আর্থিক নীতির হাতিয়ার গুলো কি কি?, আর্থিক নীতির উপকরণসমূহ বর্ণনা কর, আর্থিক নীতি প্রধান হাতিয়ার কি কি?, আলোচনা করো বাংলাদেশের আর্থিক নীতির হাতিয়ার গুলোর, আর্থিক নীতির হাতিয়ার সমূহ কি কি?

প্রশ্ন সমাধান: আর্থিক নীতির হাতিয়ার গুলো কি কি?, আর্থিক নীতির উপকরণসমূহ বর্ণনা কর, আর্থিক নীতি প্রধান হাতিয়ার কি কি?, আলোচনা করো বাংলাদেশের আর্থিক নীতির হাতিয়ার গুলোর, আর্থিক নীতির হাতিয়ার সমূহ কি কি?

অর্থনীতিতে পূর্ণ নিয়োগ অর্জন, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং সামগ্রিকভাবে জনগণের কল্যাণসাধন করতে জন্য আর্থিক কর্তৃপক্ষ যে সকল উপায় অবলম্বন করে বা করতে পারে তাদেরকে আর্থিক নীতির হাতিয়ার বলা হয়।

নিম্নে আর্থিক নীতির হাতিয়ারসমূহ আলোচনা করা হলাে :

১. মুদ্রার ইস্যু নিয়ন্ত্রণ করা : অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ করা আর্থিক নীতির প্রধান হাতিয়ার। অর্থের যােগান ও চাহিদার মধ্যে অসামঞ্জস্যতা দেখা দিলে নানারূপ সমস্যা অর্থনীতিতে দেখা দিতে পারে। তাই আর্থিক কর্তৃপক্ষ দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য, লেনদেনের গতি, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রেক্ষিতে অর্থের চাহিদার সাথে এর যােগানের সামঞ্জস্য বিধানের জন্য অর্থের ইস্যু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

২. ব্যাংক হার পরিবর্তন : বাট্টার হার হ্রাস বৃদ্ধির উপরই নির্ভর করে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলাের সুদের হারের হ্রাস বৃদ্ধি । ফলে ব্যাংকের ঋণের পরিমাণও যথাক্রমে বৃদ্ধি হ্রাস পাবে । এভাবে সে দেশের মুদ্রা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

৩. ন্যূনতম রিজার্ভ অনুপাত : বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে তার নিকট দৈনিক জমা পড়া নগদ অর্থের একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। তাকে রিজার্ভ বলা হয়। এই রিজার্ভ হার বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে ঋণ নিয়ন্ত্রণ তথা অর্থের যােগান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

৪. খােলা বাজার নীতি : কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলির নিকট হতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণপত্র ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতির সময় সদস্য ব্যাংকগুলাের ঋণপত্র বিক্রয় এবং মুদ্রা সংকোচনের সময় ক্রয় করে অর্থ বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অর্থাৎ ঋণপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর আর্থিক নীতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

৫. ঋণের বরাদ্দ করণ : আর্থিক নীতি বাস্তবায়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলাে ঋণের সঠিক বরাদ্দকরণ নিশ্চিত করা। অতিরিক্ত বা অবৈধ ঋণ দান প্রক্রিয়া বাতিল করা।


আরো ও সাজেশন:-

৬. নৈতিক চাপ সৃষ্টি করা ও নৈতিক অপরাধ-বিভিন্ন ধরনের উপদেশ, অনুরােধ, আবদার ইত্যাদির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর সদস্য ব্যাংকগুলােকে অর্থ সরবরাহের সম্প্রসারণ ও সংকোচন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৭. আমিনের প্রতিক হার পরিবর্তন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংককে অনুমােদিত বিল বা নিরাপত্তাপলের বিনিময়ে ঋণ দেয়। অনুমােদিত বিল বা নিরাপত্তা পরের বিনিময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংককে ঋণ দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলোতে লিখিত অপেক্ষা যে কম হারে ঋণ দেয় তাকে আমিনের প্রান্তিক হার বলে। জামিনের প্রান্তিক হার কমিয়ে বা বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

৮. প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা : কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সরাসরি আদেশ জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহকে ঋণের পরিমাণ ভাতে বা কমাতে বলে। এ আদেশ বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ অমান্য করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

৯. ভােক্তার ঋণ নিয়ন্ত্রণ : ভােগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে ঋণের পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভােগ্য পণ্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ভােক্তার ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ভােক্তার ঋণ নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নাতির হাতিয়ার হিসেবে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

১০. প্রচারণা ; প্রচারণা, প্রকাশনা, পত্রিকা, বুলেটিন, প্রভৃতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনগণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সদস্য ব্যাংক এবং অর্থ বাজারের বিভিন্ন অবস্থা শুভ-অশুভ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করতে পারে-তা আর্থিক নীতির একটি মনস্ত ত্তিক হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা যায়।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক উপরিউক্ত হাতিয়ারসমূহ প্রয়ােগ করে আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন করা হয়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment