স্থানীয় সরকারের প্রধান সমস্যাগুলো কী? আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের সমস্যাবলি আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের প্রধান প্রধান বাধাসমূহ আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের প্রতিবন্ধকতা বর্ণনা দাও

প্রশ্ন সমাধান: স্থানীয় সরকারের প্রধান সমস্যাগুলো কী? আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের সমস্যাবলি আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের প্রধান প্রধান বাধাসমূহ আলোচনা কর,স্থানীয় সরকারের প্রতিবন্ধকতা বর্ণনা দাও,স্থানীয় সরকারের অন্তরায়সমূহ আলোকপাত কর

ভূমিকা : আধুনিক সরকার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে একে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হতো। পূর্বে কোনো রাজা বা মহারানি সমগ্র দেশকে একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসন যন্ত্রের সাহায্যে দোর্দণ্ড প্রতাপের সাথে শাসন করত। তখন দেশে কেন্দ্রীয় সরকার ছিল সকল ক্ষমতার উৎস। কিন্তু গণতন্ত্রের যুগে সেসব দেশে স্থানীয় সরকারের তেমন কোনো গুরুত্ব থাকে না। তাই স্থানীয় সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধানকল্পে স্থানীয় সরকারের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে ।


স্থানীয় সরকারের সমস্যাসমূহ : যদিও বিশ্ব জুড়ে স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন ব্যবস্থার গুরুত্ব ও তাৎপর্য দিন দিনই বেড়ে চলেছে । প্রতিটি দেশেই স্থানীয় প্রশাসনকে তাদের দায়দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষাগত মান, রাজনৈতিক চেতনা, ভৌগোলিক অবস্থা প্রভৃতির পেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সরকারের সমস্যা বিভিন্নমুখী হয়ে থাকে। 

আলোচনার সুবিধার্থে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলোকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। নিম্নে সেগুলো ব্যাখ্যা করা হলো :


ক. স্থানীয় সরকারের উপবিভাগীয় এবং সমস্যাসমূহ।
খ. দক্ষ কর্মচারীর সমস্যা।
গ. অভ্যন্তরীণ সমস্যা


আরো ও সাজেশন:-

ক. স্থানীয় সরকারের উপবিভাগ এবং এর সংখ্যাজনিত সমস্যা : বর্তমানে কোনো রাষ্ট্রের পক্ষেই তার কেন্দ্র থেকে. সমগ্র প্রশাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেক প্রশাসন ব্যবস্থায় এমন কতকগুলো উপবিভাগ অথবা স্থানীয় শাখা থাকে যাদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রশাসন ব্যবস্থার দায়িত্ব হ্রাস করা হয়। অথবা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের নীতি গ্রহণ হয়। এক্ষেত্রে অতি কেন্দ্রীকরণ অথবা বিকেন্দ্রীকরণ নীতি প্রশাসন ব্যবস্থার মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে। সাধারণত দুটি নীতির।
মাধ্যমে কেন্দ্র তার উপবিভাগগুলোর উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করে।


১. ক্ষমতা বিভাজন নীতি (Principle of distribution of power.)
২. বিকেন্দ্রীকরণ নীতি (Principle of Decentralization)


১. ক্ষমতা বিভাজন নীতি (Principle of distribution of power) : এ নীতির ভিত্তিতে প্রশাসন যন্ত্রকে। কতকগুলো শাখা বা কর্মক্ষেত্রে বিভক্ত করা হয়। এগুলো অনেক সময় একক অথবা পৃথক আবার যৌথ বা পদসোপানের ভিত্তিতে বিভক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বা মৌলিক সিদ্ধান্তসমূহ সাধারণত স্থানীয়ভাবে গৃহীত হয় না, কেন্দ্রের হাস্তে মূল ক্ষমতা সংরক্ষিত থাকে। স্থানীয় কর্মচারীরা কেন্দ্রের অধীনস্থ থাকে এবং কেন্দ্রের আদেশ মেনে চলতে বাধ্য থাকে।


২. বিকেন্দ্রীকরণ নীতি (Principle of decentralization) : এ নীতি অনুসারে প্রশাসনের স্থানীয় শাখাসমূহ কতিপয় বিশেষ ক্ষেত্রে নিজস্ব বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী কার্যাদি সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। এদের কাজকর্মে কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণত কোনপ্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় স্থানীয় শাখাগুলোর যথেষ্ট স্বাধীনতা থাকে । এগুলো কেন্দ্রীয় আমলাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


খ. দক্ষ কর্মচারীর সমস্যা : সরকারি কর্মকাণ্ড দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ করাও একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। স্থানীয় সরকারের জন্য দক্ষ কর্মচারী পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। শহুরে জীবনযাত্রার উন্নত মান, অধিক সামাজিক মান-মর্যাদা, উচ্চ বেতন, পদোন্নতির অধিক সুযোগ সুবিধা, সন্তানাদির শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি বিদ্যমান। তাই শিক্ষিত ও প্রতিভাবান যুবক এবং সরকারি কর্মকর্তারা গ্রামীণ এলাকার প্রতি উদাসীন ও নিরাসক্ত হয়ে পড়ে। তারা শহুরে জীবন তথা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি চাকরি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকাংশ অফিস আদালত শহরে অবস্থিত।

নীতিই প্রতিষ্ঠিত থাকুক না কেন, আধুনিককালে অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে প্রশাসনিক ব্যবস্থার নিম্নপর্যায়ের শাখাসমূহের গুরুত্ব অত্যধিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবশ্যই এর কারণও রয়েছে অনেক। প্রথমত, প্রাকৃতিক কারণেই নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানকল্পে নতুন নতুন বিভাগ বা ব্যুরো গঠনের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন বিভাগের প্রধানগণ যেমন- গভর্নর, মেয়র, কমিশনার প্রমুখ তাদের সমস্যাদি নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রধান প্রশাসকের বরাবর উপস্থিত হচ্ছে। ফলে প্রধান প্রশাসনের পক্ষে প্রশাসনের সকল দিকে নজর রাখা দুরূহ হয়ে পড়েছে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

 দ্বিতীয়ত, প্রশাসনিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তারা বৃহৎ বিভাগ অপেক্ষা ক্ষুদ্রতম বিভাগগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকে। পুনর্গঠন ব্যবস্থার সুপারিশ অনুযায়ী দেখা যায়, প্রধান প্রশাসককে কোনক্রমেই দশটি বিভাগের অধিক অথবা পাঁচটি বিভাগের কম তদারক করা অনুচিত। একজন মন্ত্রীকে তার নিজস্ব মন্ত্রণালয় পরিচালনা করলে চলবে না, বরং তাকে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রিবৃন্দে সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন মন্ত্রিবৃন্দে সমস্যা ও প্রগতি সম্পর্কে প্রধান প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে এটা প্রায় অসম্ভব কেননা, বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় সংস্থা গঠিত হয়েছে। তৃতীয়ত, স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে স্টাফ সার্ভিসও এক বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করে । স্টাফ সার্ভিসকে লাইন সার্ভিস থেকে আলাদা করা উচিত।

লাইন সার্ভিস বলতে সেসব সার্ভিসকে বুঝায় যেগুলো সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে জনগণের সমস্যা সমাধানে নিয়োজিত থাকে । বস্তুত স্থানীয় সরকারের অস্তিত্বের জন্য লাইন সার্ভিসের গুরুত্ব অপরিসীম । উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজ সেবা, জননিরাপত্তা, অগ্নি নির্বাপণ প্রভৃতি কাজগুলো লাইন সার্ভিস ।

পক্ষান্তরে, যেসব প্রশাসনিক ব্যবস্থা সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে জনগণের সাথে জড়িত নয়, অথচ যেগুলো প্রধান প্রশাসনকে সাহায্য করে তাকে স্টাফ সার্ভিস বলে। উদাহরণস্বরূপ, কর্মচারী নিয়োগ, আইন প্রয়োগ, গবেষণা ইত্যাদি স্টাফ সার্ভিস।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সরকারের তৃণমূল বা মাঠ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা হচ্ছে স্থানীয় সরকার। স্থানীয় সরকার প্রধানত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ও পরিচালিত। স্থানীয় সরকারের নানাবিধ সমস্যা রয়েছে যেগুলো নিরাময় বা সমাধানযোগ্য।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment