Advertisement
আজকের বিষয়: জানাযা নামাজ পড়ার পদ্ধতি, জানাজার নামাজের নিয়ম, জানাযার নামাজের দোয়া নিয়ম নিয়ত ও ফজিলত,জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম
‘প্রত্যেক প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।’ (সূরা: আল ইমরান, আয়াত ১৮৫)
মানুষ চিরজীবী নয়। প্রত্যেক মানুষকে একদিন পরপারে যেতে হবে। যে শিশুর আজ জন্ম হলো তাকেও একদিন না একদিন এই সুন্দর পৃথিবী ছাড়তে হবে, যেতে হবে পরপারে। এই নির্দিষ্ট সময়ের পৃথিবীটি মানুষের জন্য পরীক্ষা।
কোনো মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ প্রার্থনাকে জানাযা বলা হয়। সাধারণত এটি জানাযার নামাজ নামে অভিহিত হয়। মুসলমান অর্থাৎ ইসলাম ধর্মামলম্বীদের জন্য এটি ফরযে কেফায়া বা সমাজের জন্য আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্থাৎ কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে মুসলমান সমাজের পক্ষ থেকে অবশ্যই জানাযার নামাজ পাঠ করতে হবে। তবে কোনো এলাকা বা গোত্রের পক্ষ থেকে একজন আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে মুসলিম মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজে আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করে নাই এমন ৪০জন লোক নামাজ আদায় করবে, তবে মৃত ব্যক্তির ব্যাপারে তাদের সুপারিশ আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন।’ (মুসলিম)
জানাজার জন্য লাশ কিবলার দিকে রাখতে হবে। লাশ যদি পুরুষ হয় তবে, মাথার পাশ বরাবর ইমাম সাহেব দাঁড়াবেন। আর মহিলা হলে মধ্যবর্তী স্থানে দাঁড়াবেন, এটাই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের সুন্নত।
জানাযার নামাজ:
জানাযার নামাজ একজন ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে বা দলবদ্ধভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা বেজোড় সংখ্যক কাতারে বা সারিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে এ নামায আদায় করেন। এটি ৪ তকবিরের নামাজ। দাঁড়িয়ে এ নামাজ আদায় করতে হয় এবং সালাম ফেরানোর মধ্য দিয়ে এ নামায শেষ হয়। সাধারণত জানাযার নামাযের শেষে মুনাজাত বা দোয়া করতে হয় না কারণ ইসলামের প্রতিষ্ঠিত বিধান অনুযায়ী এ নামাযের মাধ্যমেই মৃতের জন্য দোয়া করা হয়। জানাযা শেষে মৃতব্যক্তিকে অবিলম্বে গোরস্থানে নিয়ে যেতে হয় এবং ইসলামী রীতিতে কবর তৈরি করে মাটিতে দাফন করতে হয়।
Advertisement
জানাযার নামাজের নিয়ম:
চার তাকবীরের সঙ্গে জানাযার নামাজ আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তুলতে হয়, কিন্তু জানাযার নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তোলার প্রয়োজন পড়ে না।
জানাযার নামাজের নিয়ত:
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
নিয়তের বাংলা উচ্চারণ: “নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকবীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।”
এখানে নিয়তে ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ পুরুষ/ছেলে লাশ হলে পড়তে হবে, আর লাশ নারী/মেয়ে হলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলতে হবে।
নিয়ত আরবিতে করতে না পারলে বাংলায় করলেও চলবে, ‘আমি চার তাকবিরের সহিত ফরজে কিফায়া জানাযার নামাজ কিবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মরহুম ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলার) জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।’
জানাযার নামাজে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও রাসূলের ওপর দরুদ পাঠ করা হয়। বাংলায় নিয়ত করলে তা বাংলায় বলে অথবা মনে মনে নিয়তে আনলেও চলবে।
নিয়তে তাকবীরে তাহরিমা অর্থাৎ, আল্লাহু আকবার বলার পর হাত তুলে তারপর অন্যান্য নামাজের মতো হাত বেঁধে নিতে হবে। হাত বেধে সানা পড়তে হবে।
আরবিতে সানা:
سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
বাংলা উচ্চারণ:
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
সানা পড়ার পরে তাকবীর বলে দরুদ শরীফ পড়তে হবে যেটা সাধারণ নামাজে তাশাহুদের পর পড়া হয়।
দরুদ শরীফ:
للَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদি ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
দরুদ শরীফ পড়ার পর তৃতীয় তাকবীর আদায় করে জানাযার দোয়া পড়তে হয়।
জানাযার দোয়া:
لَّهُمَّ اغْفِرْلحَيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الاْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا ارْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িইবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
তবে নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাযার দোয়া পড়তে হবে,
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَمُشَفَّعًا
Advertisement 2
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
নাবালিকা মেয়ের ক্ষেত্রে জানাযার দোয়া পড়তে হবে,
اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًاوَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَمُشَفَّعَة
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান।
এরপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে একটু নীরব থেকে ডানে এবং বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
যদি কারো নামাজে আসতে দেরী হয়ে যায়, তবে ইমাম সাহেবকে অনুসরণ করতে হবে। সম্ভব হলে চার তাকবীর আদায় করে নিতে হবে, তা যদি সম্ভব না হয়, তবে ইমাম সাহবকে অনুসরণ করে সালাম ফিরিয়ে নিয়ে জানাজা নামাজ সম্পন্ন করবে। জানাজা নামাজ জামাতে আদায় করতে হয়, তাই এটি কাজা পড়ার সুযোগ নেই।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
- নামাজে আমরা যা বলি , তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবেনা !!
- “লা আদওয়া” সংক্রমন নেই!হাদীসটি কী বুঝায়?
- রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যত পরামর্শ
- ডায়াবেটিস রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন
- আজহারী: কোন ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে
জানাযার পর দাফন পর্যন্ত থাকার ফজিলত
জানাজার নামাজের গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি। মৃতের জানাজা, কাফন-দাফন ইত্যাদি জীবিত মুসলমানদের ওপর মৃতদের অধিকার এবং অবশ্য পালনীয় ফরজ নির্দেশ। কোনো মুসলমান মারা গেলে তার জানাজার নামাজ আদায় করা ফরজে কিফায়া।
কিছুসংখ্যক মুসলমান এ দায়িত্ব পালন করলে অন্যরা দায়িত্বমুক্ত হবে; যদিও এলাকার সব লোক ও আত্মীয়স্বজনের দায়িত্ব (সুন্নাত) হচ্ছে মৃতের জানাজা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা এবং তার স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়া।
জানাজা আদায়ের সওয়াব
হাদিসের প্রসিদ্ধ মৌলিক ছয়টি গ্রন্থসহ অন্যান্য হাদিসের গ্রন্থগুলো হয়েছে যে- মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় করে, সে এক ‘কিরাত’ পরিমাণ নেকি লাভ করে আর যে ব্যক্তি কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় করে এবং তার দাফনের কাজে অংশগ্রহণ করে, সে দুই ‘কিরাত’ পরিমাণ সওয়াব লাভ করে।”
কোনো এক সাহাবি প্রশ্ন করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! দুই কিরাত কী?’ নবী করিম (সা.) বললেন, ‘দুই কিরাতের ক্ষুদ্রতম কিরাত ওহুদ পাহাড়ের সমান।’ (ইবনে কাছির)
উসমান (রা.) বর্ণিত রয়েছে- মহানবী (সা.) যখন কোনো মৃত ব্যক্তির দাফনকাজ শেষ করতেন— তখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সাহাবাদের বলতেন, ‘তোমাদের ভাইয়ের জন্য তোমরা ক্ষমার দোয়া করো। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো- তিনি যেন তাকে ঈমানের ওপর দৃঢ় ও অবিচল রাখেন। তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২২১)
জানাজার নামাজ মৃতের অধিকার
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে—
এক. যখন কোনো মুসলমানের সঙ্গে দেখা হয় তখন সালাম দেবে। দুই. কোনো মুসলমান ডাকলে সাড়া দেবে। তিন. সে তোমার কাছে সত্ পরামর্শ চাইলে তুমি তাকে সত্ পরামর্শ দেবে। চার. কোনো মুসলমানের হাঁচি এলে হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে। পাঁচ. কোনো মুসলমান অসুস্থ হলে তার সেবা-শুশ্রূষা করবে। ছয়. কোনো মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় শরিক হবে।” (মুসলিম, হাদিস : ২১৬২)
পাপাচারী মুসলমানের জানাজা
ইসলাম মৃত মানুষের মর্যাদাও সমুন্নত রেখেছে। হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল দিয়ে, শুভ্র-সুন্দর পোশাক পরিধান করিয়ে, আতর-গোলাপ মাখিয়ে তাকে কবরস্থ করার নির্দেশ দিয়েছে। জানাজায় অংশগ্রহণ করে তার সপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার আদেশ দিয়েছে।
এমনকি পাপাচারী মুসলমান মৃত্যুবরণ করলেও তার জানাজা পড়তে হবে। তাই বেনামাজি, ঋণগ্রস্ত, আত্মহত্যাকারীর জানাজাও আদায় করতে হবে। তবে নেতৃস্থানীয়রা চাইলে পাপাচারীদের জানাজায় অংশগ্রহণ না করার সুযোগ রয়েছে। (ফতোয়া মাহমুদিয়া, খণ্ড : ৮, পৃষ্ঠা : ৬১১-৬২৫)
Advertisement 4
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
হানাফি মাজহাবে জানাজার নিয়ম:
প্রথম তকবিরের পরে: নামাজের সানা পড়া, “সোবাহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়াতাবারা কাছমুকা…”।
দ্বিতীয় তকবিরের পরে: দুরুদে ইব্রাহিম পড়া, “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়ালা আলি মুহাম্মদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিম…”।
তৃতীয় তকবিরের পর: নিচের দোয়াটা পড়া।
اَلَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا হে আল্লাহ আপনি মাফ করেন, আমাদের জীবিত আর মৃতদের
وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا যারা এখানে আছে, আর এখানে নেই তাদের
وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا ছোট আর বড়দের
وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا পুরুষ আর মহিলাদের
اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَه‘ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ হে আল্লাহ আমাদের মাঝে যাদের আপনি জীবিত রাখেন, তাদের ইসলামের উপর জীবিত রাখেন
وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَ الاِْيْمَانِ আর যাদের আপনি মৃত্যু দেন, তাদের ঈমানের সাথে মৃত্যু দেন
بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ-
বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
এর পর চতুর্থ তকবিরের পর আর কোনো কিছু না পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।
হাম্বলি মাজহাবে, সৌদি আরবে কাবা শরিফের ইমামরা যেভাবে পড়েন:
উপরের মত। শুধু পার্থক্য হলো:
প্রথম তকবিরের পর সানার বদলে সুরা ফাতেহা পড়তে হবে।
সালাম ফিরানোর সময় এক দিকে সালাম ফিরাতে হবে।
এবং দোয়ার সময় উল্লেখিত দোয়া ছাড়াও আরো অনেক দোয়া পড়েন।
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
জানাজার নামাজের ইমামতির নিয়ম
জানাজার নামাজ হলো ফরজে কেফায়া,মুসলমানের ছয়টি হকের মধ্যে একটি হক হলো কোন মুসলমান মারা গেলে তার জানাজায় শরিক হওয়া।
হাজারো মানুষ জানাজার নামাজ পড়তে আসেন আর একজন পড়াতে আসেন। যিনি পড়ান তিনি হলেন ঈমাম। আজকে ঈমাম হিসেবে জানাজার নামাজ পড়ানোর যেই নিয়ম সেটি সম্পর্কে কথা বলবো ইনশাআল্লাহ।
১. প্রথমে চেস্টা করবে যে যতটা সম্ভব জানাজা দিয়ে দাপন করে দিবে যেনো দেরী না হয়।
২. সকল মুসল্লীদের কাতার নিয়ে ইমাম সাহেব দাড়াবেন। সময় থাকলে কয়েকটি দ্বীনি কথা বলবেন যেনো মৃত্যুর কথা মানুষের স্বরন হয়।
৩. মৃত ব্যক্তির বুক বরাবর দাঁড়াবে।
৪. সবাইকে নামাজটি পড়ার নিয়ম বলে দিবে যেনো কারো ভুল না হয়।
Advertisement 2
৫. নামাজের নিয়ত বলে দিবে যারা আরবী পারে আরবি পড়বে সাথে বাংলায় নিয়ত ও বলে দিবে যেনো আরবি যারা পারে না তারা বাংলায় পড়তে পারে। নিয়তটি ২ রকমের হবে যখন আরবিতে বলবে। পূরুষের জন্যে এক রকম এবং মহিলাদের জন্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
আরবি নিয়তঃ
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
নিয়তের বাংলা উচ্চারণ: “নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকবীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।”
এখানে নিয়তে যখন পূরুষদের জন্যে হবে তখন ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ পড়তে হবে,
আর লাশ নারী/মেয়ে হলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলতে হবে।
বাংলা নিয়তঃ
জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া, চার তাকবিরের সহিত এই ইমামের পিছনে এই মাইয়্যেতের জন্যে দোয়া করিতেছি কেবলার তরফ আল্লাহু আকবর।
৬. এবার ইমাম নিজে কেবলা মুখী হয়ে মনে মনে নিয়ত করবে।
৭. আল্লাহু আকবর বলে তাকবির দিবে,মনে রাখতে হবে জানাজার নামাজ ৪ তাকবিরের সাথে আদায় করতে হয়।ইমাম জোরে জোরে আওয়াজ দিয়ে তাকবির দিবে প্রথম তাকবিরের সময় হাত উঠবে কিন্তু পরের তিনটি তাকবির দেওয়ার সময় (ঈদের নামাজের মত) হাত তুলবে না। হাত বেধেই রাখতে হবে।
৮. প্রথম তাকবিরের পরে সানা পড়বে।
سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
বাংলা উচ্চারণ:
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
৯. এরপর দ্বিতীয় তাকবির দেওয়ার পর দরুদ শরীফ পড়বে।
দরুদ শরীফ:
للَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদি ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
১০. তৃতীয় তাকবির দেওয়ার পর জানাজার নামাজের জন্যে যেই নির্দিষ্ট দোয়া রয়েছে সেটি পড়বে।
এখানে কয়েকটি বিষয় রয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক পূরুষ ও মহিলাদের জন্যে একটি দুয়ার,নাবালক ও নাবালিকাদের জন্যে আলাদা আলাদা দোয়া পড়বে হবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে দোয়া
اغْفِرْلحَيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الاْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا ارْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িইবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
নাবালক ছেলের জন্যে দোয়া
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَمُشَفَّعًا
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
নাবালিকা মেয়ের জন্যে দোয়া
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًاوَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَمُشَفَّعَة
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান।
১১. চতুর্থ তাকবির দেওয়ার পর ধীরে ধীরে সালাম ফিরিয়ে নিবে।
এভাবে আপনি একজন ইমাম হিসেবে নামাজের কাজটি সম্পূর্ণ করিতে পারবেন।
হাদিসে আছে জানাজার নামাজে উহুদ পরিমাণ সাওয়াব আদায় হয়, তাই সুযোগ পেলে এই নামাজ ছাড়া উচিত নয়। এছাড়া একজন প্রতিবেশী হিসেবে, একজন আত্নীয় হিসেবেও এ নামাজ আদায় করা মুসলমানের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও
Advertisement 5
আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ
আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড
Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !!
- ভাগে কোরবানির নিয়ম, অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করার নিয়ম, ভাগে কোরবানির যত বিধি বিধান
Advertisement 5
- কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব,আরও একবার জানুন কোরবানির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব
- ইসলামে কুরবানীর গুরুত্ব ও বিধান,ইসলামে কোরবানির যত ফজিলত গুরুত্ব ও শিক্ষা
- বৃষ্টির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, বৃষ্টির নামাজের পর আমল
- ইসতিসকার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, ইসতিসকার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত, ইসতিসকার নামাজের পর আমল
- বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান,বাসর রাতের নামাজ
Advertisement 3