রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার , রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা, দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা PDF Download,রচনা নিয়োগ পরীক্ষায় আসা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার, দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা বাংলা ২য় পত্র রচনা, রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার (PDF Download)

বিষয়: রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার , রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা, দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা PDF Download,রচনা নিয়োগ পরীক্ষায় আসা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার, দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার রচনা বাংলা ২য় পত্র রচনা, রচনা দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার (PDF Download)

রচনা: দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার/আধুনিক জীবনে কম্পিউটার/কম্পিউটার ও আধনিক সভ্যতা/কম্পিউটার ও আধুনিক বিশ্ব/বিংশ শতকের বিস্ময় : কম্পিউটার/কম্পিউটার ও বাংলাদেশ/কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব/কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি/-:০১

ভূমিকা : শিল্পবিপ্লবের পর থেকে যন্ত্রবিজ্ঞানের জয়যাত্রা অব্যাহত। বাষ্পশক্তি, বিদ্যুৎশক্তি ও আণবিকশিক্তি যন্ত্রবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার নিত্য নতুন দ্বার দিয়েছে খুলে। ফলে সংখ্যাতীত আবিষ্কারের মধ্যস্থতায় মানুষ যন্ত্রশক্তিতে হয়েছে দুর্বার শক্তির অধিকারী। যন্ত্র আজ তার হাতের ক্রীড়নক। তার কর্মজীবনে বিজ্ঞানের বৃহত্তর ক্ষেত্রে অনুগত ভৃত্যের মতো হুকুম তালিম করতে যে যন্ত্র সদা ব্যস্ত তার নাম কম্পিউটার। আজকের দিনে তাই মানবসভ্যতা হয়ে পড়েছে কম্পিউটার-নির্ভর স্বয়ংক্রিয়তা-কেন্দ্রিক। কম্পিউটার বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী বিস্ময় ও আধুনিকতম আবিষ্কার।

কম্পিউটার কী? : আভিধানিক অর্থে কম্পিউটার হল এক ধরনের গণক যন্ত্র। কিন্তু আজকাল কম্পিউটারকে কেবল গণনাকারী বলা চলে না। এখন তা এক ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ধারণা দেয় বা অগণিত তথ্য বা উপাত্ত গ্রহণ করে অত্যন্ত দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ, গণনা বিশ্লেষণ ইত্যাদি করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করতে পারে।

উদ্ভাবন ও ক্রমোন্নতি : কম্পিউটার উদ্ভাবনের জনক হিসেবে খ্যাতির অধিকারী হলেন ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজ। তার পরিকল্পিত গণক যন্ত্রই কিম্পউটার নির্মাণের প্রেরণা যুগিয়েছে পরবর্তীকালে। ব্যাবেজের গণক যন্ত্রের মানকল্পনা ছিল অষ্টাদশ শতকের তৃতীয় দশকে। এর প্রায় এক শতাব্দীকাল পরে ইলেকট্রনিকস ও প্রযুক্তিবিদ্যার মেলবন্ধনে মানুষের হাতে এল ইলেকট্রনিক যন্ত্রগণক। ল্যাটিন শব্দ ‘কম্পুটার’ থেকে ‘কম্পিউটার’ কথার উৎপত্তি। আধুনিক কম্পিউটারের সূত্রপাত হয়েছে ১৮৩৩ সালে।

কম্পিউটার ও তার কার্যকারিতা : কম্পিউটার আসলে এক ধরনের যন্ত্র মস্তিস্ক। কম্পিউটারের থাকে তিনটি সুস্পস্ট অংশ-
সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট,
ইনপুট,
আউটপুট।
যে কোনো সমস্যা সংক্রান্ত সবরকম তথ্য নিয়ে কাজ করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। ‘ইনপুট’ তথ্য সম্বলিত নির্দেশ প্রদান করে আর ‘আউটপুট’ প্রকাশ করে গণনা সম্বলিত ফল। যে যাবতীয় তথ্য নিয়ে কম্পিউটার কাজ করে, তাকে বলে ‘প্রোগ্রাম’। কম্পিউটারে তথ্য ও নির্দেশ প্রদানের জন্যে যে বিশেষ ভাষা ব্যবহার করা হয়, তাকে বলে ‘প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ’। আর এসব কিছুকে একত্রে অভিহিত করা হয় ‘কম্পিউটার সফ্টওয়্যার’ বলে। এছাড়া কম্পিউটারের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণকারী একটা কাঠামো থাকে, তাকে বলে ‘হার্ডওয়্যার’। কম্পিউটারের বড় উপযোগিতা হল তথ্য ও প্রোগ্রামের রদবদল বা সংযোজন ঘটিয়ে একই কম্পিউটারকে দিয়ে নানা রকম কাজ করা যায়। কম্পিউটার যে আজকের দিনে বিস্ময়কর ও বিশ্বস্তভাবে সবধরনের কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছে তার মূলে রয়েছে এর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। যেমন :
অত্যন্ত দ্রুত গণনার ক্ষমতা।
বিপুল পরিমাণ উপাত্তকে সুসংবদ্ধভাবে যন্ত্র মগজে ধরে রাখার ক্ষমতা।
তথ্য বিশ্লেষণের নির্ভুল ক্ষমতা।
‘ডাটা’ ও ‘প্রোগ্রাম’ অনুসারে কাজ করার ক্ষমতা।

কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন : কম্পিউটার আধুনিক যুগে মানুষের পরম নির্ভরশীল বন্ধু। কোটি কোটি সংখ্যার অঙ্ক মিলিয়ে নিয়োগ ক্যাশিয়ার কমিটির হাতে অতি অল্প সময়ে তুলে দিয়ে তাকে নিশ্চিত নির্ভাবনায় ঘরমুখো করিয়ে দিতে পারে – কম্পিউটার এখন বড় বড় কল – কারখানায় বসে উৎপাদনের পরিকল্পনা আর তা নিয়ন্ত্রণের খবরদারি করছে, লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ করছে। রেলওয়ে, এয়ারলাইন্স, ব্যাঙ্ক রিসার্চ সেন্টার, ইনসিওরেন্স প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের একচ্ছত্র আধিপত্য। পরীক্ষার ফল প্রকাশ, অপরাধীকে খুঁজে বের করা, পুরনো মামলার নথিপত্র খুঁজে তথ্য সংগ্রহ করে দেয়া, বিজ্ঞাপন প্রচার করা এ সমস্তই এখন করছে মানুষের সৃষ্ট ঐ যন্ত্র-মগজ। কম্পিউটার চালিত ‘স্ক্যারার’ খুঁজে এনেছিল আটলান্টিক মহাসাগরে ভেঙ্গে পড়া বিমানের ‘ব্ল্যাকবক্স’। যে সব দুরূহ কাজ মানুষের অসাধ্য, যে সব দুর্গম স্থান মানুষের অগম্য সেখানেই কম্পিউটারের প্রয়োগ, আর সেখানে তার অকল্পনীয় সাফল্য। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও কম্পিউটার নিয়েছে শিক্ষকের ভূমিকা। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা সবই শেখাচ্ছে নিপুণ দক্ষতার সাথে। দাবা, ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানারকম ভিডিও গেম খেলছে কম্পিউটার। এসব খেলায় কম্পিউটার মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। মুদ্রণ জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে কম্পিউটার। ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে মুহূর্তেই বিশ্বের যে কোন জায়গায় যে-কোন-তথ্য আদান-প্রদান করা যাচ্ছে। মানুষের অসাধ্য ও বিপজ্জনক কাজেও কম্পিউটার নিয়ে আসছে অকল্পনীয় সাফল্য। আধুনিক জীবনে কম্পিউটার তাই অপরিহার্য। একই কারণে সভ্যতায় কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশেও কম্পিউটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এদেশে এখন মূলত মুদ্রণ শিল্প, ব্যাঙ্ক-অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।

[quads id=1]

বাংলাদেশে কম্পিউটার ও কম্পিউটার শিক্ষা : বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারের সূচনা হয় ষাটের দশকে এবং নব্বই-এর দশকে তা ব্যাপকতা লাভ করে। ১৯৬৪ সালে আণবিক শক্তি কেন্দ্রে IBM 1620 সিরিজের একটি কম্পিউটার আনার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে বাংলাদেশে কম্পিউটারের পদচারণা শুরু হয়। কিন্তু আশির দশকের আগে এদেশে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষার কোন সুযোগ ছিল না। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে কম্পিউটারের দ্রুত ও ব্যাপক ব্যবহার ঘটছে। কম্পিউটার শিক্ষাও যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষার সূত্রপাত ঘটে ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯২ সালের ১ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কম্পিউটার শিক্ষার জন্য বিভাগ চালু করা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯৯১ সাল থেকে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯৯৪ সাল থেকে কম্পিউটার শিক্ষাকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

বাংলা সফ্টওয়্যার উদ্ভাবন : কম্পিউটারে প্রথম বাংলা লেখা সম্ভব হয় ১৯৮৭ সালে এবং এর সাফল্যের কৃতিত্ব মাইনুল ইসলাম নামক একজন প্রকৌশলীর। তিনি নিজের উদ্ভাবিত বাংলা ফন্ট ‘মাইনুললিপি’ ব্যবহার করে অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা করেন। মাইনুললিপির পর পরই ‘শহীদলিপি’ ও ‘জব্বারলিপি’ নামে আরও দুটো বাংলা ফন্ট উদ্ভাবিত হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে আনন্দ কম্পিউটার্স নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তৈরি হয় অ্যাপেল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী প্রথম ইন্টারফেস ‘বিজয়’। এ সময়েই প্রথম বাংলা কি-বোর্ড লে-আউট তৈরি হয়। ১৯৯৩ সালে ফন্ট ও বাংলা কি-বোর্ডকে আই.বি.এম কম্পিউটারের আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম ‘মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোস’-এর সঙ্গে ব্যবহারের জন্য ইন্টারফেস ‘বিজয়’ উদ্ভাবিত হয়।


আরো ও সাজেশন:-

বাংলাদেশে কম্পিউটারের ব্যবহার : কম্পিউটারে বাংলা ব্যবহারের প্রভাবে ঢাকার অফিস ও প্রকাশনা শিল্পে দ্রুত কম্পিউটারের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, সামরিক স্থাপনা ইত্যাদি সকলক্ষেত্রেই কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৯৯ সাল থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ক্রেডিট কার্ড। বর্তমানে কম্পিউটারভিত্তিক আর্থিক লেনদেনের এই নিরাপদ ও সহজসাধ্য ব্যবস্থা ক্রেডিট কার্ড সার্ভিসটি ভিসা, মাস্টার কার্ড ও বণিক নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। ১৯৯৫ সাল থেকে বাংলাদেশে রপ্তানিযোগ্য সফ্টওয়্যার তৈরি উন্নয়ন এবং ১৯৯৭ সাল থেকে রপ্তানিযোগ্য মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু হয়।

কম্পিউটার ও বেকারত্ব : বিজ্ঞানীদের চেষ্টার ফল এই যন্ত্রদানবের ক্ষমতা অপরিসীম। তাদেরই আশঙ্কা মানুষের সৃষ্টি এই যন্ত্রদানবকে দিয়ে কাজ করাতে করাতে এমন এক সময় আসবে, যখন কাজের ক্ষুধায় উন্মত্ত দানব স্রষ্টা মানুষকেই করবে ক্রীতদাস। কথাটাকে একটু ঘুরিয়ে দেখলেই বাস্তব সত্যটা স্পষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। কম্পিউটারের ব্যাপক প্রয়োগ ও ব্যবহার মানুষকে করবে সাময়িক কর্মহীন। যন্ত্র তখন মানুষের ক্রীড়নক না হয়ে মানুষ হবে যন্ত্রের ক্রীড়নক। এমনও হতে পারে যে, মানুষের কাজ কেড়ে নিতে বেকারের মিছিলে ভরে যাবে দেশ। কম্পিউটারের ব্যবহারে ইতোমধ্যে অফিসে, শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। অবশ্য অপরদিকে কম্পিউটার বহু নতুন নতুন কর্মও সৃষ্টি করছে। অপারেটর, প্রোগ্রামার, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি পদে বহু লোকের কর্মসংস্থানও হচ্ছে। এইভাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম্পিউটার সাময়িকভাবে কর্মশূন্যতা সৃষ্টি করলেও সামগ্রিকভাবে একটি বহুল কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করবে।

কম্পিউটারজনিত অন্যান্য সমস্যা : একনাগাড়ে অনেকদিন কম্পিউটার চালালে, কিংবা মাত্রাতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের ক্ষতি হতে পারে, মাথা ব্যথাসহ অন্যান্য শারীরিক উপসর্গও দেখা দিতে পারে। অনেকসময় ভাইরাস আক্রমণে অথবা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অথবা বৈদ্যুতিক গোলযোগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুহূর্তেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে এসব বিষয় কম্পিউটার ব্যবহার ও প্রযুক্তিগত দিকের উপর নির্ভর করে।

উপসংহার : বিজ্ঞানের আশীর্বাদ থেকে মানুষ পিছিয়ে থাকতে পারে না। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশলি দেশগুলোতে আজ আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার প্রবেশ অপরিহার্য। কম্পিউটারকেও আজ আর ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। অনিবার্যভাবেই তার আগমন ঘটে গেছে সারা দুনিয়ায়। সেক্ষেত্রে দেশের অবস্থাকে স্বীকার করেই প্রয়োগ ক্ষেত্র নির্বাচন করতে হবে। এর প্রয়োগের মধ্য দিয়েই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে নতুন কর্মসংস্থানের উপায়। শতাব্দীর এই বিস্ময়কর আবিষ্কারটিই আজ বলে দেবে কোন পথে আমাদের সার্থকতা আর কোন পথে আমাদের অনগ্রসরতার কারণ। সেদিনের অপেক্ষায় আমরা আছি।

——– নতুন ভাবে লেখা 2 ——-

রচনা: দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার/আধুনিক জীবনে কম্পিউটার/কম্পিউটার ও আধনিক সভ্যতা/কম্পিউটার ও আধুনিক বিশ্ব/বিংশ শতকের বিস্ময় : কম্পিউটার/কম্পিউটার ও বাংলাদেশ/কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব/কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি/-:০২

ভূমিকা : যন্ত্রপ্রকৌশল ও প্রযুক্তি-নির্ভর মানব সভ্যতার অগণিত আবিষ্কারের বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই বিষ শতকে যে মহাবিস্ময়কে মানুষ আলাদিনের চোগের মতো হাতের মুঠোয় পেয়েছে তার নাম কম্পিউটার। এ এক মহাপরাক্রমশালী অথচ অনুগত যন্ত্র যা মানুষের কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবলীলায় অক্ষরে অক্ষরে প্রতিটি হুকুম পালন করে। আজকের দিনে তাই মানবসব্যতা হয়ে পড়েছে কম্পিউটার-নির্ভর স্বয়ংক্রিয়তা-কেন্দ্রিক। এবং এর ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা, দক্ষতা ও নিয়ন্ত্রণশক্তি বেড়ে গিয়েছে বহু গুণ, বৃদ্ধি পেয়েছে উৎপাদন ক্ষমতা। অনেক সহজ হয়ে উঠেছে প্রশাসনিক কাজকর্ম ও হিসাব নিকাশের জটিলতা। অনাবশ্যক অনেক মানসিক শ্রমের হাত থেকেও রেহাই ফেয়েছে মানুষ।

[quads id=2]

কম্পিউটার কী? : আভিধানিক অর্থে কম্পিউটার হলো এক ধরনের গণক যন্ত্র। কিন্তু আজকাল কম্পিউটারকে কেবল গণনাকারী বলা চলে না। এখন তা এমন এক ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ধারণা দেয় যা অগণিত তথ্য বা উপাত্ত গ্রহণ করে অত্যন্ত দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ, গণনা, বিশ্লেষণ ইত্যাদি করতে পারে এবং সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করতে পারে। কম্পিউটার আসলে এক ধরনের যন্ত্র-মস্তিস্ক। মানুষ যেমন করে মগজে ধরে-রাখা স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, তথ্য ও তত্ত্ব কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করে, কম্পিউটারের কাজও তেমনি। কম্পিউটারকে তথ্য ও নির্দেশনা প্রদানের জণ্যে যে বিশেষ ভাষা ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় ‘প্রোগামিং ল্যাংগুয়েজ’, আর এসব কিছুকে একত্রে অভিহিত করা হয় ‘কম্পিউটার সফ্টওয়্যার’। এছাড়া কম্পিউটারের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণকারী একটা কাঠামো থাকে, তাকে বলে ‘হার্ডওয়্যার’। কম্পিউটারের বড় উপযোগিত হলো তথ্য ও প্রোগ্রাামের রদবদল বা সংযোজন ঘটিয়ে একই কম্পিউটাকে দিয়ে নানারকম কাজ করানো চলে। কম্পিউটার যে আজকের দিনে বিস্ময়কর ও বিশ্বস্তভাবে সবধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে তার মূলে রয়েছে এর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। সেগুলো হলো : এক. অত্যন্ত দ্রুত গণনার ক্ষমতা, দুই. বিপুল পরিমাণ উপাত্তকে সুসংবদ্ধভাবে যন্ত্র-মগজে ধরে রাখার ক্ষমতা, তিন. তথ্য বিশ্লেষণের নির্ভুল ক্ষমতা, চার. ’ডেটা’ ও প্রোগ্রাম’ অনুসারে কাজ করার ক্ষমতা। মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তি ক্রমেই পম্পিউটারের কার্যকারিতা ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করছে।

উদ্ভাবন ও ক্রমোন্নতি : প্রাচীনকাল থেকে যান্ত্রিক গণনা পদ্ধতি ক্রমান্বয়ে ধাপে ধাপে বর্তমান কম্পিউটারের রূপ নিয়েছে। তবে আধুনিক কম্পিউটারের সূত্রপাত হয়েছে ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজের গণকযন্ত্র অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন থেকে । এরপর ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর যন্ত্র আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ঘটেছে বৈপ্লবিক অগ্রগতি। প্রথমদিকে নির্মিত পেনসেলভিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এনিয়াক’ নামের কম্পিউটারের ওজন ছিল ত্রিশ টন, তার আয়তনও ছিল বিশাল। ৪০ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট চওড়া ঘরের সবগুলো দেয়াল জুড়ে ছিল এর যন্ত্রপাতি। আর এখন এর আকার নেমে এসেছে হাতব্যাগের আকারে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

সবকাজের কাজি : কম্পিউটার আধুনিক বিশ্বের এমন এক সবজান্তা বিস্ময়কর যন্ত্র যে সব কাজেই পারদর্শী। এমন কোনো কাজ নেই যা কম্পিউটার করছে না। মানুষের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু ও সঙ্গী সে। কোটি কোটি সংখ্যার যে জটিল অঙ্ক কয়েকদিনে করে শেষ করা যায় না তা মুহূর্তেই নির্ভুলভাবে করে দিচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটার এখন কলকারখানার উৎপাদন ও বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করছে। ব্যাংক, বিমা, টেলিযোগাযোগ, রেল ও বিমান পরিবহন, ডাক ব্যবস্থা, গবেষণা, প্রতিষ্ঠান, তথ্যকেন্দ্র কোথায় কাজ করছে না কম্পিউটার? কম্পিউটার রোগ নিরূপণ করে দিচ্ছে। ব্যবসায়ের লাভ-লোকসানের হিসাব রাখছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও কম্পিউটার নিয়েছে শিক্ষকের ভূমিকা। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা সবই শেখাচ্ছে নিপুণ দক্ষতার সাথে। দাবা, ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানারকমের ভিডিও গেম খেলছে কম্পিউটার। এসব খেলায় কম্পিউটার মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। খেলার তথা রেকর্ড করছে নপুণভাবে। কম্পিউটার এখন ছবি আঁকছে, পুরনো-ছবি পুনরুদ্ধার করছে, মানচিত্র তৈরি করছে। ভস্কর্য তৈরি করছে। ফিংগার প্রিন্ট ও ছবি বিশ্লেষণ করে অপরাধীকে খুঁজে বের করওে কম্পিউটার বাহবা কুড়াচ্ছে। মুদ্রণ জগতেও অনেক বিস্ময়ের জন্ম নিদয়েছে কম্পিউটার। ইন্টানেটের সাহায্যে ঘরে বসে মুহূর্তেই বিশ্বের যে কোন জায়গায় যে-কোন-তথ্য আদন-প্রদানের সুযোগ এনে দিয়েছে কম্পিউটার। কম্পিউটার চালিত ‘স্ক্যারাব’ সমুদ্র তলদেশ থেকে খুঁজে এনেছে আটলান্টিক মহাসাগরের ভেঙে-পড়া বিমানের ‘ব্ল্যা বক্স’, নভোযানে বসে নিয়ন্ত্রণ করছে তার গতিবিধি, সেখান থেকে তথ্য পাঠাচ্ছে পৃথিবীর বুকে। মানুষের অসাধ্য ও বিপদজ্জনক কাজেও কম্পিউটার নিয়ে আসছে অকল্পনীয় সাফল্য। কম্পিউটারের এই অসাধারণ সাফল্যই একুশ শতকে পর্দাপণ করা বিশ্বকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন করে সাজানোর।

[quads id=3]

বাংলাদেশে কম্পিউটার : ১৯৬৪ সালে আণবিক শক্তি কেন্দ্রে IBM 1620 সিরিজের একটি কম্পিউটার আনার মাধমে প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে বাংলাদেশে কম্পিউটারের পদচারণা শুরু হয়। কিন্তু আশির দশকের আগে এদেশে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষার কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয় নি। নব্বইয়ের শুরু থেকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে কম্পিউটাররের দ্রুত ও ব্যাপক ব্যবহার ঘটছে। কম্পিউটার শিক্ষাও যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। আমাদের দেশে কম্পিউটার বিজ্ঞান অধ্যয়নের সুযোগ অবশ্য কখনও যথেষ্ট সীমিত। কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য শহরগুলোর শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ পায়। আবার যারা বড় বড় ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেছে তাদের অনেকেই আন্তর্জাতিক মানের সফ্টওয়্যার তৈরি করছে। তবে দুঃখের বিষয়, কম্পিউটার বিজ্ঞানে উন্নয়ন প্রশিক্ষণ লাভকারীরা বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এটা আমাদের দেশে কম্পিউটার প্রসারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ক্ষতির কারণ হচ্ছে।

কম্পিউটার ও বেকারত্ব : কম্পিউটার মানবশক্তির এক বিস্ময়কর বিকল্প। এর ক্ষমতা সাধারণ নজশক্তির চেয়ে বহুগুণ বলে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। কম্পিউটার মানুষের কাজ কেড়ে নিচ্ছে বলে ক্রমেই কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে ও বেকারত্ব বাড়ছে আমাদের মত জনবহুল দেশে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার বেকারত্বের আশঙ্কাকেই ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছে।

কম্পিউটারজনিত অন্যান্য সমস্যা : কম্পিউটার ব্যবহার শারীরিক দিক ‍দিয়েও কিছুটা ক্ষতিকর এর থেকে নির্গত তেজষ্ক্রিয়তা কখনো কখনো শরীরের জন্যে ক্ষতিকর হয়। ভাইরাস আক্রমণ যান্ত্রিক ক্রটি ইত্যাদির ফলে অনেক সময়ে কম্পিউটার বিপর্যয় ঘটে। ফলে অনৈক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুহুর্তেই নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে প্রশাসন ও কর্মক্ষেত্রে বিরাট ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। সাম্প্রতিককালে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণায় নানা যান্ত্রিক ক্রুটির ফলে বহু শিক্ষার্থী জীবন বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।

উপসংহার : কম্পিউটার আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে যেমন বিবেচিত হচ্ছে তেমনি এর ব্যাপক ব্যবহারে বিপুল সংখ্যক বেকারত্বের আশঙ্কাও আমাদের শঙ্কিত করে তুলছে। এজন্যে কম্পিউটারের পরিকল্পিত, ভারসাম্যমূলক ব্যবহার ও দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নয়ন, দরকার। তা না হলে একুশ শতকের চলার গতির সঙ্গে আমরা যেমন তাল মিলিয়ে চলতে পারব না, তেমনি অতিরিক্ত গতি নিতে গিয়ে তাল হারিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ব সংকটের আবর্তে। এক্ষেত্রে পরিণামদর্শী পদক্ষেপই হবে আমাদের অগ্রযাত্রার রক্ষাকবচ।


Honors & Degree, HSC, SSC, JSC Suggestion

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Honors & Degree, HSC, SSC, JSC Suggestion


——– নতুন ভাবে লেখা 3 ——-

রচনা: দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার/আধুনিক জীবনে কম্পিউটার/কম্পিউটার ও আধনিক সভ্যতা/কম্পিউটার ও আধুনিক বিশ্ব/বিংশ শতকের বিস্ময় : কম্পিউটার/কম্পিউটার ও বাংলাদেশ/কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব/কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি/-:০৩

ভূমিকা : বর্তমান জীবন একান্তভাবেই বিজ্ঞাননির্ভর। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও উদ্ভাবন জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই মানুষের নানা প্রয়োজন মেটাচ্ছে। কেবল তাই নয়, বিজ্ঞান মানুষের দৃষ্টিভাঙ্গিতেও আমূল পরিবর্তন এনেছে। বিজ্ঞান শুধু মানুষের দৈনন্দিন জীবনকেই সমৃদ্ধ করে নি, তার চিন্তাজগৎকেও প্রভাবিত করেছে। উন্নতির দিকে নিয়ে গেছে মানবসভ্যতাকে। এ উন্নতির মূলে কাজ করেছে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজেকর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তথ্যপ্রযুক্তির এক পরম বিস্ময়কর আবিষ্কার কম্পিউটার। মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে, প্রয়োজনীয় কাজেকর্মে, বিনোদনসহ সকল ক্ষেত্রেই কম্পিউটার অতুলনীয় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। যান্ত্রিক সভ্যতার চালিকাশক্তি হিসেবে কম্পিউটার আজ ঘরে ঘরে স্থান করে নিয়েছে। কম্পিউটারের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এর ব্যাপক ব্যবহার এখন সর্বজন স্বীকৃত।

কম্পিউটার কী? : কম্পিউটার বলতে এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রকে বোঝায় যা অগণিত উপাত্ত গ্রহণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারে। ’কম্পিউটার’ শব্দটি ইংরেজি এবং এর অর্থ হলো ‘গণকযন্ত্র’। কম্পিউটার হিসাবের যন্ত্র হিসেবে যোগবিয়োগ, গুণভাগ জাতীয় অঙ্ক কষতে পারে। এছাড়া তথ্যাদির বিশ্লেষণ ও তুলনা করা এবং সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এ যন্ত্রটির। গণিত, যুক্তি ও সিদ্ধান্তমূলক কাজের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ। কাজের গতি, বিশুদ্ধতা ও নির্ভরশীলতার দিক থেকে কম্পিউটারের ক্ষমতা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত।

কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার : জন্মলগ্নের অত্যল্পকালের মধ্যেই কম্পিউটার এর কার্যগুণে ও উপযুক্ততার নিরীক্ষে সকল প্রকার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোকে পেছনের সারিতে ঠেলে দিয়ে অতি সামনের আসনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের অন্যতম এক আবিষ্কার আজকের কম্পিউটার, যা মানুষ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দেখছে বা উপলব্ধি করছে। বিজ্ঞানের হাজারো উদ্ভাবনের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে তার কার্য প্রয়োজনীয়তা গুণে মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। এখন মানুষ গৃহের অন্দর থেকে শুরু করে অফিসপাড়ায় বিশাল কর্মজগতের সবখানেই কম্পিউটার এক বিস্ময়কর পদচারণা করছে, যা মানুষ তার কাজের একটি অংশ বা নিজ শরীরের একটি অত্যাবশ্যকীয় প্রত্যঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করতেও স্বীকৃতি দিচ্ছে। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের বিচিত্রতর কাজকর্মের সাথে যেমন কম্পিউটারকে সম্পৃক্ত করছে, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব বা তথ্য সংগ্রহে, বা নিজস্ব তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে, অত্যাধুনিক বিনোদনের কর্মকাণ্ডে, তার্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে, নিজের ব্যবসায়িক সাফল্যকে পরিকল্পিত উপায়ে পরিচালনা করতে, সম্যক ধারণার সৃষ্টিতে প্রভৃতি খুঁটিনাটি কাজ থেকে শুরু করে বৃহৎ কর্মপরিসরে কম্পিউটারকে অপ্রতিহত গতিতে বা প্রয়োজনে কম্পিউটারকে সম্পৃক্ত করছে মানুষ তার নিজের তাগিদেই। কম্পিউটারের প্রতি মানুষ এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, সে কম্পিউটার ছাড়া তার উন্নততর আধুনিক জীবন কল্পনা করতেও রাজি হচ্ছে না। শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে তো কম্পিউটার একক রাজা। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটারকে মানুষ এখন হাতের কাছে পেতে উদগ্রীব হচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার : আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির অনন্য বাহন কম্পিউটার। আজকের উন্নত বিশ্বে কম্পিউটারের ব্যবহার ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা কল্পনা করা অসম্ভব। এর মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করা সহজ হয়ে গেছে। প্রকাশনা শিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে কম্পিউটার। যার ফলে জ্ঞানচর্চার অন্যতম উপকরণ বই ঠিক সময়ে আমাদের হাতে পৌঁছে। বইয়ের বিষয়াবলি এখন কম্পিউটারের ডিস্কে জমা রাখা যাচ্ছে। কী বোর্ডের বোতাম টিপলেই এখন বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানভাণ্ডার আমাদের সামনে মনিটরের পর্দায় ভেসে উঠছে। কম্পিউটারের আশীর্বাদে যেকোনো বিষয় এখন হাতের কাছে অবস্থান করে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করছে। এটি যেমন গ্রন্থাগারের ভূমিকা পালন করছে, তেমনি অভিজ্ঞ শিক্ষকের। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা আমাদের যেকোনো শিক্ষণীয় বিষয়কে চোখের সামনে পাচ্ছি। পৃথিবীর সমস্ত গ্রন্থাগার এখন আমাদের ঘরেই যেন অবস্থান করছে।

জনস্বাস্থ্যে কম্পিউটার : মানুষের রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে কম্পিউটার এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। রোগের কারণ ও প্রতৃতি বিশ্লেষণ করে এর প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে কম্পিউটার এখন সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। কম্পিউটার প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ জটিল ব্যাধি থেকে নিরাময়ের পথনির্দেশ খুঁজে পাচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জটিল রোগের প্রতিষেধক ও নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারে কম্পিউটারের সাহয্য নিচ্ছে। কম্পিউটারের এই সহযোগিতা যথার্থ শিক্ষার মাধ্যমেই কাজে লাগানো সম্ভব।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কম্পিউটার : কম্পিউটার এখন তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক অবাক করা ভূমিকায় অভিনয় করছে। আধুনিক তথ্য যোগাযোগের জগতে ই-মেইল, ফ্যাক্স, ফোন, ইন্টারনেট প্রভৃতির প্রাণবায়ু হয়ে বিরাজ করছে কম্পিউটার। বিশ্বের আন্তর্জাতিক তথ্য প্রবাহের যুগে, অবাধ বিচরণের ক্ষেত্রকে কম্পিউটার অভাবিত প্রসারণ ঘটিয়ে বিপুল বিস্ময়ে কাজ করে যাচ্ছে। সাথে সাথে মানুষ স্ফীত করে তুলছে তার জ্ঞানভাণ্ডারকে। মানুষ তার অসীম আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে এখন এককভাবে নির্ভর করছে কম্পিউটারের ওপর এবং যথার্থভাবেই সে সাফল্য কুড়িয়ে নিচ্ছে। কম্পিউটার মানুষের দৈনন্দিন তথ্য আদান প্রদানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কম্পিউটারের একচ্ছত্র আধিপত্য এতটাই ব্যাপক ও দৃঢ়তার আস্থায় অধিষ্ঠিত যে, মানুষের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সে জড়িত হচ্ছে। হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার সিঁড়িতে সিঁড়িতে বিছানো লাল গালিচা বা কার্পেট। হয়ে উঠেছে মানুষের এক পরম সুহৃদ। কম্পিউটারের এ ভূমিকাকে দ্বিমত পোষণ করতে বোধ হয় এখনকার জগতে আর কেউ নেই।

[quads id=4]

কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব : বর্তমান যুগ কম্পিউটার যুগ। যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে হলে কম্পিউটার শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই জাতীয় উন্নতির কথা বিবেচনা করে প্রত্যেক শিক্ষিত ব্যক্তিকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা এবং তা প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের কল্যাণ সাধন করা উচিত। কম্পিউটারের কর্মক্ষেত্র প্রসারণের সাথে সাথে কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বেড়েই চলেছে। কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমেই এর উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। কম্পিউটার শিক্ষার অভাব থাকলে এর কার্যকারিতা ব্যাহত হবে। তাছাড়া কম্পিউটারের কার্যক্ষেত্র সম্প্রসারণের সঙ্গে প্রয়োজনীয় প্রমিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তির চাহিদাও বাড়ছে। তাই কম্পিউটার শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ অত্যাবশ্যক।

কম্পিউটার শিক্ষাব্যবস্থা : কম্পিউটার এখন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, কলকারখানা প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দীক্ষা গুরুর ভূমিকা পালন করছে, সেজন্য কম্পিউটার শিক্ষা ব্যাপক ও সামগ্রিক হওয়া প্রয়োজন। সে সরকারি প্রচেষ্টাতেই হোক আর বেসরকারি বা ব্যক্তিগত উদ্যোগ বা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাতেই হোক। এখনকার দিনের চাহিদা তথা যুগের দাবি মেটাতে কম্পিউটার শিক্ষাকে মানুষের হাতের নাগালে বা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যাপক আয়োজন দরকার। সেজন্য প্রয়োজন বিপুল জনশক্তি নিয়োগ। একটি জাতির দক্ষ জনশক্তি যখন কাজে নিযোজিত থাকে, তখন জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। প্রতিটি মানুষের মাঝে কম্পিউটারের জ্ঞানকে সম্প্রসারিত করা এখনকার দিনের দাবি বা যুগের দাবি। এ লক্ষ্যে কম্পিউটার শিক্ষাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সমস্ত বিশ্বে কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভরতে ব্যাপক তোড়জোড় চলছে, ফলে তারা এক্ষেত্রে বিপুল সাফল্যকে করায়ত্ত করে ফেলেছে। তাবৎ বিশ্বে এ ব্যাপারে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইদানিং আমাদের দেশে অবশ্যই বিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে কম্পিউটার শিক্ষা। দেশের কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অবশ্য প্রথম থেকেই তাদের শিক্ষা কারিকুলামে কম্পিউটারকে বাধ্যতামূলক করেছে। কম্পিউটার শিক্ষাকে শুধু মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না, উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মান পর্যন্তও চালু করা দরকার। বর্তমান বিশ্বে যা চলছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলে তা জাতির জন্য মঙ্গলই বয়ে আনবে বলে সকল বিদ্ব্যানজন বিশ্বাস করেন। কম্পিউটার শিক্ষাকে মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সরকারি প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানো যায় এ চেষ্টা যাতে ফলবতী হয় সেজন্য আমাদের সকলকে জাতীয়ভাবে সচেষ্ট হতে হবে।

উপসংহার : কম্পিউটার মানব সভ্যতার বিকাশে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এতে যেমন কোনো দ্বিমত নেই ঠিক তেমনি তা অর্থবহ হবে ব্যাপকভাবে কম্পিউটার শিক্ষা লাভের মধ্যে- এর বিপরীতে কোনো মন্তব্য নেই। এর শিক্ষা ও ব্যবহার বৃদ্ধি করে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সম্মুখপানে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে উন্নত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লাভ করতে পারে কম্পিউটার শিক্ষা ও ব্যবহারের মাধ্যমে। উন্নত ও আধুনিক জীবন প্রণালীর প্রতিটি স্তরে কম্পিউটার সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাই এ ব্যাপারে শিক্ষা গ্রহণ ও প্রয়োগের জন্য সবাইকে সেচেষ্ট হতে হবে।

এখানে সকল প্রকাশ শিক্ষা বিষয় তথ্য ও সাজেশন পেতে আমাদের সাথে থাকুন ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

Leave a Comment