মস্তিষ্ক ভালো রাখার কিছু টিপস

আমাদের মাঝে অনেকেই চিন্তা থাকে যে, কিভাবে মস্তিষ্ক ভালো রাখা যায়? কারণ এটি যে আপনার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

আমরা যদি একবার চিন্তা করে দেখি তাহলে বুঝতে পারবো যে, আমরা আমাদের শরীরের মাসেল বৃদ্ধি করতে বা ভালো রাখতে এবংকি নিজের শরীরকে ভালো রাখতে চাই। কিন্তু এই সবকিছু ভালো রাখার সময় আমাদের মস্তিষ্কে ভালো রাখা কথাটা আমরা ভুলে যাই।

যেহেতু আমরা মানুষ; আমরা আমাদের মস্তিষ্ক দ্বারায় পরিচালিত হই। সেহেতু আমাদেরকে আমাদের মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে সঠিক সময়ে সঠিক যত্ন নিতে হবে।

আমাদের লাইফে যত-যত সফলতা, যত টাকা পয়সা আয় করা সবকিছুই কিন্তু পরিচালিত হয় আমাদের মস্তিষ্ক ধরা।

নিচে মস্তিষ্ক ভালো রাখার ৫টি উপায় দেখানো হলো —

১। আইডিয়া নোট করে ফেলা ঃ

আপনার মস্তিষ্কে আপনার ইচ্ছামত চালাতে চাইলে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হলো আপনার আইডিয়া নোট করে ফেলা। আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, যে অবস্থায় থাকুন না কেন আপনার মাথায় প্রতিদিন অসংখ্য রকম কাজের অসংখ্য রকম আইডিয়া চলে আসে।

কিন্তু ততক্ষণে সেই আইডিয়াগুলো যদি নোট করা না থাকে সেগুলো কিছুক্ষণ পর ভুলে যাই। এটা শুধু আপনার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয় আমরা যেহেতু মানুষ সেইতো আমাদের প্রায় সকলেরই এরকম হয়ে থাকে। এটা নিয়ে না চিন্তা করে যখনই আপনার পরবর্তীতে কোনো ভালো আইডিয়া মাথায় আসবে আপনি আপনার কোন নোটে সেগুলো তুলে রাখতে পারেন।

যদিওবা বর্তমানে যেখানে সেখানে নোট করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় যে ব্যাপারটি সেটি হল মোবাইলের নোট করে ফেলা।

এতে করে পরবর্তীতে আপনি আপনার কাজ ঘুচিয়ে করতে পারবেন এবং আপনার ব্রেন আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সহযোগিতা করবে।

২। কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসুন ঃ

আপনি কোন একটি কাজ শুরু করার আগে এবং কাজটি যখনই করতে যাবেন তখন দুই জায়গায় দুটি চিন্তা মাথায় আসে। আগে ভাবতেন কাজটি করব, আমি যদি ওইটা করতে পারতাম কিন্তু যখন এ কাজটি করতে যান তখন ভাবেন এটা করলে তো লোকে এটা ওটা বলবে। এগুলা করে কি লাভ হবে এই ধরনের প্রশ্ন মাথায় আসে। এগুলো আপনার মস্তিষ্ককে চরমপর্যায়ে ভোগান্তিতে ফেলে।

আপনার যখন এইরকম ভোগান্তিতে পড়বেন তখনই আপনি আপনার কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে কিছু এবনরমাল কাজ করার চেষ্টা করবেন। আমি বলতেছি না কোন উল্টাপাল্টা কাজ করতে, আমি এইটা বলতে চেয়েছি আপনি যে কাজটি করবেন বলেজেড করেছেন সেটি করেই দেখান।

হয়তো কিছু লোকের বিরুদ্ধে যাবে। তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। মাঝেমধ্যে আপনি আপনার কমফোর্ট এরিয়া থেকে বেরিয়ে এসে এই ধরনের কাজ করলেই আপনার ব্রেইন আগে থেকে আরও বেশি সতেজ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে নতুন কিছু করার ক্ষেত্রে।

৩। রুটিনমাফিক জীবনযাপন পালন করা ঃ

এটি আপনার জীবন বদলে দেওয়ার মত একটি অভ্যাস হতে পারে। অবশ্যই এটি আপনার মস্তিষ্ক দ্বারাই হয়।

আপনি প্রতিদিন যে কাজগুলো করে যাচ্ছেন সেগুলোই আবার পরের দিনই করে যাচ্ছেন। আপনার লাইক বেশি বুষ্ট হচ্ছে না। ওই ২৪ ঘন্টাতো চলে যাচ্ছে। কিন্তু আপনার লাইফে কাজ তেমন একটা হচ্ছে না। ভাবতেছেন আমি কি এমন কাজ করতেছি ২৪ ঘন্টা যে আমার তো কিছুই হচ্ছে না।

এরকমটা হওয়া কারন আপনার রুটিন মাফিক জীবন যাপন পালন না করা। আপনি একদিন এক সময়ে একেকটা কাজ করে বেড়ান। ফলে আপনার মস্তিষ্ক খুব সহজেই কনফিউজ হয়ে যায় যে কোন সময় কোন কাজটি করতে হয়।

ধরুন আপনি প্রতিদিন রাত দুইটা বাজে ঘুমাতে যান। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে যদি রাত 12 টায় ঘুমাতে যান তাহলে দেখতে পাবেন, আপনি ঘুমাতে পারবেন না। এখানে আপনি জোর করে ঘুমাতে চাইলেও দেখবেন আপনি ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না এর প্রধান কারণ হলো আপনার মস্তিষ্ক।

আপনি প্রতিদিন যে কাজ করে যাচ্ছেন সেটি দ্বারা আপনার মস্তিষ্কে আপনি নিজেই ইঙ্গিত করে যাচ্ছেন যে আমি রাত 2 টায় ঘুমাতে যাব এবং এটি আপনি অনেকদিন ধরে করতে করতে অভ্যাস পরিবর্তন করেছেন। তাই আপনি যতই আবারও বারোটায় টায় ঘুমাতে যান আপনার ঘুম আসতে চাইবে না।

ঠিক সেভাবে আপনি যদি এভাবে আপনার লাইফে কিছু কাজ রুটিনমাফিক করতে থাকেন তাহলে একটা সময় সেটির যতই গন্ডগোল পাকাতে চান না কেন সেটি আর হবে না।

৪। মনোযোগ হারায় এমন জিনিস থেকে দূরে থাকুন ঃ

আপনি যখনই কোন একটি কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে চান না কেন তখন আপনার চারপাশে থাকা বিভিন্ন জিনিসের মাধ্যমে সেই মনোযোগী হারিয়ে যেতে পারে। এটি আপনার মস্তিষ্ক দুর্বল করে দেওয়ার জন্য অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে।
বর্তমান যুগে এই মনোযোগ হারানোর প্রধান কারণ হলো ডিজিটাল ডিভাইস গুলো। যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ সহ নানান ধরনের ডিভাইস। যেগুলো আপনাকে আপনার নির্দিষ্ট কোন কাজ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।

তাই আপনাকে এমন কোন কাজ করা যাবে না যেগুলো আপনাকে আপনার মনোযোগ হারায়ে যায় । আপনি যদি কোন একটি করেন এবং হঠাৎ করে সেটি থেকে আপনার মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন তাহলে আপনার ব্রেইন সেটিকে ধীরে ধীরে তার আয়ত্তে নিয়ে আসে।

আবার অনেক সময় দেখা যায় আপনি কোন একটি কাজ করতে যান কেউ এসে আপনাকে সেই কাজে বাধা প্রদান করে। তাই আমার পরামর্শ হল আপনি যদি বাড়িতে থাকেন তাহলে আপনি কোন কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে হলে, আপনি প্রয়োজন হলে সবাইকে দূরে সরিয়ে দিয়ে অথবা আপনি যদি পড়তে বসেন।

তাহলে ঘরের রুমের দরজা বন্ধ করে একটানা মনযোগ দিয়ে পড়ালেখা চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার ব্রেইন আগে থেকে অনেক ভিড় হবে এবং দ্রুত কাজ করবে অন্যথায় হালকা একটু মনোযোগ হারিয়ে ফেললেই আপনি আর পড়তে পারবেন না।

এটি শুধুমাত্র একটি উদাহরণ এইরকম ভাবে আপনি চাইলে আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাজ শুরু করার আগে যেগুলো আপনার মনোযোগ এর ঘাটতি করে দিতে পারে সেগুলো দূরে রাখুন।

৫। প্রতিদিন কিছু না কিছু পড়ুন ঃ

আপনি যদি একজন ছাত্র এর সাথে একজন অফিসের চাকুরী করা একজন লোকের সাথে তুলনা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে, একজন ছাত্র একজন অফিসের বড় পোস্টে থাকা লোকটিও সেই ছাত্রটি সাথে কোন কিছুতেই পেরে পেরে উঠতে পারতেছেনা। হোক সেটি পড়ালেখা অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে।

এটির প্রধান কারণ হলো ছাত্রটি নিয়মিত বই পড়ে এবং এই অফিসের লোক লাস্ট কবে ধরেছে সেটিও ভুলে গেছে। নিয়মিত বই পড়লে আপনার ব্রেইনের চিন্তা শক্তি বৃদ্ধি পায়।

তবে আপনি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি প্রতিদিন কিছু না কিছু পড়তে পারেন। আপনি ইন্টারনেটে গিয়ে অনেক ভাল ভাল আর্টিকেল বা ব্লগ পড়তে পারেন যেগুলো আপনার জীবনে আরো বেশি কাজে লাগবে।

এতে করে আপনার নতুন কিছু শেখার পাশাপাশি আপনার ব্রেইন কে আগের চেয়ে বেশি দ্রুত কাজ করতে সহযোগিতা করবেন।

এছাড়াও আপনি অনলাইনে বিভিন্ন বইও পড়তে পারেন এবং সবচেয়ে ভালো যে ব্যাপারটা সেটি হলো আপনি অফলাইনে কোন বই নিয়ে পড়তে বসে যান। এটির প্রধান কারণ হলো মনোযোগ কম হারাবে

উপরের টিপসগুলো কাজে লাগাতে শুরু করলে আশা করি আপনার ব্রেইন আগের থেকে একটু বুষ্ট হয়ে, আপনার প্রতিদিনের কাজকর্ম আরো একটি ভালো ভাবে চলাচলে সাহায্য করবে। আপনার ভবিষ্যৎ জীবনের শুভকামনা জানিয়ে এখানেই শেষ করছি।

সাস্থ্য

1 thought on “মস্তিষ্ক ভালো রাখার কিছু টিপস”

Leave a Comment