ত্রিকোণমিতি কাকে বলে?, ত্রিকোণমিতির ইতিহাস, ত্রিকোণমিতি শব্দের অর্থ কী?,সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলোর নামকরণ,সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত কাকে বলে, সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের চিত্রগত ব্যাখ্যা

প্রশ্ন সমাধান: ত্রিকোণমিতি কাকে বলে?, ত্রিকোণমিতির ইতিহাস, ত্রিকোণমিতি শব্দের অর্থ কী?,সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলোর নামকরণ,সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত কাকে বলে, সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের চিত্রগত ব্যাখ্যা , ত্রিকোণমিতিক অভেদাবলি পিথাগোরাসের প্রতিজ্ঞা ব্যবহার করে যে সম্পর্ক পাওয়া যায়

ত্রিকোণমিতি কাকে বলে?

ত্রিকোণমিতি গণিতের একটি শাখা, যাতে ত্রিভুজের কোণ, বাহু ও তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়, তাকে ত্রিকোণমিতি (Trigonometry) বলে। ত্রিকোণমিতির দুটি শাখার একটি সমতলীয় ত্রিকোণমিতি এবং অপরটি গোলকীয় ত্রিকোণমিতি

বিশেষ করে ত্রিভুজের তিনটি কোণের অপেক্ষকগুলো নানা পরিমাপের কাজে লাগানো যায়। ত্রিভুজের একটি কোণের ছয়টি অপেক্ষক বা ফাংশন থাকে যথা সাইন (sine), কোসাইন(cosine), ট্যানজেন্ট(tangent), কোট্যান্জেন্ট(cotangent), সেক্যান্ট(secant) এবং কোসেক্যান্ট(cosecant)। এগুলো ব্যবহার করে অজানা কোণ ও দূরত্ব পরিমাপ করা হয়।


ত্রিকোণমিতি শব্দের অর্থ কী?

ইংরেজি “Trigonometry”  শব্দটি  গ্রিক শব্দ “trigōnon” বা “ত্রিভুজ” এবং “metron” বা “পরিমাপ” থেকে উদ্ভূত হয়েছে।


ত্রিকোণমিতির ইতিহাস

এটি গণিতের প্রাচীনতম শাখাগুলোর একটি হল ত্রিকোণমিতি। ত্রিকোণমিতির জন্ম প্রাচীন মিশরে হলেও এর আদি উদ্ভাবক একজন গ্রিক জ্যোতির্বিদ যার নাম হিপারকাস। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে গ্রিক হিপারকাস গ্রহ-নক্ষত্র ও তাদের মধ্যবর্তী বেগ এবং দুরত্ব নির্ণয় ও বিচার করতে গিয়ে এই বিদ্যার চর্চা শুরু করেন। তিনি কাজ করতেন আলেকজান্দ্রিয়ার একটি জাদুঘরে। তবে আমরা বর্তমান যুগে ‘থেটা’, ‘সাইন’, ‘কস’, ‘কোসাইন’, ‘কোসেক’ ইত্যাদি দিয়ে যে ত্রিকোণমিতি করে থাকি তার উদ্ভাবক মুসলিম গণিতবিদেরা। নবম খ্রিষ্টাব্দে আবু আবদুল্লাহ আল-বাতানি, হাবাস আল-হাসিব ও আবুল ওয়াফা আল-বুজানি নামের তিন গণিতবিদের যৌথ উদ্যোগের ফসল আধুনিক ত্রিকোণমিতি। তবে তারা গ্রিক জ্যোতির্বিদ হিপারকাসের মূল ধারণার ওপর ভিত্তি করেই এ বিষয়টিকে আরও আধুনিক করে গড়ে তুলেছিলেন।

সূর্যের গতি ও সময় নির্ণয়ের প্রাচীনতম যন্ত্র “Shadow Stick”-এ প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল এই ত্রিকোণমিতি। এছাড়া পরবর্তীতে ত্রিকোণমিতি ব্যবহার করে অনেক ধরনের ঘড়ি আবিষ্কৃত হয় যেগুলো বিভিন্ন নক্ষত্রের সাহায্যে সময় নির্ণয় করতে পারত। যেমন- Gonon Circle, Merkhet ইত্যাদি। অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়েও ত্রিকোণমিতি ব্যবহৃত হয়। ত্রিকোণমিতির ধারণাকে কাজে লাগিয়ে প্রাচীন জ্যোতির্বিদরা ঋতু নির্ণয় করেছিলেন যা সেই সময় বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করেছিল।


আরো ও সাজেশন:-

ত্রিকোণমিতি : ‘ত্রিকোণ’ শব্দটি দ্বারা তিনটি কোণ বোঝায় আর ‘মিতি’ শব্দটির অর্থ পরিমাপ বোঝায়। ইংরেজিতে ত্রিকোণমিতিকে Trigonometry বলা হয় ‘Trigon’ গ্রিক শব্দটির অর্থ তিনটি কোণ বা ত্রিভুজ এবং “metry” শব্দের অর্থ পরিমাপ।

 অর্থাৎ, গণিতের যে শাখায় ত্রিভুজ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিমাপ সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয় তাকে ত্রিকোণমিতি বলে।

◈ সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলোর নামকরণ : সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলো অতিভুজ, ভূমি ও উন্নতি নামে অভিহিত হয়। আবার, সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষকোণদ্বয়ের একটির সাপেক্ষে অবস্থানের প্রেক্ষিতেও বাহুগুলোর নামকরণ করা হয়। যথা :

 ক. ‘অতিভুজ’, সমকোণী ত্রিভুজের বৃহত্তম বাহু যা সমকোণের বিপরীত বাহু

 খ. ‘বিপরীত বাহু’, যা হলো প্রদত্ত কোণের সরাসরি বিপরীত দিকের বাহু

 গ. ‘সন্নিহিত বাহু’, যা প্রদত্ত কোণ সৃষ্টিকারী একটি রেখাংশ।

∠PON কোণের জন্য অতিভুজ OP, সন্নিহিত বাহু ON, বিপরীত বাহু PN ∠OPN কোণের জন্য অতিভুজ OP, সন্নিহিত বাহু PN, বিপরীত বাহু ON

জ্যামিতিক চিত্রের শীর্ষবিন্দু চিহ্নিত করার জন্য বড় হাতের বর্ণ ও বাহু নির্দেশ করতে ছোট হাতের বর্ণ ব্যবহার করা হয়। কোণ নির্দেশের জন্য প্রায়শই গ্রিক বর্ণ ব্যবহৃত হয়। গ্রিক বর্ণমালার ছয়টি বহুল ব্যবহৃত বর্ণ হলো:

(আলফা-α) (বিটা-β) (গামা-γ) (থিটা-θ) (পাই-ϕ) (ওমেগা-Ω)

 প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত সব গণিতবিদদের হাত ধরেই জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতিতে গ্রিক বর্ণগুলো ব্যবহার হয়ে আসছে। 

◈ সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত : সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতসমূহ নিম্নোক্তভাবে বর্ণনা করা হয় :

সূক্ষকোণের দুইটি বাহু থাকে এবং প্রত্যেকটি বাহুর মধ্যে অসংখ্য বিন্দু কল্পনা করা হয়। প্রতিটি বিন্দু থেকে অপর বাহুটির উপর লম্ব টানলে এক একটি সমকোণী ত্রিভুজের সৃষ্টি হয়। সমকোণী ত্রিভুজের বিপরীত বাহুটিকে অতিভুজ, নির্দিষ্ট সূক্ষকোণটির বিপরীত বাহুটিকে লম্ব এবং অপর একটি বাহুকে ভূমি বলা হয়। 

◈ সূক্ষকোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের চিত্রগত ব্যাখ্যা :

মনে করি, ∠XOA একটি সূক্ষকোণ। OA বাহুতে যেকোনো একটি বিন্দু P নিই। P থেকে OX বাহু পর্যন্ত PM লম্ব টানি। তাতে সমকোণী ত্রিভুজ POM গঠিত হলো। এই ∆POM এর PM, OM ও OP বাহুগুলোর যে ছয়টি অনুপাত পাওয়া যায় তাদের ∠XOA এর ত্রিকোণমিতিক অনুপাত বলা হয় এবং তাদের প্রত্যেকটিকে এক একটি সুনির্দিষ্ট নামে নামকরণ করা হয়। 

 ∠XOA সাপেক্ষে সমকোণী ত্রিভুজ POM-এর PM বাহুকে লম্ব, OM বাহুকে ভূমি, OP বাহুকে অতিভুজ ধরা হয়। এখন, ∠XOA = θ ধরলে θ কোণের যে ছয়টি ত্রিকোণমিতিক অনুপাত পাওয়া যায় তা বর্ণনা করা হলো। 

PM/OP = লম্ব/অতিভুজ = θ কোণের সাইন (sine) বা সংক্ষেপে sinθ

OM/OP = ভূমি/অতিভুজ = θ কোণের কোসাইন (cosine) বা সংক্ষেপে cosθ.

PM/OM = লম্ব/ভূমি = θ কোণের ট্যানজেন্ট (tangen) বা সংক্ষেপে tanθ.

OM/PM = ভূমি/লম্ব = θ কোণের কোট্যানজেন্ট (cotangent) বা সংক্ষেপে cotθ.

OP/OM = অতিভুজ/ভূমি = θ কোণের সেকেন্ট (secant) বা সংক্ষেপে secθ.

OP/PM = অতিভুজ/লম্ব = θ কোণের কোসেকেন্ট (cosecant) বা সংক্ষেপে cosecθ.

[দ্রষ্টব্য : (θ) থেটা একটি গ্রিক অক্ষর, এখানে যা একটি কোণের পরিমাপ নির্দেশ করে]

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

◈ ত্রিকোণমিতিক অভেদাবলি পিথাগোরাসের প্রতিজ্ঞা ব্যবহার করে যে সম্পর্ক পাওয়া যায় তা হলো :

1. sin²θ + cos²θ = 1

 বা, sin²θ = 1 – cos²θ

 বা, cos²θ = 1 – sin²θ

2. 1 + tan²θ = sec²θ

 বা, sec²θ – tan²θ = 1

3. 1 + cot²θ = cosec²θ

 বা, cosec²θ – cot²θ = 1


রচনা ,প্রবন্ধ উত্তর লিংক ভাবসম্প্রসারণ উত্তর লিংক
আবেদন পত্র ও Application উত্তর লিংক অনুচ্ছেদ রচনা উত্তর লিংক
চিঠি Letter উত্তর লিংক প্রতিবেদন উত্তর লিংক
ইমেলEmail উত্তর লিংক সারাংশ ও সারমর্ম উত্তর লিংক
Paragraphউত্তর লিংক Compositionউত্তর লিংক
CVউত্তর লিংক Seen, Unseenউত্তর লিংক
Essayউত্তর লিংক Completing Storyউত্তর লিংক
Dialog/সংলাপউত্তর লিংক Short Stories/Poems/খুদেগল্পউত্তর লিংক
অনুবাদউত্তর লিংক Sentence Writingউত্তর লিংক

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment