ইমান, ইসলাম ও ইহসান: প্রেক্ষিত কুরআন ও সুন্নাহ,প্রথম ভাগ: প্রথম অধ্যায়: আদদীন ওয়ান নাওয়াকেযুহ,ইমান, ইসলাম ও ইহসানের পরিচয়, কুরআন ও সুন্নাহের আলােকে ইমান ও ইমানদার, ইসলাম ও মানবাধিকার কামেল মুর্শিদের বৈশিষ্ট্য

শ্রেণি: দাখিল 2022 বিষয়: আকাইদ ও ফিকহ এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2022
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 01 বিষয় কোডঃ 133
বিভাগ: মাধ্যমিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

অ্যাসাইনমেন্ট/ শিরো নাম :  

ইমান, ইসলাম ও ইহসান: প্রেক্ষিত কুরআন ও সুন্নাহ

শিখনফল/বিষয়বস্তু :

  • প্রথম ভাগ: প্রথম অধ্যায়: আদদীন ওয়ান নাওয়াকেযুহ।

নির্দেশনা :  

  • ইমান, ইসলাম ও ইহসানের পরিচয়
  • কুরআন ও সুন্নাহের আলােকে ইমান ও ইমানদার
  • ইসলাম ও মানবাধিকার কামেল মুর্শিদের বৈশিষ্ট্য
  • ইমান, ইসলাম ও ইহসানের পরিচয়

উত্তর:

ঈমান পরিচয় :

ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আন্তরিক বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকৃতি হলো ঈমান।

ইমাম গাজ্জালি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনীত সকল বিধি-বিধানসহ তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাই হচ্ছে ঈমান।

ঈমান আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হলো বিশ্বাস। ঈমান অর্থ হলো, শরীয়তের যাবতীয় হুকুম-আহ্কাম অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করা এবং এগুলোকে নিজের দীন বা ধর্ম হিসেবে বরণ করে নেওয়া। পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি যিনি শরীয়তের বিষয়গুলোকে গভীরভাবে বিশ্বাস করেন এবং এগুলোর মৌখিক স্বীকৃতিসহ বাস্তব জীবনে পূর্ণাঙ্গভাবে আমল করে চলেন।

ঈমানের মৌলিক বিষয়গুলো পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। ঈমানে মফাসসালের মাঝে সেই বিষয়গুলোর সহজ বর্ণনা পাওয়া যায়। ঈমানে মুফাসসালে যেসব বিষয় উল্লেখিত রয়েছে, তা হলো- আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর উপর, তার ফেরেশতাগণের উপর, তার কিতাবসমূহের উপর, তার রাসূলগণের উপর, আখিরাতের উপর, তাকদীরের ভাল-মন্দ সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছায় হয়-এর উপর এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত হওয়ার উপর।

উল্লেখিত মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা ছাড়া কখনো কোনো মুসলিম পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না। যিনি বা যে মুসলিম এই বিষয়গুলোর ওপর আন্তরিকভাবে ঈমান আনবেন তিনিই প্রকৃত মুমিন।

ইসলাম পরিচয়:

শাব্দিক অর্থে إسْلامٌ (ইসলাম) শব্দের অর্থ্ হলো বশ্যতা, সমর্পণ, আত্মসমর্পণ, অনুগত, ইসলাম গ্রহণ।

ইসলামী পারিভাষায় إسْلامٌ (ইসলাম) হলো তাওহীদ (একত্ব) ও আনুগত্যের সাথে এক আল্লাহর নিকট পূর্ণ্ আত্মসমর্পণ করা এবং শিরক ও তার অনুসারীদের থেকে সর্ম্পকচ্ছেদ ঘোষণা করা। এবাদতের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্য করতে হবে এবং শিরক ও মুশরেকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছ্ন্নি করতে হবে। আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ

হে মুমিনগন, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আল-বাকারা, ২/২০৮

সুতরাং যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করবে সে মুসলিম, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও অন্যের জন্য আত্মসমর্পণ করবে সে মুশরিক, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য আত্মসমর্পণ করবে না সে অহংকারী কাফের।

ইহসানের পরিচয়:

 ইহসান বিদ্যুতের পাওয়ার হাউজের মতো। পাওয়ার হাউজের সাথে সংযোগ না থাকলে যেমন বাতি জ্বলে না, অনুরূপভাবে আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধন ছাড়া বান্দার কোনো আমল ও ইবাদতই আল্লাহর কাছে প্রকৃত অর্থে গ্রহণযোগ্য হয় না। এ কারণেই ইসলাম এ বিষয়টির প্রতি খুব বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছে। ইহসানের মূল কথা হলো- ক্রোধ, লোভ, মোহ, হিংসা-বিদ্বেষ, গীবত, অপবাদ, মিথ্যা অহংকার ইত্যাদি মন্দ স্বভাব থেকে ‘পাক-পবিত্র’ হয়ে ইখলাস, আমানতদারী, বিনয় ও নম্রতা, সততা ও ন্যায়পরায়নতা ইত্যাদি উত্তম চরিত্রের দ্বারা নিজেকে সুশোভিত করা।

রাসূলুল্লাহ্ (সা.)  ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মানুষের শরীরে একটি গোশতের টুকরা আছে। তা বিশুদ্ধ থাকলে গোটা শরীর সুস্থ থাকে। আর তা বিনষ্ট হলে গোটা শরীরই ব্যধিগ্রস্ত হয়ে যায়। জেনে রাখো, ঐ গোশতের টুকরাটি হলো মানুষের কালব বা আত্মা। (সহীহ্ বুখারী, ঈমান অধ্যায়)

  • কুরআন ও সুন্নাহের আলােকে ইমান ও ইমানদার

উত্তর:

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ঈমানের পরিচয় প্রদান করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যখন কেউ ঈমান সম্পর্কে কোনো  প্রশ্ন করতেন, তখন তিনি কুরআনুল কারিমের সুরা বাকারার ১৭৭নং আয়াত তুলে ধরতেন। তাফসিরে ইবনে মিরদুওয়াই’তে এ প্রসঙ্গে একটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-

হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন যে, ঈমান কি? তখন তিনি সুরা বাকারার ১৭৭নং আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। আর তা হলো-

লোকটি (হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে) বললো, জনাব! আমি আপনাকে মঙ্গল তথা পূণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিনি বরং আমার প্রশ্ন ঈমান সম্পর্কে।

হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ প্রশ্নই করেছিল। (ঐ ব্যক্তির উত্তরে) তিনি এ আয়াতটিই পাঠ করেছিলেন (এবং) ঐ লোকটিও তখন তোমার মতো অসন্তুষ্ট হয়েছিল।

অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, ‘মু’মিন যখন সৎ কাজ করে তখন তার প্রাণ খুশি হয় এবং সে পূণ্যের আশা করে আর যখন পাপ করে তখন তার অন্তর চিন্তিত হয় এবং সে শাস্তিকে ভয় করতে থাকে।

এ আয়াতে ঈমানদার ব্যক্তি যে জিনিসগুলোর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস করতে হবে তা ওঠে এসেছে। আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-

আল্লাহর প্রতি ঈমান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র সত্তা এবং তাঁর যাবতীয় গুণাবলীর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস রাখা। আল্লাহ তাআলাকে সৃজনশীল বা পরিবর্তনশীলতার উর্ধ্বে তুলনাহীন মনে করা এবং তাঁর বিকল্প বা বিপরীত কোনো সত্তা নেই বলে মুখের স্বীকৃতি, অন্তরের বিশ্বাস এবং তাঁর নির্দেশিত কর্মের বাস্তবায়ন করা।

শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস
কিয়ামতের দিনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এ দিনটি হলো সর্বশেষ দিন। ব্যাপকভাবে কিয়ামতের দিন বলতে বুঝায়- কবরে জীবিত করার সময় থেকে নিয়ে অনন্ত কাল পর্যন্ত। এ দিনেই হিসাব-নিকাশসহ, শাফাআত-মাগফিরাত, সাওয়াব-গোনাহের বিচারে জান্নাত-জাহান্নাম লাভ ইত্যাদি এ দিনের অন্তর্ভূক্ত।

ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস
এ কথা বিশ্বাস করা যে, তারা নূর দ্বারা সৃষ্টি আল্লাহর একান্ত অনুগত। তারা বিয়ে-শাদী, পানাহার থেকে মুক্ত। তাঁদের কাজ হলো সর্বদা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা হুকুম পালন করা। আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করে রেখেছেন। তাদেরও মৃত্যু হবে এবং আবার জীবিত করা হবে।

কিতাবের প্রতি বিশ্বাস
কিতাব হলো আল্লাহ তাআলা প্রেরিত সকল আসমানি কিতাব। কুরআনসহ পূর্ববর্তী সকল কিতাবকে আল্লাহর কিতাব বলে স্বীকার করা।

নবিগণের প্রতি বিশ্বাস
ঈমানের স্বাদ লাভ করবে সেই ব্যক্তি যে হজরত আদম আলাইহিস সালাম হতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল নবি-রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে।

পরিশেষে…
ঈমান কি? এ প্রসঙ্গে স্বয়ং হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করলে তিনি উল্লেখিত আয়াতটি পাঠ করেন। তিনি বিশ্বনবিকে তিনবার এ প্রশ্নটি করেন বিশ্বনবি তিনবারই এ আয়াতটি পড়ে শুনান।

আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদাতের জন্য। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না।’

যিনি পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করেন তিনিই মুমিন। মুমিনদের কিছু বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তায়ালা কোরআনে জানিয়ে দিয়েছেন। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো:

মুমিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা সূরা মুমিনুনে ইরশাদ করেন।

# মুমিনরা সফলকাম হয়ে গেছে
# যারা নিজেদের নামাজে বিনয়াবনত
# যারা অনর্থক কথাবার্তায় নির্লিপ্ত 
# যারা জাকাত দান করে থাকে
# যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে 
# তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না
# অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হবে
# এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকে
# যারা তাদের নামাজসমূহের খবর রাখে
# তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে
# তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানে চিরকাল থাকবে।

উপরের আয়াতগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে যাবতীয় প্রকার আল্লাহর হক ও বান্দার হক এবং এতদসংশ্লিষ্ট সব বিধিবিধান প্রবিষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি এসব গুণে গুণান্বিত হয়ে যায় এবং এতে অটল থাকে, সে কামেল মুমিন এবং ইহকাল ও পরকালের সাফল্যের হকদার!

এছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় মুমিনের বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেছেন। সেগুলো তুলে ধরা হলো।

১) প্রকৃত ঈমানদার তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান এনেছে এবং এ ব্যাপারে পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করেনি। তারপর প্রাণ ও অর্থ-সম্পদ দিয়ে জিহাদ করেছে। তারাই সত্যবাদী। -(সূরা আল হুজুরাতঃ ১৫)

২) প্রকৃত ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের বিশ্বাস বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে। তারা নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে। এ ধরনের লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের (আল্লাহর)  কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ভুল-ত্রুটির ক্ষমা ও উত্তম রিযিক। – (সূরা আল আনফালঃ ২-৪)

৩) মু’মিনদের কাজই হচ্ছে, যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ডাকা হয়, যাতে রসূল তাদের মোকদ্দমার ফায়সালা করেন, তখন তারা বলেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। এ ধরনের লোকেরাই সফলকাম হবে। -(সূরা আন্ নূরঃ ৫১)

৪) তারাই এ ধরনের লোক যারা (এ নবীর দাওয়াত) গ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের চিত্ত প্রশান্ত হয়। -(সূরা আর্ রাদঃ ২৮ )

৫) মু’মিনরা যেন ঈমানদারদের বাদ দিয়ে কখনো কাফেরদেরকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক, বন্ধু ও সহযোগী হিসেবে গ্রহণ না করে। যে এমনটি করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ, তাদের জুলুম থেকে আত্মরক্ষার জন্য তোমরা যদি বাহ্যত এ নীতি অবলম্বন করো তাহলে তা মাফ করে দেয়া হবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের সত্ত্বার ভয় দেখাচ্ছেন আর তোমাদের তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। – (সূরা আলে-ইমরানঃ ২৮ )

৬) মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই। অতএব তোমাদের ভাইদের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক করে দাও। আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি মেহেরবানী করা হবে। -( সূরা আল-হুজুরাতঃ ১০ )

৭) মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, এরা সবাই পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী। এরা ভাল কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে। এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবেই। অবশ্যই আল্লাহ সবার ওপর পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানী ও বিজ্ঞ। -(সূরা আতত তাওবাঃ ৭১)

৮) এ মুমিন পুরুষ ও নারীকে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদেরকে তিনি এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে। এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।- (আত তাওবাঃ ৭২)

 ৯) সুসংবাদ দাও তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে (তোমার প্রতি) যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিরাট অনুগ্রহ। -(আল-আহযাবঃ ৪৭)

  ১০) আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে। তারপর যারা অপরাধ করে তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। -(সূরা-আররূমঃ ৪৭)

১১) মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো। -(সূরা-আলে ইমরানঃ ১৩৯)

১২)  হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দেবেন। (সূরা -মুহাম্মদঃ ৭)

  • ইসলাম ও মানবাধিকার

উত্তর:

মানবাধিকার একটি বহুল পরিচিত শব্দ। তবে মানবাধিকার বলতে আসলে কি বোঝায়, এর বাস্তব ধারণা অনেকটাই দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মাঝে সীমাবদ্ধ।এর বিপরীতে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ মানবাধিকার নিয়ে খুব একটা ধার ধারেন না। তার পরও মাঝে-মধ্যে আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর গণমাধ্যমে উঠে আসে তোলপাড় সৃষ্টি করে।

এমনই বাস্তবতায় বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে- ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’।

সব মানুষের জন্মগত অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার। জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই দুনিয়ার সব মানুষের সব ধরনের মানবাধিকার ভোগ করার অধিকার রয়েছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দেশ, কাল, পাত্র নির্বিশেষে এটি একটি বৈষম্যহীন অধিকার।

মানব সভ্যতার শুরু থেকে মানবাধিকারের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হলেও মৌলিক মানবাধিকার কিন্তু সব সময় একই ছিল। যেমন মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার সকল যুগে স্বীকৃত। আল্লাহতায়ালা এ অধিকার শুধু মানুষ নয় সব প্রাণীর জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

ইসলামে মানবাধিকার একটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিষয়। মানবাধিকারের বিষয়টি ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বত্র সমান। মানবজাতিকে ইসলাম গৌরব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলাম মানুষকে সমান অধিকার, একতা, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। ইসলামে বংশ মর্যাদা, শ্রেণীবিভেদ, জাতিগত বিভেদ ও বর্ণবিভেদ হতে সতর্ক করেছে। দাস-দাসী ও অধীনস্তদের প্রতি সুন্দর ও ন্যায়ানুগ ব্যবহার করতে শিক্ষা দিয়েছে।


মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। মানুষ হিসেবে সবাই সমান মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। মৌলিক অধিকার সবার সমান। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার অধিকারও সবার ক্ষেত্রে সমান। ব্যক্তি স্বাধীনতাও সবার ক্ষেত্রে সমান। মর্যাদার দিক দিয়ে ইসলামে ধনী গরিব সবাই সমান। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারও সবার ক্ষেত্রে এক। জানমালের নিরাপত্তার অধিকার একই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অর্থাৎ বাকস্বাধীনতা সবার ক্ষেত্রে এক। সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ইসলামে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সৎ পথে উপার্জন করার অধিকারও ইসলামে সবার জন্য সমান। অসহায়, প্রতিবন্ধী, এতিম, মিসকিন, নারী ও শিশু অধিকার ইসলাম সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইসলামে প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকে আর নিজে পেট পুরে খায় সে ব্যক্তি মুমিন নয়। কৃষক, মজুর, শ্রমিকের অধিকারও মূল্যায়িত হয়েছে গুরুত্ব সহকারে। শ্রমিকের ঘাম শুকাবার আগেই মজুরি পরিশোধের তাকিদ দিয়েছে ইসলাম।

সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহতায়ালার নির্দেশে মানবাধিকারের এ সব স্পষ্ট নীতিমালা ঘোষণা করেছেন। বিদায় হজে নবী মুহাম্মদ (সা.) যে অবিস্মরণীয় ভাষণ দিয়েছিলেন, তা ছিল মানবাধিকারের সর্বশ্রেষ্ঠ একটি দলিল। তিনি ওই দিন ভাষণে বলেছিলেন, ‘হে মানব সকল! অবশ্যই তোমাদের রব এক এবং তোমাদের পিতাও একজন। সুতরাং আজ থেকে কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের প্রাধান্য নেই। সাদা মানুষের ওপর কালো মানুষের এবং কালো মানুষের ওপর সাদা মানুষের কোনোই শ্রেষ্ঠত্ব নেই। একমাত্র আল্লাহভীতি ও মানব কল্যাণ হলো মর্যাদার একমাত্র মানদণ্ড। ’

তারপর তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মনে রেখো! প্রত্যেক মুসলমান একে অন্যের ভাই, সবাই একই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। কেউ কারো থেকে ছোট নয়, কারো থেকে কেউ বড়ও নয়। মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে সবাই সমান। নারী জাতির প্রতি অবহেলা করো না। নারীর ওপর পুরুষের যে ধরনের অধিকার আছে, নারীরও পুরুষের ওপর সে ধরনের অধিকার আছে। তাদের প্রতি অন্যায় অত্যাচার করো না। মনে রেখো! মহান আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তোমরা তাদেরকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছ। সাবধান! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণে ইতঃপূর্বে বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। ’

লেখার শুরুতেই বলা হয়েছে, ইসলাম সর্বপ্রথম মানুষের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা বিধান করেছে। সেই সঙ্গে সব মানুষের সৎ পথে সম্পদ অর্জন এবং বৈধ পথে তা ভোগ করার অধিকার দিয়েছে। মানুষের মান-সম্মান রক্ষার জন্য ইসলাম নানা নিয়ম-নীতি প্রদান করেছে। এ কারণে ইসলাম পরনিন্দা, জুলুম-নির্যাতন, মিথ্যা অপবাদ, কুৎসা রটনা ইত্যাদিকে হারাম ঘোষণা করেছে। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করার প্রতি ইসলাম কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ইসলাম সব মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দান করেছে। নারী-পুরুষ উভয়ের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অধিকার দিয়েছে। স্বামী যা উপার্জন করবে, তা স্বামীর অধিকারে থাকবে আবার স্ত্রী যা কিছু উপার্জন করবে, তা স্ত্রীর অধিকারে থাকবে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী নারীরাও পুরুষদের মতো সম্পদের মালিক হবে। সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রেও নারীরা তাদের মৃত পিতা-মাতা, স্বামী ও সন্তানদের একটি নির্দিষ্ট অংশ আলাদাভাবে ভোগ-দখল করতে পারবে। এমনকি ইসলাম ধনীদের সম্পদে অসহায় ও মিসকিনদের অধিকারের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে।

  • কামেল মুর্শিদের বৈশিষ্ট্য

উত্তর:

পীর ফার্সি শব্দ, আরবিতে: মুর্শিদ/আউলিয়া। যার অর্থ পথ প্রদর্শক। বাংলা অর্থে পীর শব্দের অর্থ: পথ প্রদর্শনকারী, জ্ঞানের মুরুব্বি, মুসলিম দীক্ষাগুরু, পূণ্যাত্মা, মুসলমান সাধু, মহাপুরুষ।

হাদিস শরীফে আছে:- হুমুল্লাজিনা ইযা-রুয়ু ওয়া উয-কুরুল্লাহা “যাহাকে দেখিলে আল্লাহতায়ালার কথা স্মরণ হয়, মনে ভয় আসে এবং ইবাদত বন্দেগীতে মন বসে, সে-ই প্রকৃত কামেল মুর্শিদ, আউলিয়া বা আল্লাহতায়ালার খাসবান্দা।”

এ অবস্থার মধ্যে বিশুদ্ধ দ্বিনের ওপর থাকা ও সঠিক পথনির্দেশক পাওয়া আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত।

খাজাবাবা ইউনুস আলী এনায়েতপূরী (রহঃ) বলেন- “কামেল পীর পাইতে গেলে আল্লাহর দরবারে অনেক কান্নাকাটি করতে হয় আর অতি ভাগ্যগুনেই কামেল পীরের সন্ধান মেলে।”

যিনি কামেল মোকাম্মেল পীর হইবেন, শরিয়ত ও মারেফতের পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকিতে হইবে। কমপক্ষে শরিয়তের বিধানসমূহ ভালরূপে জানা থাকিবে এবং এলমে লাদুন্নাতে তাঁর পূর্ণ অধিকার থাকিবে। শরিয়তের আদেশ নিষেধ পালন ও তদনুযায়ী কাজ করিবেন। শরিয়ত বিরোধী কাজ হইতে দূরে থাকিবেন। খোদাতায়ালাকে ভয় করিবেন ও মুত্তাকী হইবেন এবং পরহেজগার হইবেন।

কামেল বা মোকাম্মেল পীরের ভিতর তিনটি গুণ থাকা আবশ্যক।

(১) পীরের নিকট হইতে ছবকসমূহ আয়ত্ত করা।
(২) ফয়েজ হাসিল করা।
(৩) মুরিদদের ভিতর ফয়েজ পৌঁছানোর ক্ষমতা থাকা।

যিনি কামেল হইবেন তিনি লোভ শূন্য হইবেন। কেন না লোভী ব্যক্তি কখনও ফকির হইতে পারে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন:-

“অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত।” (সূরা : ইয়াসীন, আয়াত: ২১)

“হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।” (সূরা : আত-তাওবাহ্, আয়াত: ১১৯)
কামেল পীর অনুসরণের নির্দেশ

পাপ ও শেরেকি গুনাহ হইতে বাঁচিবার জন্য এবং আল্লাহু তায়ালার রেজামন্দি হাছিলের উদ্দেশ্যে মুর্শিদ কামেলের সাহচর্য অনুসন্ধান করা আবশ্যক অথ্যাৎ নাফ্সের কুমন্ত্রণা ও শয়তানের ধোঁকা হইতে বাঁচিবার পথই মুর্শিদে কামেল।

হাদিস শরীফে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এমন এক যুগ তোমাদের মধ্যে আসবে, সে যুগে হাতের ওপর জ্বলন্ত কয়লা রাখার যে কষ্ট তার চেয়ে বেশি কষ্ট হবে ঈমানের ওপর টিকে থাকা।’

কামেল পথপ্রদর্শক সম্পর্কে কোরআনুল কারীমে বলা হয়েছে:-

“আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন। তার কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে মত্ত অবস্তায় ছেড়ে দিয়ে রাখেন।” (সূরা : আল আরাফ, আয়াত: ১৮৬)

“স্মরণ কর, যেদিন আমি প্রত্যেক দলকে তাদের নেতাসহ আহবান করব, অতঃপর যাদেরকে তাদের ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে, তারা নিজেদের আমলনামা পাঠ করবে এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম হবে না।” (সূরা : বনী-ইসরাঈল, আয়াত: ৭১)

“জেনে রেখো, আল্লাহর ওলিদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (তারাই আল্লাহর ওলি) যারা ঈমান আনে ও তাকওয়া (পরহেজগারি) অবলম্বন করে।” (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬২-৬৩)

“অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত।” (সূরা : ইয়াসীন, আয়াত: ২১)

“হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।” (সূরা : আত-তাওবাহ্, আয়াত: ১১৯)

কামেল পীরের বৈশিষ্ট্য:

(ক) যিনি কামেল মোকাম্মেল পীর হবেন, হাদিস, তফছির, ফিকাহ ইত্যাদিতে তাহার জ্ঞান থাকিবে। কমপক্ষে শরীয়তের বিধান সমূহ ভাল রুপে জানা থাকিবে।

(খ) শরীয়তের আদেশ নিষেধ পালন ও তদনুযায়ী কাজ করিবেন। শরীয়ত বিরুদ্দ কাজ হইতে দূরে থাকিবেন। খোদাকে ভয়কারি লোক ও পরহেজগার হইবেন।

(গ) কামেল বা মোকাম্মেল পীরের ভিতর এই তিনটি গুন থাকা একান্ত অবশ্যক –

১. পীরের নিকট হতে ছবক সমূহ আয়ত্ত করা।
২. ফায়েজ হাছিল করা।
৩. মুরিদ দিগকে ফায়েজ পোঁছানোর ক্ষমতা থাকা।

(ঘ) যিনি কামেল হইবেন তিনি লোভ শুন্য হইবেন। কেননা লোভী ব্যক্তি কখনো ফকির হইতে পারেন না।
কত্তলুল জামিল কিতাবে আছে, কামেল পীর হলে বার মাস রোজা রাখিতে হইবে, স্ত্রি হইতে দূরে থাকিতে হইবে, খানা খাইবেনা ও জঙ্গলবাসী হইতে হইবে এই সব শর্ত নহে।

(ঙ) রসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানায় যেমন অজদ, গোলবা, ছকুর ও বেখুদী ইত্যাদি নানা প্রকার জজবা ছিল, কামেল পীরের মুরিদানের মধ্যেও রসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানার ন্যায় মাঝে মাঝে দুই এক জনের ঐ হালাত হইবে।

‘কছদুস সাবীল’ কিতাবে হযরত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) খাঁটি পীর চেনার কয়েকটি আলামত লিখেছেন।

(ক) পীরের মধ্যে সাহেবে এলেম বা কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত এলেম থাকতে হবে। এমন ব্যক্তির যদি পোশাক-আশাক ভালোও হয় আর পর্যাপ্ত এলেম না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি কামেল পীর হওয়ার উপযুক্ত নন। ইঞ্জিন নিজেই যদি দুর্বল হয়, তাহলে এতগুলো বগি নিয়ে রেলগাড়ি কিভাবে এগোবে?

(খ) শুধু পর্যাপ্ত এলেম থাকলে হবে না, শুধু সুন্নত থাকলে হবে না; বরং ওই পীরের মধ্যে পর্যাপ্ত আমলও থাকতে হবে। লোকদের অনেক ওয়াজ-নসিহত করেন, কিন্তু তাঁর নিজের মধ্যে আমল নেই। নিজে তাহাজ্জুদ পড়েন না, কিন্তু মুরিদদের তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য খুব বলেন, তাহলে ওই ওয়াজের কোনো তাছির হবে না।

(গ) তাঁর মধ্যে এখলাস থাকতে হবে। লোক দেখানোর জন্য তিনি ইবাদত করেন না, বরং তিনি আল্লাহর মুহব্বতে এখলাসের সঙ্গে আমল করেন। আমল করেন কিন্তু এখলাস নেই, মুরিদদের দেখানোর জন্য যে শায়খ খুব নামাজ পড়েন, সে ব্যক্তি কামেল পীর হতে পারেন না। তাঁর ভেতরে এখলাস থাকতে হবে।

(ঘ) তাঁর মধ্যে দুনিয়াবি লোভ থাকবে না। তিনি লোভী হবেন না, পরেরটা পেতে চেষ্টা করবেন না।
তাঁর মধ্যে এমন আখলাক থাকবে, যে আখলাক দ্বারা দ্বিনের ব্যাপারে তাঁর মধ্যে শিথিলতা থাকবে না। হক কথা বলতে কাউকে ভয় করবেন না।

(ঙ) তিনি ভাববেন না যে এই লোক আমার মুরিদ, বড় লোক মানুষ। সুদ-ঘুষ খায়; কিন্তু আমাকে এত হাদিয়া দেয়, তাকে কিভাবে বলব দ্বিনের ব্যাপারে। একজন হক্কানি পীর প্রত্যেককে এসলাহ করবেন, দ্বিনের ব্যাপারে প্রত্যেককে শক্ত কথা বলবেন, কারো মুখের দিকে চেয়ে কথা বলবেন না।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ও

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ভোকেশনাল ও দাখিল (১০ম শ্রেণির) অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

Leave a Comment