দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস, দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে যা করবেন, কীভাবে হবেন দক্ষ ব্যবস্থাপক?, দক্ষ ব্যবস্থাপক হওয়ার ৬টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস, দক্ষ ব্যবস্থাপকের গুনাবলী

আজকের বিষয়: দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে গড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস

স্রোত যেদিকেই থাকুক, মাঝি তার নৌকা নিয়ে নিজস্ব গতিতেই ছুটে চলেন। একই ভাবে একজন ব্যবস্থাপক হাজারও বাঁধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে ছুটে চলেন আপন গন্তব্যে। এই ছুটে চলার মাঝে ব্যবসায়ের আর্থিক খাত, কর্মীদের থেকে কাজ আদায় ও বাজার প্রতিযোগিতার মতো কাজগুলো সাড়তে হয়। তবে বেশকিছু কৌশল অবলম্বন করলে একজন ব্যবস্থাপক তার কোম্পানিকে আরও বেশি সফল করতে পারেন-

ন্যায়বিচার করুন

কোম্পানির মুখপাত্র হিসেবে একজন ব্যবস্থাপক অধীনস্থ ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন কাজের নির্দেশ দেন। অধীনস্থ ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার করা ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব। বিশেষ করে সফলতা ধরে রাখার জন্য ব্যবস্থাপক কখনোই স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি-গ্রস্ত হতে পারেন না। 

নেতা হয়ে উঠুন

সাধারণত কোম্পানির ব্যবস্থাপক অধীনস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে একজন দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপক কখনোই অধীনস্থদের সঙ্গে অনর্থক গল্প-গুজব করতে পারেন না। কারণ এতে কোম্পানির মূল্যবান সময়ের অপচয় হয় এবং তার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়। অধীনস্থদের সঙ্গে অনর্থক গল্পগুজব করলে কোম্পানিতে ব্যবস্থাপক তার মর্যাদা হারান। পক্ষান্তরে কোম্পানিকে সুদক্ষভাবে পরিচালনার মাধ্যমে অধীনস্থদের সামনে ব্যবস্থাপক নিজেকে আইডল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। 

কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার সক্ষমতা

একজন ব্যবস্থাপকের মধ্যে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা থাকা জরুরি। অধীনস্থদের মধ্যে কেউ দায়িত্বে অসচেতন হলে তার বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে। ইন্টারভিউয়ের সময়ে কে ভালো কাজ করতে পারবে আর কে পারবে না সেটি নির্ধারণ করার দক্ষতা ও পারদর্শিতা থাকতে হবে।

আইন অনুযায়ী চলতে হবে

কোম্পানির ব্যবস্থাপককে সফলতা ধরে রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা জরুরি। রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী অধীনস্থ কর্মকর্তারা মাতৃকালীন ছুটি ভোগের অধিকার রাখেন। তাদের কেউ সন্তানসম্ভবা হলে তাদেরকে কাজের নির্দেশ দেয়া অমানবিক। দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপক সফলতা ধরে রাখার জন্য আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করেন। 

কোম্পানির নীতিমালার দিকে খেয়াল রাখতে হবে

ব্যবস্থাপক হিসেবে টিকে থাকার জন্য কোম্পানির নীতিমালার প্রতি খেয়াল রাখা অতীব জরুরি। ব্যবস্থাপক কখনো কোম্পানির নীতিমালা পরিপন্থী কোনও কাজ করতে পারেন না এবং কোম্পানি এমন কাজ কেউ করলেও তাকে ছাড় দিতে পারেন না। কোম্পানিতে তার অবস্থান ও নীতিমালার প্রতি তাকে সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। 

কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা

ব্যবস্থাপক হিসেবে সফলতা ধরে রাখার জন্য কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা প্রয়োজন। ব্যবস্থাপকের দায়িত্বশীল মনোভাব অধীনস্থদের মধ্যেও গুরুতর প্রভাব ফেলে। তাই ব্যবস্থাপককে কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সফলতা কেবল কাজের মাধ্যমেই আসে। তাই কাজকে ভালবাসতে হবে এবং কোম্পানি কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। 

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

যে কোন প্রতিষ্ঠান তার জনশক্তি দক্ষতা বা যোগ্যতার গুনেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। প্রতিষ্ঠান গঠন হলেই তার প্রতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে না। যখন কোন প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিয়ম শৃঙ্খলায় সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় তখন কেবল তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করতে পারে। ব্যক্তি আসবে ব্যক্তি যাবে কিন্তু প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব গতিতে চলবে। প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ভিত্তিতে এর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ করা সম্ভব হয়।

এ জন্য প্রয়োজন একটি ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনা। যে ব্যবস্থাপনা আবার নির্ভর করে গুনি ব্যবস্থাপকের উপর এদিক থেকে একজন ব্যবস্থাপকের গুরত্ব সর্বাধিক। ব্যবস্থাপকের উপর নির্ভর করে কোন প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

ব্যবস্থাপকের গুণাবলী তার ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি রূপে প্রকাশ পায়।  নিজ গুণাবলীর উপর ভিত্তি করে তিনি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি তৈরি করেন।  ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি তৈরির জন্য তাই ভালো ব্যবস্থাপকের নিম্নলিখিত গুণাবলী থাকা প্রয়োজন।

আশাবাদ

ব্যবস্থাপকের অন্যতম গুন জনশক্তির মধ্যে আশার সঞ্চার করা। যা ইচ্ছে বা ঘটছে তার ভালো দিকসমূহ খুঁজে বের করে তাকে গ্রহণ করা। এছাড়া সেখান থেকেই আগামী দিনের উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিজে আশাবাদী থাকা ও অন্যদের মধ্যেও আশার সম্প্রচার ঘটানো। যা হচ্ছে সেখান থেকে আগামীতে উন্নয়ন ঘটা সম্ভব, এরূপ বিশ্বাস রাখা। তার মধ্যে একটি ইতিবাচক আচরণ প্রকাশ পাবে।

সমাজ সচেতনতা

কোন বিষয়কে অবহেলায় ফেলে না রাখা, কোন কাজকে বা সিদ্ধান্তকে তাৎক্ষণিকভাবে বা সময় নষ্ট না করে বাস্তবায়ন করা। যখন যা দরকার তখনই তার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা একজন ব্যবস্থাপকের কর্তব্য।

কোনো সিদ্ধান্ত বা কাজে দেরি করার অর্থ ঐ কাজ বা সিদ্ধান্তটির প্রতি একটি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা। অনেক ক্ষেত্রে দেরি করার মানে কাজটি বাস্তবায়ন না করা। তাই যে কোনো ভালো ব্যবস্থাপকের সময় সচেতন হতে হয়।

আইনজ্ঞ

ব্যবস্থাপকের গুণাবলী মধ্যে আইনজ্ঞ হওয়া অন্যতম। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কতগুলো আইন-কানুন থাকে। ব্যবস্থাপক হবেন একজন আইনজ্ঞ ব্যক্তি যিনি প্রতিষ্ঠানটির সাথে সম্পর্কযুক্ত ও প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে জ্ঞাত থাকবেন। প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় যে সকল আইনের সংশোধন বা সংযোজন সম্পর্কিত নতুন খবর সংগ্রহ করা উৎসাহী থাকবেন।

আইন প্রণয়নের সাথে আইনের ব্যবহার যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে। প্রয়োজনে আইন বিশ্লেষণ ব্যবস্থার দ্বারা জনশক্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক আইন-কানুন বুঝিয়ে দিতে হবে যাতে তারা আইনকে শ্রদ্ধা করতে শেখে ও আইন রক্ষায় আগ্রহী হয়।

নেতৃত্ব

একজন ভাল ব্যবস্থাপক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব প্রদান করবে। তবে এ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব কিন্তু ও অসচেতন ব্যক্তিদের মাথা গুনা পদ্ধতিতে পরিচালিত ব্যবস্থা নয়।  গণতন্ত্রের অসুবিধা গুলো মনে রেখে তার নেতৃত্ব প্রকৃত গণতান্ত্রিক আচরণগুলো প্রকাশ পাবে।

পরামর্শ করে কাজ করা, মতামতের গুরুত্ব দেয়া, ঘটনাকে বর্ণনা করা, সিদ্ধান্তকে বুঝিয়ে দেয়া,  নিয়মমাফিক সুবিধা কে সবার জন্য বরাদ্দ দেয়া, প্রভৃতি গণতান্ত্রিক নেতার গুণাবলী তার নেতৃত্ব বিরাজিত থাকবে।

তিনি নেতৃত্বের বিকাশ সাধনে দ্বিতীয় সারির নেতৃত্ব গঠনে ভূমিকা রাখবে, যেন জনশক্তি তারই অনুকরণে নেতৃত্ব প্রদানের শিক্ষা পায়। জনশক্তির মধ্যে এরূপ নেতৃত্বে সম্প্রসারণ ঘটাতে পারলে তারাও তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাজে এমনকি পরিবার তথা বৃহত্তর সমাজের নেতৃত্ব প্রদানের সুযোগ পাবে। তাদের মধ্যে একজন ভালো গণতান্ত্রিক আচরণ প্রকাশ পাবে এই সুযোগ সৃষ্টি করতে হয় একজন ভাল ব্যবস্থাপকের নেতৃত্বের দ্বারা।

সততার চর্চা

সত্যের মহিমাকে বিভিন্নভাবে প্রকাশ ও প্রমাণ দ্বারা সকলকে সততার চর্চায়উদ্বুদ্ধ করতে হয়। জনশক্তি যেন নিজ নিজ ধর্মের যে মূল চেতনা রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে আধ্যাত্মিকতার অনুসরণ করতে পারে এরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সহায়ক দিতে আগ্রহী করতে হয় ব্যবস্থাপকের।

শক্ত নয় নরমও নয় নীতি

কোন অবস্থাতেই একজন ব্যবস্থাপক কঠিন কোনো আচারণ বা সিদ্ধান্তের প্রকাশ যেমন তিনি করবে না তেমনি ভাবে নমনীয় বা কোমল আচরণ বা সিদ্ধান্ত নেবে না। এ দুটি রূপের মাঝামাঝি নীতিতে ব্যবস্থাপক তার ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবেন।

কখনো তাকে হতে হবে ভেলভেট এর কাপড়ে মোড়া একটি লোহার দন্ড, যার উপরের দিক থেকে লোহার দন্ডের মত কঠিন কিন্তু আচরণের দিক থেকে ভেলভেট এর কাপড়ের মতন হতে হবে।

দোষী মনে না করা

কাউকে অযথা সন্দেহ করে দোষী না ভাবা এমনকি অনর্থক কাউকে কোন ঘটনার সাথে জড়িয়ে না ফেলা একজন ব্যবস্থাপকের গুন।

ব্যবস্থাপকের দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে সবার জন্য সমান। কবে কে কি করেছিল সেই অজুহাত নতুন কোন সৃষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দায়ী করা বা সন্দেহ করার প্রবণতা ব্যবস্থাপকের থাকবে না।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment