বাংলা সাহিত্য বইয়ের ‘ফুলের বিবাহ’ গল্পে জবার উল্লেখ আছে

জবা হালকা গন্ধযুক্ত একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। এই ফুল লাল, গোলাপি, সাদা, হলুদ প্রভৃতি বর্ণের হয়।

জবার বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus rosa-sinensis। ১৭৫৩ সালে বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস এই নাম দেন। লাতিন শব্দে rosa-sinensis-এর অর্থ ‘চীন দেশের গোলাপ’। বাংলায় এটি রক্তজবা, জবা, জবা কুসুম প্রভৃতি নামে পরিচিত।

জবাগাছ মালভেসি গোত্রের অন্তর্গত চিরসবুজ পুষ্পধারী গুল্ম। আদি নিবাস পূর্ব এশিয়ায়। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে এই গাছ দেখা যায়।

জবার বংশবিস্তার হয় বীজ, কন্দ ও শাখা কলমের মাধ্যমে। জবাগাছে ফুল ফোটে প্রায় সারা বছরই। গাঢ় সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে এই ফুল দেখা যায়। গাছের উচ্চতা প্রায় ৮ থেকে ১৬ ফুট। পাতাগুলো চকচকে সবুজ ও ফুলগুলো উজ্জ্বল এবং পাঁচটি পাপড়িযুক্ত।

ফুলগুলোর ব্যাস গড়ে চার ইঞ্চি। জবা ১০০ সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। তাই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জবাগাছকে গ্রিনহাউসে রাখা হয়। যেকোনো মাটিতেই জবাগাছ জন্মে। তবে দোঁ-আশ ও বেলে মাটিতে জবাগাছের চাষ ভালো হয়। গাছে ছত্রাক বা মিলিবাগ আক্রান্ত হলে ফুলের বোঁটা নরম হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে একবার নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে ভালো হয়।

পুজোর ফুল হিসেবে জবাফুলের গুরুত্ব অনেক। বিভিন্ন পুজোতে এই ফুলের বিশেষ চাহিদা থাকে।

সাধারণত ফুল সতেজ থাকে দুই-তিন দিন পর্যন্ত। জবাফুলের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেক। এই ফুলের নির্যাস থেকে বেশ কিছু আয়ুুর্বেদিক ওষুধ তৈরি হয়। জবাফুলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নামক উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।

আয়ূর্বেদ শাস্ত্রমতে, জবাফুলের তৈরি চা উপকারী। অন্য যেকোনো ভাবে জবাফুল খেলে তা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

এই ফুলে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। ফলে এই ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ জবাফুল বেটে রস করে পানিতে মিশিয়ে খেলে হালকা ঠাণ্ডা লাগা, গলাব্যথা বা মাথা ব্যথা রোগের উপশম হয়।

চোখ ওঠা দূর করতে জবাপাতার প্রলেপ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া চুল পড়া রোধ করতে এবং চুলের বৃদ্ধির জন্য জবাপাতার রস বেশ উপকারী।

Leave a Comment