Advertisement
আজকের বিষয়: চাকরির পরীক্ষা তরুণদের কাঁধে খরচের বোঝা, নিয়োগ পরীক্ষার খরচ কেন বেকার চাকরি প্রার্থীদের বহন করতে হবে? ,চাকরির পরীক্ষা নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, চাকরির পরীক্ষা মানে খরচে বুঝা
এক মাসে চারবার রংপুর থেকে ঢাকায় এসে আটটি চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন আশিকুর রহমান। পরীক্ষার ফি, ঢাকায় যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া মিলিয়ে এক মাসেই তাঁর খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকার বেশি।
আশিকুর এখনো চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। থাকেন রংপুর শহরে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম শ্রেণির চাকরির একটি পদে আবেদন করতে কমপক্ষে ৭০০ টাকা লাগে। আর একটি পরীক্ষা দিতে ঢাকায় যাওয়া-আসা মিলিয়ে কম করে হলেও দুই হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি মাসে এ খরচ জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা চাকরিপ্রত্যাশী তরুণদের।
আশিকুরের মতো প্রতি শুক্র ও শনিবার ঢাকায় চাকরির পরীক্ষা দিতে আসা তরুণ-তরুণীদের গল্প প্রায় একই রকম। কারও কারও আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের বাসায় থাকার সুযোগ থাকলেও বেশির ভাগের তা নেই। আবেদন ফি, ঢাকায় যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া—সব মিলিয়ে একজন চাকরিপ্রত্যাশীর মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগে।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছর চাকরির পরীক্ষা অনেকটাই বন্ধ ছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয় চাকরির পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। কোনো কোনো মাসে শুক্র ও শনিবার গড়ে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষা হয়েছে। মাঝে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরীক্ষা কমে যায়। আবার গত মার্চ থেকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসছে। স্থগিত হওয়া নিয়োগ পরীক্ষাগুলোর তারিখও দেওয়া হচ্ছে।বিজ্ঞাপন
সারা বছর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং চাকরির পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বছরে প্রায় দুই কোটি চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ঢাকায় পরীক্ষায় অংশ নেন প্রায় ৫০ লাখ। তাঁরা ঢাকায় যেসব নিয়োগ পরীক্ষা দেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পদের চাকরি। এ ছাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা।
Advertisement
শুধু ঢাকায় আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়ার খরচই নয়, প্রতিষ্ঠানভেদে চাকরির আবেদন ফি দিতেও অনেকেই হিমশিম খান।
সাবেক মন্ত্রিপরিষ সচিব আলী ইমাম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, চাকরিপ্রার্থী তরুণদের পরীক্ষার ফি ও তাতে অংশ নিতে অনেক খরচ হয়ে যায়। তাই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজনের খরচের বেশি টাকা তরুণদের কাছ থেকে নেওয়া অন্যায়।
আবেদন ফি ৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিভিন্ন পদে চাকরির আবেদন ফি ৫০ থেকে দেড় হাজার টাকা। এর মধ্যে পুলিশের কনস্টেবল পদে ১২০ টাকা, উপপরিদর্শক (এসআই) ৩৫০ টাকা, সরকারি ব্যাংকে ২০০ টাকা, খাদ্য অধিদপ্তরে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে ৫০ থেকে ২০০ টাকা, বিসিএসে ৭৫০ টাকা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষক পদে ১১০ থেকে ৩৫০ টাকা।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
চাকরিপ্রার্থী তরুণদের পরীক্ষার ফি ও তাতে অংশ নিতে অনেক খরচ হয়ে যায়। তাই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজনের খরচের বেশি টাকা তরুণদের কাছ থেকে নেওয়া অন্যায়।
আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব
ঢাকা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পাস করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন রায়হানুল ইসলাম। তিনি বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে একটি আবেদনে চাকরির নিশ্চয়তা থাকে না। তাই একই সঙ্গে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হয়। এভাবে প্রতি মাসে আবেদন করতে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা চলে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর মা-বাবার অসহায় মুখের দিকে তাকিয়ে টাকা চাওয়া যায় না। টিউশনি থেকে আসা টাকা দিয়েও সব আবেদন করা সম্ভব হয় না। তাই চাকরির আবেদন ফি মানেই বেকারদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
খেয়ালখুশিমতো আবেদন ফি নির্ধারণ
মিনহাজুল ইসলাম নামের একজন চাকরিপ্রত্যাশী প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। একই ধরনের পদের জন্য একেক প্রতিষ্ঠানে আবেদন ফি একেক রকম। তারা নিজেরা খেয়ালখুশিমতো আবেদন ফি নির্ধারণ করে বেকারদের পকেট কাটছে। অধিকাংশ চাকরিপ্রার্থী টিউশনির টাকায় আবেদন করে থাকেন। গ্রামে কেউ কেউ টিউশনি করে এক হাজার টাকাও পান না। সেখানে প্রথম শ্রেণির চাকরির একটি পদে আবেদনের জন্য ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা চলে যায়।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ওয়েবসাইটে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ১০ পদে ৮১ জন নিয়োগ দেবে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ছয়টি পদের জন্য আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে। বাকি পদগুলোর আবেদন ফি এক হাজার টাকা।
