মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের কারণ ও ফলাফল লিখুন, hsc (bou) ১২শ শ্রেণির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র ১২শ শ্রেণি ১ম অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১

শ্রেণি: ১২শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 01 বিষয় কোডঃ 2856
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের কারণ ও ফলাফল লিখুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

আরব বণিকগণ ইসলামপূর্ব যুগ থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে ব্যবসায় বাণিজ্য করতো। আরবে ইসলামের আবির্ভাবের পরও এই ধারা অব্যাহত থাকে। আরব নাবিকদের অনেকেই এ উপমহাদেশের পশ্চিম ও পূর্ব উপকূলে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকে। স্থানীয় রমণীদের সাথে তাদের বিয়ে-সাদীও হয়। ইসলামের আবির্ভাবের এক শতাব্দি পর ভারতে মুসলমান শাসনের গোড়াপত্তন হয়। উমাইয়া বংশের খলিফা প্রথম ওয়ালিদ তখন আরব জাহানের খলিফা। তাঁর অধীনে পূর্বাঞ্চলের গভর্নর ছিলেন হাজ্জাজ বিন-ইউসুফ। ৭১২ খ্রিস্টাব্দে হাজ্জাজের নির্দেশে মুসলমানগণ ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে সিন্ধু ও মুলতান অধিকার করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ভারতে স্থায়ী মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

সিন্ধু অভিযানের কারণসমূহ: তৎকালীন ভারতের সিন্ধু ও মুলতানের রাজা ছিলেন দাহির। আরব সাম্রাজ্যের খলিফা ছিলেন প্রথম ওয়ালিদ। আরব সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ ইরাক প্রদেশের গভর্ণর ছিলেন হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। সিন্ধু ও মুলতানের সাথে আরব শাসনের সাধারণ সীমান্ত ছিল। নানা কারণে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও রাজা দাহিরের মধ্যে মতপার্থক্য হয়। এ কারণে হাজ্জাজ ভারতের সিন্ধু জয় করার জন্য তাঁর জামাতা ও ভ্রাতুস্পুত্র ইমাদউদ্দিন মুহম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে ৭১২ খ্রিস্টাব্দে এক বিজয় অভিযান প্রেরণ করেন।

পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ কারণসমূহ: সিন্ধু বিজয়ের পরোক্ষ কারণসমূহের মধ্যে ছিল অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণ এবং প্রত্যক্ষ কারণের মধ্যে ছিল জলদস্যুদের দ্বারা আরব বণিকদের জাহাজ লুন্ঠন।

অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণ: ভারত ধন-ঐশ্বর্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। আরবদের সিন্ধু অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ধনরত্ন লাভ করা। রাজা দাহিরের রাজ্য ও আরব সাম্রাজ্যের মধ্যে সীমান্ত অভিন্ন হওয়ায় দুই রাজ্যের মধ্যে প্রায়ই মতানৈক্য ও মতবিরোধ সৃষ্টি হতো এবং সীমান্ত সংঘর্ষ লেগেই থাকত। হাজ্জাজ ছিলেন কঠোর প্রকৃতির শাসক। আইনের শাসন এড়িয়ে হাজ্জাজের অঞ্চল থেকে অনেক অপরাধী রাজা দাহিরের রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। এ সকল কারণে রাজনৈতিক তিক্ততা

উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। এই সময় সিন্ধুতে চলছিল রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা। দাহির ছিলেন অত্যাচারী শাসক। নিম্নশ্রেণির লোকেরা ছিল অত্যাচারিত। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কোন রাজনৈতিক অধিকার ছিল না। সুতরাং এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাজ্জাজ সিন্ধু জয় করে সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটাতে চেয়েছিলেন। ভারতে ইসলাম প্রচার করাও হাজ্জাজের একটি উদ্দেশ্য ছিল।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

জলদস্যু কর্তৃক জাহাজ লুন্ঠন : অষ্টম শতকের শুরুতে বেশ কয়েকজন আরব বণিক শ্রীলংকায় (তৎকালীন সিংহল) প্রাণত্যাগ করেন। শ্রীলংকার রাজা মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী দামেস্কে তাদের মৃতদেহ, পরিবার-পরিজন ও অর্থসামগ্রীসহ আটটি জাহাজে বোঝাই করে প্রেরণ করেন। সাথে খলিফা এবং হাজ্জাজের জন্য কিছু উপহারও ছিল। সিন্ধুর বন্দর দেবলের (করাচির সন্নিকটে) কাছে এ সকল জাহাজ জলদস্যুদের দ্বারা লুন্ঠিত হয়। হাজ্জাজ সিন্ধুর রাজা দাহিরের নিকট ক্ষতিপূরণ ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি করেন। কিন্তু দাহির বলে পাঠান যে, জলদস্যুদের উপর তাঁর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সুতরাং তাঁর পক্ষে হাজ্জাজের দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়। হাজ্জাজ এতে খুবই রেগে যান। তিনি দাহিরকে সমুচিত শিক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি খলিফার নিকট থেকে সিন্ধু অভিযানের প্রয়োজনীয় অনুমতি গ্রহণ করেন।

সিন্ধু অভিযানের ঘটনা: ইরাকের গভর্নর হাজ্জাজ বিন-ইউসুফ সিন্ধু বিজয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি সেনাপতি ওবায়দুল্লাহ ও বুদাইলের নেতৃত্বে পর পর দু’টি অভিযান পাঠালেন। কিন্তু দু’টি অভিযানই ব্যর্থ হল। এতে হাজ্জাজ ক্ষান্ত হলেন না। তিনি তৃতীয় অভিযান পাঠালেন। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিলেন তাঁর ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা মুহম্মদ বিন-কাসিমকে। মুহম্মদ বিন-কাসিমের বয়স তখন মাত্র ১৭ (সতেরো) বছর।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আগের দু’টি অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় এবার হাজ্জাজ ব্যাপক প্রস্তুতি নিলেন। মুহম্মদের সৈন্যবাহিনীতে ছিল প্রায় ৬০০০ পদাতিক, ৬০০০ উষ্ট্রারোহী, ৩০০০ তীরন্দাজ এবং ৩০০০ ভারবাহী পশু। তরুণ সেনানায়ক ছিলেন অসীম মনোবলের অধিকারী। নেতৃত্ব দেয়ার সকল গুণাবলীই তাঁর ছিল। মুহম্মদ মাকরানের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হলেন। মাকরানের শাসকের সাথে তিনি বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। মাকরানের শাসক মুহম্মদকে আরও একটি সৈন্যবাহিনী দিয়ে সাহায্য করেন। রাজা দাহিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ জাঠ ও মেওয়াট গণ মুসলমানদের পক্ষে যোগ দেয়। হাজ্জাজ জলপথেও মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য একদল সৈন্য পাঠান।

এছাড়া ‘বলিস্ত’ নামক একপ্রকার যন্ত্রও হাজ্জাজ পাঠিয়েছিলেন। বলিস্ত ছিল এক ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র। এই যন্ত্র দিয়ে ভারী পাথর দূরে নিক্ষেপ করে আঘাত করা সম্ভব ছিল। মুহম্মদ বিন-কাসিম প্রথমেই দেবল বন্দর অবরোধ করেন। তিনি ছিলেন খুবই বুদ্ধিমান সেনানায়ক। দেবলের প্রধান মন্দিরের চূড়ায় একটি লাল নিশান উড়ানো ছিল। তিনি বলিস্ত দিয়ে পাথর ছুড়ে নিশানটি ধ্বংস করে ফেলেন। এতে দেবলের সৈনিকদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। তাদের ধারণা ছিল মন্দিরের চূড়ায় যতক্ষণ নিশান উড়বে ততক্ষণ বাইরের কোন শত্রু দেবল দখল করতে পারবে না।

ব্রাহ্মণ ও রাজপুতগণ দেবল রক্ষার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা চালান। তাঁরা অসীম সাহসে যুদ্ধ করলেও শেষে মুসলমানদের উন্নত রণকৌশলের কাছে পরাজিত হলো। মুসলমানদের দখলে এলো দেবল বন্দর। দেবল দখলের পর মুহম্মদ বিন-কাসিম সিন্ধু নদের তীর ধরে উত্তর দিকে এগিয়ে নীরুন, সিওয়ান ও সিসাম শহরগুলো একের পর এক জয় করলেন। এগুলো দখল করতে তাঁকে তেমন কোন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু রাওয়ার দুর্গ দখলের ব্যাপারে মুহম্মদ বিন-কাসিমকে প্রচণ্ড বাঁধার মুখে পড়তে হয়। এখানে রাজা দাহির এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর সমাবেশ ঘটান। মুহম্মদ বিন-কাসিম নৌকার সেতু তৈরি করে সিন্ধু নদ পার হন। অত:পর দাহিরের বাহিনীর সাথে মুসলমানদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।

রাজা দাহির বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রাণ ত্যাগ করেন। রাজার মৃত্যুতে সৈনিকগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং সবাই পালিয়ে যায়। অল্প কিছু সৈন্য নিয়ে দাহিরের বিধবা পত্নী রাণীবাঈ দুর্গে আশ্রয় নিলেন। কিন্তু দুর্গ রক্ষা করা যাবেনা ভেবে তিনি অন্ত:পুরের অন্যান্য রমনীদের নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেন। শত্রুর হাতে অপমানিত হওয়ার ভয়ে এভাবে মৃত্যুকে বেছে নেয়ার রীতি তৎকালীন ভারতে প্রচলিত ছিল; একে হজরব্রত বলা হতো। রাওয়ার দুর্গ দখলের পর মুহম্মদ বিন কাসিম ব্রাহ্মণাবাদ অধিকার করেন। এরপর সিন্ধুর রাজধানী আলোর দুর্গের পতন ঘটে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আলোর জয় করে তিনি সিন্ধু অঞ্চলে সুশাসনের ব্যবস্থা করেন। এরপর মুহম্মদ বিন-কাসিম আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে মুলতান জয় করেন। মুলতানের পথে তিনি রাভী নদীর তীরে অবস্থিত উচ্ দখল করেন। মুলতান দখল করতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। মুলতান রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে স্থানীয় যোদ্ধারা প্রায় দু’মাস মুলতান দুর্গ রক্ষায় সক্ষম হয়। অবশেষে তাদের সকল প্রতিরোধ চূর্ণ করে মুহম্মদ বিন-কাসিম মুলতান দখল করতে সক্ষম হন। মুলতান দখলের মধ্য দিয়ে রাজা দাহিরের রাজ্যের পুরোটাই মুসলমানদের অধিকারে চলে আসে।

সিন্ধু বিজয়ের ফলাফল: সিন্ধু বিজয়ের পর মুহম্মদ বিন-কাসিম সেখানকার প্রশাসনিক দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ৭১২ থেকে ৭১৫ পর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। সিন্ধু-মুলতানে তিনি মুসলিম প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। ৭১৫ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আল ওয়ালিদের মৃত্যু হয়। পরবর্তী খলিফা সোলায়মান আল ওয়ালিদের আস্থাভাজন ও অনুগৃহীত ব্যক্তিদের প্রতি বিরূপ আচরণ শুরু করেন এবং তিনি মুহম্মদ বিন-কাসিমকে দামেস্কে যেতে নির্দেশ পাঠান। সেখানে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়।

কারাগারেই তাঁর মৃত্যু হয়। মুহম্মদ বিন-কাসিমের অকাল মৃত্যুর ফলে তাঁর বিজয় অভিযান সিন্ধু ও মুলতানেই সীমাবদ্ধ ছিল। বিশেষত এ কারণেই মুসলমানদের সিন্ধু বিজয়ের ফলাফল সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। স্ট্যানলি লেনপুল মন্তব্য করেছেন, “ভারত ও ইসলামের ইতিহাসে আরবদের সিন্ধু বিজয় একটি উপাখ্যান মাত্র, এটি একটি নিষ্ফল বিজয়।” কোন কোন ঐতিহাসিক তাঁর এই মন্তব্যকে সমর্থন করলেও কিছুঐতিহাসিক মনে করেন মুহম্মদ বিন-কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী।

রাজনৈতিক ফলাফল : একথা সত্য যে, মুহম্মদ বিন-কাসিমের বিজয় শুধুমাত্র সিন্ধু ও মুলতানেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু তাই বলে এ বিজয়কে নিষ্ফল বলা যায় না। আরবরা সিন্ধু অঞ্চলে এক উন্নত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে। আরব সৈন্যদের মধ্যে অনেকেই সিন্ধুতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন এবং কেউ কেউ স্থানীয় রমণীও বিয়ে করেন। এভাবে ভারতে স্থায়ী মুসলমান বসতি গড়ে ওঠে। তারা রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করে। আরব বংশধর ও হিন্দুগণ দীর্ঘকাল পাশাপাশি বসবাস করে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মুহম্মদ বিন-কাসিমের বিজয় সুলতান মাহমুদকে বারবার ভারত অভিযানে অনুপ্রাণিত করেছিল। সুলতান মাহমুদের পর মুহম্মদ ঘোরি ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জয় করেন। তবে মুহম্মদ বিন-কাসিমের বিজয়কে ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে ভারতে দীর্ঘস্থায়ী মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ফলাফল:

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সিন্ধু বিজয়ের সুদূরপ্রসারী ফলাফল ছিল লক্ষ্যণীয়। স্থানীয় অধিবাসীগণ মুসলমানদের সংস্পর্শে আসার কারণে তারা ইসলামের সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শ দ্বারা আকৃষ্ট হয়। জাঠ ও মেওয়াটগণ মুসলমানদের স্বাগত জানিয়েছিল। হিন্দুধর্মের জাতিভেদ প্রথা এবং সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য নিম্নশ্রেণীর হিন্দুদের মধ্যে অনেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়। মুসলমানদের সংস্পর্শে আসার ফলে ভারতীয় সমাজের বর্ণভেদ ও জাতিভেদ প্রথার কঠোরতা বহুলাংশে হ্রাস পায়। এই বিজয়ের ফলে আরব সাম্রাজ্যের সাথে ভারতের ব্যবসায় বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয় এর ফলে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উপকূলে আরবদের সামুদ্রিক বাণিজ্য সুদূর প্রসারী হয়। ফলে দু’পক্ষই অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হয়।

সাংস্কৃতিক ফলাফল :

সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আরবদের সিন্ধু বিজয়ের ফলাফল ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। সিন্ধু বিজয়ের পূর্বে আরবগণ গ্রিক, মিসরীয়, মেসোপটেমীয় এবং পারসিক সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়। তারা এ সকল সংস্কৃতির মধ্যে এক ধরনের সমন্বয় সাধন করে। মুসলমানগণ যখন ভারতে আসে তখন তারা ছিল এই সমন্বিত সংস্কৃতি ও সভ্যতার অধিকারী। ভারতীয়রা দর্শন, সাহিত্য, গণিত, চিকিৎসাশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা, সংগীত, চিত্রশিল্প প্রভৃতিতে প্রাচীনকাল থেকেই উন্নতি সাধন করেছিল। ভারতীয় সভ্যতা ও ইসলামি সভ্যতার মধ্যে যোগাযোগের ফলে ভাবের আদান-প্রদান ও সংমিশ্রণ ঘটে।

আব্বাসীয় যুগের খলিফাগণ ভারতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই-পুস্তক আরবি ভাষায় অনুবাদ করার ব্যবস্থা করে এক স্বর্ণযুগের সূচনা করেছিলেন। উদাহরণ হিসেবে ‘সিন্দহিন্দ’ নামক গ্রন্থের কথা উল্লেখ করা যায়। খলিফা মনসুরের আমন্ত্রণে কয়েকজন ভারতীয় পন্ডিত বাগদাদ যাওয়ার সময় সাথে নিয়ে যান জ্যোতির্বিদ্যার উপর লিখিত ‘সিদ্ধান্ত’ নামক সংস্কৃত গ্রন্থটি। আরবীয় পন্ডিতগণ এটি আরবি ভাষায় অনুবাদ করেন। অনূদিত গ্রন্থটির নামকরণ করা হয় ‘সিন্দহিন্দ’। ভারতীয়দের কাছ থেকেই আরবগণ গাণিতিক সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর লিখিত ‘চরক’ ও ‘সুশ্রুত’ আরবিতে অনূদিত হয়। ‘পঞ্চতন্ত্রের’ হিতোপদেশ আরবিতে অনূদিত হয়ে আরব ভূখন্ডে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment