৯ম-১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম অধ্যায় হিলিয়ামের উল্লেখ আছে

হিলিয়াম (Helium) একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন ও স্বাদহীন নিষ্ক্রিয় গ্যাস। He প্রতীকের এই মৌলটি পর্যায় সারণির দ্বিতীয়তে অবস্থিত। ভরের দিক দিয়ে এটি হাইড্রোজেনের পর সবচেয়ে হালকা মৌলিক পদার্থ। এর পারমাণবিক সংখ্যা ২।

১৮৬৮ সালে একটি সূর্যগ্রহণের সময় ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী পিয়েরে জনসেন সূর্যের বর্ণালি পরীক্ষা করার সময় হিলিয়াম আবিষ্কার করেন। ব্রিটিশ রসায়নবিদ স্যার এডওয়ার্ড ফ্র্যাংকল্যান্ড এবং স্যার জোসেফ নরম্যান লকইয়ার এটির নাম দেন হিলিয়াম। হিলিয়াম শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ হিলিয়াস থেকে, যার অর্থ সূর্য। প্রাচীন গ্রিকরা সূর্যকে দেবতা বলে মনে করত এবং সূর্যকে হিলিয়াস বলে ডাকত।

হিলিয়াম অণু এক পরমাণুবিশিষ্ট। সব গ্যাসের মধ্যে একে তরল করা সবচেয়ে কঠিন। স্বাভাবিক বায়ুচাপে একে কঠিন অবস্থায় রূপান্তর করা অসম্ভব। এটি মাইনাস ২৭২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ২৬ একক বায়ুমণ্ডলীয় চাপেরও বেশি চাপে জমে কঠিন হয়। এর ঘনত্ব ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও একক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ০.১৬৬৪ গ্রাম/লিটার এবং আণবিক ভর ৪.০০২৬।

হাইড্রোজেনের পরেই হিলিয়াম মহাবিশ্বের সবচেয়ে সহজলভ্য মৌল হলেও পৃথিবীতে এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। প্রাকৃতিক গ্যাস হিলিয়ামের প্রধান বাণিজ্যিক উৎস। ভূগর্ভস্থে প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে মিশ্র অবস্থায় একে পাওয়া যায় এবং এতে প্রায় ০.৪ শতাংশ হারে হিলিয়াম থাকে। অত্যন্ত হালকা বলে নিঃসরণের পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে না রাখা হলে এই গ্যাসটিকে ধরে রাখা যায় না।

অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো হিলিয়ামও রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়। এর একমাত্র ইলেকট্রন খোলসটি ইলেকট্রনে পূর্ণ থাকে। ফলে অন্যান্য রাসায়নিক মৌলের সঙ্গে এর বিক্রিয়া হওয়া অত্যন্ত দুরূহ। বিক্রিয়া ঘটলেও উৎপন্ন যৌগগুলো অস্থায়ী প্রকৃতির হয়ে থাকে।

নিজস্ব কিছু গুণের কারণে হিলিয়াম বেশ কিছু দরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়। হালকা গ্যাস বলে আবহাওয়া পরীক্ষার জন্য যে বেলুন আকাশে ওড়ানো হয়, তার ভেতর ব্যবহার করা হয় হিলিয়াম গ্যাস।

হাঁপানি রোগীদের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়। হিলিয়াম নিঃশ্বাসের সঙ্গে নিলে হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘব হয়। জলে লম্বা ডুব দিয়ে উঠে আসার পর ডুবুরিকে চাঙ্গা করে তোলার জন্য এর দরকার পড়ে। এ ছাড়া লেজার আলোকরশ্মি তৈরি করতে নিয়ন গ্যাসের সঙ্গে হিলিয়াম ব্যবহৃত হয়।

নিয়োগ পরিক্ষা

1 thought on “৯ম-১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম অধ্যায় হিলিয়ামের উল্লেখ আছে”

Leave a Comment