পরীক্ষার ফি বিষয়ে জানতে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাওসার আমীর আলীর মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির আটটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। প্রতিটি পদে আবেদন ফি এক হাজার টাকা। যদিও প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে আবেদন ফি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কিছুটা কম।
এ বিষয়ে বিএডিসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকে। কিন্তু বিএডিসি এমন কোনো বরাদ্দ পায় না। পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র ভাড়া ও অন্য আনুষঙ্গিক কাজে অনেক টাকা লাগে। তাই আবেদন ফি এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক পদে আবেদনে খরচ অনেক
সর্বশেষ ২০১৮ সালে বেসরকারি স্কুল ও কলেজে শিক্ষক নিবন্ধনের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। এতে ৫৪ হাজার পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন প্রায় ৯০ লাখ প্রার্থী। তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সম্প্রতি নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া কয়েকজন প্রার্থী প্রথম আলোকে জানান, পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৩৫০ টাকা ফি দিতে হয়েছিল। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা পাসের পর নিবন্ধনের জন্য প্রার্থীরা যোগ্য নির্বাচিত হন। এরপর চাকরির জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করে রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীরা নিজের জেলা, পাশের জেলা এমনকি আত্মীয়স্বজনের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করে রাখেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আবেদন ফি ১০০ টাকা।
আবেদনকারীদের একজন সিলেটের মনোয়ার হোসেন বলেন, নিবন্ধনে নির্বাচিত হলেও চাকরির নিশ্চয়তা নেই। তবু প্রার্থীরা অনেক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে থাকেন। এতে প্রায় কয়েক হাজার টাকা চলে যায়। এমন আবেদন ফি তুলে দিতে তিনি সরকারের কাছে আবেদন জানান।
খরচ ও ভোগান্তি কমানোর উপায় কী
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুলিশ, খাদ্য অধিদপ্তর, বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা জেলা ও বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে প্রার্থীদের খরচ ও দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমে আসে। প্রার্থীদের খরচ কমাতে সরকারি ব্যাংকগুলোয় চাকরির আবেদন ফি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত ছয়টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যেকোনো গ্রেডের পদে আবেদন করতে ২০০ টাকা লাগে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে আবেদন করতে টাকা দিতে হয় না।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলো জেলা শহরে নিয়ে দেখা গেছে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত খরচ কমে আসে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে এ মডেল অনুসরণ করতে পারে। এটা করা গেলে আবেদনের ফিও কমানো যাবে বলে মনে করেন তিনি।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ চলাকালে অনলাইনে চাকরি খোঁজার প্রতিষ্ঠান বিডিজবস দুটি বেসরকারি ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষা অনলাইনে নিয়েছিল।
Advertisement 2
বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুটি পরীক্ষায় প্রায় ৬০ হাজার প্রার্থী ছিল। পরীক্ষা নিতে খরচ হয়েছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। অথচ এই একই পরীক্ষা সশরীর নিলে খরচ পড়ত ৩০-৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ অনলাইনে পরীক্ষা নিলে প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচ কমে যাবে প্রায় ৯০ ভাগ।
Advertisement 2
সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরির পরীক্ষাতেই আবেদন ফি নেওয়া উচিত নয় মন্তব্য করে ফাহিম মাশরুর বলেন, অনলাইনে চাকরির পরীক্ষা নিলে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় কমবে, তেমনি চাকরিপ্রার্থীদেরও যাতায়াতের খরচ লাগবে না।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
Advertisement 5
- adult ftp server
Advertisement 5
- FTP Server
- লিংক শেয়ার করে ইনকাম করুন,লিংক শেয়ার করে কিভাবে আয় করা যায়
- adsterra আর্নিং ট্রিকস, adsterra earning tricks
- telegram থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করবো,telegram দিয়ে টাকা ইনকাম,টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম
- দাবা খেলে টাকা ইনকাম করুন জেনে নিন সম্পূর্ণ গাইডলাইন,অনলাইনে দাবা খেলার সেরা জায়গা
Advertisement 3