কৌশলগত বিশ্লেষণের মূলনীতিগুলো কি?,মৌলিক বিশ্লেষণ এবং কৌশলগত বিশ্লেষণের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সংক্ষেপে লিখ

Google Adsense Ads

কৌশলগত বিশ্লেষণের মূলনীতিগুলো কি?,মৌলিক বিশ্লেষণ এবং কৌশলগত বিশ্লেষণের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সংক্ষেপে লিখ

কৌশলগত বিশ্লেষণের মূলনীতিগুলো কি? অথবা, কৌশলগত বিশ্লেষণের মূলনীসমূহ কি কি?

উত্তর : কৌশলগত বিশ্লেষক পূর্ববর্তী মূল্য ও লেনদেনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে অতীত বাজারের গতিপ্রকৃতি নিরূপণ করেন এবং ভবিষ্যত বাজার আচরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন ।

১৯৬৬ সালে এ সম্পর্কিত কতিপয় অনুমতি শর্ত প্রদান করেন যা উপরোক্ত মূল্য পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। এর মধ্যে কিছু বিষয় বিতর্কিত। নিচে অনুমিত শর্তগুলো বর্ণনা করা হলো –

১. কোন পণ্য বা সেবার বাজার মূল্য নির্ধারিত হয় চাহিদা ও সরবরাহের পারস্পরিক ক্রিয়ার উপর ।
২. চাহিদা ও সরবরাহ পরিচালিত হয় কতিপয় যৌক্তিক এবং অযৌক্তিক বিষয় দ্বারা ।
৩. সামান্য কিছু উঠানামা অগ্রাহ্য করলে স্বতন্ত্রে সিকিউরিটির মূল্য এবং সার্বিক বাজার মূল্য গতিধারা অনুযায়ী পরিচালিত হয় এবং উপলব্ধিযোগ্য সময় পর্যন্ত তা বজায় থাকে ।
৪. চাহিদা ও সরবরাহের সম্পর্কের স্থানান্তরের ফলে বর্তমান গতিধারার পরিবর্তন হয়। এই স্থানান্তর বাজারের নিজস্ব ক্রিয়ার আগে বা পরে চিহ্নিত করা যায় ।

প্রথম দু’টি অনুমিত শর্ত প্রয়োগবিদ এবং অপ্রয়োগবিদ উভয়ের দ্বারাই সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য। অর্থনীতি সম্পর্কে | যারা পড়াশুনা আছে তিনি অবশ্যই জানেন যে, যেকোনো অবস্থায়ই কোনো পণ্য বা সেবা বা কোনো সিকিউরিটির মূল্য | নির্ধারিত হয় চাহিদা ও সরবরাহের পারস্পরিক ক্রিয়ার উপরে। চাহিদা ও সরবরাহ পরিচালিত হয় বিভিন্ন চলক দ্বারা। মতামতে পার্থক্য দেখা দেয় শুধুমাত্র যুক্তিহীন বিষয়ের প্রভাবের ক্ষেত্রে। নিশ্চিতভাবে যে যে কেউ সন্মত হবেন যে, বাজার এসব বিষয়গুলিকেই অবিরামভাবে গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।

অন্যদিকে, চাহিদা ও সরবরাহের পরিবর্তনের ফলে স্টক মূল্যে সমন্বয় করার গতিশীলতা সম্পর্কিত অনুমিত শর্তে মতামতের অনৈক্য দেখা যায়। কৌশলগত বিশ্লেষক প্রত্যাশা করেন স্টক মূল্য গতিধারা অনুযায়ী একটি সময় পর্যন্ত অবস্থান করবে কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে একটি সময়ে বাজার কোন নতুন তথ্য আসবে না। যদিও সময়ের বিবর্তন তা আসতে পারে ।

এ ধরনের তথ্যের অনুপ্রবেশ ঘটে কারণ তথ্যের উৎস বিভিন্ন ধরনের, তাছাড়া কিছু বিনিয়োগকারী অন্যদের আগেই এসব তথ্য পেতে পারেন বা মৌল পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারেন ।

বিভিন্ন ধরনের দল যেমন-অন্তর্বর্তী ব্যক্তি থেকে শুরু করে অনেক তথ্যসমৃদ্ধ পেশাজীবী এবং সাধারণ বিনিয়োগকারী পর্যন্ত এসব তথ্য পান এবং সে অনুযায়ী সিকিউরিটি ক্রয়-বিক্রয় করেন । এর ফলে মূল্য ক্রমাগভাবে একটি নতুন ভারসাম্য অবস্থানে পৌঁছায়। যেখানে নতুন তথ্যের ফলে ভারসাম্য মূল্য হ্রাস পেয়েছে কিন্তু এ সমন্বয় দ্রুত গতিতে হয় না । এটা একটা গতিধারা অনুযায়ী সম্পাদিত হয় যতক্ষণ না স্টক মূল্য নতুন ভারসাম্য অবস্থান পৌঁছায় ।

কৌশলগত বিশ্লেষক এক ভারসাম্য মূল্য হতে অন্য ভারসাম্য মূল্যে পরিবর্তন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন কিন্তু নতুন ভারসাম্য মূল্য সম্পর্কে কোন অনুমান করেন না, বরং তিনি প্রথমেই অনুকূল স্রোতে চলতে চান, অর্থাৎ, এ পরিবর্তন হতে উপকৃত হতে চান। যেমন যদি গতিধারা ঊর্ধ্বমুখী হলে তিনি সিকিউরিটি ক্রয় করেন এবং নিম্নমুখী হলে সিকিউরিটি বিক্রয় করেন। কিন্তু যদি এ নতুন তথ্যের ফলে মূল্য সমন্বয় দ্রুত হয় তাহলে এ অনুকূল স্রোত অত্যন্ত স্বল্পমেয়াদি হয় এবং বিনিয়োগকারীরা এর ফলে লাভবান হতে পারেন না ।

মৌলিক বিশ্লেষণ এবং কৌশলগত বিশ্লেষণের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সংক্ষেপে লিখ ৷

উত্তর : মৌলিক বিশ্লেষণ সিকিউরিটি এর প্রকৃত (Intrinsic ) মান নির্ণয় মৌলিক প্রভাবক উপাদানসমূহ মূল্যায়নের মাধ্যমে যথা : অর্থনীতি, শিল্প এবং কোম্পানি। একটি ক্লান্তিকর প্রক্রিয়া যা সম্পন্ন হতে দীর্ঘ সময় নেয় ।

Google Adsense Ads

কৌশলগত বিশ্লেষকরা বিশ্লেষকরা বাজারের বাজারের মূল্য লেনদেনের ভলিউমের গতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সাবধানতার সাথে এসব গতিবিধিতে বিভিন্ন ধারা পরীক্ষা করেন ও ভবিষ্যৎ শেয়ার মূল্য অনুমান করেন। যেহেতু এটি মৌলিক গবেষণা হতে অনেক কম সময় ও তথ্য বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ তাই এতে মৌলিক বিশ্লেষণ অপেক্ষা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া যায় ।

মৌলিক বিশ্লেষণ অতিমূল্যায়িত বা অবমূল্যায়িত সিকিউরিটি শনাক্তকরণে সাহায্য করে। কিন্তু কৌশলগত বিশ্লেষণ বিনিয়োগের সঠিক সময় শনাক্তকরণে সাহায্য করে, অর্থাৎ মৌলিক বিশ্লেষণ দ্বারা শনাক্ত অতিমূল্যায়িত বা অবমূল্যায়িত সিকিউরিটি ক্রয় বা বিক্রয়ে সর্বোত্তম সময়টি চিহ্নিত করে।

অতএব, কৌশলগত বিশ্লেষণ মৌলিক বিশ্লেষণের বিকল্প হিসেবে গণ্য না করে সম্পূরক অংশ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। দু’টি পথই আবার তথ্যভাণ্ডার এবং বিশ্লেষণী কৌশল স্বতন্ত্র । মৌলিক ও কৌশলগত বিশ্লেষণ দু’টি শেয়ারমূল্য আচরণ পূর্বানুমানের বিকল্প পথ। দু’টির একটিও পূর্ণাঙ্গ নয় ।

কৌশলগত বিশ্লেষণে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এটি একটি সঠিক পদ্ধতির বিশ্লেষণ নয়। শেয়ারমূল্য গতিবিধির মধ্যে অন্তর্নিহিত ধারা চিহ্নিত করা প্রায় ক্ষেত্রেই অত্যন্ত জটিল অধিকন্তু, ধারাসমূহের অর্থ ব্যাখ্যা করা এবং ভবিষ্যৎ মূল্য গতিবিধিতে তাদের প্রভাব ব্যাখ্যা করাও সহজ ব্যাপার নয় ।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ মৌলিক বিশ্লেষণ এবং কৌশলগত বিশ্লেষণের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সংক্ষেপে লিখ, কৌশলগত বিশ্লেষণের মূলনীসমূহ কি কি?

Google Adsense Ads

Leave a Comment