প্রধান আসমানি কিতাবসমূহ,কুরআনের আয়াতের প্রকারভেদ এবং হুকুম : প্রেক্ষিত সুরা আলে-ইমরান, আসমানি কিতাবের ধারণা ও প্রধান আসমানি কিতাবের উল্লেখ,পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহের প্রকারভেদ ,আয়াতে মুতাশাবিহাতের হুকুম নিয়ে উলামায়ে কিরামের মতভেদ ও উহার ভিত্তি

শ্রেণি: দাখিল/SSC/2022 বিষয়: কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2022
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 03 বিষয় কোডঃ 101
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ প্রধান আসমানি কিতাবসমূহ,কুরআনের আয়াতের প্রকারভেদ এবং হুকুম : প্রেক্ষিত সুরা আলে-ইমরান

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • প্রথম অধ্যায়: ২য় ভাগ (সুরা আলে-ই মরান) ১ম পাঠ

নির্দেশনা :  

  • আসমানি কিতাবের ধারণা ও প্রধান আসমানি কিতাবের উল্লেখ 
  • পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহের প্রকারভেদ 
  • আয়াতে মুতাশাবিহাতের হুকুম নিয়ে উলামায়ে কিরামের মতভেদ ও উহার ভিত্তি

  • আসমানি কিতাবের ধারণা ও প্রধান আসমানি কিতাবের উল্লেখ 

উত্তর:

আসমানি কিতাব ১০৪ খানা। তবে রসূলগণের সংখ্যা ৩১৩ (বা ৩১৫) বলে শোনা যায়। হ্যাঁ, শুধু শোনাই যায়, কারণ পবিত্র কুরআনে নির্দিষ্ট করে ২৫ জন নবী-রসূলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তেমনি নবী-রসূল একসাথে মিলিয়ে ১ লাখ ২৪ হাজার কিংবা ২ লাখ ২৪ হাজারের যে সংখ্যার কথা শোনা যায়, তারও সঠিক কোনো দলিল নেই। আমি এখানে কাউকে অসম্মান করছি না। কারণ যেসব আলেমরা নবী-রসূলদের সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন, তারা নিশ্চয়ই গবেষণা করেই এই কথা বলেছেন।

এবার আসি আসমানি কিতাবের ব্যাপারে। প্রশ্নকর্তার মনে এরকম প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক যে, আসমানি কিতাবের সংখ্যা ১০৪ খানা কিন্তু রসূলদের সংখ্যা যদি ৩১৩ বা ৩১৫ জন হয়, তাহলে কি একই কিতাব, একাধিক নবীর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল? এখানেও সেই একই সমস্যা, কারণ ৪টি আসমানি কিতাব ব্যতীত অন্যান্য আসমানি কিতাবের সংখ্যার কথা কুরআনে উল্লেখ নেই। তবে একটি অত্যন্ত দুর্বল হাদিসে আসমানি কিতাবের সংখ্যার কথা ১০৪ খানা বলা আছে। এই হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে ইবনে হিব্বান, ইবনে মারদাওয়াইহ, আবদ বিন হুমাইদ এবং ইবনে আসাকির, তাফসীরে কুরতুবী এবং সুয়ূতীর দুররে মানসূর ইত্যাদি বিভিন্ন কিতাবে। কিন্তু গবেষক হাদিস বিশারদগণের মতে এটি বাতিল/বানোয়াট।

হাদিসটি হলো :

عن أبي ذر الغفاري رضي الله عنه أنه سأل النبي صلى الله عليه وسلم كم كتاباً أنزل الله؟ قال: مائة كتاب، وأربعة كتب، أنزل على شيث خمسون صحيفة، وأنزل على أخنوخ (إدريس) ثلاثون صحيفة، وأنزل على إبراهيم عشر صحائف، وأنزل على موسى قبل التوراة عشر صحائف، وأنزل التوراة والإنجيل والزبور والفرقان

আবু যর রা. হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, “আল্লাহ তা’আলা কতটি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন?” তিনি বললেন, “১০৪টি। শীস (আ.) এর উপর অবতীর্ণ করেছেন ৫০টি সহীফা। উখনূখ (ইদ্রিস (আ.)) এর উপর ৩০টি সহীফা। ইব্রাহীম (আ.) এর উপর ১০টি সহীফা। আর তাওরাত নাজিলের পূর্বে মূসা (আ.) এর উপর ১০টি সহীফা। আরও অবতীর্ণ করেছেন তাওরাত, ইনজিল, যাবুর এবং ফুরকান (কুরআন)।” (লম্বা হাদিসের অংশ)

এ হাদিসটি বাতিল/বানোয়াট।

নবী ও রসূলদের মধ্যে একটি পার্থক্যের কথা আমরা প্রায় সবাই জানি যে, যেসকল নবীদের উপর আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে, তাঁরা হচ্ছেন রসূল। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী কুরআনে নির্দিষ্ট করে ৫ জন রসূলের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাকি ২০ জন নবী, রসূল ছিলেন কি না, সে ব্যাপারে আল্লাহ্‌ই ভালো জানেন।

সেই ৫ জন রসূল এবং তাঁদের উপর অবতীর্ণ আসমানি কিতাবের নাম :

১. তাওরাত (মূসা আলাইহিস সালাম এর উপর অবতীর্ণ)

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন :

وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ ﴿٤٩﴾

“আমি মূসাকে কিতাব (তাওরাত) দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়। (৪৯)” (সূরা আল-মু’মিনূন)

২. যাবুর (দাউদ আলাইহিস সালাম এর উপর অবতীর্ণ)

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন :

وَرَبُّكَ أَعْلَمُ بِمَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ وَلَقَدْ فَضَّلْنَا بَعْضَ النَّبِيِّينَ عَلَىٰ بَعْضٍ ۖ وَآتَيْنَا دَاوُودَ زَبُورًا ﴿٥٥﴾

“আপনার পালনকর্তা তাদের সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত আছেন, যারা আকাশসমূহে ও ভুপৃষ্ঠে রয়েছে। আমি তো কতক পয়গম্বরকে কতক পয়গম্বরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি এবং দাউদকে যাবুর দান করেছি। (৫৫)” (সূরা আল-ইসরা)

৩. ইনজিল (ঈসা আলাইহিস সালাম এর উপর অবতীর্ণ)

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন :

وَقَفَّيْنَا عَلَىٰ آثَارِهِم بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ ۖ وَآتَيْنَاهُ الْإِنجِيلَ فِيهِ هُدًى وَنُورٌ وَمُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ التَّوْرَاةِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِينَ ﴿٤٦﴾

“আমি তাদের পেছনে মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রেরণ করেছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। আমি তাঁকে ইনজিল প্রদান করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। এটি পূর্ববতী গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়ন করে পথ প্রদর্শন করে এবং এটি খোদাভীরুদের জন্যে হেদায়েত উপদেশ বাণী। (৪৬)” (সূরা আল-মায়িদাহ)

৪. আল কুরআন (শেষ নবী ও রসূল, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ)

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন :

نَزَّلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَنزَلَ التَّوْرَاةَ وَالْإِنجِيلَ ﴿٣﴾ مِن قَبْلُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَأَنزَلَ الْفُرْقَانَ ۗ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّـهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ ۗ وَاللَّـهُ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ ﴿٤﴾

“তিনি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন সত্যতার সাথে; যা সত্যায়ন করে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের। (৩) নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইনজিল, এ কিতাবের পূর্বে, মানুষের হেদায়েতের জন্যে এবং অবতীর্ণ করেছেন মীমাংসা (আল কুরআন)। নিঃসন্দেহে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশীল, প্রতিশোধ গ্রহণকারী। (৪)” (সূরা আল-ই-ইমরান)

এছাড়াও ইব্রাহীম ও মূসা আলাইহিস সালাম (উপরের সংজ্ঞা অনুযায়ী ৫ নম্বর রসূল) এর উপর অবতীর্ণ সহিফা (ছোটো ছোটো পুস্তিকা) সমূহের কথা কুরআনে উল্লেখ আছে। তবে সেগুলোর সংখ্যা কুরআনে বা শক্তিশালী কোনো হাদিসে বর্ণিত হয়নি।

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন :

أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِي صُحُفِ مُوسَىٰ ﴿٣٦﴾ وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفَّىٰ ﴿٣٧﴾

“তাকে কি জানানো হয়নি যা আছে মূসার কিতাবে, (৩৬) এবং ইব্রাহীমের কিতাবে, যে তার দায়িত্ব পালন করেছিল? (৩৭)” (সূরা আন-নাজম)

إِنَّ هَـٰذَا لَفِي الصُّحُفِ الْأُولَىٰ ﴿١٨﴾ صُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ ﴿١٩﴾

“এটা লিখিত রয়েছে পূর্ববতী কিতাবসমূহে; (১৮) ইব্রাহীম ও মূসার কিতাবসমূহে। (১৯)” (সূরা আল-আ’লা)

সবশেষে কুরআনের আরো কিছু আয়াত দিয়ে উত্তরটা শেষ করছি। আসলে নবী ও রসূলদের প্রকৃত সংখ্যা এবং তাঁদের উপর নাজিলকৃত কিতাবের সংখ্যা সম্পর্কে, মহান আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউই সঠিক জানে না।

আল্লাহ্‌ নিজেই বলেছেন :

وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنَاهُمْ عَلَيْكَ مِن قَبْلُ وَرُسُلًا لَّمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ ۚ وَكَلَّمَ اللَّـهُ مُوسَىٰ تَكْلِيمًا ﴿١٦٤﴾

“এছাড়া এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত আমি আপনাকে শুনিয়েছি ইতিপূর্বে এবং এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শোনাইনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে কথোপকথন করেছেন সরাসরি। (১৬৪)” (সূরা আন-নিসা)

এছাড়াও তিনি কুরআনে বলেছেন :

إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ۚ وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٌ ﴿٢٤﴾

“আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি। (২৪)” (সূরা ফাতির)

وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن رَّبِّهِ ۗ إِنَّمَا أَنتَ مُنذِرٌ ۖ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ ﴿٧﴾

“কাফেররা বলে : তাঁর প্রতি তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোনো নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? আপনার কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে পথপ্রদর্শক হয়েছে। (৭)” (সূরা আর-রা’দ)

  • পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহের প্রকারভেদ 

উত্তর:

যে আয়াতগুলো সুস্পষ্ট তা মেনে নেয়া আর যেগুলোর মর্মার্থ অস্পষ্ট সেগুলোর পেছনে সময় ব্যয় না করাই উত্তম। মানুষের কাছে কুরআনের ভাব ও মর্ম সম্পর্কিত আয়াতের বর্ণনা সুস্পষ্ট করতে আল্লাহ তাআলা বলেন-
Quran-L

আয়াতের অনুবাদ
তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি আপনার কাছে কিতাব নাজিল করেছেন। যার কোনো কোনো আয়াত প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, এ আয়াতসমূহ হলো এ কিতাবের মূল (আলোচ্য বিষয়)। আর কিছু আয়াত আছে যার অর্থ অজানা বা অস্পষ্ট, অতঃপর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে তারা অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অস্পষ্ট আয়াতের ব্যাখ্যার পেছনে ছুটতে থাকে। অথচ আল্লাহ ব্যতিত এর মর্ম আর কেউ জানে না এবং (এ আয়াতের ব্যাপারে) যারা জ্ঞানবান তারা বলে আমরা এতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, সব কিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এবং বুদ্ধমানগণ ব্যতিত অন্য কেউ নসিহত কবুল করতে পারে না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৭)

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণ
কুরআনুল কারিমের সুরা আল-ইমরানের ৭নং আয়াত এটি। মানুষের প্রয়োজনীয় কুরআনের আয়াতগুলো কী কী সে ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন। কোন কোন আয়াতের ব্যাখ্যা করা যাবে আর কোনগুলোর ব্যাখ্যা করা যাবে না সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা তুলে ধরেছেন এ আয়াতে।

নবম হিজরিতে যখন নাজরান প্রতিনিধি দল প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসে তখন এ সুরার প্রথম ৮৩ আয়াত নাজিল হয়। সে প্রতিনিধি দল প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের বিষয়ে নানা বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাজরান প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে নাজরান প্রতিনিধি দল তাদের মতের পক্ষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম হয়ে পড়ে।

তখন তারা বলে যে, আপনিতো হজরত ঈসা আলাইহিস সালামকে ‘রুহুল্লাহ’, ‘কালেমাতুল্লাহ’ বলে স্বীকার করেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘হ্যাঁ’।

তখন তারা বলে আমাদের দাবির পক্ষে আপনার এ কথাটুকুই যথেষ্ট। তাদের এ দাবি ও কথা যে বাতিল এবং অসত্য তার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে কুরআনের আয়াতের ব্যপারে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন যে, কুরআনের আয়াত দু ধরণের। 

– মোহকাম আয়াত
যে সব আয়াতের অর্থ স্পষ্ট কিংবা আয়াতের মর্মার্থ বুঝতে কোনো জটিলতা নেই এবং এতে একাধিক অর্থের সম্ভাবনাও থাকে না। আবার অর্থের জটিলতা থাকলেও প্রিয়নবির বর্ণনায় তা সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়।

– মুতাশাবিহ আয়াত
পক্ষান্তরে যেসব আয়াতের অর্থ অস্পষ্ট, কোনো ভাষাবিদ শুধু ভাষা জ্ঞান দ্বারা এর অর্থ নির্ধারণ করতে পারে না তাহলো মুতাশাবিহ। তবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুতাশাবিহ আয়াতের যদি কোনো ব্যাখ্যা করেন তবে তা মানুষের বোধগম্য হয় এবং সেক্ষেত্রে এ মুতাশাবিহ আয়াতকে ‘মুজমাল’ বল হয়।

  • আয়াতে মুতাশাবিহাতের হুকুম নিয়ে উলামায়ে কিরামের মতভেদ ও উহার ভিত্তি

উত্তর:

আল্লাহ তাআলা বলেন-
Quran-L

আয়াতের অনুবাদ
তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি আপনার কাছে কিতাব নাজিল করেছেন। যার কোনো কোনো আয়াত প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, এ আয়াতসমূহ হলো এ কিতাবের মূল (আলোচ্য বিষয়)। আর কিছু আয়াত আছে যার অর্থ অজানা বা অস্পষ্ট, অতঃপর যাদের অন্তরে বক্রতা আছে তারা অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অস্পষ্ট আয়াতের ব্যাখ্যার পেছনে ছুটতে থাকে। অথচ আল্লাহ ব্যতিত এর মর্ম আর কেউ জানে না এবং (এ আয়াতের ব্যাপারে) যারা জ্ঞানবান তারা বলে আমরা এতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, সব কিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এবং বুদ্ধমানগণ ব্যতিত অন্য কেউ নসিহত কবুল করতে পারে না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৭)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়াতের স্পষ্ট ও অস্পষ্টতা সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলে হাদিসে ঘোষণা করেন-
– হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ (সুরা আল-ইমরানের ৭নং) আয়াতটি পাঠ করে বলেছিলেন, যদি তোমরা এমন লোক দেখ যে পবিত্র কুরআনের মুতাশাবিহ আয়াতের পেছনে পড়েছে তখন বুঝে নেবে যে এরাই সেসব লোক যাদের কথা এ আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আর এমন লোকদের থেকে তোমরা সতর্ক থাকবে।’ (বুখারি)

– হজরত আবু মালেক আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে, আমি নিজে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি, আমার উম্মতের ব্যাপারে আমি ৩টি বিষয়ে অত্যন্ত চিন্তিত।

তন্মধ্যে একটি হলো-
কেউ কেউ পবিত্র কুরআন খুলে মুতাশাবিহ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করবে। অথচ এ আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা এক আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ জানে না।
যারা সত্যিকার জ্ঞানী তারা শুধু এ কথা বলে যে আমরা কুরআনের প্রতি ঈমান এনেছি। এর সবটুকুই আমাদের মালিক আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। আর একথা সর্বজন বিদিত যে শুধু বুদ্ধিমান লোকেরাই নসিহত গ্রহণ করে।

দ্বিতীয়টি হলো-
অধিক পরিমাণে অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়া। সম্পদের পরিমাণ নিজেদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব-কলহ শুরু হবে।

তৃতীয়টি হলো-
মানুষ ইলম বা জ্ঞান অর্জন করে তা বিনষ্ট করে দেবে।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)

সর্বোপরি কথা হলো মানুষের জন্য উপযোগী ও গ্রহণযোগ্য আয়াত হলো ‘আয়াতে মুহকাম’। এ আয়াতের ওপর আমল করার নির্দেশ রয়েছে।

কোনোভাবেই মুতাশাবিহ আয়াত নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা উচিত নয়। তবে যেসব মুতাশাবিহ আয়াতের ব্যাপারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুস্পষ্ট ঘোষণা আছে তার ওপর আমল করা যাবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার নির্দেশনা ও সুন্নাতের অনুসরণে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। 

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও


অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • Class: 6 To 10 Assignment Answer Link

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

১০ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/



Leave a Comment