শেয়ার তাক লাগানো পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
শেয়ার তাক লাগানো (Share Splitting) হলো একটি কোম্পানি কর্তৃক তার বিদ্যমান শেয়ারগুলিকে ভাগ করে বেশি সংখ্যক শেয়ারে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় শেয়ারের মুখ্যমূল্য (Face Value বা Par Value) কমিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু শেয়ারহোল্ডারদের মোট বিনিয়োগের মূল্য অপরিবর্তিত থাকে। শেয়ার তাক লাগানোর মূল উদ্দেশ্য হলো শেয়ারের বাজার মূল্য হ্রাস করে বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয় করা সহজ করা এবং শেয়ারের লিকুইডিটি (Liquidity) বৃদ্ধি করা।
শেয়ার তাক লাগানোর উদ্দেশ্য:
- শেয়ারের মূল্য হ্রাস: শেয়ার তাক লাগানোর মাধ্যমে শেয়ারের বাজার মূল্য হ্রাস পায়, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয় করা সহজ করে।
- লিকুইডিটি বৃদ্ধি: শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বাজারে শেয়ারের লেনদেন বৃদ্ধি পায়, যা শেয়ারের লিকুইডিটি বৃদ্ধি করে।
- বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ: শেয়ারের মূল্য হ্রাস পেলে ছোট বিনিয়োগকারীরা সহজে শেয়ার ক্রয় করতে পারেন, যা কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বৃদ্ধি করে।
- বাজার মূল্য স্থিতিশীলতা: শেয়ার তাক লাগানোর মাধ্যমে শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়।
শেয়ার তাক লাগানোর পদ্ধতি:
১. সিদ্ধান্ত গ্রহণ:
- কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার তাক লাগানোর প্রস্তাব করে।
- শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ সভায় শেয়ার তাক লাগানোর প্রস্তাব অনুমোদন নেওয়া হয়।
২. শেয়ার তাক লাগানোর অনুপাত নির্ধারণ:
- কোম্পানি শেয়ার তাক লাগানোর অনুপাত নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ১:২ অনুপাতের অর্থ হলো একটি শেয়ারকে দুইটি শেয়ারে ভাগ করা হবে।
- শেয়ারের মুখ্যমূল্য (Face Value) অনুপাতে হ্রাস পায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি শেয়ারের মুখ্যমূল্য ১০ টাকা হয় এবং ১:২ অনুপাতে তাক লাগানো হয়, তবে নতুন শেয়ারের মুখ্যমূল্য হবে ৫ টাকা।
৩. SEC ও স্টক এক্সচেঞ্জে অনুমোদন নেওয়া:
- শেয়ার তাক লাগানোর জন্য SEC এবং সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন নেওয়া হয়।
৪. শেয়ারহোল্ডারদের অবহিতকরণ:
- শেয়ার তাক লাগানোর পর কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করে এবং SEC ও স্টক এক্সচেঞ্জে রিপোর্ট জমা দেয়।
৫. শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু:
- শেয়ার তাক লাগানোর পর কোম্পানি নতুন শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের কাছে বিতরণ করে।
শেয়ার তাক লাগানোর উদাহরণ:
ধরুন, একটি কোম্পানির ১০০ টাকা মুখ্যমূল্যের ১০,০০০ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানি ১:২ অনুপাতে শেয়ার তাক লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর অর্থ হলো:
- প্রতিটি শেয়ারকে দুইটি শেয়ারে ভাগ করা হবে।
- নতুন শেয়ারের মুখ্যমূল্য হবে ৫০ টাকা।
- শেয়ারের মোট সংখ্যা হবে ২০,০০০।
- শেয়ারহোল্ডারদের মোট বিনিয়োগের মূল্য অপরিবর্তিত থাকবে (১০,০০০ শেয়ার x ১০০ টাকা = ২০,০০০ শেয়ার x ৫০ টাকা)।
শেয়ার তাক লাগানোর সুবিধা:
বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ: শেয়ারের মূল্য হ্রাস পেলে ছোট বিনিয়োগকারীরা সহজে শেয়ার ক্রয় করতে পারেন।
লিকুইডিটি বৃদ্ধি: শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বাজারে শেয়ারের লেনদেন বৃদ্ধি পায়।
বাজার মূল্য স্থিতিশীলতা: শেয়ার তাক লাগানোর মাধ্যমে শেয়ারের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়।
শেয়ার তাক লাগানোর অসুবিধা:
শেয়ারের মূল্য হ্রাস: শেয়ার তাক লাগানোর মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য হ্রাস পায়, যা কিছু বিনিয়োগকারীর কাছে নেতিবাচক মনে হতে পারে।
প্রশাসনিক ব্যয়: শেয়ার তাক লাগানোর প্রক্রিয়ায় কিছু প্রশাসনিক ব্যয় হয়।
উপসংহার:
শেয়ার তাক লাগানো হলো একটি কোম্পানি কর্তৃক তার বিদ্যমান শেয়ারগুলিকে ভাগ করে বেশি সংখ্যক শেয়ারে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া। এটি শেয়ারের বাজার মূল্য হ্রাস করে বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার ক্রয় করা সহজ করে এবং শেয়ারের লিকুইডিটি বৃদ্ধি করে। শেয়ার তাক লাগানোর জন্য কোম্পানির অবশ্যই শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে এবং SEC ও স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন নিতে হবে। এটি কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্য একটি Win-Win Situation তৈরি করে।
উপসংহার : শেয়ার তাক লাগানো পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।
আর্টিকেলের শেষ কথাঃ শেয়ার তাক লাগানো পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News অনুসরণ করুন
আরো পড়ুন:
- পরিচালকের ক্ষমতার উপর বাধা নিষেধগুলো কি কি
- সিনিয়া নির্বাহীদের চাকরিচ্যুত বেতন সম্পর্কে বিধিমালা সমূহ কি কি
- নির্বাহী পরিচালকের পারিশ্রমিকের উপাদান সমূহ ব্যাখ্যা কর
- পারিশ্রমিকে কর্পোরেট গভর্নেন্স এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করা হয় কেন
- বেতন কাঠামোর ওপর প্রভাববিস্তারকারী উপাদানসমূহ,কর্মীর পদ বা কাজের প্রকারভেদ