অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা কর, অর্থায়নের প্রকারভেদ আলোচনা কর, অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ দেখাও

অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা কর, অর্থায়নের প্রকারভেদ আলোচনা কর, অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ দেখাও

ভূমিকা : সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে অর্থসংগ্রহ বা তহবিল সংগ্রহ করাকেই সাধারণভাবে অর্থায়ন বলা হয়ে থাকে। অর্থায়ন একটি ব্যাপক বিষয়। বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অর্থের সংস্থান করা হয়। অর্থায়নকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

যথা- ১. সরকারি অর্থায়ন ও ২. বেসরকারি অর্থায়ন। নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো :

১. সরকারি অর্থায়ন : সরকার কর্তৃক সংগৃহীত অর্থায়নকে সরকারি অর্থায়ন বলে। সরকার দেশের অভ্যন্তরে ও বাহিরের উৎস থেকে অর্থায়ন করতে পারে। সরকারি অর্থায়নের ক্ষেত্রে ‘দেউলিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা যায় না। সাধারণত কেন্দ্ৰীয় সরকার ও স্থানীয় সরকারের অর্থায়নকে সরকারি অর্থায়ন বলে ।

সরকারি অর্থায়নকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) অভ্যন্ত রীণ উৎস ও (খ) আন্তর্জাতিক উৎস ।

(ক) অভ্যন্তরীণ উৎস : সরকার তার প্রয়োজনীয় অর্থের একটি অংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করে থাকে। অভ্যন্ত রীণ সরকারি উৎসগুলোর মধ্যে কর, শুল্ক, সরকারি কোষাগার ও দপ্তর, বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি ।

(খ) আন্তর্জাতিক উৎস : সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস ছাড়াও বৈদেশিক বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থায়ন করে থাকে। বিশেষ করে আমাদের দেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বৈদেশিক উৎস একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত। সরকারি আন্তর্জাতিক উৎসগুলোর মধ্যে বৈদেশিক সাহায্য দান অনুদান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।

২. বেসরকারি অর্থায়ন : সরকারি অর্থসংস্থাপন ছাড়া অন্য যেকোনো প্রকার অর্থসংস্থানকে বেসরকারি অর্থসংস্থান বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নকে বেসরকারি অর্থায়ন বলে। বেসরকারি অর্থায়নকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-(ক) ব্যক্তিগত অর্থায়ন; (খ) ব্যবসায় অর্থায়ন ও (গ) অব্যবসায় অর্থায়ন ।

(ক) ব্যক্তিগত অর্থায়ন : ব্যক্তি বিশেষের দৈনন্দিন কার্যাবলি পরিচালনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয় তাকে ব্যক্তিগত অর্থায়ন বলা হয়। ব্যক্তিগত আয় থেকে, আত্মীয়-স্বজন বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এ ধরনের অর্থায়নের প্রয়োজন মেটানো হয় ।

(খ) ব্যবসায় অর্থায়ন : ব্যবসায় কার্যাবলি পরিচালনার
জন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহে যে অর্থায়ন করা হয় তাকে ব্যবসায় অর্থায়ন বলে। অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক উৎস থেকে এ ধরনের অর্থায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে। এ ধরনের অর্থায়নকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা-
(i) ব্যক্তিগত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন;
(ii) সরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন ও
(iii) স্বায়ত্তশাসিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন ।

(i) ব্যক্তিগত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন : ব্যক্তিগত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন বলতে ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নকে বুঝায়। একমালিকানা, অংশীদারি এবং যৌথমূলধনী কারবারে মূলত এ ধরনের অর্থায়ন করা হয় ।

(ii) সরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন : সরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন বলতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য সংগৃহীত অর্থায়নকে বুঝায়। এ ধরনের অর্থায়ন স্বল্প মাধ্যম বা দীর্ঘ সময়ের জন্য করা হয়ে থাকে।

(iii) স্বায়ত্তশাসিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন : বিভিন্ন কর্পোরেশন বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বল্প, মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি অর্থসংস্থান করে থাকে ।

(গ) অব্যবসায় অর্থায়ন : মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে যে সকল প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় না তাকে অব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বলে । আর অব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জন্য যে অর্থসংগ্রহ ও ব্যবহার করা হয় তাকে অব্যবসায় অর্থায়ন বলে। যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দাতব্য চিকিৎসালয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি ।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা হতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংগঠনগুলো এক হয় না বিধায় তাদের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।

একাডেমিক শিক্ষা বিষয়ক লিখিত প্রশ্ন সমাধান পেতে ক্লিক করুন।

আর্টিকেলের শেষ কথাঃ অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা কর, অর্থায়নের প্রকারভেদ আলোচনা কর, অর্থায়নের শ্রেণিবিভাগ দেখাও

Leave a Comment