রাইস কুকার এ রান্না করা ভাত খাওয়া কি নিরাপদ?, রাইস কুকারের ভাত খাওয়ার ক্ষতিকর দিক কী কী?, যে কারণে ‘ভাত’ হয়ে ওঠে বিষের সমতুল্য,প্ৰেশার কুকারে ভাত মাংস রান্না করেন! এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে না তো

আজকের বিষয়: রাইস কুকার এ রান্না করা ভাত খাওয়া কি নিরাপদ?, রাইস কুকারের ভাত খাওয়ার ক্ষতিকর দিক কী কী?, যে কারণে ‘ভাত’ হয়ে ওঠে বিষের সমতুল্য,প্ৰেশার কুকারে ভাত মাংস রান্না করেন! এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে না তো

বর্তমানে চূড়ান্ত ব্যস্ততায় রান্না-বান্না যত তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা যায়, তত ভাল। অনেকেই আজকাল এই কারণে অফিস টাইমে হোম ডেলিভারি বা রেস্তোরাঁর খাবারের উপর নির্ভরশীল। তবে চটজলদি রান্না-বান্না সেরে ফেলতে প্রেসার কুকারের উপর ভরসা করেন অনেকেই। তবে অনেকেই মনে করেন প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এ ধারণা কি ঠিক? আসুন জেনে নেওয়া যাক…

‘সায়েন্স অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার’ নামে একটি মার্কিন স্বাস্থ্য বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের লেক্টিনের মাত্রা কমে যায়। এই লেক্টিন এমন একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান যা খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দিতে সক্ষম। অর্থাৎ, এ দিক থেকে বিচার করলে প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে ষোলআনা।

অধিকাংশ প্রেসার কুকার অ্যালমুনিয়ামের তৈরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যাধিক গরম হয়ে গেলে প্রেসার কুকারের রান্নায় অ্যালমুনিয়ামের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে দিতে পারে। তবে ইদানীং, অনেক প্রেসার কুকারই অ্যালমুনিয়ামের তৈরি নয়। সেগুলি লোহা বা মিশ্র ধাতুতে তৈরি যা খাবারের পুষ্টিগুণের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে না।

প্রেসার কুকারে রান্নার ক্ষেত্রে এক একটা খাবারের ক্ষেত্রে একেক রকম ফল হতে পারে। যেমন, প্রেসার কুকারে যেমন মাংস রান্না করলে তা সহজেই হজম হয়ে যায়। আবার প্রেসার কুকারে ভাত রান্না করলে তাতে জল বসে সেটি আরও ভারী হয়ে যায়। এই ভাত বেশি খাওয়া যায় না। বেশি খেলে তাড়াতাড়ি মোটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সব মিলিয়ে প্রেসার কুকারে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার তত্ব মার্কিন পুষ্টিবিদদের কাছে তেমন গ্রহনযোগ্য হয়নি। বরং তাঁদের মতে, প্রেসার কুকারে রান্না করলে বাঁচে সময় আর গ্যাস বা জ্বালানিও বাঁচানো সম্ভব অনেকটাই।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

রাইস কুকারের ভাত খাওয়ার ক্ষতিকর দিক কী কী?

ভাত রান্না করার জন্য আপনার রাইস কুকারের প্রয়োজন কেন সেটি আগে জানতে হবে। যন্ত্রটি একটি সহজ রান্নার পদ্ধতি প্রদান করে যা অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়। রাইস কুকারগুলি প্রচুর পরিমাণে রান্নার জন্যও ভাল এবং কিছু মডেল আছে পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত ভাত গরম রাখে।

একটি রাইস কুকারে ভাত রান্না করার চেয়ে গ্যাসের বা লাকড়ির চুলায় ভাত রান্না খুব বেশি স্বাস্থ্যকর নয়। যেভাবেই ভাত রান্না করা হোক না কেন তাতে ভাতের পুষ্টি সামান্য পরিবর্তিত হয়। চীন জাপানিরা এভাবেই রাইস কুকারের ভাত খেয়ে আসছে, তাদের গড় আয়ু আমাদের চেয়ে বেশি।
(স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধির উপায় জানতে নিচের লিংকটি কপি করে ব্রাউজারে পেস্ট করলে পাবেন।

বরং বৈদ্যুতিক কুকারে তৈরি ভাত সাধারণ ভাবে সিদ্ধ চালের চেয়ে স্বাস্থ্যকর। এটি প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, খনিজ এবং অন্যান্য ভিটামিন সমৃদ্ধ। কারন এর পানি ফেলে দিতে হয় না।

ব্যবহারকারীরা আমাদের বলেন যে এতে রান্না করা চাল নরম, স্টিকি এবং ভাল স্বাদযুক্ত হয়।

বৈদ্যুতিক কুকারে রান্না করা খাবারের মান নিয়ে গভীর গবেষণার পর, দেখা গেছে যে স্টার্চ জেলটিনাইজেশন হয় যা ভাতের গঠনকে জেলাটিনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপে পরিবর্তন করা যা হজমশক্তিকে উন্নত করে। ভাত ছাড়াও রান্নার জন্য খিচুড়ি, শস্য, এবং মটরশুটি থেকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস (প্রোটিন, ফাইবার এবং স্টার্চ) এর হজম সহজ এবং প্রয়োজনীয় খনিজগুলির বর্ধিত জৈব উপাদান থেকে ইতিবাচক পুষ্টি লাভ হয় ।

বৈদ্যুতিক কুকারে রান্না করা ভাতে সংরক্ষিত ভাতের চেয়ে ছত্রাক সংক্রমণ কম হয়।

তার চেয়ে বাদামী চালের ভাত খেলে সাদা চালের চেয়ে পুষ্টি উপাদান বেশি হয়।

তবে প্রেসার কুকারে ভাত রান্না করে খাওয়ার একটি ক্ষতিকর দিকের কথা বলা হয় যা একরিলিমাইড নামক পদার্থ উৎপন্ন করে যা অনেক রোগের কারণ। রাইস কুকারের সাথে প্রেসার কুকারের অনেক পার্থক্য আছে। কুকারের বডি/ কন্টেইনার আসলে একটি অ্যালুমিনিয়াম পাত্র, এর ভিতরে থাকা খাবার বিষে পরিণত হয় বলে কিছু জরিপ বলছে। যদিও আমাদের ভাত রান্নার সাধারণ পাতিলগুলোও এলুমিনিয়ামের।

যদি এটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেন, তাহলে ভাত রান্না করার জন্য

গতানুগতিক পদ্ধতিগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়াই ভাল আপনার জন্য। চীন, জাপানের মানুষ অনেকদিন যাবৎ রাইস কুকার ব্যবহার করছেন তাই বলে তাদের গড় আয়ু আমাদের চেয়ে বেশি।

সুতরাং রাইস কুকারে রান্না খেতে আপত্তি থাকার কথা নয়।

রান্না একটি বড় শিল্প। কোনটার সঙ্গে কী মেশালে খাবারের স্বাদ ভালো হবে তা আন্দাজ করে রান্না করা মোটেও সহজ নয়। কিন্তু এই ব্যস্ততার যুগে এত সময় কোথায়! তাই কোনও  রকমে পেট ভরার খাবার বানিয়ে ফেলাই ভরসা। আর তাড়াতাড়ি খাবার বানানোর অন্যতম উপায় হল প্রেশার কুকার। 

অফিসে পৌঁছতে পাছে দেরী হয়ে যায়! তাই একসঙ্গে চাল ডাল প্রেশার কুকারে চাপিয়ে দিলেই ১৫ মিনিটে রান্না শেষ। এরকমটা অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু তা কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছেই। আবার অনেকে মনে করেন, প্রেশার কুকারে রান্না করলে, তার খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়।

রাডল্ফ ব্য়ালেনটাইনের লেখা বই ‘ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন: আ হোলিস্টিক অ্যাপরোচে’ এই বিষয়ে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে। হিট ও স্টিমের মাধ্য়মেই প্রেশার কুকারে রান্না করা হয়। মূলত স্টিম ও প্রেশারেই রান্না হয় তাড়াতাড়ি। প্রেশার কুকারে এক ধরনের ভালভ থাকে যেগুলি ধোঁয়া আটকে রাখে। জল বা তরল পদার্থ ধোঁয়ায় পরিণত হতে থাকে ও তার প্রেশারে রান্না হতে থাকে। তবে প্রেশার কুকারে রান্নার সময়ে খাবারের সংস্পর্শে হাওয়া আসতে পারে না। ওপেন কুকিং-এ  বা হাঁড়ি-কড়াইতে রান্নার সময়ে হাওয়া খাবার রান্নাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। কিন্তু যেহেতু প্রেশার কুকারে হাওয়া সংস্পর্শে আসে না তাই কিছু খাবার ভিতর থেকে কাঁচা থেকে যেতে পারে, যা মোটেই হজমের জন্য ভালো নয়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে হাঁড়িতে দীর্ঘক্ষণ ধরে রান্না করা খাবার স্বাস্থ্যকর বেশি।  

আবার ‘সায়েন্স অফ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার’ নামে এক মার্কিন পত্রিকায় বলা হচ্ছে, প্রেশার কুকারে রান্না করলে খাবারে ক্ষতিকারক রাসায়নিক লেকটিনের মাত্রা কমে যায়। এই রাসায়নিক খাবারের পুষ্টি নষ্ট করে দেয়। অতএব প্রেশার কুকারে রান্না হলে লেক্টিন নষ্ট হলে খাবারের পুষ্টি বরং বজায়ই থাকে। কিন্তু প্রেশার কুকারে ভাত রান্না করলে আবার ভাতে জল জমে তা ভারী হয়ে যায়। এই ভাত নিয়মিত খেলে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।  

কিন্তু স্লো কুকিং বা খোলা পাত্রে রান্নার স্থান এখনও কেড়ে নিতে পারেনি প্রেশার কুকার। কম সময়ে রান্না হলেও খাবারের গুণ এতেই বজায় থাকে বেশি ভালো। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা অ্যালুমুনিয়ামের প্রেশার কুকার ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে অ্যালুমুনিয়াম খাবারের সঙ্গে মিশে ক্ষতি করতে পারে। 

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment