কে দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল?, কে কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে?‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?,কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো কেন?

বিষয়: কে দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল?, কে কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে?‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?,কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো কেন?

বিড়াল সৃজনশীল প্রশ্ন-৪

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

  খোদা বলিবেন, হে আদম সন্তান,

  আমি চেয়েছিনু ক্ষুধার অন্ন, তুমি কর নাই দান।

  মানুষ বলিবে, তুমি জগতের প্রভু,

  আমরা তোমারে কেমনে খাওয়াবো, সে কাজ কী হয় কভু?

  বলিবেন খোদা-ক্ষুধিত বান্দা গিয়েছিল তব দ্বারে,

  মোর কাছে তুমি ফিরে পেতে তাহা যদি খাওয়াইতে তারে।

ক. কে দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল?

খ. ‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকটির মূলবক্তব্য কোন দিক দিয়ে ‘বিড়াল’ রচনাটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার মূলভাব ফুটে উঠেছে।”- বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান

প্রসন্ন দুগ্ধ রেখে গিয়েছিল।

খ. অনুধাবন

‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’- বলতে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ বিড়াল খেয়ে ফেলার দিকটিকে বোঝানো হয়েছে।

প্রসন্ন কমলাকান্তের খাওয়ার জন্য কিছুটা দুধ বাটিতে করে রেখে যায়। কিন্তু সে অন্যমনস্ক হওয়ার সুযোগে বিড়াল তার দুধটুকু খেয়ে নেয়। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে এ কথাটিই বোঝানো হয়েছে।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকটির মূলবক্তব্য পরোপকারের সেবার আদর্শের দিক দিয়ে ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সকলের সমঅধিকারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সেখানে ধনীদের দান করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে এসেছে।

ক্ষুধিত বান্দা বা অনাহারী প্রাণিকে খাবার দিলে সৃষ্টিকর্তাকে খাওয়ানো হয়- এ নৈতিক শিক্ষার দিকটি আলোচ্য উদ্দীপকের মূলবক্তব্য। ক্ষুধার্তকে অন্নদান শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে বিধাতা বিধান দিয়েছেন। অথচ এ জগতে মানুষ এমন মহৎ কর্ম থেকে বিচ্যুত। উদ্দীপকে প্রকাশিত মানবতার এ দিকটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ গল্পটিতেও ফুটে উঠেছে। যেখানে কমলাকান্তের জন্য সযতেœ রাখা দুধ বিড়ালটি খেয়ে যেন কমলাকান্তের পরোপকার তথা ধর্মের মহৎ কাজটি করতে তাকে সহায়তা করেছে। কিন্তু আদর্শচ্যুত কমলাকান্ত সেবার মাহাত্ম্য ভুলে গিয়ে বিড়ালের পিছনে ধাবিত হয়েছে, যা সেবার আদর্শের বিপরীত। ‘বিড়াল’ রচনায় প্রকাশিত এ দিকটি আলোচ্য উদ্দীপকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার মূলভাব ফুটে উঠেছে।”- মন্তব্যটি সঠিক।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখকের কল্পিত বিড়ালের স্বগতোক্তিতে জীব সেবার পরমাদর্শের দিকটি উন্মোচিত হয়েছে।

উদ্দীপকের বর্ণনায় মানবসেবার আদর্শ হতে বিচ্যুত হওয়ায় মানুষকে বিধাতার কাছে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। ক্ষুধিত মানুষকে অন্নদান পরম ধর্ম। কিন্তু মানুষ সে পরমাদর্শ ভুলে গিয়ে মহা অন্যায় ও অধর্মের কাজ করে। আলোচ্য উদ্দীপকে প্রকাশিত এ দিকটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনার মূল বিষয়।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তের খাবার জন্যে রাখা দুধ বিড়ালটি খেয়ে অন্যায় করেনি। বরং কমলাকান্তের ধর্মফল সঞ্চিত করার দিকটিকে প্রভাবিত করেছে বলে বিড়ালটি দাবি করে। তাই বিড়ালটিকে না মেরে বরং তার প্রশংসা করা উচিত বলে বিড়ালটি মনে করে। রচনায় উঠে আসা জীব সেবার পরমাদর্শের দিকটি আলোচ্য উদ্দীপকেও প্রকাশ পেয়েছে। জীব সেবার মধ্যেই প্রকৃত ধর্ম নিহিত। তাই ক্ষুধার্তকে খাওয়ালে বিধাতাকে খাওয়ানো হয়- এ বোধ উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনা উভয়ক্ষেত্রে ফুটে উঠেছে। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।

বিড়াল সৃজনশীল প্রশ্ন-৫

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

সবার সুখে হাসবো আমি/ কাঁদবো সবার দুখে

নিজের খাবার বিলিয়ে দেবো/ অনাহারীর মুখে।

ক. কে কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে?

খ. কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো কেন?

গ. উদ্দীপকের বক্তব্যের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক এবং কমলাকান্তের ‘বিড়াল’ রচনার বাস্তবতা অভিন্ন।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

৫নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান

প্রসন্ন কমলাকান্তকে ছানা দেবে বলেছে।

খ. অনুধাবন

চিরায়ত প্রথার কারণে কমলাকান্ত মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো।

কমলাকান্তের মতে চিরায়ত প্রথা অনুসারে বিড়াল দুধ খেলে তাকে তাড়িয়ে মারতে হয়। নইলে মানবসমাজে তাকে কুলাঙ্গার ভাবা হয়। তাছাড়া বিড়ালটি কমলাকান্তকে কাপুরুষও ভাবতে পারে। এজন্যই কমলাকান্ত বিড়ালের প্রতি ধাবমান হয়।

গ. প্রয়োগ

সাম্যবাদী মানসিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

‘বিড়াল’ রচনায় দরিদ্রের দরিদ্রতার কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে ধনীদের কার্পণ্যকে। যারা অভুক্তকেও অন্ন দিতে চায় না।

উদ্দীপকের কবিতাংশে সাম্যবাদী ধারণা ব্যক্ত হয়েছে। যেখানে কবি সবার সুখে হাসতে চান। সবার দুঃখে দুখী হন। এমনকি অনাহারীর মুখে নিজের খাবার তুলে দিয়ে তৃপ্ত হন তিনি। কিন্তু ‘বিড়াল’ রচনায় এর বিপরীত দিকটি উন্মোচিত হয়েছে। সেখানে বিড়ালের অনুযোগের মধ্য দিয়ে ধনীদের তোষণের দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে, যারা সমাজে ধনী-দরিদ্র বৈষম্যের জন্য দায়ী। এটি উদ্দীপকের ভাবনার বিপরীত।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপক এবং কমলাকান্তের ‘বিড়াল’ রচনার বাস্তবতা অভিন্ন।”-মন্তব্যটি যথার্থ।

‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তের আচরণে সমদর্শনের দিকটি উঠে এসেছে। উদ্দীপকের কবিতাংশের বর্ণনায় কবির সাম্যবাদী মানসিকতা রূপ লাভ করেছে। তাই সকলের বেদনায় কবি সমব্যথী হতে চান। সকলের সুখে হতে চান সুখী। এমনকি অনাহারীর মুখে খাবার তুলে দেয়ার আনন্দে তৃপ্ত হতে চান তিনি, যা তার উদার সাম্যবাদী মনোভাবকে তুলে ধরে।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখক কমলাকান্ত চরিত্রের মধ্য দিয়ে তার সমদর্শনের চেতনাকে মূর্ত করে তুলেছেন। সেখানে কমলাকান্ত তাকে জলযোগের সময় আসার আমন্ত্রণ জানায়, যা উদ্দীপকের কবিতাংশে উঠে আসা কবির সাম্যবাদী মনোভাবেরই প্রতিফলন। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।

বস্তুত উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনার মাঝে বিপন্ন মানবতার প্রতি একটি সহমর্মিতার অনুরাগ আলোকিত হয়েছে। তাই বলা যায় মন্তব্যটি যথার্থ। 

বিড়াল সৃজনশীল প্রশ্ন-৬

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

হাজি মুহম্মদ মুহসীন এক রাতে তাঁর শয়নকক্ষে জনৈক চোরকে কিছু মালসহ ধরে ফেলেন। তিনি চোরটিকে শাস্তি না দিয়ে তার চুরির কারণ জিজ্ঞেস করেন। চোরটি অকপটে তার অভাব-অভিযোগ তুলে ধরে। ঘটনা শুনে মুহসীনের দয়া হয়। তিনি চোরকে নগদ অর্থ ও কিছু খাবার দিয়ে বিদায় করেন। চোরটি দন্ডের বদলে উপহার পেয়ে খুশি মনে ধন্য ধন্য বলে বিদায় হয়।

ক. প্রসন্ন কর্তৃক দোহনকৃত দুধ কার?

খ. চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনার যে দিকটি প্রাসঙ্গিক- তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “যারা প্রয়োজনাতীত ধন থাকতেও চোরের প্রতি মুখ তুলে চান না, তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষমুহসীন।”- ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান

প্রসন্ন কর্তৃক দোহনকৃত দুধ মঙ্গলার।

খ. অনুধাবন

চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে বিড়াল দুধ চুরি করে খেলে তাকে তাড়িয়ে না দেয়ার বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে।

লোক-সমাজে চিরাচরিত একটি প্রথা প্রচলিত হয়েছে, তা হলো বিড়াল দুধ চুরি করে খেয়ে ফেললে, তার দিকে তেড়ে যেতে হয়। নইলে মনুষ্যকুলে কুলাঙ্গাররূপে চিহ্নিত হতে হয়। কেননা, বিড়াল অন্যায় করলে তাকে লাঠিপেটা করা উচিত। কমলাকান্ত দুধ খাওয়ার অপরাধে বিড়ালটিকে না মারার জন্য যে সিদ্ধান্ত প্রথমে নিয়েছিল, চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে তাকেই বোঝানো হয়েছে।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনায় উঠে  আসা বিড়ালের চুরির অন্তর্নিহিত কারণের দিকটি প্রাসঙ্গিক।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের কাল্পনিক কথোপকথনের মধ্য দিয়ে মানবতার কথা উচ্চারণ করেছেন। যেখানে বিড়ালরূপী লেখকের বিবেক চুরির পেছনে সভ্য সমাজের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন।

উদ্দীপকে হাজি মুহম্মদ মুহসীনের জীবনের একটি কাহিনি উপস্থাপন করা হয়েছে। যেখানে মুহসীন একরাতে জনৈক চোরকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। কিন্তু উদার চিত্ত মুহসীন চৌর্যবৃত্তির জন্য তাকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি। এমনকি তিনি তার অভাব অভিযোগের কথা জানতে পেরে তাকে অর্থ ও খাবার দিয়ে বিদায় করেন। আলোচ্য ‘বিড়াল’ রচনাতেও মার্জারীর জবানিতে চুরির পিছনে অভাবের দিকটিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিই মানুষকে অপরাধ কর্মে প্রবৃত্ত করে।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“যাদের প্রয়োজনাতীত ধন থাকতেও চোরের প্রতি মুখ তুলে চান না, তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ মুহসীন।”- বক্তব্যটি যথার্থ।

বিড়াল রচনায় লেখক কমলাকান্তের কল্পনার আবহে বিড়ালের স্বগতোক্তির মাধ্যমে তার নিজস্ব বোধ ও ধারণাকে তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি চুরির মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ধনীর ধন দান না করাকে।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায় সাধ করে কেউ চোর হয় না বলে মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। যারা অনায়াসে খেতে পায়, তাদের চুরি করার প্রয়োজন হয় না। এ বিশ্বের অনেক বড় বড় সাধু, চোরের নামে যারা শিউরে ওঠেন, তারা অনেকেই চোর অপেক্ষাও অসৎ। কেননা, এদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ধন থাকতেও চোরের প্রতি নির্দয়। তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ হলেন হাজি মুহম্মদ মুহসীন।

উদ্দীপকে হাজি মুহম্মদ মুহসীনের বদান্যতা প্রকাশ পেয়েছে। নিজ ঘরের মধ্যে চোরকে হাতে-নাতে ধরে শাস্তি না দিয়ে তাকে সহায়তা করেন। তিরস্কারের পরিবর্তে পুরস্কার দেন। চোরকে দন্ডের পরিবর্তে উপহার দেয়ার এমন দৃষ্টান্ত শুধু মুহসীনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যার বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয় ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের কল্পিত জবানির মধ্য দিয়ে। যেখানে চুরির জন্য দায়ী করা হয়েছে ধনী কৃপণদের।


আরো ও সাজেশন:-

বিড়াল সৃজনশীল প্রশ্ন-৭

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

 দন্ডিতের সাথে

 দন্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে

 সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।

ক. কে বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না?

খ. “পুরুষের ন্যায় আচরণ করাই বিধেয়।”- কী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের কোন ভাবটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”- উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে মূল্যায়ন কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান

বিড়াল বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত বিড়াল মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না।

খ. অনুধাবন

দুধ চুরির অপরাধে বিড়ালকে লাঠিপেটা করাকে পুরুষের ন্যায় আচরণ করা বলে বোঝানো হয়েছে।

কমলাকান্ত তার শয়নকক্ষে বিবিধ বিষয়ে চিন্তায় অন্যমনস্ক থাকলে বিড়াল এসে তার জন্য রাখা দুধটুকু সাবাড় করে ফেলে। দুধের ওপর বিড়ালের অধিকার বিবেচনায় প্রথমদিকে কমলাকান্ত নীরব থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ মনোভাব ধরে রাখতে পারেন নি। তাই অনেক অনুসন্ধান করে একখানা লাঠি নিয়ে বিড়ালকে তাড়া করে পুরুষোচিত মনোভাবের পরিচয় দেন। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এ কথাটিই বোঝানো হয়েছে।

গ. প্রয়োগ

উদ্দীপকের আসামির প্রতি সহানুভূতির দিকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

পরিস্থিতির শিকার হয়েই অপরাধী অপরাধ কর্মে প্রবৃত্ত হয়। তাই কার্যকারণ এবং অবস্থার কথা বিবেচনায় সহানুভূতি নিয়েই বিচারকের বিচার করা উচিত।

উদ্দীপকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচারের কথা বলা হয়েছে। যেখানে আসামিকে দÐ দিয়ে দন্ডদাতা নিজেই সমব্যথী হবেন। দন্ডিতের প্রতি সমবেদনা প্রকাশের এ দিকটি ‘বিড়াল’ রচনাতেও সমানভাবে উঠে এসেছে। সেখানে বিড়াল চৌর্যবৃত্তির দ্বারা লেখকের জন্য  রাখা দুধ খেয়ে নিলেও লেখক সহানুভূতি প্রকাশ করে তাকে পেটান নি। এমনকি বিড়ালের ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে তাকে পরদিন প্রসন্ন যে ছানা দেবে তা ভাগ করে খাওয়ার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে উদ্দীপকের আসামির প্রতি সহানুভূতির দিকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

“অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”- উক্তিটি ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে সঠিক। ‘বিড়াল’ রচনায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত বিড়ালের বিচার করতে গিয়ে তার প্রতি লেখকের সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে।

উদ্দীপকে দন্ডিতের প্রতি দন্ডদাতার সমব্যথী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেননা, পরিস্থিতিই অপরাধীকে অপরাধ করতে বাধ্য করে। তাই অপরাধীর অপরাধের অন্তর্নিহিত কারণ বিবেচনায় বিচারক ব্যথিত হলেই বিচার যথার্থ হয়। উদ্দীপকের এ ভাবনা ‘বিড়াল’ রচনাতেও প্রতিভাত হয়।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের কল্পিত ভাষ্যে কমলাকান্তকে তিনদিন অভুক্ত থাকতে বলার মধ্য দিয়ে অপরাধের কারণ বিবেচনা করার আহŸান জানিয়েছে। কমলাকান্তও বিষয়টিকে আমলে নিয়ে বিড়ালের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাকে পরবর্তী দিনের জলযোগে আমন্ত্রণ জানায়। আলোচ্য উদ্দীপকেও অপরাধীর প্রতি তেমনি সহানুভূতির কথাই বলা হয়েছে।

বস্তুত উদ্দীপক ও বিড়াল রচনায় সমাজের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি মানবিকতা ও সহানুভূতি মূর্ত হয়ে উঠেছে। এ দিক থেকে বিচার করলে আলোচ্য মন্তব্যটি যথার্থ। 



বিড়াল সৃজনশীল প্রশ্ন-৮

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ১৫২ ট্রিলিয়ন বা ১৫২ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। বিবিসি বলেছে, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার দেশসমূহের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এর ফলে এই অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়েছে।

ক. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে কী বুঝতে পারা যাবে?

