ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর,ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপাদান বর্ণনা কর,ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ধাপগুলো বর্ণনা কর

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর,ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপাদান বর্ণনা কর,ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ধাপগুলো বর্ণনা কর

উত্তর : ভূমিকা : ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অর্থ হলো সম্ভাব্য সবরকম পন্থা অবলম্বন করে ঝুঁকি এড়ানো বা কমানোর চেষ্টা করা । ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঝুঁকি পরিহার ও ঝুঁকি মোকাবিলা করার চেষ্টা করে ।

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপ : ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপ আলোচনা করা হলো :

১. ঝুঁকি শনাক্তকরণ : ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রথম কাজ বা পদক্ষেপই হচ্ছে কারবারের কোন কোন ক্ষেত্রে ঝুঁকি বিদ্যমান তা শনাক্ত করা। ঝুঁকি ব্যবস্থাপকের অতীত অভিজ্ঞতা, কারবারের প্রকৃতি, কার্যক্রম, অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক উপাদান ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা ও যথার্থ জ্ঞান ঝুঁকি শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে ।

২. ঝুঁকির ধরন ব্যাখ্যাকরণ : ঝুঁকির ক্ষেত্র বা উৎস নিরূপণ করার পর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা হলো ঝুঁকির প্রকৃতি ব্যাখ্যাকরণ। ঝুঁকির প্রকৃতি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না হলে তা পরিমাপ করা সম্ভব হয় না ।

৩. ঝুঁকি পরিমাপকরণ : ঝুঁকি চিহ্নিতকরণের পর ঝুঁকির ধরন ব্যাখ্যা করা হয় এবং এরপর ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়। এ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পারিসংখ্যিক ও গাণিতিক কৌশল ব্যবহার করা হয় । এ কৌশলগুলো হলো :
(ক) সম্ভাবনা বিন্যাস:
(খ) পরিমিতি ব্যবধান;
(গ) গড় ব্যবধান;
(ঘ) ব্যবধানাংক;
(ঙ) ভেদাংক ও
(চ) সহসম্পর্ক ইত্যাদি ।

৪. কৌশল অনুসন্ধান : এ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার কাজ হলো প্রতিটি ক্ষতি মোকাবিলার সম্ভাব্য উপায় বা কৌশল অনুসন্ধান করা। যে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে এবং উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় মূল্য বৃদ্ধি করা না গেলে অধিক পরিমাণে কাঁচামাল ক্রয় করা।

৫. ঝুঁকি পরিচালন : ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়ে গেলে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে দেবার চেষ্টা চালিয়ে থাকেন। এ উদ্দেশ্যে ব্যবস্থাপকা নিম্নোক্ত কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ঝুঁকি পরিচালনা করতে পারেন।


আরো ও সাজেশন:-

(ক) ঝুঁকি পরিহার : সাধারণত ব্যক্তিগত ঝুঁকি ও সম্পত্তি সংক্রান্ত ঝুঁকি পরিহার করা যায় না। কার্য পরিচালনার জন্য বিকল্প পথ বা উপায় থাকলে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার পক্ষে এগুলো মূল্যায়ন করা সম্ভব হলে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতির পরিহার করতে পারে।

(খ) ঝুঁকি স্থানান্তর : ঝুঁকি হস্তান্তর করার জন্য বিমা ব্যবস্থার আশ্রয় গ্রহণ করা হয়। এই পর্যায়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপক বিমা কোম্পানি নির্বাচন করেন। বিমা কোম্পানি ছাড়াও অন্য কোনো কোম্পানির মাধ্যমে ঝুঁকি হস্তান্তর করা যায়।

(গ) ঝুঁকি ধারণ : ঝুঁকির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হলে ঝুঁকি হস্তান্তর না করে ঝুঁকি ধারণ করাটাই ঝুঁকি ব্যবস্থাপক উপযুক্ত মনে করেন ।

(ঘ) ঝুঁকির প্রতিরোধ : যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি অন্য কোনো উপায়ে পূরণ করা হয় তখন তাকে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা বলা হয় । এরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকির ক্ষতিপূরণ তখনই করা হয় যখন ঝুঁকির জন্য বিমার ব্যবস্থা থাকে না ।

[ বি:দ্র: উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

(ঙ) ঝুঁকি বহুমুখীকরণ : কোনো পণ্যের গুদাম এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন স্থানে স্থাপনের মাধ্যমে’ কার্যকরীভাবে ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। এখন যদি একটি গুদামে আগুন লাগে তাহলে প্রতিষ্ঠান অপর একটি গুদাম হতে পণ্যের সরবরাহ পাবে ।

৬. কৌশল বাস্তবায়ন : ঝুঁকি সম্পর্কে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা ঝুঁকি ব্যবস্থাপকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এ উদ্দেশ্যে ঝুঁকি ব্যবস্থাপক নীতি প্রণয়ন করেন এবং সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন।

কৌশল বাস্তবায়নের জন্য নিম্নোক্ত কৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে:

(ক) উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য পরিপূরক পরিকল্পনা গ্রহণ ।
(খ) বিমাপত্র গ্রহণ ।
(গ) যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ
(ঘ) নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ।
(ঙ) গবেষণা কার্য প্রচলন ।
(চ) সহযোগিতার উন্নয়ন ইত্যাদির মাধ্যমে কৌশল বাস্ত বায়ন করা যায় ।

উপসংহার : ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপরোক্ত পদক্ষেপ একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই একজন ঝুঁকি ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব হলো উপরোক্ত পদক্ষেপ সঠিকভাবে পরিচালন ও প্রয়োগ করা এবং এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আয় বৃদ্ধি, প্রসার ও উন্নয়ন সাধন সম্ভব ।

Leave a Comment