রেসিপিঃ সয়ামিট ভুনা

সয়ামিট লিখে গুগল নেটে সার্চ করে দেখলাম, এক মাত্র আমিই আছি। সয়ামিট নিয়ে আমার একটা রেসিপি ও অনুসাঙ্গিক তথ্য নিয়ে প্রায় পাচ পৃষ্ঠার মধ্যে আমারই তথ্য সব। হা হা হা… মানে দাঁড়ায় বাংলায় সয়ামিট নিয়ে আমিই কিছু লিখেছি নেটে! বাংলায় সয়ামিট লিখলে শুধু আমাকেই দেখা যাবে! সয়ামিট এখনো আমাদের দেশে ভাল খাবার হয়ে উঠতে পারে নাই!

সয়ামিট আমার কাছে খুব ভাল একটা খাবার যদিও আমি ভাল জানিনা এটা কি কি দিয়ে বানানো হয়। তবে বাংলাদেশে অনেকদিন আগে থেকে পাওয়া গেলেও এত সহজ লভ্য ছিল না ইদানিং দেখছি বেশ ভাল প্যাকেটে নানান দোকান পাটে পাওয়া যাচ্ছে, হাতের কাছেই।

(সয়ামিটের ইতিহাস আমার জানা নেই। সয়ামিট সম্ভবত ইন্ডিয়া থেকেই বাংলাদেশে এসেছে। বছর ১০/১২ আগে আমি প্রথম সয়ামিট আখাউড়ায় মানে আমার শশুড়বাড়ী থেকে প্রথম পেয়েছিলাম। আখাউড়ার লোকজন নাকি ইন্ডিয়া থেকে সয়ামিট আনিয়ে খেত। তখন সয়ামিটের প্রতি আমার এত আকর্ষন ছিল না। কলকাতার রেসিপি প্রিয় বন্ধুরা নিশ্চয় সয়ামিটের ইতিহাস ভাল বলতে পারবেন।)

আমি অনেকবার কিনেছি, বিশেষ করে নুড্যুলস এ দিয়ে অনেকবার রান্না করে খেয়েছি। তবে এবার সয়ামিটের প্যাকেটে একটা রেসিপি বুক দেখে শুধু সয়ামিট রান্না মানে ভুনা করেছিলাম আমরা। চলুন কথা না বাড়িয়ে দেখে ফেলি।

প্রসঙ্গিকভাবে বলে রাখি, আমার রেসিপি প্রিয় ভ্রাতা দাইফ ভাই (যিনি আমার রেসিপিতে কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহ দিয়ে থাকেন) যিনি সয়ামিট ভুনা নিজে রান্না করেছেন এবং সেটা একটা কমেন্টে লিখার কারনে আমিও বেশ আগ্রহ হয়ে পড়ি এবং এই কমেন্ট দেখার কিছুদিন আগে আমি স্বপ্ন গ্রোসারী থেকে এক প্যাকেট সয়ামিট কিনেছিলাম। এই সয়ামিট ভুনা করতে গিয়ে তাই দাইফ ভাইকে সব সময় মনে পড়ছিল।

প্রণালীঃ

এমন সুন্দর প্যাকেটে সয়ামিট পাওয়া যাচ্ছে। কোলেষ্ট্রল ফ্রি হওয়াতে খেতে সবার আগ্রহ বাড়ারই কথা।

প্রথমে সয়ামিটকে হালকা তেলে ভেজে নিতে হবে।

ভাঁজা সয়ামিট ঠান্ডা হলে গরম পানিতে চুবিয়ে নিয়ে আবার পানি ঝরিয়ে রেখে দিতে হবে। এতে সয়ামিট সফট হয়ে যাবে।

কড়াইতে কিছু পেঁয়াজ কুচি ভেজে বেরেস্তা বানিয়ে তুলে রাখতে হবে।

এবার একটা ঝোল বানাতে হবে। যারা আমার রেসিপি পড়েন তারা জানেন কি করে এই ঝোল রান্না করতে হয়। খুব সহজ। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে কিছু পেঁয়াজ কুচি, লবন দিয়ে ভেজে নিন। এবার মশলা পাতি দিন। আদা, রসুন, সামান্য ধনিয়া, গরম মশলা, কয়েকটা কাচা মরিচ এবং হলুদ গুড়া ও মরিচ গুড়া। কাঁচা মরিচ বেশি দিলে গুড়া মরিচ কমিয়ে! ভাজা হয়ে গেলে, এক কাপ পানি দিয়ে দিন। ব্যস, ঝোল প্রস্তুত।

ঝোলে মশলার ঘ্রান উঠে একটা সুন্দর ঘ্রান ছড়িয়ে পড়বে।

প্রয়োজন হলে, ঝোল বেশী রাখতে চাইলে, আরো কিছু গরম পানি দিতে পারেন। এবার মিনিট বিশেক কড়াইয়ের ঢাকনা দিয়ে হালকা আঁচে রাখুন।

ঝোল কমে এলে, ফাইনাল লবন দেখুন। এবং বেরেস্তা গুলো উপরে ছিটিয়ে দিন।

ব্যস হয়ে গেল সয়ামিট ভূনা। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। কয়েকটা কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে দিতে পারেন।

ক্যামেরা ফ্লাস ছাড়া এমন দেখাছিলো!

আমি রাতে রুটি যোগে এই সয়ামিট খেয়েছিলাম। আমার বেশ মজা লেগেছিল। আপনিও একবার খেয়ে দেখতে পারেন। বিশেষ করে যারা রাতে রুটি খেতে ভালবাসেন, আমি নিশ্চিত তারা একবার খেলে বার বার খেতে চাইবেন।

কৃতজ্ঞতাঃ মানসুরা হোসেন

Leave a Comment