ফরাসি বিপ্লবের পটভূমি কী ছিল?, hsc উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১২শ শ্রেণি ইতিহাস ২য় পত্র ১ম অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান/ উত্তর ২০২১

শ্রেণি: ১২শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: ইতিহাস ২য় পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 02 বিষয় কোডঃ 2855
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ ফরাসি বিপ্লবের পটভূমি কী ছিল?

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

জ্ঞানতাত্ত্বিক বিপ্লব বা আলোকময়তার যুগে মানুষের চিন্তাশক্তির উৎকর্ষ মূলত স্বৈরতন্ত্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছিলো। অন্যদিকে ভৌগোলিক আবিষ্কারের ফলে বিশ্বের নানা দেশের সাথে যোগাযোগ, নৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগসূত্র মানুষকে অনেক বেশি স্বাধীনচেতা করে তোলে। ফ্রান্সে চতুর্দশ লুই পরবর্তীযুগের দুর্বল কিন্তু অত্যাচারী শাসকদের দাম্ভিক আচরণ তাদের ক্ষমতার কেন্দ্র বাস্তিল দুর্গের পতনে যথেষ্ঠ হয়েছিলো। ধর্ম সংস্কার ও প্রতিসংস্কার আন্দোলন ক্রমাগত পরিবর্তনের হাতছানি দিয়ে ফলাফল হিসেবে পোপের শক্তিনাশ করেছিলো।

এর মাধ্যমে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য কিংবা ঐ জাতীয় কোনো আধ্যাত্মিকতার বাণী শুনিয়ে মানুষকে আর ঘরে বেঁধে রাখা সম্ভব হচ্ছিলো না। ফ্রান্সের পাশাপাশি ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও চলছিলো চরম রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক, প্রশাসনিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতি ও মনস্তাত্ত্বিক সংকট। এগুলো একত্রিত হয়ে একটি বিপ্লবের পটভূমি তৈরি করে। নিচে বিষয়গুলো আলোচনা করা হলোÑ

রাজনৈতিক অবস্থা : কাগজে কলমে ইউরোপের নানা স্থানে জাতীয় রাষ্ট্রের উত্থান হলেও বাস্তবতায় সেখানে শক্তিশালী রাজতন্ত্র বিরাজ করছিলো। দুর্নিবার একনায়কতান্ত্রিক শাসনে ভূ-লুন্ঠিত হয়েছিলো মানবাধিকার। এখানে ব্যক্তি কিংবা রাজ্যের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে মনে করা হতো রাজতন্ত্রের সম্পত্তি। এখানে ব্যক্তির সাথে রাজ্যের আচরণ ছিলো যাচ্ছেতাই। মানুষের কল্যাণের জন্য সরকার ও রাষ্ট্র এই ধারণার কোনো অস্তিত্ব সেখানে ছিলো না।

বলতে গেলে ক্যালেন্ডারের পাতায় আধুনিক যুগে পদার্পনের চিহ্ন দেয়া থাকলেও তখনকার ইউরোপের মধ্যযুগীয় বর্বর রাজতন্ত্রই নতুন করে জেঁকে বসে। প্রুশিয়া, ব্রান্ডেনবার্গ, অস্ট্রিয়া, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া, স্পেন প্রভৃতি অঞ্চলে এই ধরণের শাসনকাঠামোর অস্তিত্ত্ব পরিলক্ষিত হলেও ফ্রান্সের অবস্থা ছিলো সবথেকে ভয়াবহ। তাই বিপ্লবীদের প্রতিরোধে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ফরাসি ভূখণ্ড।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে পুরো ইউরোপজুড়ে যে রাজনৈতিক সংকট জন্ম নিয়েছিলো তার মূলে ছিলো ভয়াবহ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের ক্ষমতার বুনিয়াদ মজবুত করে তোলার গুরুদায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছিলো শক্তিশালী সব আমলা। রাষ্ট্রযন্ত্রের নামান্তরে তখন গড়ে উঠতে দেখা যায় এক প্রভাবশালী নিপীড়ক যন্ত্রাতন্ত্র যার মূল কাজ জনদলন আর মানুষের উপর নারকীয় অত্যাচার। এই জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে প্রাণান্ত হয়েছিলো পুরো ইউরোপ। নানা স্থানে অসন্তোষের বীজ দানা বাঁধছিলো অনেক আগে থেকেই যা সময় ও সুযোগ বুঝে অঙ্কুরিত হয় ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে।

প্রশাসনিক অবস্থা: পোপের ক্ষমতার রাজনৈতিকীকরণ আর রাজক্ষমতার উপর চার্চ তথা ধর্মের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পুরো বিশ্ব যখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় উদ্বেল হয়েছে ঠিক তখনি ইউরোপের বইতে থাকে উল্টো হাওয়া। স্বার্থান্বেষী পোপরা ক্ষমতাধর রাজা ও প্রশাসকদের অবস্থার আরো পরিপক্ক করে তুলতে চেষ্টা করে।

উপযুক্ত স্বার্থের বিনিময়ে তারা সম্রাটকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়। ফলে আবার সেই মান্ধ্যত্মার আমলের দৈব রাজতন্ত্রের ধারণ ফিরে আসে ইউরোপে। মানুষ নানা দিক থেকে নিষ্পেষিত হয়েও পুরোপুরিভাবে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করার অধিকার হারিয়ে ফেলে। তবে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট দ্বন্দ্বের ফলে সৃষ্ট ইতিহাস বিখ্যাত ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধ ইউরোপের রাজনীতির এই ধারণা পাল্টে দেয়ার পথ করে দেয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ধর্মীয় অবস্থা: আধুনিক যুগের শুরুতে ইউরোপের রাজনৈতিক আবর্তনের সাথে ধর্মের ওতপ্রোত সম্পর্ক ছিলো। বিশেষ করে ক্ষমতার উপর পোপের সর্বগ্রাসী নিয়ন্ত্রণ এই অবস্থাকে আরো অসহনীয় করে তোলে। ধর্মসংস্কার আন্দোলন শুরু হলে ইউরোপের ইতিহাসের পট পরিবর্তন হয়। এই সময় থেকে শুরু হয় সাম্প্রদায়িক সংঘাত।

বিশেষ করে মার্টিন লুথারের প্রতিবাদী ধর্মমত প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৌলবাদী ক্যাথলিকদের সাথে অন্যদের যে পরিমাণ সংঘাত হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে আধুনিক যুগের প্রারম্ভের ইউরোপের ইতিহাসকে প্রোটেস্ট্যান্ট ক্যাথলিক দ্বন্দ্বের ইতিহাস বলাটা ভুল হবে না। অনেকে রাজক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নিজের ধর্মমত পাল্টে ফেলেন। অনেক রাজা ভিন্নধর্মী তথা প্রতিবাদী ধর্মমতে বিশ্বাসী মানুষকে নানা ভাবে অত্যাচার, নিপীড়ন এমনকি নির্মমভাবে হত্যা পর্যন্ত করে।

সময়ের আবর্তে ক্যাথলিক প্রটেস্ট্যান্ট দ্বন্দ্ব হয়ে যায় ইউরোপের জন্য একটি নিত্য নৈমিত্যিক ব্যাপার। এই ধরণের একটি ধর্মীয় প্রেক্ষাপটের উপরেই ফরাসি বিপ্লব কার্যকর হয়েছিলো যেখানে মানুষের মূল লক্ষ্য ছিলো গির্জার দাসত্ব থেকে মুক্তি। ক্যাথলিক ধর্মীয় পোপের মৌলবাদী আচরণের বিরুদ্ধে একটি উপযুক্ত জবাব দেয়ার সুযোগ খুঁজছিলো মানুষ যার সুযোগ সহজে মেলেনি। অন্যদিকে পরিবর্তনের বারতা নিয়ে এসেছে ফরাসি বিপ্লব। এর ফলে খ্রিস্টধর্মকে কিছু আচারসর্বস্ব প্রাতিষ্ঠানিকতায় রবিবারের নির্বাসনে পাঠিয়ে বাণিজ্যের পসরা খোলা পোপ এবার নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হন।

অর্থনৈতিক অবস্থা: দাসশ্রম ভিত্তিক ইউরোপের অর্থনীতি এই সময় টিকে ছিলো মূলত নানা স্থানে বিস্তৃত উপনিবেশ থেকে সীমাহীন লুটতরাজ ও সম্পদ আহরণের মধ্য দিয়ে। রাজনেতিক বিশৃঙ্খলা আর ক্রমাগত যুদ্ধ বিগ্রহের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান হয়েছিলো নিম্নমুখী। অর্থসম্পদ একটি বিশেষ শ্রেণির হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে। মানুষের জীবনের নেই নিরাপত্তা, রাষ্টযন্ত্রের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে অনেকে দেশান্তরী পর্যন্ত হয়েছিলো। অর্থনৈতিক সংকটে জীবন বাঁচানোর দায় যেখানে বড় সেখানে নানা উৎসব আয়োজনের ছুঁতো করে পোপ গণমানুষের কাছ থেকে লুঠ করে নিজের ভাণ্ডার শক্তিশালী করছে। এভাবে একটি দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে নিষ্পেষিত ছিলো সাধারণ মানুষ। ক্ষমতার দিক থেকে অনেকটাই ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র বলা যায় ফ্রান্সকে।

তাই অর্থনৈতিক দুরাবস্থার চিত্রটি সেখানেই সবার আগে অনেক পরিষ্কার হয়ে সবার চোখে ধরা দেয়। বিশেষ করে সমাজের সবথেকে নিচের স্তরে বসবাস করতো শ্রমিক ও কারিগর শ্রেণি। তারাই ছিলো ইউরোপের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। উচ্চহারে কর প্রদানের পাশাপাশি নানামুখী শোষণ-নির্যাতনে তাদের জীবন হয়ে উঠেছিলো দুর্বিসহ।

রাজা ও রাজকর্মচারীরা অপেক্ষাকৃত কম কর প্রদানের পাশাপাশি নানাবিধ রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধাও লাভ করতো। তারা একদিকে বিলাস ব্যসনে জীবনের সবটুকু উপভোগ করার সুযোগ পেতো অন্যদিকে সাধারণ মানুষ বেঁচে থাকাটাকেই আজন্ম পাপ বলে মনে করতে শুরু করে।

একটি সময় দেখা যায় রাজা ও রাজকর্মচারীদের সীমাহীন দুর্নীতি আর বিলাসিতায় রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ইউরোপীয় অনেক রাজ পরিবার বিভিন্ন ধণিক শ্রেণি থেকে অর্থ সাহায্য গ্রহণ করে। উদাহরণ হিসেবে রথচাইল্ড পরিবার কিংবা ফ্রিম্যাসনারি গ্রুপ থেকে সাহায্য গ্রহণের কথা বলা যেতেই পারে। এক কথায় বলতে গেলে একটি অর্থনৈতিক দৈন্যচক্রে আটকে পড়ে ইউরোপের রাজশক্তি।

সামাজিক অবস্থা : ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে প্রায় প্রতিটি দেশের সামাজিক অবস্থা ছিলো দুর্বিসহ। স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পাশাপাশি তাদের দোসর শোষক শ্রেণি মানুষের উপর নানাভাবে চড়াও হয়। সাধারণ মানুষ যারা সামাজিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি তাদের জীবন ধারণই অনেক কঠিন হয়ে গেছিলো। ফ্রান্স থেকে শুরু করে অস্ট্রিয়া, প্রুশিয়া, ব্রান্ডেনবার্গ, স্পেন, ইংল্যান্ড কিংবা তথাকথিত পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য সবখানেই মানুষের কোনো অবস্থানগত মর্যাদা ছিলোনা বললেই চলে।

স্বৈরশাসক ও তাদের দোসদের ছোবলে মানুষ পরিণত হয়েছিলো রাষ্ট্রযন্ত্রের একান্ত বাধ্যগত ভৃত্যে। সামাজিক আচার অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিজাতদের নিয়ন্ত্রণ সামাজিক সাম্যবস্থা নষ্ট করে বিশেষ শ্রেণির প্রাধান্য ও নিপীড়ন স্পষ্ট হয়েছিলো। তবে ফ্রান্সে সামাজিক অবস্থা সবচেয়ে সংকটময় ছিল।

সংস্কৃতি : জাতি রাষ্ট্রের ধারণা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইউরোপে একটি ভিন্ন ধরণের সংস্কৃতির অস্তিত্ব লক্ষ করা গেছে। তবে সময়ের আবর্তে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশগুলো আধিপত্য বিস্তারের লড়াইকে সবথেকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা শুরু করলে বাধে মূল বিপত্তি। বিশেষ করে ১৮ শতকের স্বৈরতান্ত্রিক শাসকগণ রাজ্য সম্প্রসারণের জন্য প্রায়ই অন্য রাষ্ট্রের উপর চড়াও হতেন।

এভাবে যুদ্ধ-বিগ্রহ আর অন্যদেশ দখল করার মাধ্যমে ইউরোপের সংস্কৃতিতেও একটি পরিবর্তন ও অবস্থানিক মিথষ্ক্রিয়া লক্ষ করা যায়। যুদ্ধ-বিগ্রহ কিংবা জাতিগত দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে দেশ ভ্রমণের মতো ঘটনাও এই সময় ইউরোপের সংস্কৃতি বদলে দিতে সাহায্য করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষ আকুল হয়েছিলো স্বাধীনতার স্বাদ নিতে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

উপনিবেশ : ফরাসি বিপ্লবের অনেক আগেই বিশ্বের নানা দেশে ইউরোপের উপনিবেশগুলো ছড়িয়ে পড়েছিলো। বিশ্বের নানা দেশ থেকে সম্পদ আহরণ ও লুটপাট করে তখন সমৃদ্ধ হচ্ছিলো ইউরোপের উপনিবেশিক দেশগুলোর কোষাগার। অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও নানা সংকটে উপনিবেশ থেকে আহরিত সম্পদই অনেক দেশের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।

এই সময় বাইরে থেকে আগত সম্পদে পরিপূর্ণ জাহাজ আক্রমণও নিত্যনৈমিত্যিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে ইউরোপের রাজনৈতিক দুর্বলতা সম্পর্কে জেনে যায় উপনিবেশিত দেশগুলোও। সেখানেও ক্রমাগত বিদ্রোহ চলতে থাকে। কিছুক্ষেত্রে উপনিবেশের যুদ্ধে ইংল্যান্ড ফ্রান্সের কাছে গেরে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। যেমন, ভারতে ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্স পরাজিত হয়।

সামন্তপ্রথা : মধ্যযুগ থেকে শুরু হওয়া ন্যাক্কারজনক সামন্তপ্রথা ফরাসি বিপ্লব পূর্ব ইউরোপের রক্তে-রন্ধে স্থান করে নেয়। এর প্রভাবে অবস্থানগত সংকটে পড়ে স্বৈরতান্ত্রিক শাসকগণ। তারা নামমাত্র বিশাল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে সিংহাসন দখল করেছিলো। তবে পুরো শাসন ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকৃত হয়ে চলে যায় অত্যাচারী সব সামন্তপ্রভুদের হাতে। এরা অত্যাচার নিপীড়ন করে ইচ্ছাখুশি কর আদায় করে কৃষক ও শ্রমিকশ্রেণির জীবন অসহ্য করে তোলে।

নানা স্থানে অঙ্কুরিত বিদ্রোহের বীজ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে টালমাটাল করে দেয়। অনেক সামন্ত প্রভু নিজস্ব সেনাবাহিনী গড়ে তুলে সুযোগ বুঝে আশেপাশের এস্টেটের সামন্তপ্রভুর সম্পত্তি দখল করতে শুরু করে। তবে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে প্রবল ক্ষমতাধর এই ভূ-স্বামী সামন্ত প্রভুদের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করার সুযোগ ছিলো না সাধারণ মানুষের। তারা কারণে-অকারণে জীবন দিতে বাধ্য থাকতো তবুও তাদের কোনো সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ছিলো না বললেই চলে।

দাস প্রথা : ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় সমাজে প্রচলিত মানবতার জন্য মূর্তিমান অভিশাপ হচ্ছে দাসপ্রথা। ভূমিদাসদের মতো নির্যাতিত ও নিপীড়িত অন্য কেউ তখনকার সমাজে ছিলো না। সামন্তবাদী ইউরোপের ভূ-স্বামীদের মূল শক্তি হিসেবে ভূমিদাস প্রথা মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। নিপীড়ক ভূস্বামীরা এদের উপর কারণে অকারণে নানাবিধ অত্যাচার চালাতে থাকে।

সারাদিন শস্যক্ষেতে শ্রম দিয়েও ভূমির উপর তাদের কোনো অধিকার ছিলো না। আমানুষিক অত্যাচার সহ্য করার পরেও তাদের কোনো বেতন ভাতা ছিলো না উপরন্তু ধর্ম প্রতিষ্ঠানসহ নানা ক্ষেত্র থেকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালনের দায়িত্ব তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হতো। কর্ভি নামক বিশেষ আইন প্রণয়ন করে তাদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে সড়ক নির্মাণ, গৃহনির্মাণ, গির্জার জমিতে বেগার শ্রম, মনিবের পশুর দেখাশোনার পাশাপাশি সড়ক ও সেতুর সংস্কারকাজে বাধ্য করা হতো।

তাদের কাছ থেকে ভিংটিনি নামক আয়কর, ক্যাপিটেশন নামক বিশেষ কর, আবাস ভাড়া বাবদ টেইথ, তাইলি নামক রাজস্বের পাশাপাশি কারখানা, পানির কুয়া প্রভৃতির ব্যবহারে ব্যানালিটস নামক কর দিতে হতো। অন্যদিকে অত্যাচারী ভূ-স্বামীদের উপহার-আপ্যায়ন তথা প্রেজেন্টেশন ছিলো তাদের জন্য বাধ্যতামূলক।

মনস্তাত্ত্বিক সংকট : আলোকময়তার দর্শন ইউরোপের গুটিকতক মানুষকে জ্ঞানচর্চার সুযোগ করে দিলেও সাধারণ মানুষ এর থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছিলো। তারা নানাদিক থেকে অত্যাচারিত হয়ে নিজের জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে ফেলে। অনেকটা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়ে তাদের কাছে বেঁচে থাকাটাই অনেক কষ্টসাধ্য কাজ হয়ে যায়।

তারা জীবন বাঁচাতে বিদ্রোহকে একমাত্র অবলম্বন মনে করে। ভূস্বামীদের প্রশিক্ষিত বাহিনীর কাছে বার বার মার খেতে থাকে তারা। তবুও নানা স্থানে বিদ্রোহের যে আগুন জ্বলে উঠেছিলো তা নেভাতে একটি বড়সড় সফল বিপ্লব অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়। পরবর্তী পাঠে এই বিষয়গুলো ইউরোপের নানা দেশের পরিপ্রেক্ষিত আলোচনা করলে আরো স্পষ্ট হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment