রৈখিক মতবাদটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও,রৈখিক মতবাদ কী?,রৈখিক মতবাদ বলতে কী বুঝ, রৈখিক মতবাদ এর সংজ্ঞা দাও

Google Adsense Ads

প্রশ্ন সমাধান: রৈখিক মতবাদটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও,রৈখিক মতবাদ কী?,রৈখিক মতবাদ বলতে কী বুঝ, রৈখিক মতবাদ এর সংজ্ঞা দাও

ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বে মানুষের আচারব্যবহার, পদমর্যাদা, অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান এবং মূল্যবোধের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। সে সামাজিক পরিবর্তনের স্রোতে রৈখিক মতবাদ এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ গতিশীল সমাজে রৈখিক মতবাদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ।


রৈখিক মতবাদ : রৈখিক মতবাদ বিশ্বাসীদের মধ্যে অগাস্ট কোঁৎ, হার্বার্ট স্পেন্সার, হবহাউস ও কার্ল মার্কসের নাম বিশেষভাবে উলেখযোগ্য। তারা প্রত্যেকেই সামাজিক পরিবর্তনের ইতিহাসের ধারায় একটা বাস্তবধর্মী সমাজতান্ত্রিক ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন । নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :

অগাস্ট কোঁৎ : অগাস্ট কোঁৎ সামাজিক পরিবর্তনের কতকগুলো স্তরের রূপান্তরের সাথে তুলনা করে বিশেষণ করেছেন। তিনি তার পজিটিভিজম বা দৃষ্টবাদে ব্যাখ্যা দ্বারা বিশেষণ করে বলেছেন যে, মানুষ দুটি স্তরে উন্নীত হয়ে পজিটিভিজম বা দৃষ্টবাদে পৌছে। এভাবে তিনি সামাজিক পরিবর্তন ঘটে বলে মনে করেন।


হার্বার্ট স্পেন্সার : হার্বার্ট স্পেন্সার মনে করেন সকল উন্নত সমাজে তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। যেমন- বিগত পদ্ধতি, বিভক্ত পদ্ধতি ও নিয়মমাফিক পদ্ধতি। তিনি উলেখ করেন, সমাজে অসামঞ্জস্য থেকে সামঞ্জস্যতার মধ্যে জটিলতা থেকে শৃঙ্খলতার মাঝে ক্রমান্বয়ে চলে আসছে। যেমন- প্রাচীনকালে সমাজে বিশৃঙ্খলভাবে বিরাজ করছে। কিন্তু কালক্রমে সে অবস্থা পরিবর্তন হয়ে শান্ত পরিবেশে এসে দাঁড়িয়েছে। বস্তুতপক্ষে তিনি সামাজিক পরিবর্তনকে একটি স্বয়ংক্রিয় কার্যপরস্পর বলে আখ্যায়িত করেন।


হবহাউস : অগাস্ট কোঁৎ ও হার্বার্ট স্পেন্সারের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে এল.টি হবহাউস সামাজিক পরিবর্তনের সম্বন্ধে একই মত পোষণ করেন। হবহাউস মানবসমাজকে কয়েকটি স্তরে বিভক্ত করেছেন। তিনি মানুষের জ্ঞান বিকাশকে মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেন। এগুলোর একটি সোজাপথ বা রেখাকে অনুসরণ করে চলতে থাকে। তাই সামাজিক পরিবর্তন স্তরবিন্যাসের দ্বারা ঘটে বলে তিনি মনে করেন। তিনি মানুষের বুদ্ধিসত্তার কথা উলেখ করে বলেন যে, মানুষ আদিকাল থেকে এ পাঁচটি স্তরে উপনীত হয়ে বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছে। অতএব সংক্ষেপে বলা যায়, হবহাউস সামাজিক পরিবর্তনকে মানব জ্ঞান বিকাশের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু তাঁর ধারণা অনেকটা হার্বার্ট স্পেন্সারের বিবর্তন ধারণা অনুসারে হয়েছে।


আরো ও সাজেশন:-

কার্ল মার্কস : সামাজিক পরিবর্তনের রৈখিক মতবাদে কার্ল মার্কসের ধারণা সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি সমাজে অর্থনৈতিক কাঠামোর বিবেচনা করে বলেছেন যে, অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে সমাজ পরিবর্তন ঘটে এবং তিনি মনে করেন যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হচ্ছে সমাজব্যবস্থার মূল কাঠামো। মানবসমাজে পরিবর্তনের উপাদান হিসেবে তাঁর নিকট দুটি বিষয় অতি মাত্রায় মূল্যবান। সেগুলো হলো (১) উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নতি ও (২) শ্রেণী সম্পর্ক। তিনি মনে করেন যে, সামাজিক পরিবর্তনের পিছনে রয়েছে এ দুটি শক্তি। যেমন- লক্ষ্য করা যায় যে, উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনের সাথে শ্রেণী সম্পর্কের পরিবর্তন ঘটে । উৎপাদন ব্যবস্থার মাপকাঠিতে সমাজে ক্রমউন্নতি হচ্ছে।

 এভাবে কার্ল মার্কস সমাজ পরিবর্তনের ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, শ্রেণীহীন সমাজ হচ্ছে সমাজের পরিবর্তনের শেষ অধ্যায়। তিনি মনে করেন শেষ অধ্যায়ে এসে সমাজে পরিবর্তন স্থির হবে।


উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমাজে যে পরিবর্তন হচ্ছে তা এক সীমা পার হয়ে বা একটি সমাজব্যবস্থার রূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত হচ্ছে। এ রৈখিক ব্যবধানের মাঝে সামাজিক পরিবর্তন ঘটছে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Comment