ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর

ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর

প্রশ্ন সমাধান

Google Adsense Ads

ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর

ইজারা অর্থসংস্থানের সংজ্ঞা

ইজারা অর্থসংস্থান (Lease Financing) হলো একটি আর্থিক পদ্ধতি, যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো সম্পদ ব্যবহার করার অধিকার পায় বিনিময়ে নির্ধারিত ভাড়া বা কিস্তি পরিশোধ করে। সম্পদের মালিকানা ইজারা প্রদানকারী (লিজার) এর থাকে, আর ব্যবহারকারীকে (লিজি) সম্পদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়।


ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব

১. তহবিলের সহজলভ্যতা

  • ইজারা অর্থসংস্থানে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি সম্পদ কেনার জন্য বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের পরিবর্তে নিয়মিত কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করতে পারে।
  • এটি মূলধনের ঘাটতি দূর করে ব্যবসায় দ্রুত সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ দেয়।

২. নগদ প্রবাহ ব্যবস্থাপনার সুবিধা

  • ইজারা অর্থসংস্থানে বড় বিনিয়োগের পরিবর্তে ছোট ছোট কিস্তিতে অর্থ প্রদান করতে হয়, যা নগদ প্রবাহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।
  • ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো নগদ অর্থ অন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে।

৩. কর সুবিধা (Tax Benefits)

  • ইজারা অর্থসংস্থান একটি ব্যয়ের খাত হিসেবে বিবেচিত হয়, যা আয়কর প্রদানে সুবিধা প্রদান করে।
  • ইজারার মাধ্যমে সম্পদ ব্যবহার করা হলে প্রতিষ্ঠান করপোরেট কর কমাতে পারে।

৪. ঝুঁকি হ্রাস

  • ইজারা অর্থসংস্থানে সম্পদের মালিকানা ইজারা প্রদানকারীর থাকে।
  • সম্পদের ক্ষতি বা পুরাতন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ইজারা গ্রহীতার পরিবর্তে ইজারা প্রদানকারীর উপর বর্তায়।

৫. প্রযুক্তিগত উন্নতির সুযোগ

  • ইজারা অর্থসংস্থানে প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে পারে।
  • পুরাতন বা অপ্রচলিত সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করা সহজ হয়।

৬. আর্থিক ভারসাম্য উন্নয়ন

  • সম্পদ কেনার পরিবর্তে ইজারা নেওয়ায় ব্যালেন্স শিটে ঋণের পরিমাণ কম থাকে।
  • এটি প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থাকে সুষ্ঠু এবং ভারসাম্যপূর্ণ দেখায়।

৭. ঋণ সুবিধার প্রয়োজনীয়তা হ্রাস

  • ইজারা অর্থসংস্থানে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
  • এটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ নির্ভরশীলতা কমায়।

৮. দীর্ঘমেয়াদি ব্যয় বৃদ্ধি

  • ইজারার মাধ্যমে সম্পদ ব্যবহার করা হলেও, দীর্ঘমেয়াদে সম্পদের মালিকানা পাওয়া যায় না।
  • ইজারা চুক্তি সম্পন্ন হলে, প্রায়ই লিজি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় কারণ চূড়ান্ত মালিকানা তাদের থাকে না।

৯. লাভজনকতার উপর প্রভাব

  • নিয়মিত ইজারা কিস্তি পরিশোধের ফলে ব্যবসার লাভ কমে যেতে পারে।
  • উচ্চ ইজারা ব্যয় আর্থিক পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

১০. ইজারা চুক্তির সীমাবদ্ধতা

  • ইজারা চুক্তিতে সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, যা ব্যবসার কার্যক্রমে প্রভাব ফেলে।
  • ইজারার মেয়াদ শেষ হলে সম্পদ ইজারা প্রদানকারীকে ফেরত দিতে হয়।

ইজারা অর্থসংস্থানের সুবিধা ও অসুবিধার সংক্ষিপ্ত তুলনা

সুবিধা

  • নগদ প্রবাহ বজায় রাখা।
  • কর সুবিধা পাওয়া।
  • নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের সহজলভ্যতা।
  • ঝুঁকি হ্রাস।

অসুবিধা

  • দীর্ঘমেয়াদে খরচ বেশি।
  • সম্পদের মালিকানা অর্জন হয় না।
  • ইজারা চুক্তির সীমাবদ্ধতা।
  • কিস্তি পরিশোধে বিঘ্ন ঘটলে আর্থিক জরিমানা।

উপসংহার

ইজারা অর্থসংস্থান একটি কার্যকর অর্থায়ন পদ্ধতি, যা সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ দেয় আর্থিক চাপ ছাড়াই। এটি ঝুঁকি কমায় এবং নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়ায়। তবে, দীর্ঘমেয়াদে খরচ বৃদ্ধি এবং মালিকানা না পাওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনা করে ইজারা চুক্তি করা উচিত।

Google Adsense Ads

উপসংহার : ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ ইজারা অর্থসংস্থানের আর্থিক প্রভাব সমূহ আলোচনা কর

Google Adsense Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *