বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে নিয়োগ পরিক্ষায় আসা প্রশ্ন সমাধান, নিয়োগ পরিক্ষার জন্য ১০০% কমন বিভিন্ন রোগব্যাধি এক সাথে, যেকোন চাকরির পরীক্ষায় বার বার আসা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন রোগব্যাধি, বিভিন্ন রোগব্যাধি ব্যাংক বিসিএস সরকারি চাকরির জন্য কমন উপযোগী গুরুত্বপূর্ণ, নিয়োগ পরিক্ষা আসা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন রোগব্যাধি এক সাথে

কোনো সংক্রামক রোগ যখন বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর মাঝে খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়ে পড়ে; তখন বলা হয় রোগটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। পৃথিবীতে যুগে যুগে অসংখ্য মহামারীর ঘটনা ঘটেছে এবং এসব মহামারীতে মৃত্যু হয়েছে কোটি কোটি মানুষের। এসব মহামারীতে প্লেগ আর ফ্লুর নামই সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। অনেক সময় দেখা যায়, নানা কারণে একটি ছোট অঞ্চলে প্রাদুর্ভাব ঘটা রোগ ছড়িয়ে যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তখন এ মহামারী রূপ নেয় প্যান্ডেমিক বা বিশ্বমারীতে।

মহামারীর সংখ্যা: ইতিহাসে অর্ধশতাধিক মহামারীর লিখিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। মহামারীগুলোতে মানব জাতি বিভিন্ন সময়ে বড় সংকটে পড়েছিল। ২০১৯ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে এডিস মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিপাইনে প্রায় ৭২০ জন ডেঙ্গুতে মারা যান। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায়ও ছড়িয়ে পড়েছিল ডেঙ্গু। বাংলাদেশেও ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়িয়েছিল। ২০২০ সালে এসে করোনাভাইরাস ঘটিত কোভিড-১৯ কে প্যান্ডেমিক ঘোষণা করা হয়েছে।

যুগ-যুগান্তরের বিশ্বসভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মহামারীর ইতিহাস ঘাটলে আমরা দেখতে পাই—

৪৩০ খ্রিষ্টপূর্ব: এপিডেমিক অব এথেন্স
খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ অব্দে স্পার্টানদের সাথে গ্রিকদের যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছিল না গ্রিকরা। তার ওপর ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে আসে ‘দ্য প্লেগ অব এথেন্স’ নামে পরিচিত পৃথিবীর প্রথম প্লেগ মহামারী। এ মহামারীতে হাজার হাজার গ্রিক সৈন্য মারা যায় কয়েক দিনের ব্যবধানে। তবে ইতিহাসবিদদের মাঝে এ প্লেগের ধরন নিয়ে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে।

অন্যদিকে এথেন্সের প্লেগ মহামারী নিয়ে খুব বেশি তথ্য যে জানা গেছে- এমনও নয়। তাই এর প্রকৃত ধরন আমরা হয়তো কোনোদিন জানতে পারবো না। আবার এ মহামারীতে ঠিক কতজন মানুষ মারা গিয়েছিল, তা-ও জানা সম্ভব নয়। আক্ষরিক অর্থে, এথেন্সের প্রাচীন মহামারী সম্পর্কে আমরা যা কিছু জানি সবই গ্রিক ইতিহাসবিদ থুসিডাইডসের রচনাংশ ‘হিস্ট্রি অব দ্য পেলোপনেসিয়ান ওয়্যার’ থেকে পাওয়া। অবশ্য থুসিডাইডসের তথ্য নিয়ে খুব একটি সন্দেহ নেই কোনো ইতিহাসবিদের মনে। কারণ থুসিডাইডস এ কুখ্যাত প্লেগ নিজ চোখেই দেখেছেন, যা গ্রামের পর গ্রাম জনমানবহীন করে দিয়েছিল।

আবার আর একদল ইতিহাসবিদের মতে, ৪৩০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এথেন্সে মহামারী হয়েছিল টাইফয়েড, টাইফাস জ্বর, গুটিবসন্ত কিংবা অ্যানথ্রাক্সে। তবে এ দলের বেশিরভাগ মনে করেন, মহামারী হয়েছিল গুটিবসন্তের জন্য। রোগটি ভেরিওলা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রামক এ রোগটি একজন মানুষের ত্বকের সাথে আরেকজনের স্পর্শে ছড়ায়। এমনকি বাতাসের মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায় এবং এ কারণে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ এ গ্রিসের এথেন্সে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়, যা ছিল ওই নগরের ২০ শতাংশ মানুষ।

৫৪১ খ্রিষ্টাব্দ: দ্য প্লেগ অব জাস্টিনিয়ান
বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী সম্রাট জাস্টিনিয়ান রোমান সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব অভিযান চালিয়েছিলেন, সেগুলোর জন্য ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কিন্তু সেসব অভিযান ছাপিয়ে তার নাম অধিকবার উচ্চারিত হয় তার শাসনামলে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ মহামারীর কারণে। ৫৪০-৫৪১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মিশরে এক ভয়ানক প্লেগের উৎপত্তি ঘটে।

এবার এ রোগ বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে ইঁদুর। তৎকালীন পৃথিবীতে মিশরই ছিল সমগ্র ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যশস্যের জোগান। ফলে এখানে সৃষ্ট রোগ সহজেই পূর্ব থেকে পশ্চিমে ছড়িয়ে যায়। রোগের প্রথম আক্রমণটা ছিল বাইজান্টাইনের রাজধানী কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমান ইস্তাম্বুল)। কোনো কোনো ইতিহাসবিদের মতে, মহামারীর চূড়ান্ত পর্যায়ে সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার মানুষ মারা যেত!

প্রায় ৫০ বছর টিকে থাকা এ মহামারী আড়াই কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। তবে কিছু কিছু উৎসে সংখ্যাটা ১০ কোটিতেও ঠেকেছে। প্রাচীন পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক এ মহামারীই ইউরোপে ‘ডার্ক এজ’র সূচনা করেছিল।

১৩৩৪ সাল: দ্য গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন
গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন হিসেবে স্বীকৃত ১৩৩৪ সালের প্লেগ আসলে ছড়ায় চীন থেকে। এরপর ইতালির ফ্লোরেন্স শহরেই ছয় মাসে প্লেগে মারা যায় ৯০ হাজার মানুষ। পুরো ইউরোপজুড়ে মারা যায় আড়াই কোটি মানুষ।

১৩৪৬ সাল: দ্য ব্ল্যাক ডেথ
পৃথিবীর ইতিহাসে কিংবা একটু ছোট পরিসরে বললে ইউরোপের ইতিহাসে ব্ল্যাক ডেথের মতো আলোচিত মহামারী আর নেই। এরকম ভয়ানক, সর্বগ্রাসী রোগের প্রাদুর্ভাব সম্ভবত পৃথিবী একবারই দেখেছিল ১৪ শতকে। কৃষ্ণ সাগরের (ব্ল্যাক সি) উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলো থেকে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল বিধায় একে ব্ল্যাক ডেথ বলা হয়। সেসময় ইউরোপ ও এশিয়ার বাণিজ্য হতো এ কৃষ্ণ সাগর দিয়েই। আর এখান থেকে খাদ্যদ্রব্যের জাহাজগুলোতে চড়ে বসতো অসংখ্য ইঁদুর, যেগুলো কি-না রোগের প্রধান জীবাণুবাহী।

তবে ব্ল্যাক ডেথের সময় মানুষ কোন রোগটিতে অধিক হারে মৃত্যুবরণ করেছিল, তা নিয়ে ইতিহাসবিদগণ দ্বিধাবিভক্ত। একাংশের মতে, রোগটি ছিল এক প্রকার গ্রন্থিপ্রদাহজনিত প্লেগ। অন্য অংশের দাবি, এ ভয়ানক মহামারী ঘটেছিল ইবোলা ভাইরাসের কারণে।

১৩৪৭-৫১ খ্রিষ্টাব্দ সময়কালই ছিল ব্ল্যাক ডেথের সবচেয়ে বিধ্বংসী সময়। এ সময় ইউরোপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রাণবায়ু কেড়ে নেয় এ মহামারী। তবে এ অভিশপ্ত মহামারীর প্রভাব টিকে ছিল অন্তত ২০০ বছর। ইতিহাসবিদদের মতে, এ ২০০ বছরে অন্তত ১০ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন! এটি এমনই এক মহামারী ছিল যে, এর কারণে সমগ্র ইউরোপের অর্থনৈতিক সার্বিক জীবন কাঠামোই বদলে যায়, প্রভাবিত হয় শিল্প-সাহিত্যও। ব্ল্যাক ডেথের রেখে যাওয়া গভীর ক্ষত বয়ে বেড়াতে হয় পরবর্তী বেশ কয়েক প্রজন্মের।

১৫১৯ সাল: স্মলপক্স এপিডেমিক অব মেক্সিকো
বর্তমান মেক্সিকোতে ১৫১৯ সালে স্মলপক্স ছড়িয়ে পড়লে দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৮০ লাখ মানুষ।

১৬৩৩ সাল: স্মলপক্স এপিডেমিক অব আমেরিকা
ফ্রান্স, গ্রেট বৃটেন ও নেদারল্যান্ডসবাসীর মাধ্যমে ১৬৩৩ সালে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে স্মলপক্স ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২ কোটি মানুষ মারা যায় বলে দাবি করেন ইতিহাসবিদরা।

১৭৯৩ সাল: ইয়েলো ফিভার এপিডেমিক অব আমেরিকা
আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৯৩ সালে ইয়েলো ফিভার মহামারী আকার ধারণ করে। এতে নগরের ১০ ভাগের এক ভাগ, প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ মারা যায়।

১৮৬০ সাল: দ্য থার্ড প্লেগ প্যানডেমিক
ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্তৃত আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে মোটামুটি ৩ বার। তৃতীয়টির উৎপত্তি ১৯ শতকে চীনে, যখন বিশ্ববাণিজ্যে ভালোরকম প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে দেশটি। ইউয়ান নামক একটি ছোট্ট গ্রামে প্রথম এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ক্রমে তা বিস্তার লাভ করতে করতে হংকং আর গুয়াংঝু প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে, যে শহরগুলোর সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরাসরি বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল। ফলে প্লেগ ছড়িয়ে যায় ভারত, আফ্রিকা, ইকুয়েডর, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও। প্রায় দুই দশক স্থায়ী এ মহামারীতে প্রাণ হারায় ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ।

কোনো কোনো ইতিহাসবিদের বর্ণনায় সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে দেড় কোটির কোটা! সেসময়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছিল বেশ ভালোভাবেই। পূর্বের অনেক মরণঘাতি রোগই তখন প্রতিনিয়ত ডাক্তারদের নিরাময় করার সক্ষমতার মধ্যে চলে আসতে শুরু করে। আর এ কারণেই মূলত চতুর্থবার বিস্তীর্ণভাবে প্লেগ মহামারী ঘটেনি। সেবারই বিশ্বজুড়ে চিকিৎসক সমাজের প্রতিকার প্রতিবিধান করে। পরে ১৮৯০ এর দশকে প্লেগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন হয়।

১৯১০ সাল: দ্য প্লেগ এপিডেমিক অব ফার্স্ট ডিকেড
বিশ শতকের সবচেয়ে বড় প্লেগ মহামারী দেখা দেয় ১৯১০ সালে। চীনের মাঞ্চুরিয়ায় দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। এটি চতুর্থবার প্লেগের মহামারী হলেও তা বিস্তীর্ণভাবে ছড়ায়নি।

১৯১৬ সাল: দ্য পোলিও এপিডেমিক অব আমেরিকা
১৯১৬ সালে পোলিও রোগ প্রথম মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। সেবছর নিউইয়র্কে ৯ হাজার মানুষ পোলিওতে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে ৬ হাজার মানুষই মৃত্যুবরণ করে! চিকিৎসাবিজ্ঞান তখন যথেষ্টই উন্নত হলেও চিন্তার বিষয় ছিল যে, এ মহামারীতে মৃত্যুর হার আগের যেকোনো মহামারীর চেয়ে বেশি ছিল! নিউইয়র্ক শহর থেকে ক্রমে পোলিওর প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবছর বিশ্বে কত শত মানুষ পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, তার কোনো সঠিক তথ্যও পাওয়া যায় না। অবশেষে ১৯৫০ সালে জোনাস সাল্ক পোলিও টিকা আবিষ্কার করলে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ কমে যায়।

১৯১৮ সাল: দ্য ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক বা দ্য গ্রেট ফ্লু প্যানডেমিক
নানা কারণে আলোচিত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ ছিল আক্ষরিক অর্থে হত্যা আর প্রাণহানীতে পূর্ণ। ১৯১৮ সালের নভেম্বরে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছে, রক্তস্রোত দেখতে দেখতে ক্লান্ত বিশ্ববাসী যখন পরিত্রাণের আশায় মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে, তখন তাদের নীরবে শুরু হয়ে গিয়েছিল আরেক মৃত্যুর মিছিল। এ মিছিলটি ‘দ্য ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক’ নামে পরিচিত। বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তেই এর সূচনা হলেও মহামারী আকারে বিস্তার ঘটে ১৯১৯ সালে। অল্প সময়ের মাঝেই সমগ্র বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জায়, মৃত্যুর মিছিল বাড়তেই থাকে।

৪ বছরের অধিক কাল বিস্তৃত প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যেখানে ২ কোটির মতো মানুষ প্রাণ হারায়, সেখানে মাত্র এক বছরেই ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক কেড়ে নেয় ১ কোটির বেশি মানুষের প্রাণ! দেশে দেশে সরকার সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরিধানের জন্য আইন পাস করে, দীর্ঘদিনের জন্য বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়, খাদ্যদ্রব্যের বাজারগুলোতে লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণ করা হতো কঠোরভাবে। ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা মানুষের শবদেহ কাটাছেঁড়া করে ডাক্তাররাও বিচলিত হয়ে উঠতেন। দেখা যেতো, তাদের ফুসফুস নীল এবং স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকতো। মনে হতো যেন তারা পানিতে ডুবে মারা গিয়েছেন।

১৯৭০ সাল: স্মলপক্স এপিডেমিক অব ইন্ডিয়া
গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার হয়েছিল ১৮ শতকের শেষভাগে (১৭৯৬ সালে)। এডওয়ার্ড জেনার এ টিকা আবিষ্কার করেন। এটিই ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম সফল টিকা। অথচ টিকা আবিষ্কারের প্রায় ২০০ বছর পরও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে!

[ বি:দ্র:এই সাজেশন যে কোন সময় পরিবতনশীল ১০০% কমন পেতে পরিক্ষার আগের রাতে সাইডে চেক করুন এই লিংক সব সময় আপডেট করা হয় ]

১৯৭০ সালে ভারতে হঠাৎ মহামারী আকারে ছড়িয়ে যায় গুটি বসন্ত। ১ লক্ষাধিক মানুষ রাতারাতি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এক বছরেই মৃত্যুবরণ করে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। যদিও এ তালিকার অন্যান্য মহামারীর তুলনায় এ মৃত্যুর সংখ্যাটা বেশ কম, তথাপি চিকিৎসাবিজ্ঞানের আধুনিক সময়ে, যখন বিশ্ব প্রায় গুটি বসন্ত মুক্ত হয়ে গেছে, তখন ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে এরূপ মহামারী ছিল বেশ হতাশাজনক। পরবর্তী কয়েকবছরে ভারত সরকার এবং জাতিসংঘের সহায়তায় গঠিত একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালেই ভারতকে গুটি বসন্ত মুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব হয়।

১৯৮৪ সাল: এইচআইভি ভাইরাস
প্রথম এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। এ ভাইরাসের কারণে এইডস রোগে সে বছরই আমেরিকায় মারা যায় ৫,৫০০ জন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। আর এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে আড়াই কোটির বেশি মানুষ।

২০০৩ সাল: সার্স এপিডেমিক
‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম’ তথা সার্স নামটি মহামারীর তালিকায় নতুন এবং আমাদের কাছে খুব পরিচিত। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বায়ুবাহিত এ রোগের জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম বলে জনমনে সংক্রমণের আশঙ্কাটা ছিল বেশি। এশিয়ার সামান্য কিছু অংশসহ ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় সার্স ছড়িয়ে পড়ে। সার্সের জীবাণু দেহে প্রবেশ করলে প্রাথমিকভাবে মাথাব্যথা, জ্বর থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শুষ্ক কাশি শুরু হয়, যা একসময় নিউমোনিয়ায় পরিণত হয়। সার্সের কোনো নিজস্ব চিকিৎসা নেই। তাই ডাক্তাররা এর প্রতিকার থেকে প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দেন, যে কারণে ২০০৩ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সমগ্র উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার কয়েকটি দেশে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ সার্স দ্বারা আক্রান্ত হয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান দ্রুত কাজ শুরু করলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারেনি। মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী সার্স নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এসময় এ রোগে মৃত্যু হয় ৭৩৭ জনের।

২০০৯ সাল: সোয়াইন ফ্লু এপিডেমিক
বিশ্বজুড়ে ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু বা এইচ ওয়ান এন ওয়ান ফ্লুতে ১৮,৫০০ জন মারা গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার বলেও ধারণা করা হয়।

২০১০ সাল: কলেরা এপিডেমিক অব হাইতি
হাইতিতে ২০১০ সালে ভয়ঙ্কর এক ভূমিকম্পের পর কলেরা মহামারী রূপ নিলে ১০ হাজার মানুষ মারা যায়।

২০১২ সাল: হাম
বিশ্বজুড়ে ২০১২ সালে ভাইরাসজনিত রোগ হামে মারা যায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ। সে বছর পুরো বিশ্বে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক রোগ টিউবারকিউলোসিসে মারা যায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ। এছাড়া প্রতিবছর টাইফয়েড জ্বরে মারা যাচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার মানুষ।

২০১৪ সাল: ইবোলা এপিডেমিক
পশ্চিম আফ্রিকায় ২০১৪ সালে ইবোলা জ্বরে মারা যায় অন্তত ১১,৩০০ জন।

২০২০ সাল: কোভিড-১৯ প্যানডেমিক
এখনো পর্যন্ত চলমান এ প্যানডেমিকে প্রায় ৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। ১৫০টির কাছাকাছি দেশে ছড়িয়ে পরা করোনাভাইরাস ঘটিত এ রোগের উৎপত্তি ছিল চীন এবং ইউরোপের এপিসেন্টার ইতালি

সাজেশন সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

ডেঙ্গু ছাড়াও বিভিন্ন রোগ মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়।

অনেকের কাছে বর্ষাকাল প্রিয় হলেও মাথায় রাখতে হবে এই সময় মশার উপদ্রবও বাড়ে। আর মশার কামড়ে শুধু ডেঙ্গু নয় হতে পারে চিকনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া-সহ নানান রোগ।

তাই করোনাভাইরাসের মহামারীর সময়ে মশাবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল মশাবাহী ছয়টি রোগ সম্পর্কে।

এনকেফালাইটিস: ‘কিউলেক্স’ নামক মশার মাধ্যমে ছড়ায় এই রোগ। যার প্রকোপ সবচাইতে বেশি এশিয়া মহাদেশে, বিশেষত জাপানে। এর উপসর্গ হল জ্বর ও মাথাব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি আড়াইশ জনের মধ্যে একজনের দেখা দেয় খিঁচুনি, মানসিক ভারসাম্যহীনতা এবং ‘প্যারালাইসিস’ বা অসাড়তা। টিকাই এই রোগের সবচাইতে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

জিকা ভাইরাস: এই রোগের বাহক মশার বৈজ্ঞানিক নাম ‘এইডেস অ্যালবোপিকটাস’। ‘এশিয়ান টাইগার মসকুইটো’ নামেও এর পরিচিতি আছে লোকমুখে। জিকা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ হল চোখ লাল হয়ে যাওয়া, অবসাদ এবং পেশিতে ব্যথা। আশার কথা হল এই ভাইরাসে আক্রান্ত সিংহভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যায় কোনো রকম মারাত্বক জটিলতা ছাড়াই। গর্ভবতী কোনো নারী এই ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হলে, মায়ের কাছ থেকে সন্তানের মাঝেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস।

সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সবসময় ফুল শার্ট ও প্যান্ট পরতে হবে। মশারি ব্যবহার করতে হবে, ‘মসকুইটো রেপেলেন্ট’ ব্যবহার করতে হবে। মোট কথা, মশার কামড় থেকে দূরে থাকতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বর: গতবছর বর্ষাকালে এই রোগের ভয়াবহতা আমরা সবাই দেখেছি। ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’ মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করে। সংক্রমণের শিকার হওয়ার পর রোগের উপসর্গ দেখা দিতে তিন থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। উপসর্গগুলো ‘ফ্লু’ বা মৌসুমি সর্দিজ্বরের মতো, যা আবার কয়েকদিন পরেই ভালো হয়ে যায়। এই রোগ থেকে বাঁচতেও করণীয় একই, মশা থেকে বাঁচতে হবে।

পীতজ্বর: ‘ইয়েলো ফিভার’ নামে পরিচিত এই রোগের বাহকও ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’, যার প্রাদুর্ভাব মূলত আফ্রিকা ও আমেরিকায় সবচাইতে বেশি। জ্বর, মাথাব্যথা, জন্ডিস, পেশি ব্যথা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ প্রধান উপসর্গ। সংক্রমণের চার থেকে সাত দিনের মধ্যেই রোগ সেরে যায়। তবে কিছু রোগীকে নাক, মুখ ও পাকস্থলির রক্তপাতে ভুগতে দেখা যায়। যেসব দেশে এই রোগের প্রকোপ আছে সেখানে যাওয়ার আগে এর টিকা নিতে হবে।   

চিকনগুনিয়া: আমাদের দেশে এই রোগের ভয়ানক প্রকোপ ‍খুব বেশিদিন পুরানো নয়। মশার কামড়ের মাধ্যমে শরীরে রোগের জীবাণু প্রবেশের দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ চোখে পড়া শুরু হয়। জ্বর, মাথাব্যথা, ত্বকের র‌্যাশ, বমিভাব ও বমি ইত্যাদি ছাড়াও শরীর ব্যথা, বিশেষত, হাড়ের জোড়ে ব্যথা হওয়া এর বিশেষ লক্ষণ। রোগ সেরে যাওয়ার পরও এই জোড়ের ব্যথা সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরব্যাপী ভোগাতে পারে। আর এই রোগের বাহকও ওই ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’ মশা।

ম্যালেরিয়া: স্ত্রী ‘অ্যানোফিলিস’ মশা মানবদেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে থাকা পরজীবী জীবাণু প্রথমে মশাকে আক্রান্ত করে। পরে ওই মশা সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে তার শরীরেও জীবাণু প্রবেশ করে। উপসর্গের মধ্যে আছে জ্বর, কাপুনি, মাথাব্যথা।

সঠিক সময়ে এই রোগগুলোর চিকিৎসা করা না হলে প্রায় সবগুলোই প্রাণঘাতি হওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে অ্যারোসল, মশারি, কয়েল, ধুপ, ‘মসকুইটো রেপেলেন্ট’ ইত্যাদি সাধ্য অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। মশার বংশবিস্তার হতে পারে এমন স্থান ধ্বংস করতে হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

বিভিন্ন রোগ ও আক্রান্ত অঙ্গ সমূহের তালিকা 

রোগের নামআক্রান্ত অঙ্গ
প্যারালাইসিসস্নায়ুতন্ত্র
ডায়াবেটিসঅগ্ন্যাশয়
বেরিবেরিস্নায়ুতন্ত্র
ম্যানিনজাইটিসমস্তিষ্ক
ডিপথেরিয়াগলা
রিকেটঅস্থি বা হাড়
পোলিওপা
ম্যালেরিয়াপ্লীহা
গলগণ্ডথাইরয়েড গ্রন্থি
নিউমোনিয়াফুসফুস
রিউম্যাটিজমঅস্থি সন্ধি
সাইনুসাইটিসমুখের হাড়
হিমোফিলিয়ারক্ত
লিইকোমিয়ারক্ত
আলসারপাকস্থলী
গ্যাস্ট্রিকপাকস্থলী
প্লুরিসিবক্ষপ্রাচীর
টাইফয়েডঅন্ত্র
স্কার্ভিদাঁত

[ বি:দ্র:এই সাজেশন যে কোন সময় পরিবতনশীল ১০০% কমন পেতে পরিক্ষার আগের রাতে সাইডে চেক করুন এই লিংক সব সময় আপডেট করা হয় ]

গবাদিপশুর জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন/ টিকার নাম ও ব্যবহার বিধি।

টিকার নামব্যবহারবিধি
১। তড়কা রোগের টিকা (Anthrax Vaccine)তড়কা টিকা ১০০ মিলি বোতলে তরল অবস্থায় থাকে। পশুর ৬ মাস বয়সে প্রথম টিকা দিতে হয়। গরু ও মহিষের জন্য টিকার মাত্রা হল ১ মিলি. এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য ০.৫ মিলি। ১ বছর অন্তর এ টিকা দিতে হয়। এ টিকা পশুর ঘাড়ের/গলার  চামড়ার নিচে দিতে হয়। তবে ৭ মাসের ঊর্দ্ধ বয়সের গর্ভবতী গরু/মহিষকে দেয়া যাবে না। ছাগল/ভেড়ার ক্ষেত্রে গর্ভধারণের ৩ মাস পরে  দেয়া যাবে না ।
২। গলাফুলা রেগের টিকা (Haemorrahagic Septicemia vaccine)গলাফুলা টিকা ১০০ মিলি তরল অবস্থায় বোতলে থাকে। পশুর ৬ মাস বয়সে প্রথম টিকা দিতে হয়। গরু ও মহিষের জন্য টিকার মাত্রা হল ২ মিলি. এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য ১ মিলি।  প্রতি ৬ মাস অন্তর টিকা দিতে হয়। এ টিকাও  পশুর ঘাড়ের চামড়ার নিচে দিতে হয়।
৩। বাদলা রোগের টিকা (Black Quarter Vaccine)বাদলা রোগের টিকা ১০০ মিলি তরল অবস্থায় বোতলে থাকে। পশুর ৬ মাস বয়সে প্রথম টিকা দিতে হয়। গরু ও মহিষের জন্য মাত্রা হল ৫ মিলি এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য ২ মিলি। প্রতি ৬ মাস অন্তর টিকা দিতে হয়। এ টিকা পশুর ঘাড়ের চামড়ার নিচে দিতে হয়। তবে এ রোগের টিকা   ২.৫-৩ বছর পরে আর গরু/ মহিষকে দেয়ার প্রয়োজন হয় না ।
৪। ক্ষুরা রোগের টিকা (Foot & Mouth Disease Vaccine)ক্ষুরা রোগের টিকা বোতলে তরল অবস্থায় থাকে। পশুর ৪ মাস বয়সে প্রথম টিকা দিতে হয়। এ রোগের বিভিন্ন স্ট্রেইনের জন্য বিভিন্ন ভ্যাকসিন পাওয়া যায় যেমন- মনোভ্যালেন্ট, বাইভ্যালেন্ট ও ট্রাইভ্যালেন্ট, ইত্যাদি। গরু ও মহিষের জন্য ভ্যাকসিনের মাত্রা মনো হলে ৩, বাই হলে ৬ এবং ট্রাই হলে ৯ মিলি এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য গরুর অর্ধেক ডোজ দিতে হয়। প্রতি ৪ মাস অন্তর টিকা দিতে হয়। এ টিকা পশুর ঘাড়ের চামড়ার নিচে দিতে হয়। উল্লেখ্য, গর্ভবতী পশুকেও এ টিকা দেয়া যায়।
৫। জলাতঙ্ক রোগের টিকা (Rabies Vaccine)জলাতঙ্কের জন্য দুই ধরনের টিকা পাওয়া যায়, যথা: HEP and LEP। জলাতঙ্ক রোগের টিকা ভায়ালে বা এম্পুলে হিমশুষ্ক অবস্থায় থাকে। ভায়ালের টিকা     ৩ মিলি বিশুদ্ধ (Distilled water) পানিতে মিশিয়ে সম্পূর্ণ টিকা মাংসপেশীতে ইনজেকশন করতে হয়।     উল্লে­খ্য HEP (GBP Bwc) টিকা বিশুদ্ধ পানিতে মিশিয়ে  ১.৫ মিলি পরিমাণ গরু ও মহিষের ৬ মাস বয়সে মাংসপেশীতে ইনজেকশন করতে হয়। LEP (GI Bwc) কুকুরের ৩ মাস বয়সে প্রথম এবং প্রতি বছর একই নিয়মে এ টিকা (৩.০ মিলি) দিতে হয়। এছাড়াও পশুকে কুকুরে কামড়ানোর পরে পোস্ট এক্সপোসার ভ্যাকসিন এআরভি (Anti Rabies vaccine/ ARV) দিতে হয়। বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির র‌্যাবিসিন (Rabisin) ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। মাত্রা হলো- ১ম দিন ৪ মিলি  ৪ স্থানে   ১ মিলি করে, ৭ম দিনে ৩ মিলি ৩ স্থানে ১ মিলি করে এবং ২১তম দিনে  ৩ স্থানে ১ মিলি করে ৩ মিলি মাংসে দিতে হয় ।
৬। ছাগলের বসন্তের টিকা (Goat pox vaccine) ছাগলের বসন্তের টিকা ভায়ালে হিমায়িত অবস্থায় থাকে। ভায়ালের সাথে বিশুদ্ধ পানি থাকে। পানিতে এ টিকা গুলে ২ মিলি প্রতি ছাগলের লেজের গোড়াতে ত্বকের নিচে ইনজেকশন করতে হয়। ছাগলের ৫ মাস বয়সে প্রথম এ টিকা দিতে হয়।
৭। ছাগলের পিপিআর টিকা (PPR Vaccine)ছাগলের পিপিআর ভ্যাকসিন ভায়ালে হিমায়িত অবস্থায় থাকে। ভায়ালের সাথে ১০০মিলি ডাইলুয়েন্ট থাকে। এ টিকা সরবরাহকৃত ডাইলুয়েন্টের ভেতর ভালো করে মিশিয়ে  প্রতিটি ছাগলকে ঘাড়ের চামড়ার নীচে ১ মিলি ইনজেকশন করে দিতে হয়। ছাগলের ৩ মাস বয়সে প্রথম এ টিকা দিতে হয়। এ টিকা এক বছর অন্তর দিতে হয়। উল্লে­খ্য, গর্ভবতী ছাগলকেও এ টিকা দেওয়া যায় ।

ভ্যাকসিন/টিকা প্রদানকারী করণীয়
ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার উদ্দেশ্য হলো পশুপাখিকে রোগের হাত হতে রক্ষা করা কিন্ত অনেক সময় ভ্যাকসিন দিয়ে রোগের প্রকোপ কমানো যায় না এমনকি রোগ প্রতিরোধ তৈরির পূর্বে অনেক পশুপাখি দুর্ঘটনায় পড়ে। ভ্যাকসিন দেয়ার পর পরই প্রচন্ড ব্যথা হওয়া, লালা ঝরা, অস্থিরতাসহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় এমনকি পশু সংগে সংগে/কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আবার অনেক সময় ভ্যকাসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে টিকা প্রদানের জায়গার মাংসপেশী অনেক ফুলে যায় অথবা ফোঁড়া হয়। এমনকি দুধ শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে হলে ভ্যাকসিন প্রদানকারীকে অবশ্যই নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ মেনে চলতে হবে। 
(১)    টিকা বা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার মেয়াদকাল দেখে নিতে হবে অর্থাৎ ভ্যাকসিনের মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ নিশ্চিত হতে হবে।
(২)    ব্যবহারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্যাকসিন কুল বক্স বা ফ্লাক্সে রাখতে হবে। 
(৩)    ব্যবহারের পূর্বে বোতল ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে যাতে টিকা সমভাবে মিশে যায়।
(৪)    ভ্যাকসিন সাধারণত ভোরে দেয়া উত্তম।
(৫)    সরাসরি সূর্য কিরণ থেকে টিকার বোতল দূরে রাখতে হবে।
(৬)    সব গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া একত্র করে ভ্যাকসিন দিতে হবে।
(৭)    বোতল খোলার ২ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদান শেষ করা উত্তম।
(৮)    ভ্যাকসিন কোনো ছায়াযুক্ত বা গাছের নীচে ব্যবহার করতে হবে।
(৯)    যে কোনো ভ্যাকসিন প্রথমে একটি  পশুকে দিয়ে ১৫-২০ মিনিট লক্ষ্য করতে হবে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয় কিনা যদি না হয় তবে নিশ্চিন্তে বাকী পশুদেরকে দেয়া যায়।
(১০)    যে সব টিকা চামড়ার নীচে দিতে হয় তা যেন কোনো অবস্থায় মাংসপেশীতে না যায়। 
(১১)    টিকা কেবল সুস্থ সবল পশুকে দেওয়া উচিত।
(১২)    দুর্বল পশু ও ৪ মাসের নীচের পশুকে  ভ্যাকসিন দেয়া ঠিক নয়।    
ভ্যাকসিন বা টিকা ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণসমূহ 
যেসব কারণে গবাদিপশুকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার পরও রোগ প্রতিরোধ হয় না তা নীচে বর্ণিত হলো। 
১.    পশুপাখির যে রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে যদি ওই রোগের জীবাণু পূর্বেই পশুপাখির শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে তবে ওই ভ্যাকসিন কার্যকর হবে না বরং আরো দ্রুত রোগ দেখা দিবে।। এজন্য কোনো পশুপাখির খামার/ ঝাঁকে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার পর ওই খামার/ঝাঁকে কোনো সময়ই ওই রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া উচিত নয় । 
২.    ভ্যাকসিনের গুণগতমান সঠিক না থাকলে অর্থাৎ নিম্নমানের হলে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেও কাজ হয় না। সাধারণত রোগজীবাণুর স্ট্রেইন, টাইপ এবং ভ্যাকসিনের স্ট্রেইন, টাইপ এক হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরও পশুপাখি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 
৩.    ভ্যাকসিন ঠিকমতো বা পরিমাণমতো শরীরে প্রবেশ না করলে ভ্যাকসিন ফলপ্রসূ হয় না ।  
৪.    সুষ্ঠু পরিবেশ তথা যথাযথ তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ না করলে ওই ভ্যাকসিন দেয়ার পরও রোগ দেখা দিতে পারে। 
৫.    জীবিত জীবাণু দিয়ে তৈরি ভ্যাকসিনের জীবাণুগুলো মৃত হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। 
৬.    ভ্যাকসিন দেয়ার যন্ত্রপাতি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত না হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। 
৭.    খাবার পানির মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেয়ার সময় ক্লোরিনযুক্ত পানি ব্যবহার করা হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। 
৮.    ভ্যাকসিন পানির সাথে মিশানোর পর সাথে সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং তা সংরক্ষণ করা যাবে না। 
৯.    ভ্যাকসিন ব্যবহারের সময় ভ্যাকসিন ফ্রিজ থেকে বের করার পর ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় আনার পর প্রয়োগ করতে হয়। প্রয়োগের পূর্বে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হয়। বোতল খোলার পর গ্রীষ্মকালে ৪ ঘন্টা ও শীতকালে         ৮ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হয়। অন্যথায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে। 
১০.    যে ভ্যাকসিনের ব্যবহারের তারিখ শেষ হয়ে গেছে ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। 
১১.    অসুস্থ ও দুর্বল পশুকে ভ্যাকসিন দিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় না। 
সূত্র 
১.     পোল্ট্রি খামার বিচিত্রা, জানুয়ারী-২০১৪, ভলিউম-২২, সংখ্যা-১। 
২.     লাভজনক পশুপালন ও খামার ব্যবস্থাপনা, নূর পাবলিকেশন্স, ৩৭, বাংলা বাজার, ঢাকা-১১০০, প্রথম প্রকাশ-২০১০, প্রণেতা- ড. মো: জালাল উদ্দিন সরদার।  

সবার আগে সাজেশন আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

১ম থেকে ৪৩তম বিসিএস প্রশ্ন ও সমাধান লিংক

Professor Primary Assistant Teacher book লিংক

ইংরেজি

প্রশ্ন বিগত ৩০ বছরের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর
Parts of Speech বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Article বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Appropriate Preposition  বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Preposition বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Right forms of verb বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Voice বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Narration বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Phrase and Idioms বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
prefix and suffix বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Word Meaning বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Synonym-Antonym বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Spelling বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Translation /Vocabulary বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
Sentence Correction বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
English literature বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
One word Substitutions বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
প্রায় ৩০০টি প্রশ্ন উত্তরসহবিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক

বাংলা

বিগত ৩০ বছরে বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ নিয়োগ পরীক্ষায় আষার সকল MCQ নৈবিত্তিক প্রশ্ন সমাধান এক সাথে, নিয়োগ পরীক্ষায় বাংলা থেকে আসা প্রশ্নগুলোর সমাধান প্রশ্ন ও উত্তর লিংক

বাংলা ব্যাকরণ

প্রশ্ন বিগত ৩০ বছরের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর
সন্ধি বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
বিপরীত শব্দ বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
সমার্থক শব্দ বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
শুদ্ধ বানান বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
এককথায় প্রকাশ বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
তৎসম অর্ধতৎসম তদ্ভব
বিদেশী ও দেশি শব্দ
বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
উপসর্গ বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
সমাস বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
বাগধারা, প্রবাদ ও প্রবচন বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
কারক-বিভক্তি বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
যুক্ত বর্ণের বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
ধ্বনি, বর্ণ বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
বাক্য (সরল, জটিল, যৌগিক) বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
পদ নির্ণয় বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
দ্বিরুক্ত শব্দ/ দ্বন্দ্ব বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক

গণিত

প্রশ্ন বিগত ৩০ বছরের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর
দশমিকের (যোগ, বিয়োগ, গুণ*, ভাগ) বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
শতকরা, লাভ-ক্ষতি, মুনাফা বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
ল.সা.গু, গ.সা.গু বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
ঐকিক নিয়ম (কাজ, খাদ্য, সৈন্য) বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
অনুপাত:সমানুপাত বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
সংখ্যা পদ্ধতি বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
বীজগাণিতিক মান নির্ণয় বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
উৎপাদক নির্ণয়, গড়, মধ্যক, প্রচুরক নির্ণয় বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
ত্রিভুজক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
আয়তক্ষেত্রের বেসিক সূত্রের অংকসমূহ, সরলরেখা বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
গাছের উচ্চতা/মিনারের উচ্চতা/
মইয়ের দৈর্ঘ্য/সূর্যের উন্নতি
বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
পরিমাপ ও পরিমান বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক
বিগত সালে প্রশ্ন বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষায় আসার প্রশ্ন ও উত্তর লিংক

সবার আগে Google News আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

চাকুরি

    Leave a Comment