মিশ্র অর্থনীতি কি?, মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য গুলো কি? ,মিশ্র অর্থনীতি বলতে কি বুঝ?, মিশ্র অর্থনীতির সংজ্ঞা দাও

মিশ্র অর্থনীতি কি?, মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য গুলো কি? ,মিশ্র অর্থনীতি বলতে কি বুঝ?, মিশ্র অর্থনীতির সংজ্ঞা দাও

মিশ্র অর্থনীতি কি? মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য গুলো কি? অথবা, মিশ্র অর্থনীতি বলতে কি বুঝ? অথবা, মিশ্র অর্থনীতির সংজ্ঞা দাও

ভূমিকা: ধনতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র এই দুই মতবাদের সমন্বয়ে যে ব্যবস্থা বা যে অর্থনীতি গড়ে উঠে তাই হলো মিশ্র অর্থনীতি। বর্তমানে উন্নত বিশ্বসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহেও এই মতবাদ ব্যাপক পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল প্রভৃতি রাষ্ট্রে মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে।

মিশ্র অর্থনীতির সংজ্ঞা : 

মিশ্র অর্থনীতি বলতে এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বুঝায়, যেখানে অর্থনীতির একাংশ সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং অন্যান্য দিক বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হয়। এ ব্যবস্থা যুগপৎভাবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। 

এ ব্যবস্থায় কতকগুলো অর্থনৈতিক কর্মের দায়িত্ব বেসরকারি মালিকানার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। এবং কতকগুলো দায়িত্ব সরকারি মালিকানায় পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে সামগ্রিক কার্যাদির উপর রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় আইন দ্বারা সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : 

বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানীগণ মিশ্র অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন তা নিম্নরূপ:

A. Chand –

Mixed economy is a System which is neither pure capitalism nor pure socialism but a mixture of the two.

অধ্যাপক স্যামুয়েল সন বলেন, 

মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এমন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো, যেখানে উৎপাদন ও ভোগ কর্ম সংগঠন করার ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থার সাথে সরকারি ব্যবস্থার সংমিশ্রণ ঘটে থাকে। 

Henderson এর মতে, 

মিশ্র অর্থব্যবস্থা বলতে এমন একটি অর্থব্যবস্থাকে বুঝায় যেখানে সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্রীয় মালিকানা উভয়ই স্বীকৃত


আরো ও সাজেশন:-

মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ : 

মিশ্র অর্থনীতির কতিপয় বিশেষত্ব ও বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়- যা নিম্নরূপ : 

১. ব্যক্তিগত মালিকানা : 

মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত উদ্যোগ, সম্পদ ও উৎপাদনের উপাদানসমূহের উপর মালিকানা স্বীকার করা হয়। 

২. সরকারি মালিকানা: 

মিশ্র অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত মালিকানা ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি মালিকানা ও সরকারি উদ্যোগ স্বীকৃত ।

৩. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা : 

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মিশ্র অর্থনীতিতে যে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তাকে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ কোন কোন খাতে কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত থাকে। 

৪. সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহাবস্থান :

মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি খাত একে অপরের পরিপূরক হিসেবে পাশাপাশি অবস্থান করে।

৫. ধনতন্ত্রের বিলোপ ঘটে না : 

মিশ্র অর্থনীতিতে ধনতন্ত্রবাদের স্থিতাবস্থা রক্ষা করে চলা হয়। ফলে ধনতন্ত্রের বিলোপ ঘটে না। 

৬. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ : 

মিশ্র অর্থব্যবস্থায় সামাজিক নিয়ন্ত্রণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ব্যবসায় ব্যক্তিগত উদ্যোগের ক্ষেত্রে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।

৭. স্বাধীনতা : 

মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ভোগকারীদের অবাদে পণ্য ক্রয়ের স্বাধীনতা বিদ্যমান। ভোক্তাগণ তাদের ইচ্ছামতো এবং পছন্দসই দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ের মাধ্যমে ভোগ করতে পারে।

৮. স্বয়ংক্রিয় মূল্য ব্যবস্থা : 

মিশ্র অর্থনীতিতে স্বয়ংক্রিয় মূল্য ব্যবস্থার দ্বারা উৎপাদন, ভোগ, বিনিময় ও বণ্টন সমস্যার সমাধান করা হয়। 

উপসংহার : 

পরিশেষে বলা যায় যে, মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার পাশাপাশি অবস্থানরত। মিশ্র অর্থনীতি গ্রহণ করে একটি দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বাংলাদেশের অর্থনীতি মিশ্র অর্থনীতির প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।

Leave a Comment