিবেচনায় এর অন্তরনিহিত উদ্দেশ্য তাই যা আমরা ওপরে বর্ণনা করেছি ।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


আল জুমুআহ – ( الـجـمـعـة ) | সম্মেলন/শুক্রবার
মাদানী, মোট আয়াতঃ ১১

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

یُسَبِّحُ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الۡاَرۡضِ الۡمَلِکِ الۡقُدُّوۡسِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَکِیۡمِ

ইউছাব্বিহু লিল্লা-হি মা-ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদিলমালিকিলকুদ্দূছিল ‘আঝঝিল হাকীম।

Mufti Taqi Usmani
All that is in the heavens and all that is in the earth proclaim the purity of Allah, the Sovereign, the Supreme in Holiness, the All-Mighty, the All-Wise.

মুফতী তাকী উসমানী
যা কিছু আকাশমণ্ডলীতে ও যা-কিছু পৃথিবীতে আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে, যিনি বাদশাহ, পবিত্রতার অধিকারী, পরাক্রমশালী; প্রজ্ঞাময়।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
রাজ্যাধিপতি, পবিত্র, পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে, যা কিছু আছে নভোমন্ডলে ও যা কিছু আছে ভূমন্ডলে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আল্লাহ্ র , যিনি অধিপতি, মহাপবিত্র, পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

মাওলানা জহুরুল হক
মহাকাশমন্ডলে যা-কিছু আছে ও যে কেউ আছে পৃথিবীতে তারা আল্লাহ্‌র মহিমা জপতপ করে, — যিনি মহারাজাধিরাজ, পরম পবিত্র, মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

ہُوَ الَّذِیۡ بَعَثَ فِی الۡاُمِّیّٖنَ رَسُوۡلًا مِّنۡہُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِہٖ وَیُزَکِّیۡہِمۡ وَیُعَلِّمُہُمُ الۡکِتٰبَ وَالۡحِکۡمَۃَ ٭  وَاِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ۙ

হুওয়াল্লাযী বা‘আছা ফিল উম্মিইয়ীনা রাছূলাম মিনহুম ইয়াতলূ‘আলাইহিম আ-য়া-তিহী ওয়া ইউঝাক্কীহিম ওয়া ইউ‘আলিলমুহুমুল কিতা-বা ওয়াল হিকমাতা ওয়া ইন কা-নূমিন কাবলু লাফী দালা-লিম্মুবীন।

Advertisement 2

Mufti Taqi Usmani
He is the One who raised amidst the unlettered people a messenger from among themselves who recites to them His verses, and purifies them, and teaches them the Book and the wisdom, while they were earlier in open error.

মুফতী তাকী উসমানী
তিনিই উম্মীদের মধ্যে তাদেরই একজনকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন, যে তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হেকমতের শিক্ষা দেবে, যদিও তারা এর আগে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিপতিত ছিল। ১

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত্তি করে তাঁর আয়াতসমূহ ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিক্মত; ইতিপূর্বে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে;

মাওলানা জহুরুল হক
তিনিই সেইজন যিনি নিরক্ষরদের মধ্যে, তাদেরই মধ্যে থেকে, একজন রসূল দাঁড় করিয়েছেন, তিনি তাদের কাছে পাঠ করছেন তাঁর নির্দেশাবলী, আর তিনি তাদের পবিত্র করেছেন, আর তিনি তাদের শিক্ষা দিয়েছেন ধর্মগ্রন্থ ও জ্ঞানবিজ্ঞান, যদিও এর আগে তারা তো ছিল স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে, —

তাফসীরঃ
১. মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দুনিয়ায় পাঠানোর যে চারটি উদ্দেশ্য এ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, এগুলিই পূর্বে সূরা বাকারা (২ : ১২৯) ও সূরা আলে ইমরানেও (৩ : ১৬৩) উল্লেখ করা হয়েছে।

وَّاٰخَرِیۡنَ مِنۡہُمۡ لَمَّا یَلۡحَقُوۡا بِہِمۡ ؕ وَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ

ওয়া আ-খারীনা মিনহুম লাম্মা-ইয়ালহাকূবিহিম ওয়া হুওয়াল ‘আঝীঝুল হাকীম।

Mufti Taqi Usmani
And (this Messenger is sent also) to others from them who did not join them so far, and He is the All-Mighty, the All-Wise.

মুফতী তাকী উসমানী
এবং (এ রাসূলকে যাদের কাছে পাঠানো হয়েছে) তাদের মধ্যে আরও কিছু লোক আছে, যারা এখনও তাদের সাথে এসে যোগ দেয়নি ২ এবং তিনি অতি ক্ষমতাবান, প্রজ্ঞাময়।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এই রসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এবং তাদের অন্যান্যের জন্যেও যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয় নাই। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

মাওলানা জহুরুল হক
আর তাদের মধ্যে থেকে অন্যান্যদের যারা এখনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নি। আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।

তাফসীরঃ
২. এর দ্বারা বোঝানো উদ্দেশ্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেবল সেই আরববাসীর জন্যই রাসূল করে পাঠানো হয়নি, যারা তাঁর আমলে বর্তমান ছিল: বরং তিনি কিয়ামত পর্যন্ত সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষের জন্য রাসূল হয়ে এসেছেন।

ذٰلِکَ فَضۡلُ اللّٰہِ یُؤۡتِیۡہِ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَاللّٰہُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ

যা-লিকা ফাদলুল্লা-হি ইউ’তীহি মাইঁ ইয়াশূউ ওয়াল্লা-হু যুল ফাদলিল ‘আজীম।

Advertisement 4

Mufti Taqi Usmani
It is Allah’s bounty that He gives to whomsoever He wills, and Allah is the Lord of the great bounty.

মুফতী তাকী উসমানী
এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা এটা দান করেন। তিনি মহা অনুগ্রহশীল। ৩

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
এটা আল্লাহর কৃপা, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহাকৃপাশীল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
এটা আল্লাহ্ র ই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি এটা দান করেন। আল্লাহ্ তো মহা অনুগ্রহশীল।

মাওলানা জহুরুল হক
এইটিই আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ-প্রাচুর্য, — এটি তিনি দান করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। আর আল্লাহ্ বিরাট করুণাভান্ডারের অধিকারী।

তাফসীরঃ
৩. ইয়াহুদীদের কামনা ছিল শেষ নবী যেন তাদেরই মধ্যে অর্থাৎ বনী ইসরাঈলের মধ্যে আসেন আর আরবের মূর্তিপূজারীরা বলত, আল্লাহ তাআলার যদি কোন নবী পাঠানোর দরকার হত, তবে আমাদের বড়-বড় নেতাদের মধ্য হতেই কাউকে বেছে নিলেন না কেন? (দেখুন সূরা যুখরুফ, ৪৩ : ৩১)। আল্লাহ তাআলা বলছেন, নবুওয়াত ও রিসালাত আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ। তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকেই দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে অন্য কারও কোনও রকম হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

مَثَلُ الَّذِیۡنَ حُمِّلُوا التَّوۡرٰىۃَ ثُمَّ لَمۡ یَحۡمِلُوۡہَا کَمَثَلِ الۡحِمَارِ یَحۡمِلُ اَسۡفَارًا ؕ بِئۡسَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ؕ وَاللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ

মাছালুল্লাযীনা হুম্মিলুত্তাওরা-তা ছুম্মা লাম ইয়াহমিলূহা-কামাছালিল হিমা-রি ইয়াহমিলুআছফা-রান বি’ছা মাছালুল কাওমিল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিল্লা-হি ওয়াল্লা-হু লা-ইয়াহদিল কাওমাজ্জা-লিমীন।

Mufti Taqi Usmani
The example of those who were ordered to bear (the responsibility of acting upon) the Torah, then they did not bear it, is like a donkey that carries a load of books. Evil is the example of those who have rejected Allah’s verses. And Allah does not guide the wrongdoing people.

মুফতী তাকী উসমানী
যাদের উপর তাওরাতের ভার অর্পণ করা হয়েছিল, অতঃপর তারা সে ভার বহন করেনি, ৪ তাদের দৃষ্টান্ত হল গাধা, যে বহু কিতাব বয়ে রেখেছে। যারা আল্লাহর কিতাবকে অস্বীকার করে তাদের দৃষ্টান্ত কতই না মন্দ! আল্লাহ এরূপ জালেম লোকদেরকে হেদায়াতপ্রাপ্ত করেন না।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা তা বহন করে নাই, তাদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গর্দভ! কত নিকৃষ্ট সে সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহ্ র আয়াতসমূহ অস্বীকার করে ! আল্লাহ্ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।

মাওলানা জহুরুল হক
যাদের তওরাতের ভার দেওয়া হয়েছিল, তারপর তারা তা অনুসরণ করে নি, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে গাধার মতো, যে গ্রন্থরাজির বোঝা বইছে। কত নিকৃষ্ট সে-জাতির দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করে। আর আল্লাহ্ অন্যায়াচারী জাতিকে সৎপথে চালান না।

তাফসীরঃ
৪. অর্থাৎ তাওরাতের বিধানাবলী পালন করার যে দায়িত্ব তাদের উপর অর্পণ করা হয়েছিল, তারা তা আদায় করেনি। শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান আনার হুকুমও তার অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু তারা তাঁর উপর ঈমান আনেনি।

قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ ہَادُوۡۤا اِنۡ زَعَمۡتُمۡ اَنَّکُمۡ اَوۡلِیَآءُ لِلّٰہِ مِنۡ دُوۡنِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ

কুল ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা হা-দূ ইন ঝা‘আমতুম আন্নাকুম আওলিয়াউ লিল্লা-হি মিন দূনিন্না-ছি ফাতামান্নাউল মাওতা ইন কুনতুম সা-দিকীন।

Mufti Taqi Usmani
Say, “O you who are Jews, if you claim that you are the friends of Allah to the exclusion of all other people, then express your desire for death, if you are true.

মুফতী তাকী উসমানী
(হে রাসূল!) বল হে ইয়াহূদীগণ, যদি তোমাদের দাবি এই হয় যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু, অন্য কোন মানুষ নয়। তবে মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ৫

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
বলুন হে ইহুদীগণ, যদি তোমরা দাবী কর যে, তোমরাই আল্লাহর বন্ধু-অন্য কোন মানব নয়, তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বল, ‘হে ইয়াহূদীরা! যদি তোমরা মনে কর তোমরাই আল্লাহ্ র বন্ধু, অন্য কোন মানবগোষ্ঠী নয় ; তবে তোমরা মৃত্যু কামনা কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’

মাওলানা জহুরুল হক
বলো — “ওহে যারা ইহুদী মত পোষণ কর! যদি তোমরা মনে কর যে লোকজনকে বাদ দিয়ে তোমরাই আল্লাহ্‌র বন্ধুবান্ধব, তাহলে তোমরা মৃত্যু কামনা করো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।”

তাফসীরঃ
৫. এই একই কথা সূরা বাকারায়ও বলা হয়েছে (২ : ৯৫)। ইয়াহুদীদের জন্য এটা খুবই সহজ চ্যালেঞ্জ ছিল। তাদের পক্ষে সামনে এসে একথা বলে দেওয়া কিছু কঠিন ছিল না যে, ‘আমরা মৃত্যু কামনা করছি’। কিন্তু তাদের কেউ একথা বলার জন্য সামনে আসল না। কারণ তারা জানত, এ চ্যালেঞ্জ আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে। কাজেই মৃত্যু কামনা করলে তা পূরণে দেরি হবে না, সঙ্গে-সঙ্গেই তাদের মরতে হবে।

Advertisement 2

وَلَا یَتَمَنَّوۡنَہٗۤ اَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ ؕ وَاللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِالظّٰلِمِیۡنَ

ওয়ালা-ইয়াতামান্নাওনাহূ আবাদাম বিমা-কাদ্দামাত আইদীহিম ওয়াল্লা-হু ‘আলীমুম বিজ্জা-লিমীন।

Mufti Taqi Usmani
And they will never express this desire, because of what their hands have sent ahead. And Allah is fully aware of the wrongdoers.

মুফতী তাকী উসমানী
কিন্তু তারা নিজ হাতে যা সামনে পাঠিয়েছে, তার কারণে তারা কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ ওই জালেমদেরকে ভালোভাবেই জানেন।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ জালেমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
কিন্তু এরা এদের হস্ত দিয়ে যা অগ্রে প্রেরণ করেছে এর কারণে কখনও মৃত্যু কামনা করবে না। আল্লাহ্ জালিমদের সম্পর্কে সম্যক অবগত।

মাওলানা জহুরুল হক
কিন্ত তাদের নিজেদের হাত যা আগবাড়িয়েছে সেজন্য তারা কখনো তা কামনা করবে না। আর আল্লাহ্ অন্যায়াচারীদের সন্বন্ধে সম্যক জ্ঞাতা।

قُلۡ اِنَّ الۡمَوۡتَ الَّذِیۡ تَفِرُّوۡنَ مِنۡہُ فَاِنَّہٗ مُلٰقِیۡکُمۡ ثُمَّ تُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَالشَّہَادَۃِ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ٪

কুল ইন্নাল মাওতাল্লাযী তাফিররূনা মিনহু ফাইন্নাহূমুলা-কীকুম ছু ম্মা তুরাদ্দূনা ইলা-‘আলিমিল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাতি ফাইউনাব্বিউকুম বিমা-কুনতুম তা‘মালূন।

Mufti Taqi Usmani
Say, “Indeed, the death from which you (try to) run away has to visit you, then you will be sent back to the Knower of the Unseen and the seen, and He will tell you what you used to do.

মুফতী তাকী উসমানী
বল, তোমরা যে মৃত্যু হতে পালাচ্ছ, তা তোমাদের সাথে সাক্ষাত করবেই। অতঃপর তোমাদেরকে তাঁর (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার) কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, যিনি সমস্ত গুপ্ত ও প্রকাশ্য সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞাত। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা-কিছু তোমরা করতে।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বল, ‘তোমরা যে মৃত্যু হতে পলায়ন কর সেই মৃত্যু তোমাদের সঙ্গে অবশ্যই সাক্ষাৎ করবে। এরপর তোমরা প্রত্যানীত হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহ্ র নিকট এবং তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা তোমরা করতে।’

মাওলানা জহুরুল হক
বলো — “আলবৎ মৃত্যু, যা থেকে তোমরা পালাতে চাও, তা কিন্ত তোমাদের সাক্ষাৎ করবেই, তারপর তোমাদের পাঠানো হবে অদৃশ্যের ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতার কাছে, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন কি তোমরা করতে।”

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ وَذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূইযা-নূদিয়া লিসসালা-তি মিইঁ ইয়াওমিল জুমু‘আতি ফাছ‘আও ইলা-যিকরিল্লা-হি ওয়া যারুল বাই‘আ যা-লিকুম খাইরুল্লাকুম ইন কুনতুম তা‘লামূন।

Mufti Taqi Usmani
O you who believe, when the call for Salāh (prayer) is proclaimed on Friday, hasten for the remembrance of Allah, and leave off business. That is much better for you, if you but know.

মুফতী তাকী উসমানী
হে মুমিনগণ! জুম‘আর দিন যখন নামাযের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। ৬ এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
হে মু’মিনগণ! জুমু‘আর দিনে যখন সালাতের জন্যে আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্ র স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্যে শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।

মাওলানা জহুরুল হক
ওহে যারা ঈমান এনেছ! যখন জুমু’আর দিনে নামাযের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্‌র স্মরণে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচা-কেনা বন্ধ রাখবে। এইটিই হচ্ছে তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা জানতে।

তাফসীরঃ
৬. জুমু‘আর প্রথম আযানের পর জুমু‘আর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ছাড়া অন্য কোন কাজ জায়েয নেই। এমনিভাবে জুমু‘আর নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত বেচাকেনা করাও জায়েয নয়। আল্লাহর যিকির দ্বারা খুতবা ও নামায বোঝানো হয়েছে।



১০

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

ফাইযা- কুদিয়াতিসসালা-তুফানতাশিরূ ফিল আরদি ওয়াবতাগূমিন ফাদলিল্লা -হি ওয়াযকুরুল্লা-হা কাছীরাল লা‘আল্লাকুম তুফলিহূন।

Mufti Taqi Usmani
Then once the Salāh is over, disperse in the land, and seek the grace of Allah, and remember Allah abundantly, so that you may be successful.

মুফতী তাকী উসমানী
অতঃপর নামায শেষ হয়ে গেলে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর, ৭ এবং আল্লাহকে স্মরণ কর বেশি বেশি যাতে তোমরা সফলকাম হও।

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহ্ র অনুগ্রহ সন্ধান করবে ও আল্লাহ্কে অধিক স্মরণ করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

মাওলানা জহুরুল হক
তারপর যখন নামায শেষ হয়ে যায় তখন তোমরা দেশে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহ্‌র করুণাভান্ডার থেকে অণ্বেষণ করো, আর আল্লাহ্‌কে প্রচুরভাবে স্মরণ করো, যাতে তোমাদের সফলতা প্রদান করা হয়।

তাফসীরঃ
৭. পেছনে বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে, কুরআন মাজীদের পরিভাষায় আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান দ্বারা ব্যবসা বা অন্য কোন উপায়ে জীবিকা উপার্জনকে বোঝানো হয়। সুতরাং আয়াতের অর্থ হল, আযানের পর বেচাকেনার উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল জুমুআর নামায শেষ হলে তা তুলে নেওয়া হয়। ফলে বেচাকেনা জায়েয হয়ে যায়।

১১

وَاِذَا رَاَوۡا تِجَارَۃً اَوۡ لَہۡوَۨا انۡفَضُّوۡۤا اِلَیۡہَا وَتَرَکُوۡکَ قَآئِمًا ؕ  قُلۡ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ مِّنَ اللَّہۡوِ وَمِنَ التِّجَارَۃِ ؕ  وَاللّٰہُ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ ٪

ওয়া ইযা-রাআও তিজা-রাতান আও লাহওয়ানিনফাদ্দূ ইলাইহা-ওয়া তারাকূকাকাইমা- কুল মা-‘ইনদাল্লা-হি খাইরুম মিনাল্লাহবিওয়া মিনাত্তিজা-রাতি ওয়াল্লা-হু খাইরুর রা-ঝিকীন।

Mufti Taqi Usmani
And when they see some merchandise or amusement, they break away to it, and leave you (O prophet,) standing. Say, “What is with Allah is much better than the amusement and the merchandise, and Allah is the best giver of sustenance.

মুফতী তাকী উসমানী
কতক লোক যখন ব্যবসায় অথবা কোন খেলা দেখল, তখন তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সে দিকে ছুটে গেল। ৮ বলে দাও, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ব্যবসা ও খেলা অপেক্ষা অনেক শ্রেয়। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা। ৯

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান
তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন
যখন তারা দেখল ব্যবসায় ও কৌতুক তখন তারা তোমাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে এর দিকে ছুটে গেল। বল, ‘আল্লাহ্ র নিকট যা আছে তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট।’ আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।

মাওলানা জহুরুল হক
কিন্ত যখন তারা পণ্যদ্রব্য অথবা ক্রীড়া-কৌতুক দেখতে পায় তখন তারা সেদিকে ভেঙ্গে পড়ে এবং তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় ফেলে রাখে। তুমি বলো — “আল্লাহ্‌র কাছে যা রয়েছে তা ক্রীড়া-কৌতুকের চেয়ে ও ব্যবসা-বাণিজ্যের চেয়েও উত্তম! আর জীবিকাদাতাদের মধ্য আল্লাহ্‌ই সর্বশ্রেষ্ঠ।”

তাফসীরঃ
৮. এটা তো ছিল সাহাবায়ে কিরামের কারও কারও প্রথমদিকের কথা। কিন্তু এই সতর্কীকরণের পর তাদের জীবনে যে পরিবর্তন এসেছিল, সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার সাক্ষ্য হল لَّا تُلْهِيْهِمْ تِجَارَةٌ وَّلَا بَيْعٌ عَنْ ذِكْرِ اللّٰهِ وَإِقَامِ الصَّلٰوةِ وَإِيْتَآءِ الزَّكٰوةِ ـ ‘তাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা আল্লাহর স্মরণ হতে এবং সালাত কায়েম ও যাকাত আদায় হতে বিরত রাখে না। (সূরা নূর ২৪ : ৩৭) -অনুবাদক

৯. হাফেজ ইবনে কাছীর (রহ.) বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম দিকে খুতবা দিতেন জুমু‘আর নামাযের পরে। একবার জুমু‘আর নামায শেষে যখন তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন এক বাণিজ্য কাফেলা পণ্য-সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হল এবং ঢোল পিটিয়ে তার ঘোষণাও দেওয়া হচ্ছিল। তখন মদীনা মুনাওয়ারায় খাদ্য-সামগ্রীর বড় অভাব ছিল। কাজেই উপস্থিত সাহাবীদের মধ্যে অনেকেই খুতবা ছেড়ে সেই কাফেলার দিকে ছুটে গেলেন। সামান্য কিছু সংখ্যক মসজিদে অবশিষ্ট থাকলেন। এ আয়াতে যারা চলে গিয়েছিলেন তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে যে, খুতবা ছেড়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। কেননা এটা জায়েয ছিল না। এর দ্বারা জানা গেল জুমু‘আর নামায পড়লেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। খুতবা শোনাও ওয়াজিব।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Advertisement 5

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  

আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড

Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !! 

Advertisement 3

Leave a Comment