অবরােহ ও আরােহ অনুমান সম্পর্কযুক্ত- উদাহরণের সাহায্যে যৌক্তিক বিশ্লেষণ, অনুমানের ধারণা ও প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে পারবে।, অনুমানের প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে

শ্রেণি: HSC –2021 বিষয়: যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 05 বিষয় কোডঃ 121
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

পঞ্চম অধ্যায়: অনুমান

অ্যাসাইনমেন্টঃ

অবরােহ ও আরােহ অনুমান সম্পর্কযুক্ত- উদাহরণের সাহায্যে যৌক্তিক বিশ্লেষণ।

শিখনফলঃ

  • অনুমানের ধারণা ও প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • অনুমানের প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে ।
  • অবরােহ অনুমানের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  •  অবরােহ ও আরােহ অনুমানের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে পারবে।
  • প্রদত্ত যুক্তি থেকে অবরােহ ও আরােহ অনুমান পৃথক করতে পারবে।

নির্দেশনাঃ

  1. অনুমানের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি সংক্ষেপে বর্ণনা
  2. অবরােহ ও আরােহ অনুমানের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে ব্যাখ্যা
  3. *অবরােহ ও আরােহ অনুমানের পার্থক্য উদাহরণসহ ব্যাখ্যা
  4. অবরােহ ও আরােহ অনুমানের সাদৃশ্য উদাহরণসহ বিশ্লেষণ
  5. তােমার মতে অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে কোনটি মৌলিক?
  6. নিজস্ব মতামত যুক্তি দিয়ে ব্যখ্যা!

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

ক) অনুমানের সংজ্ঞা ও প্রকৃতিঃ

অনুমানের সংজ্ঞা (Definition of Inference) যুক্তিবিদ এইচ. ডব্লিউ. বি. যোসেফ বলেন, “অনুমান হলো এমন এক চিন্তাপ্রক্রিয়া যা এক বা একাধিক অবধারণ নিয়ে শুরু হয়ে অন্য একটি অবধারণে পরিণতি লাভ করে এবং যার সত্যতা পূর্ববর্তী অবধারণের মধ্যে নিহিত থাকে।” অনুমান হল চিন্তার একটি প্রক্রিয়া যা এক বা একাধিক বিচারের সাথে শুরু হয়ে অন্য একটি বিচারে শেষ হয় যার সত্যতা অন্য প্রাক্তনদের সাথে জড়িত বলে মনে হয়।

আবার ড. পি. কে. রায় বলেন, “এক বা একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে এবং এক বা একাধিক মুক্তিবাক্য হয়ে অন্য একটি নতুন যুক্তিবাক্য পাওয়ার মানসিক প্রক্রিয়াকে অনুমান বলে।”

সুতরাং বলা যায় যে, কোনো জ্ঞাত বিষয় বা তথ্যের উপর নির্ভর করে কোনো এক অজ্ঞাত বিষয়ে বা তথ্যে উপনীত হওয়ার মানসিক প্রক্রিয়াকে অনুমান বলে। উদাহরণস্বরূপ, কোথাও ধোঁয়া দেখলে আমরা মনে করি আগুন লেগেছে, মেঘ দেখলে অনুমান করে বলি বৃষ্টি হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

রাস্তা-ঘাটে কাদা দেখলে মনে করি বৃষ্টি হয়েছিল। কোনো পরীক্ষার ফলাফলের দিন পরিচিত কোনো পরীক্ষার্থীর মুখ কালো কিংবা মন খারাপ দেখলে আমরা অনুমান করে বলি- সে ফেল করেছে। এ রকম হাজারো যুক্তিবাক্য অনুমান করে জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে উপনীত হই। এ অনুমান সব সময় যে সত্য হবেই এমন কোনো কথা নেই। মানুষ তার মেধা-বুদ্ধি দিয়ে নিজেকে উপলব্ধি করে উক্ত মন্তব্য করে থাকে। অনুমান হচ্ছে মানসিক প্রক্রিয়ার ফল। নিচে একটি যুক্তিবাক্যের মাধ্যমে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা যেতে পারে। যেমন : আশ্রয়বাক্য (Premise)।

সব দার্শনিক হয় মানুষ → প্রধান আশ্রয়বাক্য

সক্রেটিস একজন দার্শনিক অ-প্রধান আশ্রয়বাক্য

সিদ্ধান্ত :

সক্রেটিস হয় মানুষ সিদ্ধান্ত। অনুমানে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এক বা একাধিক যুক্তিবাক্যের ভিত্তিতে। উপরিউক্ত যুক্তিটিতে দুটি যুক্তিবাক্যের ভিত্তিতে বা আশ্রয় করে তৃতীয় যুক্তিবাক্যটি বা সিদ্ধান্তটি অনুমিত হয়েছে। যেমন অনুমানের সিদ্ধান্তটি একটি নতুন যুক্তিবাক্য (Proposition)। উল্লিখিত আশ্রয়বাক্য ‘সব দার্শনিক হয় মানুষ এর মধ্যে সিদ্ধান্তটি নিহিত থাকলেও তা সুস্পষ্ট নয়। সিদ্ধান্তটির মধ্যে কিছুটা নতুনত্ব প্রকাশিত হয়েছে। আবার বলা যায়, যদি কোনো দেশে সার্বভৌমত্ব (Sovereignty) থাকে তাহলে সেদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এ ক্ষেত্রেও দুটি জ্ঞাত তথ্যভিত্তিক বাক্য থেকে একটি নতুন বাক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই সামগ্রিক অর্থে এ তিনটি বাক্যের সমন্বিত রূপ হলো একটি অনুমান অর্থ হলো কোনো কিছু চিন্তা করা। সত্য হয়, তাহলে সিদ্ধান্ত সত্য হবে। কিন্তু যুক্তিবিদ্যায় অনুমান তখনই হয় যখন অন্যদিকে সিদ্ধান্ত যদি সত্য না হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে অন্তত একটা সেটা ভাষায় প্রকাশিত হয়। যেমন কেউ যদি প্রশ্ন তোলে যে জ্ঞানার্জন করা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’— সিদ্ধান্তটি বাস্তবের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়, বরং মিথ্যা। তাহলে বুঝতে হবে যে প্রথম আশ্রয়বাক্য যদি কোনো দেশে সার্বভৌমত্ব থাকে, তাহলে সে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়’ মিথ্যা, না হয় বাংলাদেশ সার্বভৌম দেশ বাক্যটি মিথ্যা। কিন্তু দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্য মিথ্যা নয়। অতএব প্রথম আশ্রয়বাক্য বস্তুগতভাবে সত্য। বস্তুগতভাবে সত্য প্রতিষ্ঠা করাই যুক্তিবিদ্যার লক্ষ্য। অনুমান করে কোনো কিছু বললে তা যে সব সময় মিথ্যা হবে এমন নয়।

অনুমানের প্রকৃতি (Nature of Inference)

এক বা একাধিক বাক্যের ভিত্তিতে কোনো নতুন বাক্য প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়া হলো অনুমান। এর অর্থ হলো, একটি অনুমানের দুটি অংশ থাকে। প্রথম অংশে থাকে জ্ঞাত তথ্য দ্বিতীয় অংশে থাকে নতুন তথ্য অনুমানের ক্ষেত্রে যে বাক্য বা বাক্যসমূহে জ্ঞাত তথ্য প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে আশ্রয়বাক্য (Premise)। জ্ঞাত তথ্যভিত্তিক বাক্য বা বাক্যসমূহকে আশ্রয় করেই নতুন বাক্যে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর যে বাক্যে নতুন তথ্য প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে সিদ্ধান্ত (Decision) |

অন্যভাবে বলা যায়, অনুমানের মূল উদ্দেশ্য হলো কোনো জ্ঞাত তথ্য বা তথ্যসমূহের ভিত্তিতে নতুন কোনো বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তাই যে বাক্যের মাধ্যমে নতুন তথ্য প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে সিদ্ধান্ত। আর যেসব বাক্যের উপর ভিত্তি করে বা আশ্রয় করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে বলে আশ্রয়বাক্য। একটি দৃষ্টান্তে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

যদি দেশে ব্যবসায়ীরা সচেতন হয়, তাহলে খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন দেওয়া বন্ধ হবে। দেশের ব্যবসায়ীরা সচেতন হবে। সুতরাং খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন দেওয়া বন্ধ হবে। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হলো, খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন দেওয়া বন্ধ হবে না। আর এর আশ্রয়বাক্য হলো, “যদি দেশে ব্যবসায়ীরা সচেতন হয়,

তাহলে খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন দেওয়া বন্ধ হবে এবং দেশের ব্যবসায়ীরা সচেতন নয়।” অনুমানের ক্ষেত্রে এর সিদ্ধান্তের সত্যতা আশ্রয়বাক্যের সত্যতা দ্বারা নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ অনুমানের আশ্রয়বাক্য বা বাক্যসমূহ যদি বস্তুগতভাবে সত্য হয় তাহলে যুক্তিটি আকারগতভাবে যেমন সত্য বস্তুগতভাবেও তেমনি সত্য হবে।

অবরোহ ও আরোহ অনুমান পরস্পর সম্পর্কযুক্ত- উদাহরণের সাহায্যে যৌক্তিক বিশ্লেষণ

তবে সিদ্ধান্ত বস্তুগতভাবে সত্য হওয়ার পূর্বশর্ত হলো বস্তুগতভাবে সত্য আশ্রয়বাক্যের উপস্থিতি। অনুমানে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ডের এ অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে তুলনা করা চলে কারণ ও কার্যের সম্পর্কের সাথে। কেননা কারণ ও কার্যের পারস্পরিক সম্পর্ক হলো কার্যের উপস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কারণের উপস্থিতি অপরিহার্য। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, বিশেষ কারণ উপস্থিত থাকলেই কার্য উপস্থিত থাকবে। উক্ত যুক্তিবাক্যটিতে লক্ষ করা যায় যে, প্রথম ও দ্বিতীয় যুক্তিবাক্য হচ্ছে প্রদত্ত বাক্য বা আশ্রয়বাক্য এবং তৃতীয় বাক্যটি সিদ্ধান্ত বা নতুন যুক্তিবাক্য। এই নতুন বাক্যটি অনুমান বা যুক্তির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নিচের যুক্তিবাক্যের মাধ্যমে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত ফুটে উঠবে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ক) এ যাবৎ যত কাক দেখা গিয়েছে সবই কালো → আশ্রয়বাক্য; সকল কাক কালো → সিদ্ধান্ত

খ) প্রধান আশ্রয়বাক্য; সকল নারী হয় সমাজসচেতন 1st Premise

গ) অ-প্রধান আশ্রয়বাক্য; মালালা ইউসুফজাই একজন নারী 2nd Premise। সিদ্ধান্ত : মালালা ইউসুফজাই হন সমাজসচেতন।

এখানে দেখা যায় যে, আশ্রয়বাক্যে যা বলা হয়েছে, সিদ্ধান্তে নতুন বাকা হলেও আশ্রয়বাক্যের সাহায্য নিয়ে সিদ্ধান্ত টানা হয়েছে।

খ) অবরোহ ও আরোহ অনুমানের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্যঃ

অবরোহ অনুমান (Deductive Inference)

যে অনুমান পদ্ধতিতে এক বা একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে আশ্রয়বাক্যের তুলনায় কম ব্যাপক সিদ্ধান্ত নি:সৃত হয় তাকে অবরোহ অনুমান বলে। যেমন:

  • ১) সকল কাক হয় কালো (A)
  • ২) কিছু কালো পাখি হয় কাক (I)

এ উদাহরণটিতে আশ্রয় বাক্যটি সার্বিক এবং সিদ্ধান্তটি বিশেষ বাক্য। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত আশ্রয় বাক্যের তুলনায় কম ব্যাপক।

  • ১) কোনো মানুষ নয় দেবতা (E)
  • ২) কোনো দেবতা নয় মানুষ (E)

এ অনুমানটিতে সিদ্ধান্তটি আশ্রয় বাক্যের সমান ব্যাপক।

  • ১) সকল ভাবুক হয় কবি (A)
  • ২) সকল প্রকৃতি-প্রেমিক হয় ভাবুক (A)
  • ৩) সকল প্রকৃতি-প্রেমিক হয় কবি (A)

এ অনুমানটিতে দু’টি আশ্রয়বাক্য রয়েছে এবং আশ্রয়বাক্য দু’টির মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তিতে অনিবার্যভাবে সিদ্ধান্তটি নি:সৃত হয়েছে। এখানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্যগুলোর সমব্যাপক।

অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তের সত্যতা আশ্রয়বাক্যের সত্যতা দ্বারা নির্ধারিত হয়। এরূপ অনুমানে যে কোনো আশ্রয়বাক্য বস্তুগতভাবে মিথ্যা হলে সিদ্ধান্ত অবশ্যই-

  • 1) বস্তুগতভাবে মিথ্যা হবে। যেমনসকল মানুষ হয় শিক্ষিত (A)
  • 2) সকল শ্রমিক হয় মানুষ (A)
  • 3) সকল শ্রমিক হয় শিক্ষিত (A)

অবরোহ অনুমানের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Detective Inference)

অবরোহ অনুমান একটি মানসিক চিন্তা প্রক্রিয়া। অবরোহ অনুমানের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপঃ

  • প্রথমত : অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কখনো আশ্রয়বাক্যের চেয়ে ব্যাপক হতে পারে না ।
  • দ্বিতীয়ত : অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত অনিবার্যভাবে এক বা একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে নিঃসৃত হয় ।
  • তৃতীয়ত : অবরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যকে স্বীকার করা হলে সিদ্ধান্তকে অস্বীকার করা যায় না। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত মিথ্যা হতে পারে না।
  • চতুর্থত : অবরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সময় অনুমান সংক্রান্ত নিয়মসমূহ অনুসরণ করা হয়েছে কিনা তা বিচার করা হয়। এক্ষেত্রে আকারগত সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।
  • পঞ্চমত : অবরোহ অনুমানে বৈধতার কোনো মাত্রার অবকাশ নেই। এ অনুমান হয় বৈধ হবে , না হয় অবৈধ হবে।
  • ষষ্ঠত : অবরোহ অনুমান সবসময় আকারগতভাবে সত্য হয়।
  • সপ্তমত : অবরোহ অনুমানের বস্তুগত সত্যতা আশ্রয়বাক্যের সত্যতার ওপর নির্ভর করে।

আরোহ অনুমান (Inductive Syllogism)

যে অনুমান পদ্ধতিতে কয়েকটি বিশিষ্ট দৃষ্টান্তের উপর নির্ভর উপর নির্ভর করে প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে আরোহাত্মক উল্লম্ফনের মাধ্যমে একটি সার্বিক সংশ্লেষক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় তাকে আরোহ অনুমান বলে। তবে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নি:সৃত হয় না। আরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি সম্ভাব্য হয় মাত্র। যেমন:

  1. রহিম হয় মরণশীল
  2. করিম হয় মরণশীল
  3. খালেক হয় মরণশীল
  4. মালেক হয় মরণশীল

এখানে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্তের আলোকে কার্যকারণ নিয়ম ও প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি অনুসরণ করে আরোহাত্মক উল্লম্ফনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হিসেবে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বাক্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তহিসেবে বিশিষ্ট বাক্যও প্রতিষ্ঠা করা যায়। যুক্তিবিদ্যায় বিশিষ্ট বাক্যকে সার্বিক বাক্য বলেই গ্রহণ করা হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

যেমন- পৃথিবী ও মঙ্গল সূর্যের দু’টি গ্রহ এবং সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে। গ্রহ দু’টি সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। পৃথিবী ও মঙ্গলের আবহাওয়া ও ভূমি এক। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। অতএব, মঙ্গলেও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।

আরোহ অনুমানের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Inductive inference)

  • প্রথমত আশ্রয়বাক্যের চেয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করে। নতুন তথ্য উপস্থাপন করে।
  • দ্বিতীয়ত আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে কোনো সত্য প্রমাণ করে না। সিদ্ধান্ত যে তথ্য প্রকাশ করে তা পরবর্তী সময়ে অভিজ্ঞতার আলোকে ভ্রান্ত প্রমাণিত হতে পারে, আর নাও হতে পারে। হবেই এমন কোনো শর্ত নেই।
  • তৃতীয়ত আরোহ অনুমানে বস্তুগত সত্যতার দিকে লক্ষ রাখা হয়, আকারগত সত্যতার দিকে নয়। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত বাস্তবের সাথে সংগতিপূর্ণ কি না, তা বিচার করা হয়। সত্যকে খুঁজে বের করাই লক্ষ্য থাকে।
  • চতুর্থত আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কোনো ক্ষেত্রেই আশ্রয়বাক্যের চেয়ে কম ব্যাপক হয় না।
  • পঞ্চমত আরোহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যকে স্বীকার করেও সিদ্ধান্তকে অস্বীকার করা যায়।
  • ষষ্ঠত আরোহ অনুমানে সিদ্ধান্তের সত্যতা আশ্রয়বাক্যের দ্বারা সমর্থিত। কিন্তু এ সত্যতা সম্ভাব্য প্রমাণিত নয়।
  • সপ্তমত আরোহ্ অনুমানের সিদ্ধান্ত অভিজ্ঞতার আলোকে গঠিত হয়।
  • অষ্টমত অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাপ্ত তথ্য নিশ্চিত সত্য হয়।

গ) অবরোহ ও আরোহ অনুমানের পার্থক্য উদাহরণসহ ব্যাখ্যা

অবরোহ ও আরোহ অনুমানের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকলেও এদের মধ্যে পার্থক্য অনেক বেশি। অবরোহ ও আরোহ অনুমানের মধ্যে যেসব পার্থক্য দেখা যায় সেগুলো হলো :

https://www.banglanewsexpress.com/%e0%a7%a8%e0%a7%a6%e0%a7%a8%e0%a7%a7-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%87%e0%a6%9a%e0%a6%8f%e0%a6%b8%e0%a6%b8%e0%a6%bf-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%8d-16/

ঘ) অবরোহ ও আরোহ অনুমানের সাদৃশ্য উদাহরণসহ বিশ্লেষণ

উভয়ের সম্পর্কের মাঝে উক্ত পার্থক্য ব্যতীত মনীষীদের মধ্যে দুটি বিষয়ের মতভেদ লক্ষ করা যায়।

প্রথমত আরোহ অবরোহের আগে অথবা অবরোহ আরোহের পরে হবে। দ্বিতীয়ত অবরোহকে আরোহের মৌলিক প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করেন।যুক্তিবিদ জে. এস. মিল মনে করেন, “আরোহ অনুমানের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত সার্বিক বাক্যকেই অবরোহ অনুমান আশ্রয়বাক্য হিসেবে গ্রহণ করে।

সুতরাং অবরোহ অনুমান আরোহের সাহায্যে সার্বিক বাক্য লাভ করে বলে এ অনুমান অবরোহের আগে।” জর্জ বেকনের মতে, “অবরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে অধিক ব্যাপক আশ্রয়বাক্যের ভিত্তিতে কম ব্যাপক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।” জেভন্সের মতে, “অবরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে নিশ্চিত, কিন্তু আরোহ অনুমানের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাই আরোহ অনুমান অবরোহ অনুমানের বিপরীত প্রক্রিয়া।”

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

হ্যামিলটন, ম্যানসেল মনে করেন, অবরোহ অনুমান মৌলিক (Fundamental)। যুক্তিবিদ বেইন ম্যানসেলের সাথে সুর না মিলিয়ে বলেন, “আরোহ অনুমানই বরং মৌলিক প্রক্রিয়া।” তবে ভাববাদীরা মনে করেন, অবরোহ অনুমান প্রাথমিকভাবে মৌলিক। বাস্তববাদীরা আরোহ অনুমানকে 1st fundamental process বলে মনে করেন। তবে এ কথা সত্য যে, অবরোহ ও আরোহ অনুমানের মধ্যে কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই।

উভয়ের লক্ষ্য যথার্থ সত্য প্রতিষ্ঠা করা। সে ক্ষেত্রে যখন আমাদের তথ্যের প্রয়োজন হয়, তখন আমরা আরোহমূলকভাবে শুরু করি। আবার যখন প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বের ভিত্তিতে কোনো কিছু প্রমাণের প্রয়োজন হয়, তখন আমরা অবরোহমূলকভাবে শুরু করি। সে হিসাবে উভয় প্রক্রিয়া পরস্পর পরিপুরক। আর বিজ্ঞান সত্য লাভের জন্য অবরোহ ও আরোহ উভয় প্রক্রিয়াই ব্যবহার করে থাকে। এ জন্যই বিজ্ঞানের পদ্ধতিকে অবরোহ ও আরোহের সমন্বয় বলে অভিহিত করা হয়। তাই উভয়ের মাঝে পার্থক্য থাকলেও তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। উভয়ের সম্পর্ক কাছাকাছি বলে মনে হয়।

ঙ) নিজস্ব মতামতঃ

অবরোহ ও অরোহ অনুমানের সম্বন্ধ বিচারের ক্ষেত্রে যুক্তিবিদ ও দার্শনিকদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা যায়। এ বিষয়ে নিম্নোক্ত মতগুলো পাওয়া যায় :

  • ১. অনুমানের মূল প্রক্রিয়া হলো অবরোহ
  • ২. আরোহ হচ্ছে অনুমানের মূল পদ্ধতি।
  • ৩. অবরোহ ও অরোহ হলো পরস্পর বিপরীত প্রক্রিয়া
  • ৪. অবরোহ ও অরোহ অনুমান একে অপরের পরিপূরক।

নিম্নে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অনুমানের মূল প্রক্রিয়া হলো অবরোহ ও আরোহ হচ্ছে অনুমানের মূল পদ্ধতি

যুক্তিবিদ উইলিয়াম স্টারলিং হ্যামিলটন (William Stirling Hamilton), হেনরি ম্যানসেল (Henry Mansel), গচার্ড হোয়েটলি (Richard Whately), উইলিয়াম স্ট্যালি জেভন্স (William Stanley JeVons ), প্যাট্রিক সাপ্পেস(Patrick Suppes ) প্রমুখ যুক্তিবিদ মনে করেন যে, অবরোহই হলো অনুমানের মৌলিক প্রক্রিয়া। জেন্স বলেন যে, একমাত্র অবরোহ অনুমানই মূল অনুমান পদ্ধতি এবং তা আরোহ অনুমানের পূর্বগামী। আরোহ অনুমানের মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ সত্য প্রতিষ্ঠা করা। কোনো সাধারণ সত্যে উপনীত হতে হলে প্রথমে তা কল্পনারূপে বা প্রকল্প আকারে আমাদের মনে উদিত হয়।

তারপর সে কল্পনাটিকে বাস্তবে রূপদান করার জন্য কতগুলো বিশেষ ক্ষেত্র বা ঘটনার পর্যবেক্ষণ করতে হয়। অর্থাৎ কোনো সাধারণ সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য তার কল্পানা বা ধারণাকে বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হয় এবং এ প্রয়োগ ক্রিয়াকেই বলা হয় অবরোহ প্রক্রিয়া। অবরোহ অনুমানে আমরা যে সাধারণ সত্য থেকে বিশেষ সত্যে উপনীত হই সে সাধারণ সত্যটি কেবল আরোহ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই পাওয়া যায়। অধিকন্তু যুক্তিবিদ জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) মনে করেন যে, অবরোহ অনুমান যথার্থ অনুমান বলে গণ্য হতে পারে না। কারণ অবরোহের সিদ্ধান্ত আশ্রয়বাক্যের মধ্যেই নিহিত থাকে, তা কোন নতুন তথ্য প্রকাশ করতে পারে না। প্রকৃত অনুমান বলতে আরোহ অনুমানকেই বুঝায়।

অবরোহ ও আরোহ হলো পরস্পর বিপরীত প্রক্রিয়া :

ফ্রান্সিস বেকন (Francis Bacon), থমাস ফাউলার (Thomas Fowler) প্রমুখ যুক্তিবিদ মনে করেন যে, অবরোহ ও আরোহ হলো পরস্পর বিপরীত প্রক্রিয়া। অবরোহ প্রক্রিয়ায় সাধারণ থেকে বিশেষ সত্যের দিকে এবং জ্ঞারোহ প্রক্রিয়ায় বিশেষ বিশেষ সত্য থেকে সাধারণ সত্যের দিকে গমন করতে হয়। ফ্রান্সিস। বেকন (Francis Bacon অবরোহ অনুমানকে অবতরণ প্রক্রিয়া (descending process) এবং আরোহ অনুমানকে অরোহণ প্রক্রিয়া (ascending process) বলে বর্ণনা করেছেন। থমাস ফাউলার (Thomas Fowler) বলেন, অবরোহ অনুমান কারণ থেকে কার্যের দিকে যায় এবং আরোহ অনুমান অবরোহ অনুমানের বিপরীত প্রক্রিয়া।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

  • ২০২১ সালের SSC / দাখিলা পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২১ সালের HSC / আলিম পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ভোকেশনাল: ৯ম/১০ শ্রেণি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • HSC (বিএম-ভোকে- ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স) ১১শ ও ১২শ শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১০ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের SSC ও দাখিল এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক
  • ২০২২ সালের ১১ম -১২ম শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের HSC ও Alim এসাইনমেন্ট উত্তর লিংক

৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৭ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ ,

৮ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ , ৯ম শ্রেণীর এ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

Leave a Comment