খ. ‘সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বিড়াল’ গল্পের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রতিফলিত হয় নি। – মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান

‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে আফিমের অসীম মহিমা বুঝতে পারা যাবে।

খ. অনুধাবন

কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, সমাজের ধনবৃদ্ধি ঘটলেও তা মূলত ধনীর হাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।

অর্থনৈতিকভাবে সমাজের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন নির্ভর করে সমাজের সম্পদের গতিশীলতার ওপর। কারণ সম্পদের যত হাত-বদল হয় সমাজস্থ মানুষের জীবনযাপনের মানও তত বৃদ্ধি পায়। সে সম্পদ যখন গুটিকয়েক ধনীর হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে, তখন আশেপাশের নির্ধন গরিব মানুষের জীবনযাপনের মান অনেক বেশি নিচে নেমে যায়। অথচ সমাজের উন্নতির প্রয়োজনে সমাজের ধনবৃদ্ধির নামে মূলত ধনীরই ধনবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলে।

গ. প্রয়োগ

‘বিড়াল’ গল্পের  পর্যায়ক্রমিকভাবে ধনীর ধনবৃদ্ধির দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।

প্রতিটি অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ অপরিহার্য। সব মানুষকে উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য থাকা প্রয়োজন সম্পদের সুষম বণ্টন। তা না হলে দ্রæত বেড়ে ওঠা একটা বটগাছের নিচে অবস্থিত অন্য গাছগুলো যেমন স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, ঠিক তেমনি সমাজের একটা অংশও থেকে যাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ ধনী ব্যক্তি আরও বেশি ধনী হয়েছে। আর বিবিসির ভাষ্যমতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাজে লাগিয়ে এশিয়ার দেশসমূহে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়ে চলেছে দ্রæত গতিতে। অর্থাৎ সম্পদ নির্দিষ্ট কিছু মানুষের কুক্ষিগত হওয়াতে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যরা। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পেও উঠে এসেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন পাঁচশ লোকের আহার করছে। এই আহার হরণকারী একজন ধনীর মতো অন্য ধনীরাও ধনবৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সামাজিক উন্নয়নের ধারণাকে। এজন্য বলা যায়, উদ্দীপকের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধি আর ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর ধনবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাদৃশ্য বিদ্যমান।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা

উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয় নি- মন্তব্যটি যথার্থ।

মানুষের চাওয়ার কোনো শেষ নেই। যত পায় তত চায়। সে ভাবতে চায় না হয়তো তার দ্বিতীয় চাওয়ার কারণে অন্যজন বঞ্চিত হচ্ছে নির্দিষ্ট প্রাপ্তিটুকু থেকে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, একদিকে একজনের অধীনে সম্পদের বিশাল পাহাড়, অন্যদিকে নিরন্ন মানুষের হাহাকার, বুকফাটা আর্তনাদ।

উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে এশিয়ার দেশগুলো এগিয়ে গেছে বহুমাত্রায়। বিবিসির তথ্যানুসারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হাত ধরে এশিয়া অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ঘটেছে অর্থাৎ সম্পদ কিছু মানুষের হাতে আটকে থাকছে। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পে কমলাকান্তের সাথে কথা প্রসঙ্গে মার্জারী বলেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন সে পাঁচশ লোকের আহারের পুরোটাই সংগ্রহ করছে সামাজিক উন্নয়নের নামে। কিন্তু নিজে খাওয়ার পর যতটুকু থাকে তা অন্যকে খাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। মার্জারী তাই সে খাবার নিরন্নকে কেড়ে বা চুরি করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে চায়। মার্জারী গরিবকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ারও কথা ব্যক্ত করেছে।

উদ্দীপকে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ও তার কৌশলকে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর সম্পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মার্জারী তার বক্তব্যে গরিবের প্রাপ্য অধিকার বোধকে তুলে এনেছে। এ বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও

Leave a Comment