hsc diploma in commerce class 11 commercial geography science 12th week assignment solution 2021, hsc ডিপ্লোমা ইন কমার্স ১১শ শ্রেণির বাণিজ্যিক ভূগোল ১২তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান ২০২১

Google Adsense Ads

শ্রেণি: ১১শ / HSC ইন কমার্স -2021 বিষয়: বাণিজ্যিক ভূগোল এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 08 বিষয় কোডঃ 1717
বিভাগ: ভোকেশনাল শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ দেশের মানুষকে বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজন সুপরিকল্পিত বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাবিশ্লেষণ।

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • বাংলাদেশের বাণ্যিজ্যিক ভূগোল (বাংলাদেশের কৃষি)

নির্দেশনা :  

  • বন্যা সম্পর্কে ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে,
  • বন্যার কারণ সমূহ ব্যাখ্যা করতে হবে,
  • বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে হবে,
  • বন্যার প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে হবে।,

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

  • বন্যা সম্পর্কে ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে,

বন্যার সংজ্ঞার ব্যাপারে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন ধারণার প্রতিফলন ঘটে থাকে। এখানে কয়েক জনের সংজ্ঞা প্রদান করা হলোঃ

স্ট্রলারের মতে, “কোন নদী নালা ও নিম্নভূমির জল ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রবাহ দুকুল উপচে যদি পারিপার্শ্বিক ভূমি, বন, বসতি প্লাবিত করে তাহলে সার্বিকভাবে ঐ অবস্থাকে বন্যা বলা হয়।”

চাও এর মতে “বন্যা হলো ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পানি প্রবাহ যা নদীখাত দিয়ে উপচিয়ে পার্শ্ববর্তী ভূমি বা জনপদকে প্লাবিত করে।”

ব্লুম বলেন, কোনো একটি নদীর কতিপয় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নদীর জ্যামিতিক খাত অনুযায়ী অতিরিক্ত পানি নির্গমন যদি নদীখাতের উচ্চতা অতিক্রম পূর্বক উপচিয়ে প্রবাহের সৃষ্টি হয়ে বন্যা সংঘটিত হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • বন্যার কারণ সমূহ ব্যাখ্যা করতে হবে,

১) বন্যার প্রাকৃতিক কারণ:

বাংলাদেশের বন্যার প্রাকৃতিক কারণসমূহের মধ্যে জলবায়ুগত, ভূ-তাত্ত্বিকগত, সামুদ্রিক ইত্যাদি বুঝায়। যেমনঃ 

ক) বন্যার জলবায়ু সংক্রান্ত কারণ 

ক.১) অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের পানি: হিমালয় পর্বত ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরে অবস্থিত হওয়ায় মহাসাগরের দিক থেকে আগত গ্রীষ্মের মৌসুমী বায়ু এই সুউচ্চ ও সুদীর্ঘ পর্বত প্রাচীরে প্রতিহত করে। প্রচুর জলীয় বাষ্প বহনকারী এই বায়ু। হিমালয়ের পাদদেশে এবং বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা নদীর উপনদী গুলাের ধারণ অববাহিকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় বলে এসব নদীখাতের প্রচুর পানি বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা, নােয়াখালী জেলার বিভিন্ন নদী বন্যার সৃষ্টি করে। 

ক.২) অতিরিক্ত বরফগলা পানি: গ্রীষ্মের অধিক উত্তাপে হিমালয় পর্বত অঞ্চলে প্রচুর বরফ গলতে শুরু করে। বিভিন্ন সুরঙ্গ পথে এই পানি নেমে বড় বড় নদীখাতে এই সরবরাহ করে। বর্ষা ঋতু আবির্ভাবের আগেই এই পানি বাংলাদেশের নদীগুলোর মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। 

ক.৩) পুনঃপুনঃ নিম্নচাপ সৃষ্টি: ২১ মার্চ সূর্যের নিরক্ষরেখা অতিক্রমের পর উত্তর গোলার্ধে দ্রুত উষতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময় বঙ্গোপসাগরে পুনঃপুনঃ নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় ফলে বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। তাই ক্রমান্বয়ে পানি বিভিন্ন খাড়ী পথে ভূঅভ্যন্তরে প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি করে। 

ক.৪) উত্তরমুখী বায়ুপ্রবাহ: বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো নদী দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোসাগরে পানি সরবরাহ করে। গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায়ু দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত হবার ফলে নদীর পানি যত তাড়াতাড়ি সমুদ্রে নেমে যাওয়া উচিত তার চেয়ে অনেক কম হারে পানি নেমে যায়। কিন্তু নদীর পানি অধিক উত্তর দিক থেকে আসতে থাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। 

ক.৫) স্বল্প সময়ে অধিক বৃষ্টিপাত: ভারত, বাংলাদেশের মোট বৃষ্টিপাতের ৮০% জুন থেকে অক্টোবর পাঁচ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বাইরে ও দেশের অভ্যন্তরে স্বল্প সময় এ ধরনের বৃষ্টিপাত হওয়ায় এদেশের নদীগুলো গড়ে ৯৬ কোটি একর ফুট পানি প্রবাহিত হয় (হোসেন ও অন্যান্য ১৯৮৭)। এই অতিরিক্ত প্রবাহ বাংলাদেশের নদীগুলো নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়। 

খ) বন্যার ভূ-তাত্ত্বিক কারণ

খ.১) ক্রমাগত পলি সঞ্চয়: বাংলাদেশের নদীগুলোর পানি পলি মাটিতে সমৃদ্ধ। নরম মাটির উপর দিয়ে বয়ে আসা পানি সরন পয়োনালী ক্ষুদ্র স্রোতধারা প্রভৃতি প্রচুর পলি বয়ে এনে নদীর পানি ঘোলা করে তোলা যাতে বর্ষা ঋতুতে নদীগুলোর পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। ক্রমাগত পলি সঞ্চয়নের ফলে নদীখাত অনেকাংশে ভরাট হয়ে যায়। পরিনামে বন্যা সংঘটিত হয়। 

খ.২) মোহনায় বদ্বীপের সৃষ্টি: নদীর মোহনায় পলি জমে বদ্বীপের সৃষ্টি করে, তেমনি বিভিন্ন নদীর পলি সঞ্চিত হয়ে গঠিত বাংলাদেশে একটি বদ্বীপ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, পটুয়াখালী জেলার দক্ষিণে পলি সঞ্চিত হয়ে নতুন বদ্বীপ গড়ে তোলার ফলে উত্তর থেকে আগত বিরাট পানির চাপ এসে পড়ে যা এদেশের নদীগুলোতে যা এদেশের বন্যার অন্যতম কারণ। 

খ.৩) নদীখাতে চরের সৃষ্টি: প্রতিনিয়ত পলি সঞ্চিত হতে হতে বড় বড় নদীখাতে ছোট বড় বহু ধরনের চরের সৃষ্টি হওয়ায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়। ফলে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হতে পারে না এবং বন্যার সৃষ্টি হয়। 

খ.৪) নদীগুলোর স্বল্প নতিমাত্রা: যে কোন অঞ্চলের সমভূমিতে নদীগুলোর ঢালের পরিমাণ কম হয়। বাংলাদেশে মৃদু ঢালবিশিষ্ট সমভূমির দেশ। এদেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলো প্রতিবর্গ মাইলের ০.৬ ফুট ঢাল বিশিষ্ট। বর্ষায় নদীর অতিরিক্ত পানি দ্রুত সমুদ্রে নিষ্কাশিত হতে পারে না। এ জন্য নদী অববাহিকা অঞ্চলে সহজেই বন্যা দেখা যায়। 

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

খ. ৫) ভূ-আলোড়ন: ভূ-আলোড়নের ফলে অনেক নদীর তলদেশের ক্রমোন্নতি হয়েছে। ১৯৫০ সালে ভূমিকম্পের সময় এরূপ ক্রমোন্নতি সাধিত হয়েছে যমুনাসহ বেশ কয়েকটি নদীর। ফলে নদীর নিষ্কাশন ক্ষমতা আরও হ্রাস পেয়েছে। অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় দেশে বন্যার সৃষ্টি হয়। 

বন্যার ভূ-প্রাকৃতিক কারণ:

প্রধান নদীগুলোতে একই সময়ে সর্বোচ্চ প্রবাহের সৃষ্টি: গ্রীষ্মের বরফ গলা পানির চাপ নদীগুলোতে কমার আগেই ভারত থেকে প্রচুর পানি বিভিন্ন নদীর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং একই সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ফলে এ দেশের নদীগুলোতে পানির চাপ বেশি থাকে। সাধারণ গঙ্গার পানি যে সময়ে সর্বোচ্চ প্রবাহে পৌছায় তার কিছুদিন পর যমুনার পানি সর্বোচ্চ প্রবাহে পৌছায়। ফলে বন্যার প্রকোপ দেখা যায়। 

নিম্ন সমভূমি: বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে একটি নিম্নসমভূমি এলাকা। গড় সমুদ্র পৃষ্ঠের তুলনায় দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকার উচ্চতা ২৫ ফুটের কম। ফলে যে বছর বেশি বৃষ্টিপাত হয় সে বছর অধিকাংশ নিচু এলাকা থেকে পানি অপসারিত হতে পারে না। ভূমিরূপ যথেষ্ট সমতল হওয়ায় এ পানি চারিদিকে ছড়িয়ে বন্যার সৃষ্টি করে। 

ত্রুটিপূর্ণ নিষ্কাশন ব্যবস্থা: দেশের অধিকাংশ স্থানেই অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। অপরিকল্পিভাবে শহর নগর মহানগর বন্দর শিল্পাঞ্চল তৈরি ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করার ফলে দেশের নিষ্কাশন ব্যবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। বর্ষার পানি নেমে যাবার মতো পর্যাপ্ত খাল, শাখা নদী, পয়োনালী না থাকায় পানি এসে সাময়িক বন্যার সৃষ্টি করে। 

নিম্নাঞ্চলে বহুল পরিমাণে ভরাট: নিম্নাঞ্চলে বহুল পরিমাণে ভরাট হওয়ায় মাদারীপুরের বিল, পাবনার চলনবিল, সিলেটের হাওড়গুলো বড় নদীর অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণাগার হিসেবে কাজ করে। প্রাকৃতিক কারণে পলি সঞ্চিত হয়ে এসব নিচু এলাকা ভরাট হয়ে আসায় এসব নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে বর্ষার পানি বৃদ্ধিতে স্থানীয়ভাবে বন্যা দেখা দেয়।

বন্যার সামুদ্রিক কারণ 

১) জলোচ্ছাস: উপকূলবর্তী সমুদ্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সামুদ্রিক জলোচ্ছাস বন্যার একটি অন্যতম কারণ। জোয়ারের সময় এরূপ জলোচ্ছাসের পানি ১২-১৫ ফুট পর্যন্ত উচ্চ হয়ে উপকূলে আঘাত করে। ফলে উপকূলে সামুদ্রিক বন্যা সৃষ্টি করে। 

২.) সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি: বহুকাল যাবৎ অবিরত পলি সঞ্চয়ের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জোয়ারের পানি পূর্বের চেয়ে দেশের অনেক ভিতরে প্রবেশ করে নদীর পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা সাময়িক হ্রাস করে এবং বন্যার সৃষ্টি হয়। 

বন্যার সাংস্কৃতিক কারণ

১. নদীর গতিপথে অন্তরায় সৃষ্টি: পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করতে গিয়ে দেশের বহু জায়গায় নদীর গতিপথে অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছে। সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ করার জন্য এসব অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে বন্যার সৃষ্টি করে। 

২. বাধ ও বেরি বাঁধ তৈরি: কৃষি ভূমিতে পানি সেচের প্রয়োজনে গতি পথে বাঁধ তৈরি করা হয়। গঙ্গা নদীর ভারতীয় অংশে ৩৪ টি বেশি বড় আকারের এবং ১৭০ টি মাঝারী আকারের প্রকল্প চালু রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভারতীয় অংশে অনুরূপ বহু বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। যাহার উপর ফারাক্কা বাধ নির্মাণ শুষ্ক ঋতুতে পানি আটকে রেখে কৃষিক্ষেত্রে পানি সেচ করা হয় আবার বর্ষা মৌসুমে বাধের ফটক খুলে দেয়া হয়। ফলে অনেক সময় অনাকাঙ্খিত বন্যার উদ্ভব হয়ে থাকে। 

৩. পানি সংরক্ষণাগার: পানি নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের নামে বহুমুখী কৃত্রিম পানি সংরক্ষণাগার তৈরি বন্যা সৃষ্টির জন্য বহুলাংশে দায়ী। নদী ব্যবস্থার এসব নিয়ন্ত্রণ কর্মপন্থা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধার সৃষ্টি করে। 

৪. বন উৎপাটন: ভারত, নেপাল ও ভুটানের গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র পার্বত্য এলাকার বহু বনভূমি, শিল্প, গৃহনির্মাণ, জ্বালানী ইত্যাদি কর্মকান্ডের নিমিত্তে পার্বত্য ভূমিতে ব্যাপক বন উৎপাটন শুরুকরণ অর্থাৎ বনভূমি পরিস্কার করে বসতি, চারণভূমি, কৃষিভূমি তৈরি করা হয়েছে। বন নিধন করার ফলে পানির নিচে নেমে যাওয়ার মত পর্যাপ্ত খাল শাখানদী প্রভৃতি না থাকায় পানি জমে বন্যার সৃষ্টি করে। 

২. বন্যার মানব সৃষ্ট কারণ 

মানব সৃষ্ট কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো: 

নদীর গতিপথে অন্তরায় সৃষ্টি: বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীগুলো উত্তর দক্ষিণে লম্বালম্বি। আর আমাদের সড়ক ও রেলপথগুলো হলো পূর্ব পশ্চিমে লম্বালম্বি। তাই এই সড়ক ও রেলপথের জন্য নদ-নদীর পানি নিষ্কাশন বাধার সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে রেল ও সড়ক পথের উজান অংশে পানি ফুলে বন্যার সৃষ্টি করে। 

বাঁধ ও ভেরি বাঁধ নির্মাণ: বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীগুলো ভারত থেকে আগত আর ভারত এসকল নদ-নদীগুলোতে বাঁধ দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকিয়ে দিচ্ছে ফলে খরা দেখা দিচ্ছে। আবার বর্ষার সময় পানি ছেড়ে দিচ্ছে ফলে ভূমি প্লাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এই বাঁধ নির্মাণও বন্যার অন্যতম কারণ। গঙ্গ-ব্রহ্মপুত্র এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

জলাবদ্ধতা বা পানি সংরক্ষণাগার তৈরি: বাংলাদেশের অনেক স্থানে নিম্ন জলাশয় কিংবা নদীখাতে পানি আটকিয়ে পানি সংরক্ষণাগার তৈরি করে বন্যার সৃষ্টি করে। কারণ পানি সংরক্ষণাগার থাকায় পানি সঠিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে। 

বৃক্ষকর্তন: হিমালয় ও পাহাড়ীয়া অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বৃক্ষ কর্তন করে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ ব্যাপকভাবে বৃক্ষ কর্তনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে নদীর দূকুল ভেঙ্গে বন্যার সৃষ্টি করছে। নদীর দুপাড় ভেঙ্গে বন্যা গঠনে সহায়তা করছে। 

বন্যার প্রকৃতি

বন্যার প্রকৃতি বিভিন্নতা অনুসারে এদেশের বন্যাকে চার ভাগে বিভক্ত করা যায়ঃ 

১. আকস্মিক বন্যা: হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ী বৃষ্টিজনিত বন্যা প্রধানত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়ে থাকে। এই পানি দ্রুত নেমে এসে বাংলাদেশের পূর্বাংশের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত করে। অধিক গতিবেগ সম্পন্ন এলাকায় এ বন্যার স্থিতিকাল খুবই সংক্ষিপ্ত মাত্র ১-৩ দিনের মধ্যে। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, কুমিল্লা জেলার ব্যাপক অঞ্চল, ময়মনসিংহ জেলার পূর্বাংশ, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর প্রভৃতি স্থানে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। 

Google Adsense Ads

২. বৃষ্টিপাত জনিত বন্যা: জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ৩-১০ দিনের স্থানীয় বৃষ্টিপাতের ফলে নিষ্কাশন স্বল্পতার জন্য স্থানীয়ভাবে এক প্রকার বন্যা হয়। বৃষ্টিপ্রবাহ বন্যার পানির প্রধান উৎস। ঝড় বৃষ্টির অবস্থার ভিত্তিতে বাংলাদেশের যে কোন নিম্নাঞ্চলে এ ধরনের বন্যা হতে পারে। তবে রাজশাহী অঞ্চলের যমুনার পশ্চিম পার্শ্বে সংকীর্ন এলাকা, পদ্মা নদীর উত্তরে সংকীর্ন এলাকা এবং বরেন্দ্রভূমির ও উত্তরের পাদদেশীয় অঞ্চল সমগ্র রাজশাহী বিভাগ ও খুলনা বিভাগের মৃতপ্রায় বদ্বীপ অঞ্চল ব্যতীত কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার পশ্চিমাংশ এ ধরনের বন্যা জনিত অঞ্চল।

৩. ঘূর্ণিবার্তা জনিত বন্যা: এপ্রিল থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে স্বল্পকালীন স্থানীয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সাথে উপকূল এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে বন্যা হয়। ফলে সুন্দরবন অঞ্চল, পিরোজপুর, মাদারীপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল ও ভোলা জেলার দক্ষিণাংশ এবং চট্টগ্রাম জেলার পশ্চিমাংশে ফসল ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। 

৪. প্রধান নদী দ্বারা প্লাবিত বন্যা: দেশের তিনটি নদী ব্যবস্থার বিভিন্ন উচ্চতা সম্পন্ন প্লাবনভূমিগুলোতে মধ্য জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় বর্ষাকালে নদীর ভিতর উভয় পাশে বন্যা হয়। বাংলাদেশের মধ্যবর্তী অঞ্চল বিশেষ করে পদ্মা যমুনা এবং এদের শাখাগুলোর উভয় পাশে এ বন্যা ফসল ও জনমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে হবে,

বিংশ শতাব্দীতে ২০ টিরও বেশি বন্যা হয়েছে। এগুলো যথাক্রমে ১৯০০, ১৯০২, ১৯০৭, ১৯১৮, ১৯২২, ১৯৫৫, ১৯৫৬, ১৯৬২, ১৯৬৩, ১৯৬৮, ১৯৭০, ১৯৭১, ১৯৭৪, ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯২, ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০০ সালে বন্যা হয়েছে। এসব বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। ১৯৫৪ সালে দেশের প্রায় ২৭% এলাকা, ১৯৭৪ সালে ৩৪%, ১৯৮৮ সালে ৬৮%, ১৯৯৮ সালে ৭২%, ১৯৯৪ সালে ৬৮% এলাকা বন্যা কবলিত ছিল। বন্যা সাধারণত নিম্নলিখিত ক্ষতিসাধন করে থাকে। 

১. বন্যায় বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয় আর বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করে।

২. বন্যা কবলিত এলাকায় বিভিন্ন রোগব্যাধি দেখা দেয়।

৩. দেশের পশু সম্পদ ও হাঁসমুরগী প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।

৪. মাঠের উঠতি ফসল ডুবে যায় ফলে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য শস্য আমদানী করতে হয়।

৫. যাবতীয় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়।

৬ সড়ক পথ, রেল পথ, বিমান বন্দর ডুবে যাতায়াতের প্রচুর ক্ষতি হয়।

৭. সেতু কালভার্ট ধ্বংস হয়।

৮. শিল্প কারখানায় যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়।

৯. যােগাযােগ, যাতায়াত, ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।

১০. নদীখাতে ব্যাপক আকারে ভাঙ্গন শুরু হয়। ফলে বহু লোকের বসত ভিটা ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

১১. টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, যোগাযোগ, ডাক ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়।

১২. শহর নগর অঞ্চলে, পয়ােনালী ও গ্যাস লাইনের প্রচুর ক্ষতি হয়।

১৩. দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়।

১৪. বন্যার কারণে বহু মানুষ বাস্তভিটা পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়। 

১৫. বন্যার ফলে মানুষের পেশা বৃত্তির পরিবর্তন সাধিত হয়। 

১৬. বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। 

১৭. বিভিন্ন দূর্ঘটনায় বিশেষ করে সাপের কামড়ে মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। 

১৮. বন্যা পীড়িত লোকজন, সরকার, বিভিন্ন এনজিও ও সমাজের সম্পদশালী লোকদের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং অনেক সময় সমাজের মাস্তানদের শিকারী হয়ে অসম্মানজনক কার্যকলাপে নিযুক্ত হতে দেখা দেয়। 

১৯. দেশের রপ্তানী বাণিজ্যে মাত্মক ব্যাহত হয়। 

২০. দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। 

২১. উন্নয়নে পর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়। 

২২. ভিক্ষাবৃত্তি ও ভবঘুরে লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

বন্যার উপকারিতা 

১. বন্যার ফলে মাটিতে দস্তা ও তামজাতীয় সারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। 

২. বন্যা বাহিত পানিতে কৃষি ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। 

৩. বন্যার ফলে প্রচুর আবর্জনা ভেসে যায়। যার ফলে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন হয়। 

৪. মৎস্য সম্পদের বৃদ্ধি পায়। 

৫. উন্নয়নের নূতন চিন্তা ধারণার উন্মেষ ঘটে। 

৬. সুলভে পরিবহণের ব্যবস্থা হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

  • বন্যার প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে হবে।,

যেহেতু বন্যা এদেশে নিয়ত সঙ্গী এবং উপকারের চেয়ে অপকারিতা বেশি বিধায় একে নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক যাতে বন্যার ভয়াবহতার মাত্রা হ্রাস পায়। বর্তমানে বাংলাদেশে বন্যাকে ৩টি উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, যেমনঃ 

১) চিরাচরিত বা কাঠামোগত পদ্ধতি -এ পদ্ধতিতে নদী তীরবর্তী এলাকায় বা নদীর উপরে বাঁধ, লেভী সুইচং গেট ডাইক্যা, বন্যা প্রাচীর, কালভার্ট ইত্যাদি নির্মাণ করে নদীর প্রবাহ হ্রাসকরণ তথা বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

২) অবকাঠামোগগত পদ্ধতি যাতে বৃহৎ আকারের ও ব্যয় বহুল নির্মাণ কাজের পরিবর্তে এ কাজে সকলকে অবহিত করণ ও সচেতন করে তোলায় বন্যার সঙ্গে বসবাস উপযোগী ব্যবস্থাকে বুঝানো হয়ে থাকে আর 

(৩) বর্তমান পদ্ধতি যেটি উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ে অর্থাৎ বন্যার সঙ্গে সহবস্থান প্রশিক্ষণ প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও জনগণকে অন্যত্র স্থানান্তর করণ এবং প্রয়োজনে স্থায়ীভাবে কাঠামো নির্মাণ কর্ম কান্ডকে বুঝানো হয়ে থাকে। এতে সার্বিকভাবে বন্যার ভয়াবহতা ও ব্যাপক ধরনের ধ্বংসলীলার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। এর জন্য সুষ্ঠ নদী ও বন্যা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা একান্ত আবশ্যক।

বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি 

১) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণের ব্যবস্থা আধুনিকরণ অতি বন্যা প্রবণ এলাকায় মাঠ উচু করে বাড়ি ঘর তৈরি করতে হবে। 

(২) বন্যা প্রবণ এলাকায় সড়ক ও গ্রামের রাস্তাগুলো যথেষ্ট উচু ও প্রশস্ত করে তৈরি করতে হবে।

(৩) বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বন্যা প্রতিরোধমূলক বড় দালান নির্মাণ করতে হবে। 

(৪) পর্যাপ্ত পাকা উচু আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। 

(৫) বন্যা প্রবণ এলাকায় মজবুত সরকারী খাদ্য গুদাম, সরকারী ডিসপেন্সারী ও জরুরী ঔষধ সরবাহ কেন্দ্র স্থাপন, রেডিও টিভিতে জনগণের দ্রুত খবর প্রচার ব্যবস্থা, সতর্কী করণ ব্যবস্থা, বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় সাধন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রতিষ্ঠান স্থাপন, ভৌগোলিক ও ভৌগোলিক পরিবেশের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থার সাথে নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক সামাজিক ও মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে বন্যা ব্যবস্থাপনার ও পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করণ 

(৬) বন্যার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি ব্যবস্থা, বীজ বপন, শষ্যকর্তন প্রভৃতি সময়ের পরিবর্তন, বন্যা প্রবন এলাকায় কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তন সাধন করতে হবে। 

(৭) বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সামঞ্জস্য রেখে বোরো, আমন, আউশ ধানের উৎপাদনের ব্যবস্থাকরণ, শীত মৌসুমে রবিশস্য উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা, কৃষকদের ঘরবাড়ি, গবাদী পশু খাদ্যশস্য বীমা ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং সর্বশেষ প্রাকৃতিক দূর্যোগের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার কৌশল উদ্ভাবন করতে হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

Google Adsense Ads

Leave a Comment