বেঙ্গল প্যাক্ট কি? বেঙ্গল প্যাক্টের শর্তাবলী ও গুরুত্ব আলোচনা কর,বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তির গুরুত্ব,বেঙ্গল প্যাক্ট এর সর্ত সমূহ কী কী ?

Google Adsense Ads

প্রশ্ন সমাধান: বেঙ্গল প্যাক্ট কি? বেঙ্গল প্যাক্টের শর্তাবলী ও গুরুত্ব আলোচনা কর,বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তির গুরুত্ব,বেঙ্গল প্যাক্ট এর সর্ত সমূহ কী কী ?

বেঙ্গল প্যাক্ট কি ?

বেঙ্গল প্যাক্ট একটি চুক্তি যা ১৯২৩ সালে সম্পাদিত হয়। একে বাংলা চুক্তিও বলা হয়। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতাদের মধ্যে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এ সমস্যা সমাধানকল্পে এগিয়ে আসেন। তিনি অনুভব করেন যে, বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দাবি অগ্রাহ্য করে স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। তাছাড়া মুসলিম সম্প্রদায় চাকরি, আর্থিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে। তাই তিনি মুসলমানদের সমর্থন ও হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য স্থাপনরে চেষ্টা করেন।

বাংলার মুসলিম নেতা এ. কে. ফজলুল হক, আব্দুল করিম এবং হোসেন শহীদ সৌহরাওয়ার্দী চিত্তরঞ্জন দাশের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। এবং এ নেতাদের উদ্যোগে বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। বাংলা কংগ্রেসের নেতা সুভাষচন্দ্র বসু চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।


আরো ও সাজেশন:-

বেঙ্গল প্যাক্টঃ ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ ও ১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ রদ বাংলার হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে যে দূরত্বের সৃষ্টি করেছিল তা ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পথে অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছিল। উদারপন্থি নেতা চিত্তরঞ্জন দাস কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করে স্বরাজ পার্টি গঠন করে বাংলার হিন্দু-মুসলিম সমস্যার সমাধান ও উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট হন। ব্রিটিশ বিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটে বাংলার উদারপন্থি ও জনপ্রিয় নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, আব্দুল করিম, সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ বাংলার রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য ১৯২৩ সালে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তা বাংলার ইতিহাসে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ বা ‘বাংলার চুক্তি’ নামে পরিচিত। বেঙ্গল প্যাক্ট ছিল অখণ্ড ভারতের হিন্দু-মুসলিম মিলনের সর্বশেষ উদ্যোগ। এ চুক্তির মাধ্যমে চিত্তরঞ্জন দাস বাংলার মুসলমানদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেন। কিন্তু উগ্র হিন্দুরা এর বিরোধীতা করে। ফলে ১৯২৫ সালে চিত্তরঞ্জন দাসের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এ চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

বেঙ্গল প্যাক্টের শর্তাবলি

বাংলায় হিন্দু-মুসলমানদের মিলনের জন্য একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ছিল বাংলা চুক্তি বা বেঙ্গল প্যাক্ট। এ চুক্তির শর্তাবলি নিম্নরূপ-

১। স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলার প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ অধিকার পাবে এবং লোকসংখ্যার অনুপাতে ও স্বতন্ত্র নির্বাচন প্রথায় আইন পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

২। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় শতকরা ৬০টি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শতকরা ৪০ টি আসন লাভ করবে।

৩। মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য সরকারি দপ্তরগুলোতে শতকরা ৫৫ ভাগ চাকরি সংরক্ষিত থাকবে।

৪। যদি কোনো সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে আইন পাস করতে চায়, তাহলে আইনসভায় নির্বাচিত উক্ত সম্প্রদায়ের তিন-চতুর্থাংশ সদস্যের সম্মতিক্রমে তা করতে হবে।

৫। মসজিদের সামনে গান-বাজনাসহকারে মিছিল করা নিষেধ এবং গরু জবাই করার ব্যাপারে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করা হবে না।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তির গুরুত্ব

বাংলার হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলা চুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। এ চুক্তি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এ চুক্তির ফলে স্বরাজ দল অবিভক্ত বাংলার আইন পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম আসনে ২১টি এবং হিন্দু এলাকায় ৩৬টি আসন লাভ করে। এছাড়া পরের বছর কলকাতা করপোরেশনের নির্বাচনেও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে।

নির্বাচনের ফলাফল অনুসারে লর্ড লিটন চিত্তরঞ্জন দাশকে মন্ত্রিসভা গঠন করার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু লিটনের আমন্ত্রণ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। কেননা তিনি ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের দ্বৈতশাসন ব্যবস্থাকে অচল করতে চেয়েছিলেন। এ চুক্তি বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সম্পর্কে সচেতন করে। বাংলার মুসলিম সম্প্রদায় এতে লাভবান হয়। এ ‍চুক্তি মুসলিম নেতৃত্বের বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। যার ফলে পরবর্তী সময়ে মুসলমানরা নিজেদের স্বতন্ত্র আবাসভূমির কথা চিন্তা করে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Comment