নরম্যান জলদস্যুদের পরিচয় দাও, নরম্যান জলদস্যু সম্পর্কে যা জান লিখ

নরম্যান জলদস্যুদের পরিচয় দাও, নরম্যান জলদস্যু সম্পর্কে যা জান লিখ

ভূমিকা : আমির আব্দুর রহমানের রাজত্বকালে নরম্যান জলদস্যুদের উপস্থিতি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। নরম্যানরা স্পেনে আগমন করে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে! হত্যা লুণ্ঠন ও বর্বরতায় উপকূলবর্তী শহরগুলো সর্বদাই আতংকিত থাকতো। আব্দুর রহমান নরম্যানদের দমন করতে সক্ষম হন ।

১. নরম্যান জলদস্যুদের পরিচয় : নরম্যানগণ জার্মান বংশোদ্ভূত। তারা জলদস্যুবৃত্তিতে বিশেষ পারদর্শী ছিল। তারা প্রায় অর্ধ শতাব্দীব্যাপী সমুদ্র তীরবর্তী ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে একযোগে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। নরম্যান জলদস্যুদের আক্রমণে স্পেনের উপকূলের জনগণ হত্যা, লুণ্ঠন ও বর্বরতার শিকারে পরিণত হয়।

২. দ্বিতীয় আব্দুর রহমানের রাজত্বকালে : ৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে আটটি জাহাজ এই সমস্ত জলদস্যু লিসবনের উপকূলে উপস্থিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। স্ক্যান্ডেনেভিয়ার অধিবাসী এই নরম্যানগণ তাদের দ্রুতগামী নৌকাসহ গঠিত একটি দুর্ভেদ্য নৌবহরসহ প্রথমে লিসবনে আসে। 

লিসবনের শাসনকর্তা ওয়াবুলাহ ইবন হাযম আব্দুর রহমানের উদ্দেশ্যে একটি জরুরি বার্তা পান। জলদস্যুরা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ঘোড়া প্রজননের জন্য বিখ্যাত মেনর দ্বীপে তাদের নৌকাগুলো নোঙ্গর করে। 


আরো ও সাজেশন:-

অতঃপর তারা সেভিলের দিকে যাত্রা করে প্রায় ৪২ দিন যাবত লুটতরাজ ও ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করে। তারা সেভিল শহরে আকস্মিকভাবে প্রবেশ করে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা একটি মসজিদে আগুন দেয় এবং এতে আশ্রয় গ্রহণকারী বৃদ্ধ ও পীড়িতদেরকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। 

আব্দুল ওহাব বিন ইসকেন্দারালীর নেতৃত্বে রাজকীয় বাহিনী প্রেরিত হলে তারা পলায়ন করে। দ্রুত ত্যাগ করার পথে যারা পিছনে পড়ে থাকে তাদের এখানে বাস করার অনুমতি দেওয়া হয়। তারা ইসলাম গ্রহণ করে ও গবাদি পশুর খামার ব্যবসায় নিয়োজিত হয়। 

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মুসলমানগণ তাদের বর্বরোচিত কার্যকলাপের জন্য তাদের “ইয়াজুজ মাজুজ’ নামে অভিহিত করেন। দ্বিতীয় আব্দুর রহমান জলদস্যুদের হাত থেকে সীমান্ত উপকূল রক্ষার জন্য দুর্গসমূহ সুরক্ষিত করেন। প্রথমবারের মত সেভিল শহরের চারিদিকে প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মিত হয় ।

৩. প্রথম মুহাম্মদের রাজত্বকালে : মুহাম্মদ সিংহাসনে উপবেশন করার পর ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে নরম্যান জলদস্যুরা ৭০ খানা জাহাজসহ তারা স্পেনের বন্দরে হানা দেয়। উপকূলীয় বন্দর রায়া, কার্তামা ও মালাগাসহ আরও কতিপয় সমুদ্র তীরবর্তী বন্দর জলদস্যুগণ লুণ্ঠন করে। আমিরের বাহিনীর আগমনে নরম্যান জলদস্যুগণ দ্রুত স্পেন ত্যাগ করে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নরম্যানগণ একটি দুর্ধর্ষ জাতি । তারা যেভাবে স্পেনে আগমন করে স্পেনে লুণ্ঠন ও হত্যা শুরু করে তাতে স্পেনের অধিবাসীদের মধ্যে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তারা আবার যত তাড়াতাড়ি এসেছিল তত তাড়াতাড়ি তাদের বিতাড়িত করা হয় । রেখে যায় এক আতঙ্কের ইতিহাস ।

Leave a Comment