‘Attested’-এর বাংলা পরিভাষা সত্যায়িত/ প্রত্যয়িত,কোনটি শুদ্ধ বানান? প্রােজ্জ্বল,‘জোছনা‘ অর্ধ-তৎসম শ্রেণির শব্দ,“জিজীবিষা‘ শব্দটি দিয়ে “বেঁচে থাকার ইচ্ছা” বােঝায়

প্রশ্ন সমাধান: ‘Attested’-এর বাংলা পরিভাষা সত্যায়িত/ প্রত্যয়িত,কোনটি শুদ্ধ বানান? প্রােজ্জ্বল,‘জোছনা‘ অর্ধ-তৎসম শ্রেণির শব্দ,“জিজীবিষা‘ শব্দটি দিয়ে “বেঁচে থাকার ইচ্ছা” বােঝায়,“সর্বাঙ্গীণ‘ শব্দের সঠিক প্রকৃতি-প্রত্যয় ,অন্যের রচনা থেকে চুরি করাকে বলা হয় কুম্ভিলকবৃত্তি

১০। ‘Attested’-এর বাংলা পরিভাষা সত্যায়িত/ প্রত্যয়িত।

বাংলা একাডেমি Englislr-Bangla Dictionary ও আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী Attested অর্থ সত্যায়িত/ প্রত্যয়িত। অন্যদিকে বাংলা একাডেমি প্রশাসনিক পরিভাষা গ্রন্থ অনুযায়ী Attested-এর বাংলা পরিভাষা সত্যায়িত ও Certified-এর পরিভাষা প্রত্যয়িত। এছাড়া ড. হায়াৎ মামুদের ভাষা-শিক্ষা গ্রন্থ অনুযায়ী Attested-এর বাংলা পরিভাষা প্রত্যয়িত । 

১১। কোনটি শুদ্ধ বানান? উত্তরঃ প্রােজ্জ্বল।

সংস্কৃত বিশেষণ পদ প্র + উজ্জ্বল = প্রােজ্জ্বল অর্থ বিশেষভাবে উজ্জ্বল।

১২।‘জোছনা‘ অর্ধ-তৎসম শ্রেণির শব্দ।

 বাংলা ভাষায় কিছু সংস্কৃত শব্দ কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয়। এগুলােকে বলে অর্ধ-তৎসম শব্দ। যেমন জোছনা, ছেরাদ্দ, গিন্নি, বােষ্টম, কুচ্ছিত-এ শব্দগুলাে যথাক্রমে সংস্কৃত জ্যোৎস্না,শ্রাদ্ধ, গৃহিণী, বৈষ্ণব, কুৎসিত শব্দ থেকে আগত। যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সােজাসুজি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ অপরিবর্তিত রয়েছে তাদেরকে তৎসম শব্দ বলে। যেমন- চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, ভবন, ধর্ম, পাত্র, মনুষ্য ইত্যাদি। বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতির কিছু কিছু উপাদান বাংলায় রক্ষিত আছে। এসব শব্দকে দেশি বলা হয় যেমন- কুলা, গঞ্জ, চোঙ্গা, টোপর, ডাব, ডাগর, ঢেঁকি ইত্যাদি। যেসব শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ ব্যবহারিক অর্থ একই রকম সেগুলােকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন—গায়ক, কর্তব্য, বাবুয়ানা, মসুর, দৌহিত্র, চিকামারা ইত্যাদি।

১৩।“জিজীবিষা‘ শব্দটি দিয়ে “বেঁচে থাকার ইচ্ছা” বােঝায়

এককথায় প্রকাশ : বেঁচে থাকার ইচ্ছা—জিজীবিষা;

জয়ের ইচ্ছা—জিগীষা। 

হনন (হত্যা) করার ইচ্ছা- জিঘাংসা। 

১৪।“সর্বাঙ্গীণ‘ শব্দের সঠিক প্রকৃতি-প্রত্যয় হলো সর্বাঙ্গ+ঈন্। ঈন্ প্রত্যয়যােগে গঠিত শব্দ – সর্বাঙ্গ + ঈন্ = সর্বাঙ্গীণ, কুল + ঈন্= কুলীন, সমকাল + ঈন্= সমকালীন, সর্বজন + ঈন্= সর্বজনীন। 

১৫। অন্যের রচনা থেকে চুরি করাকে বলা হয় কুম্ভিলকবৃত্তি। যে ব্যক্তি অন্যের রচনার ভাব বা ভাষা নিজের নামে চালায় তাকে কুম্ভিলক বলে। কুম্ভিলক-এর ইংরেজি পরিভাষা plagiarist। তাই অন্যের রচনা থেকে চুরি করাকে তাই এক কথায় বলে কুম্ভিলকবৃত্তি। 


আরো ও সাজেশন:-


১৬।
“ঊর্ণনাভ’ শব্দটি দিয়ে বুঝায় মাকড়সা।

“ঊর্ণনাভ’ সংস্কৃত শব্দ, বিশেষ পদ, অর্থ মাকড়সা।“উর্ণানাভ যে সূত্র দিয়া জাল প্রস্তুত করে …।‘ – অক্ষয়কুমার দত্ত। টিকটিকি শব্দটি আলংকারিক অর্থে গােয়েন্দা বােঝায়। আরশােলার প্রতিশব্দ তেলাপােকা। বল্মীক অর্থ উইপােকা।

১৭। চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্মমতের কথা আছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের তত্ত্বকথা বিধৃত হয়েছে। চর্যাপদের মাধ্যমে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যের গােপন তত্ত্বদর্শন ও ধর্মচর্চাকে বাহ্যিক প্রতীকের সাহায্যে ব্যক্ত করেছেন। বৌদ্ধধর্মের মহাযান শাখা কালক্রমে যেসব উপশাখায় বিভক্ত হয়েছিল তারই বজ্রযানের সাধনপ্রণালী ও তত্ত্ব এতে বিধৃত করা হয়েছে। 

১৮। উল্লিখিতদের মধ্যে কে প্রাচীন যুগের কবি নন

কাহ্নপাদ, লুইপাদ, শান্তিপাদ, রমনীপাদ তথ্যপ্রদত্ত অপশন অনুযায়ী প্রাচীন যুগের কবি নন

রমনীপাদ। কাহ্নপাদ, লুইপাদ ও শান্তিপদ তিনজনই প্রাচীন যুগের কবি। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন চর্যাপদের প্রথম কবি লুইপাদ এবং সবচেয়ে বেশি পদ (১৩টি) রচনা

করেন কাহ্নপাদ। শান্তিপাদও দুটি পদ রচনা করেন। 

১৯। উল্লিখিতদের কোন রচনাটি পুঁথি সাহিত্যের অন্তর্গত নয়?

ক) ময়মনসিংহ গীতিকা খ) ইউসুফ জুলেখা গ) পদ্মাবতী ঘ) লাইলী মজনু 

বাংলাদেশে লােকগীতিকাগুলােকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

যথা ১. নাথগীতিকা

২. ময়মনসিংহ গীতিকা ও

৩. পূর্ববঙ্গ গীতিকা। ময়মনসিংহ গীতিকা‘র পালাগুলাে সংগ্রহ করেন চন্দ্রকুমার দে এবং তা সম্পাদনা করেন ড. দীনেশচন্দ্র সেন।

পুথি সাহিত্যের অন্তত “ইউসুফ জোলেখা”, “পদ্মাবতী” ও “লাইলী মজনু” কাব্যের রচয়িতা যথাক্রমে ফকির গরীবুল্লাহ, আলাওল ও দৌলত উজির বাহরাম খান। উল্লেখ্য, ইউসুফ জোলেখা‘ নামে শাহ মুহম্মদ সগীর ও আবদুল হাকিম কাব্য রচনা করেন। 

২০। বৃন্দাবন দাস জীবনীকাব্য রচনার জন্য বিখ্যাত। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের গতানুগতিক ধারায় জীবনী সাহিত্য এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। জীবনী সাহিত্যের রচয়িতাগণের উদ্দেশ্য ছিল চৈতন্যদেবের মহান জীবনকাহিনি বর্ণনার মাধ্যমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের গৌরব প্রতিষ্ঠা করা। বাংলা সাহিত্যে জীবনীকাব্য রচনার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন বৃন্দাবন দাস। তিনি বাংলা ভাষায় শ্রীচৈতন্যের প্রথম জীবনীকাব্য ‘শ্রীচৈতন্যভাগবত‘ রচনা করেন। পুঁথি সাহিত্যের প্রথম সার্থক ও জনপ্রিয় কবি ফকির গরীবুল্লাহ। মনসামঙ্গলের অন্যতম কবি বিপ্রদাস পিপিলাই। তার রচিত কাব্য মনসাবিজয়‘। বৃন্দাবন দাস ছাড়াও নরহরি সরকার, রঘুনাথ দাস, মুরারি গুপ্ত, লােচনদাস, কৃষ্ণদাস কবিরাজ প্রমুখ কবি জীবনীকাব্য রচনায় উল্লেখযােগ্য অবদান রাখেন। 

২১। বৈষ্ণব পদাবলির সঙ্গে ব্রজবুলি ভাষা সম্পর্কিত? মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বৈষ্ণব পদাবলি। বৈষ্ণব পদাবলির অধিকাংশ পদ রচিত হয়েছে ব্রজবুলি ভাষায়। ‘ব্রজবুলি বাংলা ও মৈথিলি ভাষার মিশ্রণে এক প্রকার কৃত্রিম কবিভাষা। এ ভাষার স্রষ্টা বিদ্যাপতি। চর্যাপদের সাথে সম্পর্কিত ভাষা সন্ধ্যাভাষা। 

২২। বাংলা আধুনিক উপন্যাস-এর প্রবর্তক ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ইংরেজি নভেল (Novel) শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ উপন্যাস। বাংলা আধুনিক যুগের (১৮০১-বর্তমান) অন্যতম সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচ্য হলাে উপন্যাস। বাংলা উপন্যাস রচনায় প্রথম প্রচেষ্টা চালান ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় । অবাঙালি হ্যানা ক্যাথারিন ম্যালেন্স কর্তৃক রচিত ১৮৫২ সালে প্রথম লক্ষণাক্রান্ত বাংলা উপন্যাস‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ‘। বাঙালি ঔপন্যাসিক প্যারীচাঁদ মিত্র কর্তৃক ১৮৫৮ সালে রচিত উপন্যাস “আলালের ঘরের দুলাল‘ উপন্যাসটি প্রথম বাংলা উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত। সাধু ও কথ্য ভাষার মিশ্রণে আলালী ভাষায় তিনি এ উপন্যাস রচনা করেন। এ উপন্যাসই বাঙালি পাঠক সমাজে ততােটা সার্থক হতে পারেনি। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলা উপন্যাসের সুচনায় সামাজিক কাহিনির প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। তবে‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ‘ উপন্যাসে মূলত উঠে আসে খ্রিস্ট ধর্মীয় উপাখ্যান। সে কারণে রচনাকর্মটি সার্থক। উপন্যাসের মর্যাদা পায়নি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বহুমাত্রিক বিষয় নিয়ে মােট ১৪টি উপন্যাস রচনা করে বাংলা সাহিত্যে উপন্যাস শাখার ভিত মজবুত করেন। তার রচিত প্রথম উপন্যাস ইংরেজি ভাষায় লেখা ‘Rajmohon’s Wife’. তবে ১৮৬৫ সালে বাংলায় রচিত দুর্গেশনন্দিনী‘ উপন্যাসটি বাংলা উপন্যাসের সবচেয়ে সার্থক উপন্যাস হিসেবে সাহিত্যবােদ্ধারা মেনে নেন।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment