সূরা যিল্‌যাল সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল যিল্‌যাল আলমল ও ফজিলত

আজকের বিষয়: সূরা যিল্‌যাল সকল তথ্য আল কোরআন ও হাদিসের আলোতে,পৃথিবীর জানা অজানা কিছু তথ্য আল যিল্‌যাল আলমল ও ফজিলত

নামকরণ :

প্রথম আয়াতে যিলযালাহা ( আবরী —————) শব্দ থেকে এই নামকরণ করা হয়েছে।

নাযিলের সময়– কাল

এর মক্কী বা মাদানী হবার ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। ইবনে মাসউদ ( রা) , আতা , জাবের ও মুজাহিদ বলেন , এটি মক্কী সূরা। ইবনে আব্বাসের ( রা) একটি উক্তিও এর সমর্থন করে । অন্যদিকে কাতাদাহ ও মুকাতিল বলেন , এটি মাদানী সূরা । এর মাদানী হবার সমর্থনে ইবনে আব্বাসেরও ( রা) আর একটি উক্তি পাওয়া যায়। ইবনে আবী হাতেম হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে যে রেওয়ায়াতটি উদ্ধৃত করেছেন তার থেকেও এর মাদানী হবার সমর্থনে প্রমাণ পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে : যখন ( আরবী ———————————–) আয়াতটি নাযিল হয়

তখন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলালাম : হে আল্লাহর রসূল ! আমি কি আমার আমল দেখবো ? তিনি জবাব দিলেন , হাঁ। আমি বললাম , এই বড় বড় গোনাহগুলোও দেখবো ? জবাব দিলেন হাঁ ।

বললাম আর এই ছোট ছোট গোনাহগুলো ও ? জবাব দিলেন হাঁ। একথা শুনে আমি বললাম , তাহলে তো আমি মারা পড়েছি। তিনি বললেন , আনন্দিত হও , হে আবু সাঈদ কারণ প্রত্যেক নেকী তার নিজের মতো দশটি নেকীর সমান হবে। এই হাদীস থেকে এই সূরাটির মাদানী হবার ভিত্তিমূলক প্রমাণ পাওয়া যায়। সেটি হচ্ছে হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রা) মদীনার অধিবাসী ছিলেন । ওহোদ যুদ্ধের পরে তিনি বালেগ হন। তাই যদি তাঁর উপস্থিতিতে নাযিল হয়ে থাকে তাহলে এর মাদানী হওয়া উচিত। কিন্তু আয়াত ও সূরার শানেনুযুল বর্ণনা সম্পর্কে সাহাবী ও তাবেঈগণের যে পদ্ধতি ছিল তা ইতিপূর্বে সূরা দাহর এর ভূমিকায় আমি বর্ণনা করে এসেছি। তা থেকে জানা যায় , কোন আয়াত সম্পর্কে সাহাবীর একথা বলা যে , এ আয়াতটি উমুক ঘটনা প্রসংগে নাযিল হয়েছিল , সংশ্লিষ্ট আয়াতটির ঐ সময় নাযল হওয়ার চূড়ান্ত প্রমাণ নয়। হতে পারে হযরত আবু সাঈদ জ্ঞান হবার পর যখন সর্বপ্রথম আয়াতটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামরে মুখ থেকে শুনেন তখন তার শেষ অংশ তাঁর মনে ভীতির সঞ্চার করে থাকবে এবং তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ওপরে বর্ণিত প্রশ্নগুলো করে থাকবেন।

আর এই ঘটনাটিকে তিনি এমন ভাবে বর্ণনা করে থাকবেন যাতে মনে হবে এই আয়াতটি যখন নাযিল হয় তখন তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই প্রশ্নগুলো করেন। যদি এই হাদীসটি সামনে না থাকে তাহলে কুরআনকে বুঝে অধ্যয়নকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই অনুভব করবেন এটি একটি মক্কী সূরা। বরং এর বক্তব্য বিষয় ও বর্ণনাভংগী থেকে অনুভূত হবে , এটি মক্কায় প্রাথমিক যুগে এমন সময় নাযিল হয় যখন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও হৃদয়গ্রাহী পদ্ধতিতে ইসলামের বুনিয়াদি আকিদা – বিশ্বাস মানুষের সামনে পেশ করা হচ্ছিল।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

এর বিষয়বস্তু মৃত্যুর পরবর্তী জীবন এবং সেখানে দুনিয়ায় করা সমস্ত কাজের হিসেব মানুষের সামনে এসে যাওয়া । সর্বপ্রথম তিনটি ছোট ছোট বাক্যে বলা হয়েছে , মৃত্যুর পর মানুষের দ্বিতীয় জীবনের সূত্রপাত কিভাবে হবে এবং মানুষের জন্য তা হবে কেমন বিস্ময়কর। তারপর দু’টি বাক্যে বলা হয়েছে , মানুষ এই পৃথিবীর বুকে অবস্থান করে নিশ্চিন্তে সব রকমের কাজ করে গেছে । সে কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি যে , এই নিষ্প্রান জিনিস কোনদিন তার কাজকর্মের পক্ষে – বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আল্লাহর হুকুমে সেদিন সে কথা বলতে থাকবে। প্রত্যেকটি লোকের ব্যাপারে সে বলবে , কোন সময় কোথায় সে কি কাজ করেছিল । তারপর বলা হয়েছে , সেদিন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষের নিজেদের কবর থেকে বের হয়ে দলে দলে আসতে থাকবে । তাদের কর্মকাণ্ড তাদেরকে দেখানো হবে। এমন পূর্ণাংগ ও বিস্তারিতভাবে এই কর্মকাণ্ড পেশ করা হবে যে , সামান্য বালুকণা পরিমাণ নেকী বা পাপও সামনে এসে যাবে।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ  

উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম  

অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا99.1  

উচ্চারণ ৯৯.১। ইযা-যুল্যিলাতিল্ র্আদ্বু যিল্যা-লাহা-।  

অনুবাদ ৯৯.১ যখন প্রচন্ড- কম্পনে যমীন প্রকম্পিত হবে

وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا99.2  

উচ্চারণ ৯৯.২। অআখ্রজ্বাতিল্ আরদু আছ্ক্ব-লাহা-।  

অনুবাদ ৯৯.২ আর যমীন তার বোঝা বের করে দেবে,

وَقَالَ الْإِنْسَانُ مَا لَهَا99.3  

উচ্চারণ ৯৯.৩। অক্ব-লাল্ ইনসা-নু মা- লাহা-।  

অনুবাদ ৯৯.৩ আর মানুষ বলবে, ‘এর কী হল?’

يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا99.4  

উচ্চারণ ৯৯.৪। ইয়াওমায়িযিন্ তুহাদ্দিছু আখ্বা-রহা-।  

অনুবাদ ৯৯.৪ সেদিন যমীন তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,

 بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا99.5  

উচ্চারণ ৯৯.৫। বিআন্না রব্বাকা আওহা-লাহা-।  

অনুবাদ ৯৯.৫ যেহেতু তোমার রব তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

 يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ99.6  

উচ্চারণ ৯৯.৬। ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াছ্দুরু ন্না-সু আশ্তা-তাল্ লিইয়ুরাও আ‘মা-লাহুম্।  

অনুবাদ ৯৯.৬ সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে বের হয়ে আসবে যাতে দেখানো যায় তাদেরকে তাদের নিজদের কৃতকর্ম।

 فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ99.7  

উচ্চারণ ৯৯.৭। ফামাইঁ ইয়া’মাল্ মিছ্ক্ব-লা র্যারতিন্ খইরঁই ইয়ারহ্।  

অনুবাদ ৯৯.৭ অতএব, কেউ অণু পরিমাণ ভালকাজ করলে তা সে দেখবে,

وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ 99.8  

উচ্চারণ ৯৯.৮। অমাইঁ ইয়া’মাল্ মিছ্ক্ব-লা র্যারতিন্ র্শারইঁ ইয়ারহ্  

অনুবাদ ৯৯.৮ আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করলে তাও সে দেখবে।

Leave a Comment