ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকদর ভূমিকা,প্রাক-বিপ্লব ফ্রান্সের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে।,ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকগণের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে পারবে

Advertisement

শ্রেণি: HSC-2021 বিষয়:ইতিহাস ২য় পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 04 বিষয় কোডঃ 305
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকদর ভূমিকা।।

শিখনফল/বিষয়বস্তু

  • প্রাক-বিপ্লব ফ্রান্সের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে।
  • ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকগণের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • *ফরাসি বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করতে পারবে। বিশ্বে ফরাসি বিপ্লবের ফলাফল মূল্যায়ন করতে পারবে
  • ফরাসি বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি)

  • প্রাক-বিপ্লব ফ্রান্সের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা ব্যাখ্যা করতে হবে
  • ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকগণের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে হবে
  • *ফরাসি বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহ ব্যাখ্যা করতে হবে
  • ফরাসি জনজীবনে বিপ্লবের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে হবে
  • বিশ্বে ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

প্রাক-বিপ্লব ফ্রান্সের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থাঃ

প্রাক-বিপ্লবঃ ফ্রান্স ফরাসি বিপ্লব কোনাে আকস্মিক ঘটনা ছিল না। ফরাসি পুরাতন সমাজ ব্যবস্থার মধ্যেই এর প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। পুরাতন সমাজব্যবস্থা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনে উন্নতির কোনাে স্বাদ এনে দিতে ব্যর্থ হয়। শােষণ নির্যাতন, বঞ্চনা ও হতাশায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নিমজ্জিত ছিল। সামন্ত সমাজের পক্ষে জনগণকে শােষণ ও দারিদ্র ছাড়া আর কিছুই দেওয়ার ছিল না

ফলে অর্থনীতি পঙ্গু হতে থাকে। সেই অবস্থায় পরিবর্তনের পক্ষে দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী লেখক সাহিত্যিকগণ জনগণকে সচেতন করার জন্যে তাদের লেখনী চালিয়ে যান। ফ্রান্সে গির্জাকে জনকল্যাণে ব্যবহারের দীর্ঘ দিনের চেষ্টা ব্যর্থ হতে থাকে। এ সবই পুরাতন রাজনীতি, সমাজ ও দৃষ্টিভঙ্গি। ফরাসি বিপ্লব এসবই পরিবর্তন করেছে। কীভাবেকরছে-তা জানা দরকার। সেসম্পর্কে জানতে হলে পূর্ববর্তী ফরাসি সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং নতুন চিন্তার উন্মেষ কীভাবে ঘটেছিল তা জানা অপরিহার্য।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Advertisement

সামাজিক অবস্থা:

ফ্রান্সসহ ইউরােপের তত্ত্বালীন সমাজ ব্যবস্থাকে পূর্বতন সমাজ’ বলা হয়ে থাকে। বিপ্লব এই পুরাতন ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন সমাজ সৃষ্টিতে অবদান রেখেছিল। পুরাতন ফরাসি সমাজ তিনটি প্রধান সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল। পুরাতন বাবস্থায় যাজকদেরকে প্রথম সম্প্রদায়, (First Estate) অভিজাতদের দ্বিতীয় সম্প্রদায় (Second Estate) এবং কৃষক, বুর্জোয়া, বণিক, শিক্ষক, শ্রমিকসহ সমাজের অপর গােষ্ঠীসমূহকে তৃতীয় সম্প্রদায় (Third Estate) বলা হতাে। ফ্রান্সের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশই ছিল তৃতীয় সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত, বাকি মাত্র ৪ শতাংশ ছিল যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায়ভুক্ত। অবে দেশের সিংহভাগ সুযােগ-সুবিধা ভােগ করত যাজক ও অভিজাতরা। তারা সকলেই ছিল প্রায় সকল ধরনের কর প্রদান থেকে মুক্ত।

গুরুত্বপূর্ণ পদ, সামরিক অফিসারসহ রাষ্ট্রের প্রশাসনিক বিচার বিভাগীয় এবং রাজস্ব ব্যবস্থার সাথে অভিজাত সম্প্রদায় গভীরভাবে জড়িত ছিল। এদেরকে অধিকার প্রাপ্ত (Privileged) এবং তৃতীয় সম্প্রদায়কে অধিকারহীন (Non – privileged) বলে অভিহিত করা হতাে। ফ্রান্সে বিপ্লবের আগে যাজকের সংখ্যা ছিল এক লাখ ত্রিশ হাজার এবং অভিজাত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছিল তিন লাখ পঞ্চাশ হাজারের মতাে।

ধর্মযাজকদের মধ্যেও কিছু স্তর এবং প্রকা প্রকারভেদ ছিল। কালাে ও সাদা পােশাকধারী প্রধান এ দুই ভাগে এদেরকে বিভক্ত করা হতাে। পুরাতন ব্যবস্থার শেষের দিকে কালাে পােশাকধারী যাজকের সংখ্যা ৬০ হাজারে নেমে আসে। এ কারণে যে, এদের ওপর প্রভাবশালী অভিজাতদের খবরদারিত্ব বেড়ে যায়। উর্ধ্বতন যাজকরা অভিজাতদের মতই অতিরিক্ত সুযােগ-সুবিধা ভােগ করতেন। বিশপ, মঠাধ্যক্ষ এবং ক্যাননের সংখ্যাও ছিল প্রায় ১০ হাজারের মতাে। দেশের সর্বোচ্চ যাজকদের বিশপ বলা হতাে বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে ১৩৯ জন বিশপ ছিলেন। নিম্নতর যাজকদের মধ্যে, যেমন কুরে ও ভিকার নামে যারা পরিচিত ছিলেন তারা তৃতীয় সম্প্রদায়ের মতােই অধিকারহীন ছিলেন। অভিজাতদেরকে গােত্র, সামরিক, নৌ এবং আমলা ইত্যাদি অভিধায় বিভক্ত করা হয়েছিল। গােত্রভুক্ত অভিজতের সংখ্যা ছিল এক লাখ দশ হাজারের মতাে। অপরাপর অভিলাতের সংখ্যা ছিল আড়াই লাখ। পূর্বতন ব্যবস্থায় কৃষকদের অবস্থা এক রকম ছিল না। তাদের মধ্যেও ছিল নানা স্তরভেদ। কেউ স্বাধীন কৃষক, কেউ সামান্য সমমির মালিক, কেউ প্রজা, ক্ষেতমজুর বা চাষি ছিল।

অথনৈতিক ব্যবস্থা:

আঠারাে শতকে ফ্রান্স ছিল মূলত একটি কৃষিপ্রধান দেশ। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের পূর্বমুহূর্তে ফ্রান্সের মােট জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ। এর মধ্যে দুই কোটি দশ লাখ যুক্ত ছিল কৃষি কাজের সাথে। তবে সেই সময়ে ফ্রান্সে কয়েকটি শহর বেশ দ্রুত শিল্প উৎপাদন ও বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ফলে ব্যাপক জনবসতিতে ভরে ওঠে। বিপ্লবের প্রাক্কালে প্যারিতে ছয় লাখ, লিওতে এক লাখ পয়ত্রিশ হাজার এবং মার্সেল নব্বই হাজার ফরাসি নাগরিক বসবাস করত। ফ্রান্সের জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পের চেয়ে কৃষির অবদানই ছিল বেশি। ১৭৮৯-এ ফ্রালের জাতীয় আয় কৃষি থেকে লাভ করেছে ১৮২৬ মিলিয়ন ভ্রিা এবং শিল্প থেকে মাত্র ৫২৫ মিলিয়ন লিস্রা। বিপ্লব -পূর্ব ফ্লাপে দুই পদ্ধতির কর ব্যবস্থা চালু ছিল

১) প্রত্যক্ষ কর ও

(২) পরােক্ষ কর।

রাজনৈতিক অবস্থা:

পুরাতন ব্যবস্থায় ফ্রান্সের রাজতন্ত্র স্বৈরতান্ত্রিক রূপ ধারণ করে। রাজতন্ত্র ধর্মযাজক ও অভিজাত সম্প্রদায়কে হাতে রেখে দেশের শতকরা ৯৬ জন মানুষকে নির্মমভাবে শশাষণ করতে থাকে। ধর্ম যাজকরা রাজাকে দেবতার প্রতিনিধি বলে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুযােগ-সুবিধা লাভ করত। এর ফলে রাজার একচ্ছত্র ক্ষমতা রাষ্ট্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশেষত চতুর্দশ লুই (১৬৪৩-১৭১৫খ্রি.) রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফ্রান্সে সুসংগঠিত করতে সক্ষম হন।তিনি ছিলেন চরম স্বৈরাচারী এবং দর্প করে বলতেন, “আমিই রাষ্ট্র” ( am the state)। দেশের আইন প্রণয়ন, প্রশাসন পরিচালনা ও বিচার কার্যে রাজার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। সেনাবাহিনীর সর্বময় ক্ষমতা রাজার হাতে থাকায় যুদ্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা রাজার ইচ্ছা অনিচ্ছার বিষয় হয়ে পড়ে। পনেরতম লুই (১৭১৫-১৭৭৪ খ্রি) এবং ষােড়শ লুই (১৭৭৪-১৭৮৯ খ্রি.) ফ্রান্সের রাজতন্ত্রকে আরাে নিরঙ্কুশ করার ধারা অব্যাহত রাখেন। তবে ষােড়শ লুই শেষ দিকে ফরাসি রাজতন্ত্রে গভীর আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হতে থাকে।

রাজতন্ত্রের সীমাহীন ক্ষমতার কারণেই ১৬১৪ সাল থেকে ফ্রান্সের স্টেটস-জেনারেল নামক সর্বোচ্চ প্রতিনিধি পরিষদ অকার্যকর হয়েছিল। মাঝে মাঝে ধনীদের নিয়ে রাজাগণ বসতেন, সভা করতেন। অধিকাংশ প্রদেশেই স্থানীয় প্রতিনিধিদের তেমন কোনাে গুরুত্ব দেওয়া হতাে না।প্যারির পার্লামেন্ট এবং রাজকীয় বিচারালয়গুলাে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার কারণে কোনাে স্বাধীন মতামত প্রদান করতে পারত না। রাজার হাতে কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা ন্যস্ত থাকায় দেশের স্থানীয় শাসন প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় শাসনে রাজ পরিষদ, এবং ছয় জনের একটি মন্ত্রিসভা কার্যকর ছিল। সর্বত্রই ব্যক্তিস্বার্থ, স্বেচ্ছাচার, দুর্নীতি ও অমিতব্যয়িতার বিস্তার ঘটার ফলে পুরাতন ব্যবস্থা মানুষের কাছে অসহনীয় হয়ে ওঠে। ফ্রান্সে অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর হতে থাকে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

১৭৭০-এর পর থেকে এই অবনতি আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাতীয় ঋণ ১৭৭৪-এ দেড় বিলিয়ন থেকে ১৭৮৮-এ সাড়ে চার বিলিয়ন লিভ্রায় উন্নীত হয়। ১৭৭৪ সালে বাজেট ঘাটতি ছিল ২৮ মিলিয়ন লিভ্রা, ১৭৮৮ সালে তা বেড়ে ১২৬ মিলিয়ন লিভ্রায় দাঁড়ায় (ব্যয় ছিল ৬২৯ মিলিয়ন লিভ্রা, আয় ছিল ৫০৩ মিলিয়ন লিভ্রা)। রাজ পরিবারের ব্যয়ও বেড়ে যায়। রাজার জন্য ছিল ১৮৫৭ টি ঘােড়া, ১৪০০ জন চাকর-চাকরানি। বিভিন্ন প্রদেশে আরও ১২০০ টি ঘােড়া রাজার শিকারের জন্য প্রস্তুত রাখা হতাে। রাজার মৃগয়া গমনের জানা ছিল ২১৭ টি গাড়ির বহর। বােলতম লুইয়ের স্ত্রী রাণি মরিয়া আতােয়াত প্রায়ই নতুন নতুন প্রাসাদ তৈরির বায়না ধরতেন। এদিকে ১৭৮৮ সালে ফ্রান্সে ব্যাপক শস্যহানি ঘটে।প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ গভীর অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত হয়। কৃষি উৎপাদন হ্রাস পায়, পশুর মড়ক লেগে কৃষকের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায়। শহরগুলােতে কাজের সন্ধানে বেকারদের ভিড় জমতে থাকে। ১৭৮৮ – এর তুলনায় ১৭৮৯তে বিক্ষোভ পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। এসব বিদ্রোহ নির্মমভাবে দমন করা হয়। ফ্রান্স কার্যতই একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখােমুখি এসে দাঁড়ায়। পরিবর্তনের বস্তুগত সকল উপাদানই তখন সমাজ ও রাষ্ট্রে তৈরি হয়েছিল। এর সাথে বিপ্লবের জন্য যে ব্যাপক চেতনাগত প্রস্তুতির দরকার তাও ফ্রান্সে তৈরি হয়েছিল। ফ্রান্সের দার্শনিককবি সাহিত্যিকসহ বুদ্ধিজীবী সমাজ পরিবর্তন তথা বিপ্লবের নতুনচেতনা তৈরিতে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখেন।

ফরাসি বিপ্লব সংঘটনে দার্শনিকগনের ভূমিকাঃ

যুক্তিবাদ ও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিতে সবকিছু বিচার করার মানসিকতাই ছিল জ্ঞানদীপ্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য। অষ্টাদশ শতাব্দী ছিল আধুনিক ইতিহাসে জ্ঞানদীপ্তির যুগ। রেনেসাপ্রসূত অনুসন্ধিৎসা ও সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি উক্ত শতাব্দীতে কার্যকর ছিল। জ্ঞানদীপ্তির প্রভাবে উদ্দীপ্ত এক শ্রেণির পণ্ডিত ফ্রান্সের পূর্বতন শাসনামলের তীব্র সমালোচনা করে সেই রাষ্ট্রব্যবস্থার স্তম্ভগুলোকে নড়বড়ে করে দিয়েছিলেন। ফরাসি দার্শনিকদের মধ্যে মন্টেস্থ, ভলতেয়ার, রুশো, দিদারো প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

অনেকের মতে, বিপ্লবে দার্শনিকগণ প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব গ্রহণ করেননি বা অংশগ্রহণ করেননি। তবে স্বীকার করতে হবে যে, দার্শনিকদের প্রকৃত কার্যের ক্ষেত্র ছিল মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং ভাব-জগতে নতুন ভাবধারার সৃষ্টি করা। অন্যায়, অবিচার, বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর নীতিগত অধিকার সম্পর্কে তারা জনগণকে সচেতন করেন এবং অবহিত করেন। প্রকৃতপক্ষে এখানেই দার্শনিকদের অবদান।

মন্টেঙ্কু (১৬৮৯-১৭৫৫ খ্রিষ্টাব্দ)

ফরাসি দার্শনিকদের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলেন মন্টে। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে বিপ্লব বিমুখ এবং রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। গণতন্ত্রে তার কোনো বিশ্বাস ছিল না। তিনি ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক। তিনি তার যুক্তিবাদী মনন দ্বারা ফ্রান্সের প্রচলিত সমাজ ও শাসনব্যবস্থা বিশ্লেষণ করেন।

তিনি ছিলেন ক্যাথলিক গির্জার ও রাজার সীমাহীন ক্ষমতার ঘোরবিরোধী ‘স্বর্গীয় অধিকারপ্রাপ্ত রাজতন্ত্র’ তত্ত্বকে অস্বীকার করে তিনি এর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো তুলে ধরেন। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘দ্য স্পিরিট অব লজ’ (The spirit of laws-1748) এবং ‘দ্য পারসিয়ান লেটারস্‌’ (The Persian Letters) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

তিনি ‘Persian Letters’ নামক ব্যঙ্গাত্মক লেখার মধ্য দিয়ে ফরাসি সমাজের অন্যায় শ্রেণিবৈষম্যের প্রতি কটাক্ষপাত করেন এবং The spirit of laws’ গ্রন্থে তিনি শাসনব্যবস্থার মধ্যে আইন বিভাগ, কার্যনির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগ- এই তিনটি বিভাগের ক্ষমতা বিভাজনের কথা বলেছেন। কারণ তার ক্ষমতার বিভাজন তত্ত্ব মতে, এই তিনটি বিভাগের ক্ষমতার একত্রীকরণের মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও লোপ পায়।

সুতরাং মন্টেভুর রচনা জনগণকে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছিল। তিনি স্বৈরতন্ত্রের যে বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করেন এবং বিকল্প হিসেবে ক্ষমতা বিভাজনের যে প্রস্তাব দেন তা সমকালীন যুগে গভীর প্রভাব বিস্তার করে এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। মন্টেঙ্কু ফরাসি বিপ্লব দেখে যেতে পারেননি। কিন্তু তার লেখনী ফরাসি জনতার মননে ব্যাপক প্রতিঘাত সৃষ্টি করেছিল। এজন্য ১৭৯১ খ্রিষ্টাব্দের বিপ্লব-পরবর্তী সংবিধানে তার ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ব্যবহারিক প্রয়োগ করা হয়।

Advertisement 2

ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দ)

ভলতেয়ার ছিলেন ফরাসি দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম প্রতিভাবান। তার প্রকৃত নাম ফ্রাঁসোয়া ম্যারি অ্যারাউয়ো তিনি নাটক, কাব্য, ইতিহাস, প্রবন্ধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে পারদর্শী ছিলেন। তার লেখাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে Oedipe, Lettres Philosophiques Elements of Essays on Universal History এবং Zodig” তার লেখার লক্ষ্য ছিল চার্চের দোষ-ত্রুটি এবং ধর্মের সঙ্গে যুক্ত অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার সম্বন্ধে মানুষকে সচেতন করা।

তিনি আপসহীনভাবে সামন্তপ্রথা ও খ্রিষ্টানধর্মের গোঁড়ামিবিরোধী ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল, যুক্তিবাদী ও অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী এক দার্শনিক। তাকে মানবজাতির ‘বিবেক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও পরমতসহিষ্ণুতার প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা ছিল। তিনি প্রচলিত রাষ্ট্র, সমাজ ও ধর্মনীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে ফরাসি বিপ্লবের পথকে প্রশস্ত করেন। তিনি গির্জার দুর্নীতি ব্যঙ্গাত্মক লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করলে গির্জার প্রতি জনসাধারণের শ্রদ্ধা ও ভীতি কমে যায়। তার বিখ্যাত উক্তি হলো, “ঈশ্বর না থাকলে তাকে বানাতে হতো। কেননা, প্রকৃতি বলছে ঈশ্বর আছে।”

রুশো (১৭১২-১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দ)

বিপ্লবের প্রেরণা সৃষ্টিতে রুশোর অবদানও কিন্তু কম ছিল না। তিনি ফ্রান্সে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার বাণী প্রচার করেন। সাম্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সমাজ ও রাষ্ট্র ছিল তার আদর্শ। তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে New Heloisic Confession, Emile ও Social Contract” বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার বিখ্যাত সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (Social Contract-1762) গ্রন্থ দ্বারা শাসনক্ষেত্রে জনমত তথা জনগণই সার্বভৌম এই মতবাদ প্রচার করেন।

‘মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু মানুষ সর্বত্রই শৃঙ্খলবদ্ধ’- রুশোর এই মতবাদ বিপ্লবীদের কল্পনার আগুনে ফুলকি ধরিয়ে দেয়। প্রকৃতপক্ষে রুশো ছিলেন ফরাসি বিপ্লবের অগ্রদূত রুশো তার বিখ্যাত রচনায় এ যত্য প্রচার করেন যে, ঈশ্বর রাজা বা রাষ্ট্র সৃষ্টি করেননি। আদিতে সব মানুষ প্রকৃতির রাজ্যে স্বাধীন ও সুখী ছিল। জনসাধারণই রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস। সুতরাং রাজা জনসাধারণের মতানুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। তার এ তত্ত্ব ইউরোপীয় চিন্তাজগতে এক বৈপ্লবিক চেতনার জন্ম দেয়। এ কারণে রুশোকে ফরাসি বিপ্লবের মন্ত্রগুরু বলা হয়ে থাকে।

ডেনিস দিদারো (Denis Diderot)

বিপ্লবের অব্যবহিত পূর্বের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন ডেনিস দিদারো। তিনি এনসাইক্লোপিডিয়া বা বিশ্বকোষ রচনা করে ফ্রান্সে যুক্তিবাদী দৃষ্টি গঠনে সহায়তা করেছিলেন। এই গ্রন্থে মানুষের জ্ঞাতব্য সবকিছুই সন্নিবেশিত করা হয়েছিল এবং তদানীন্তন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সমালোচনাও এ গ্রন্থে লিখিত হয়েছিল। মানুষের জন্মগত অধিকার, মানবধর্ম, শিক্ষা বিষয়ে তথ্যপূর্ণ লেখা ছিল এ গ্রন্থে, যা বঞ্চিত মানুষের বিপ্লবী চেতনাকে উজ্জীবিত করে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

এভাবে দেখা যায় যে, বিভিন্ন পণ্ডিত, জ্ঞানী দার্শনিকদের লেখনীর মাধ্যমে ফরাসি জনগণের মন বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। তবু ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের অবদান সম্পর্কে ঐতিহাসিক বা গবেষকগণ একমত নন। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, ফরাসি বিপ্লব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণেই সংঘটিত হয়েছিল, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বা দার্শনিক কারণে নয়। এই বিতর্কের গভীরে না গিয়েও বলা যায় যে, দার্শনিকদের প্রভাব অনেক ক্ষেত্রেই বিপ্লবকে উৎসাহিত করেছিল।

কারণ দার্শনিকগণ তৎকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দোষ-ত্রুটির প্রতি ফরাসি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক বিরাট জাগরণের সৃষ্টি করেছিলেন। তারা এভাবে পূর্বতন শাসনের ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছিলেন, ফলে বিপ্লব সম্ভবপর হয়েছিল। একথা মানতে হবে যে, দার্শনিকদের সমালোচনা ও যুক্তিবাদী রচনা ফরাসি জনগণকে বিপ্লব সংঘটনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তুলেছিল। সুতরাং ফরাসি বিপ্লবে মহান দার্শনিকদের প্রভাব ও অবদান ছিল অপরিসীম ও অনস্বীকার্য।

সমালোচনা

ফরাসি বিপ্লবের কারণগুলোর গুরুত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করে থাকেন। ঐতিহাসিক ফিসারের মতে, “ফরাসি রাজতন্ত্র সমাজের ঊর্ধ্বতন সম্প্রদায়ের বিশেষ অধিকার সমাধান করতে পারেনি বলে বিপ্লব ঘটেছিল। সামন্তপ্রথার দোষ-ত্রুটি অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর ন্যায় ফ্রান্সের জাতীয় জীবনকে ভারাক্রান্ত করে তুলেছিল। ফরাসি রাজশক্তি এসব দোষ-ত্রুটি দূর করতে সক্ষম হয়নি।” ঐতিহাসিক মন্টেগু বলেন, “কৃষকদের দুরবস্থাই ছিল ফরাসি বিপ্লবের মূল কারণ।”

জে. হল্যান্ড রুজের মতে, “ফরাসি দার্শনিকদের রচনার প্রভাবে জনমনে যে প্রাণশক্তি সঞ্চারিত হয়েছিল তাতে ফরাসি বিপ্লবের সৃষ্টি হয়।” মর্স স্টিফেনের মতে, “এ বিপ্লবের প্রধান কারণ ছিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দার্শনিক বা সামাজিক নয়। ১৭ ঐতিহাসিকদের উপর্যুক্ত মতামতগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে, ফরাসি বিপ্লব কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণে সংঘটিত হয়নি। প্রত্যেকটি কারণেরই এক-একটি বিশেষ প্রভাব ছিল।

বিভিন্ন কারণের গুরুত্বে পার্থক্য থাকলেও সবগুলো কারণের সমষ্টিগত ফল হিসেবে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভৃতি বিভিন্ন কারণে ঘটেছিল। তবে এটা সত্য যে, অন্য কারণগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক কারণ সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং এটি ফরাসি বিপ্লব সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছিল।

Advertisement 2

ফরাসি বিপ্লবের স্রষ্টা

এটি সর্বজনবিদিত যে, ফরাসি বিপ্লব তৃতীয় সম্প্রদায়েরই সৃষ্টি। কিন্তু তৃতীয় সম্প্রদায় একটি বিশেষ একক শ্রেণি ছিল না, এটি কৃষক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সমন্বয়ে গঠিত। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, বিপ্লবের সূচনা করেছিল কারা? এ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ লক্ষ করা যায়। কতিপয় ঐতিহাসিক নির্যাতিত কৃষক শ্রেণিকে ফরাসি বিপ্লবের স্রষ্টা বলে অভিমত দেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

আবার কতিপয় ঐতিহাসিক মনে করেন বুর্জোয়া শ্রেণি ছিল ফরাসি বিপ্লবের সূচনাকারী। তাদের যুক্তি হচ্ছে, বিপ্লব ঘটানোর মতো যথেষ্ট জ্ঞান-বুদ্ধি বা যোগ্যতা কৃষকদের ছিল না। বরং বুর্জোয়ারা ছিল শিক্ষিত ও ব্যবসায়ী। তারা যথেষ্ট বিত্তবান হলেও সামাজিক মর্যাদা ছিল না। তাই সামাজিক মর্যাদা লাভের প্রত্যাশায় মধ্যবিত্ত বুর্জোয়া শ্রেণি বিপ্লবের স্রষ্টা, কৃষকরা তাদের অভিযোগ ও সমস্যা থেকে উত্তরণের আশায় বুর্জোয়াদের অনুসরণ করেছিল মাত্র।

ফরাসি বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহঃ

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

Advertisement 4

অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য রাজার প্রয়ােজন হয়ে পড়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের। সেই অর্থ পেতে হলে। কর ধার্য করা ব্যতীত রাজার কাছে অন্য কোনাে পথ খােলা ছিল না। অর্থ সচিব নেকার রাজাকে স্টেটসজেনারেলের অধিবেশন ডেকে কর আদায়ের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। সুযােগ বুঝে তৃতীয় সম্প্রদায় তাদের সদস্য সংখ্যা যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যে সমান করার দাবি জানালে ১৭৮৮-এর ডিসেম্বরে রাজা তা মেনে নিতে বাধ্য হন।

১৭৮৯ – এর ৫ মে স্টেটস – জেনারেলের অধিবেশন ডাকা হয়। ১৭৫ বছর পর ফ্রান্সে এই সংসদ ভার্সাই নগরীতে নতুন করে শুরু করার ঘােষণা দেয়া হয়। এতে যাজক সম্প্রদায়ের ৩০০, অভিজাতদের ৩০০ এবং তৃতীয় সম্প্রদায়ের একা ৬০০ প্রতিনিধি থাকার বিধান স্বীকৃত হয়।এপ্রিলের শেষ দিকে স্টেটস – জেনারেলের নির্বাচনে যাজকদের জন্য নির্ধারিত ৩০০ জনের মধ্যে ২৯১ জন, অভিজাতদের ৩০০ জনের মধ্যে ২৭০ জন এবং তৃতীয় সম্প্রদায়ের ৬০০ জনের মধ্যে ৫৭৮ জন সদস্য নির্বাচিত হলে মােট ১১৩৯ জন সদস্য উক্ত অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

মৃত্যুবরণ,দাঙ্গাহাঙ্গামা ও অন্যান্য কারণে বাকি ৬১ টি আসনের প্রতিনিধি উক্ত সময়ে নির্বাচিত হতে পারেননি। রাজা এবং অর্থসচিব নেকার উভয়েই স্টেটস-জেনারেলের কাছে কর আদায়ের প্রস্তাব রাখেন। সংসদে তৃতীয় সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও রাজা শুধু ধর্ম যাজক এবং অভিজাত প্রতিনিধিদের সাথেই মিলিত হলে তৃতীয় সম্প্রদায় অপমানিত বােধ করেন।১৭ জুন তাঁরা নিজেদেরকে সমগ্র জনগণের প্রতিনিধি এবং স্টেটস – জেনারেলকে জাতীয় সভা’ বলে ঘােষণা করে। এ নিয়ে রাজা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে বিরােধ বাড়তে থাকে।

২০ জুন প্রতিনিধিরা সভাকক্ষে ঢুকতে না পেরে’ টেনিস কোর্টে সমবেত হয়ে একটি শপথ গ্রহণ করেন। উক্ত শপথে বলা ছিল যে, যতদিন টেনিস কোর্ট একটি সংবিধান রচিত না হবে ততদিন তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা একত্রে থাকবে। এশপথকে টেনিস কোর্টের শপথ” বলা হয়ে থাকে। ইতােমধ্যে যাজক ও অভিজাত প্রতিনিধিদের একটি অংশ নৈতিকভাবে তৃতীয় সম্প্রদায়ের শপথকে সমর্থন প্রদান করেন। রাজা অবস্থা বেগতিক দেখে কিছু কিছু শর্ত মেনে নিলেও যড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে থাকেন। ১২ জুলাই রাজা অর্থসচিব নেকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

বিশ্বে ফরাসি বিপ্লবের প্রভাবঃ

ফরাসী বিপ্লব ইউরােপ এবং নতুন বিশ্বের উপর একটি বড় প্রভাব ফেলেছিল, মানব ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তনের নির্ণায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। এটি সামন্তবাদের অবসান ঘটায় এবং পৃথকভাবে সংজ্ঞায়িত ব্যক্তিগত মুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করেছিল। বিপ্লববাদ ও সমাজতন্ত্র প্রাচীন রােমের বিপ্লবী গ্রাকাসের নাম গ্রহণ করেছিলেন সােয়া নােয়েল ব্যাবুফ। গ্রাকসব্যানুফ, দার্থে সিলভা মারেশাল ও আরাে কয়েকজন একত্রে একটি ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন যা সমানপন্থিদের ষড়যন্ত্র নামে পরিচিত হয়েছে। অবশ্য ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছিল। ব্যাবু দার্থে এবং আরাে অনেকে পরের বছর এসব কারণে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।ফরাসি বিপ্লবের মূল লক্ষ্য সমাজতন্ত্র ছিলাে না যদিও সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের সূতিকাগার ছিলাে সেটিই। ভােগের সাম্য এবং উৎপাদনের সাম্য, দুই ধরনের চিন্তাই ফরাসি বিপ্লবে দেখা যায়। জ্যাকবিনের কারণটি সাম্য, দুই ধরনের চিন্তাই ফরাসি বিপ্লবে দেখা যায়। জ্যাকবিনের কারণটি মার্কসবাদীরা উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে গ্রহণ করেছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট চিন্তার উপাদান হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। সােভিয়েত ইউনিয়নে “গ্রাক্কাস” ব্যাবুফনায়ক হিসাবে গণ্য করা হত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ ফরাসি বিপ্লব আমেরিকান রাজনীতিকে গভীরভাবে মেরুকৃত করেছিল এবং এই মেরুকরণের ফলে প্রথম পার্টি সিস্টেম তৈরি হয়েছিল। ১৭৯৩ সালে, ইউরােপে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথেটমাস জেফারসনের নেতৃত্বে রিপাবলিকান পার্টি ফ্রান্সের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং ১৭৭৮ সালে সম্পাদিত চুক্তিটি সম্পর্কে ইঙ্গিত করেছিলেন যে সেটি তখনও কার্যকর ছিল। জেফারসনসহ জর্জ ওয়াশিংটন এবং তার মন্ত্রিসভা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এই চুক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে প্রবেশের জন্য আবদ্ধ করে না।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

Advertisement 5

Advertisement 3

Leave a Comment