বাংলা সাহিত্য বইয়ের ‘প্রত্যুপকার’ গল্পে শকুন্তলার উল্লেখ আছে

শকুন্তলা (সংস্কৃত: शकुन्तला, Śakuntalā) ছিলেন হিন্দু পুরাণে বর্ণিত দুষ্মন্তের স্ত্রী ও সম্রাট ভরতের মা। তার উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে মহাভারত মহাকাব্যে। কালিদাস তার অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ নাটকে এই কাহিনিটি নাট্যায়িত করেন।

ঋষি কণ্ব বনে শিশুকন্যাটিকে “শকুন্ত” (সংস্কৃত: शकुन्त, śakuntagg) অর্থাৎ পক্ষীপরিবৃত অবস্থায় কুড়িয়ে পান। এই কারণে তিনি এর নামকরণ করেন “শকুন্তলা”। শব্দটির অর্থ “পক্ষীর দ্বারা সুরক্ষিতা”

শকুন্তলা ছিলেন হিন্দু পুরাণে বর্ণিত দুষ্মন্তের স্ত্রী ও সম্রাট ভরতের মা। তাঁর কথা মহাকাব্য মহাভারতে উল্লেখ আছে। কালিদাস পণ্ডিত তাঁর ‘অভিজ্ঞানশকুন্তলম্’ নাটকে এই কাহিনি নাট্যায়িত করেন। ১৮৫৪ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই নাটক অবলম্বনে শকুন্তলা নামের একটি উপাখ্যান লিখেন। পরবর্তীকালে ১৮৯৫ সালে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ‘শকুন্তলা’ নামের একটি গ্রন্থ রচনা করেন।

দেবরাজ ইন্দ্র বিশ্বামিত্রের তপস্যা ভঙ্গ করতে স্বর্গের নর্তকী মেনকাকে তাঁর নিকট পাঠান। মেনকা তাঁর কাজে সফল হন। তাঁর রূপ ও লাবণ্যের মোহে বিশ্বামিত্র বিচলিত হন। উভয়ের মিলনের ফলে একটি শিশুকন্যার জন্ম হয়। তপস্যার্জিত পুণ্যফল ক্ষয়ের জন্য ক্রুদ্ধ হয়ে বিশ্বামিত্র মেনকা ও তাঁর কন্যাকে পরিত্যাগ করে চলে যান। এরপর মেনকাও তাঁর শিশুকন্যাকে এক বনে রেখে চলে যান। ঋষি কন্ব সেই কন্যাটিকে পক্ষীপরিবৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তিনি মেয়েটির নাম দেন শকুন্তলা। ‘শকুন্তলা’ শব্দটির অর্থ ‘পক্ষীর দ্বারা সুরক্ষিতা’।

ঋষির গৃহেই শকুন্তলা বড় হন। একদিন রাজা দুষ্মন্ত একটি হরিণকে তাড়া করতে করতে কন্বের তপোবনে এসে উপস্থিত হন। সেখানেই শকুন্তলার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁরা পরস্পরের প্রেমে পড়েন এবং আশ্রমেই তাঁদের গান্ধর্ব বিবাহ সম্পন্ন হয়। এরপর জরুরি কাজে দুষ্মন্তকে রাজধানীতে ফিরে যেতে হয়। যাওয়ার আগে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে একটি রাজকীয় অঙ্গুরীয় দিয়ে যান এবং কথা দেন যে আবার ফিরে আসবেন।

শকুন্তলা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। তিনি সর্বক্ষণ দুষ্মন্তের কথা ভাবতে থাকেন। একদিন কোপনস্বভাব ঋষি দুর্বাসা কন্বের আশ্রমে এলে শকুন্তলা পতিচিন্তায় মগ্ন হয়ে ঋষিসেবায় অবহেলা করেন। এতে দুর্বাসা ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁকে শাপ দেন যে, যাঁর কথা চিন্তা করতে করতে শকুন্তলা ঋষিসেবায় অবহেলা করেছেন, সে-ই শকুন্তলাকে ভুলে যাবে। শকুন্তলার সখিরা তাঁর হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে দুর্বাসা শান্ত হয়ে তাঁকে ক্ষমা করেন এবং বলেন যদি সেই ব্যক্তির দেওয়া কোনো উপহারসামগ্রী শকুন্তলা তাঁকে দেখায়, তবে আবার তিনি শকুন্তলাকে চিনতে পারবেন।

শকুন্তলা নদীতে স্নান করতে নেমে দুষ্মন্তের দেওয়া অঙ্গুরীয়টি হারিয়ে ফেলেন। তাই দুষ্মন্ত তাঁকে চিনতে পারেন না। শকুন্তলা বনে চলে আসেন। সেখানে জন্ম হয় ভরতের। একদিন দুষ্মন্ত মাছ ধরতে গিয়ে একটি মাছের পেট থেকে শকুন্তলাকে দেওয়া অঙ্গুরীয়টি উদ্ধার করেন। সেটি দেখে দুষ্মন্তের শকুন্তলার কথা মনে পড়ে যায়।

Leave a Comment