আসরের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

আসরের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিম বান্দার জন্য ফরজ কাজ।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে আসরের নামাজ পালনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কারণ সন্ধ্যার পূর্বে সাধারণত এই সময় মানুষ কাজকর্মে বেশি ব্যস্ত থাকে।

এবং তারা দিন দুনিয়ায় এতটাই ব্যস্ত থাকে যে আসরের নামাজ আদায় করার জন্য কোনো গুরুত্ব দেয় না।

তাই আসরের নামাজ কে গুরুত্ব সহকারে পালনের জন্য বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

আপনার জন্য: আল কোরআনের অনুবাদ ও প্রতিটি সূরার ফজিলত ও তরজমা

মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো আসরের নামাজ।

এই নামাজটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে পবিত্র কোরআনে এই নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করার ব্যাপারে বিশেষ ইঙ্গিত রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা নামাজসমূহ ও মধ্যবর্তী নামাজের হিফাজত করো এবং আল্লাহর জন্য দাঁড়াও বিনীত হয়ে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৩৮)

বিভিন্ন হাদিস ও অধিকাংশ আলেমের মতে মধ্যবর্তী নামাজের অর্থ হলো, আসরের নামাজ।কেননা, এর একদিকে দিনের দুটি নামাজ—ফজর ও জোহর এবং অপরদিকে রাতের দুটি নামাজ—মাগরিব ও এশা রয়েছে।

এ নামাজের জন্য তাকিদ এ জন্য দেওয়া হয়েছে যে অনেক লোকেরই এ সময় কাজকর্মের ব্যস্ততা থাকে।

চাকরিজীবীরা এ সময় বাসায় যাওয়ার তাড়ায় থাকে কিংবা দিনের কাজগুলো দ্রুত গোছানোর চেষ্টা করে, ব্যবসায়ীরা এ সময় কাস্টমার নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, কেউ আবার ঘুমিয়ে থাকে, ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকে।

মোটকথা সব শ্রেণির মানুষই এই সময় ব্যস্ততার মধ্যে থাকে, ফলে অলসতা বা ব্যস্ততার অজুহাতে এই নামাজটি ঠিকমতো আদায় করে না।

আসরের নামাজের ফজিলত

শুধু আসরের নামাজই নয় প্রত্যেক মুসলমানের জন্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আবশ্যক। তবে আসরের নামাজের ক্ষেত্রে এবং এর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

আজকে আমরা জানবো  আসরের নামাজের ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে যেই হাদিস সমূহগুলো বর্ণিত হয়েছে  সে সম্পর্কে:

১. এক হাদিস হতে বর্ণিত আবু মালিহো (রাঃ) বলেন, এক যুদ্ধে আমরা বুরাইদাহ (রাঃ) বললেন, শীঘ্রই আসরের নামাজ আদায় করে নাও কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,’ যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার সকল আমল নষ্ট হয়ে যায়।'( বুখারী ৫৫৩)

আসরের সুন্নাত নামাজের ফজিলত

২. অন্য একটি হাদিসে আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ )হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন রাসূল( সাঃ )আসরের ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়তেন। (তিরমিজি ৪২৯, সুনানে ইবনে মাজাহ ১১৬১)

৩. আবু হুরাইরা( রাঃ ) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সাঃ ) আরো বলেন যে, ‘তোমাদের কেউ যদি সূর্যাস্তের আগে আসরের নামাজে এক সিজদা পায়,

তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্যদয়ের আগে ফজরের সালাতের এক সেজদা পায় তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেই।’ (বুখারি হাদিস :৫৫৬)

মহান রাব্বুল আলামিন মুসলিম বিশ্বের সকল উম্মাহকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বুঝে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন।
(আমিন )

আসরের নামাজের ফজিলত ও সুরা আসরের ফজিলত

আসরের সালাতের নিয়ম

আসরের চার রাকাত ফরজ সালাত প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর আদায় করা উচিত। আবু মালিহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

এক যুদ্ধে আমরা বুরাইদাহ (রা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। দিনটি ছিল মেঘলা। তাই বুরাইদাহ (রা.) বলেন, শিগগির আসরের নামাজ আদায় করে নাও। কারণ নবী (সা.) বলেছেন—

‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ছেড়ে দেয়, তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৩)

আসরের নামাজের ফজিলত


আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ফেরেশতারা পালাবদল করে তোমাদের মাঝে এসে থাকেন।

এক দল দিনে, এক দল রাতে। আসর ও ফজরের সালাতে উভয় দল একত্র হয়। অতঃপর তোমাদের রাত যাপনকারী দলটি উঠে যায়।

তখন আল্লাহ তাআলা তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে?

অবশ্য তিনি নিজেই এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জানেন। উত্তরে তারা বলে- আমরা আপনার বান্দাদের সালাতে রেখে এসেছি।

আর আমরা যখন গিয়েছিলাম, তখনও তারা সালাত আদায়রত অবস্থায় ছিল। —-(বুখারি, হাদিস : ৫৫৫)

আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) আরো বলেন—

তোমাদের কেউ যদি সূর্যাস্তের আগে আসরের নামাজে এক সিজদা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়। —–

আর যদি সূর্যোদয়ের আগে ফজরের সালাতের এক সিজদা পায়, তাহলে সে যেন সালাত পূর্ণ করে নেয়।
(বুখারি, হাদিস : ৫৫৬)

আসরের নামাজের পরের আমল

আসরের চারবা ৪ রাকাত ‍সুন্নতআসরের সালাতের আগে ৪ রাকায়াত সুন্নাত রয়েছে।

এটি গায়রে মুওয়াক্কাদা, তাই আদায় করা উত্তম। রাসুল (সা.) নিজেও এই নামাজ আদায় করেছেন।

আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আসরের ফরজ নামাজে আগে চার রাকাত সুন্নত পড়তেন।

(তিরমিজি, হাদিস : ৪২৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১১৬১)

অন্য একটি হাদিসে রয়েছে, উমর ফারুক (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন—

‘আল্লাহ সেই ব্যক্তিদের ওপর রহম করুন, যারা আসরের সালাতের আগে চার রাকাত সুন্নত আদায় করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২৭১; তিরমিজি, হাদিস : ৪৩০)

আপনার জন্য: আল কোরআনের অনুবাদ ও প্রতিটি সূরার ফজিলত ও তরজমা

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ আসর নামাজের বিশেষ ফজিলত,আসরের নামাজের গুরুত্ব বোঝানোর হাদিস সমূহ

Leave a Comment