৫ম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের ‘শখের মৃিশল্প’ প্রবন্ধে ‘মাটির চুলা’র উল্লেখ আছে

Google Adsense Ads

মাটির তৈরি চুলার কথা মনে করলেই, মনে পড়ে যায় দাদি-নানি ও মায়ের হাতের রান্নার কথা। তাদের সেই রান্নার স্বাদ, যেন জিভে পানি এনে দেয়। বর্তমানে কমে আসছে এই মাটির চুলার ব্যবহার। শহরাঞ্চলে এ চুলার দেখা মেলে না বলেলেই চলে। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনও বেশিরভাগ বাসায় রান্নার কাজে মাটির চুলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আবার অনেকে বাণিজ্যিকভাবেও মাটির চুলা তৈরি করে থাকেন। 

ইদানীং প্রায়ই শহরাঞ্চলে বিশেষ করে রাজধানীতে গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। কখনো কখনো গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এমন পরিস্থিতিতে মাটির চুলা থাকলে অন্তত না খেয়ে থাকার জোগাড় হবে না। তাই বাসাবাড়িতে একটি মাটির চুলা থাকলে সংকটের সময়টা হতে পারে স্বস্তিদায়ক। খুব সহজেই আপনি নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন মাটির চুলা। 

মাটি দ্বারা নির্মিত চুলাকে মাটির চুলা বলে। একসময় গ্রামবাংলায় রান্নাবান্নার মূল ভিত্তি ছিল মাটির চুলা। প্রাচীন মানুষের কাঠ ও খড়কুটো জ্বালিয়ে তাতে খাবার পুড়িয়ে খেত।

পুড়িয়ে খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে ধীরে ধীরে মানুষ শিখে নেয় চুলা বানানোর কৌশল। ধারণা করা হয়, পৃথিবীতে প্রথম চুলা তৈরি হয় মাটি দিয়ে। প্রথম চুলার আবিষ্কারের পর শত শত বছরের পরিশীলন মানুষকে আজকের চুলা বানাতে সহায়তা করেছে।

সাধারণত এ ধরনের চুলায় এঁটেল মাটি ব্যবহার করা হয়। প্রথমে মাটিতে বিশেষভাবে গর্ত করে চুলা বানানো হয়। গর্তের ওপর থাকে মাটির তিনটি অনুচ্চ স্তম্ভ দেওয়া হয়। এই স্তম্ভগুলোর ওপরই হাঁড়ি বা পাতিল বসিয়ে রান্না করা হয়। একমুখো, দুমুখো ও তিনমুখো—এই তিন ধরনের চুলার ব্যবহার সর্বাধিক।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

প্রতিটি চুলায় সাধারণত একটি করে জ্বালানি প্রবেশের মুখ থাকে। যেসব চুলায় একটি হাঁড়ি বসানো যায়, সেটিই একমুখো চুলা। যে চুলায় দুটি হাঁড়ি বসানো যায়, সেগুলো দুমুখো চুলা। দুমুখো মাটির চুলা দিয়ে সাধারণত বাড়িতে ধান সিদ্ধ বা অনুষ্ঠানের খাবার রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয়।

তিনমুখো চুলায় একই সঙ্গে পাশাপাশি তিনটি হাঁড়ি বা ডেকচি বসানো যায়। এ ধরনের চুলায় লাকড়ি প্রবেশের দুটি মুখেরও দেখা পাওয়া যায় কোনো কোনো বাড়িতে। তিনমুখো চুলার ব্যবহার খুব বেশি চোখে পড়ে না। মূলত ধান সিদ্ধ বরার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া তোলা চুলা বলে এক ধরনের চুলা আছে।

মূলত এটি একমুখো চুলা। তবে এটি তৈরি করা হয় পরিত্যক্ত গামলায় মাটি দিয়ে। সাধারণত হালকা খাবার রান্না, খাবার গরম করা, দুধ গরম করা, চা তৈরি ইত্যাদি কাজে এটি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ প্রয়োজনে এটিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অনায়াসে নিয়ে যাওয়া যায়। বন্যাকবলিত অঞ্চলে এর ব্যাপক ব্যবহার চোখে পড়ে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সাধারণত মাটির চুলায় কাঠ, বাঁশ, খড়কুটো, পাটকাঠি, শুকনো পাতা প্রভৃতি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পুরনো মাটির চুলাগুলো ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করার নজির আছে। রান্নাঘরের চুলা যত বেশি পুরনো হয়, তার ভেতরের মাটি পুড়তে পুড়তে তত বেশি লাল হয়। পুরনো চুলা তাপ ছড়ায় দ্রুত।

রান্না শেষে মাটির চুলার আগুন নেভানোর পরও তাতে জ্বলন্ত কয়লা ও গরম ছাই থেকে যায়। এতে গোল আলু গুঁজে রেখে দিলে কয়লা ও ছাইয়ে আলু পুড়ে সিদ্ধ হয়। সেই পোড়া আলুর ভর্তার স্বাদ অতুলনীয়। মাটির চুলার ছাই সবজি চাষে কাজে লাগে। মাছ কাটতেও ছাই ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া গ্রামবাংলায় এখনো অনেক পরিবার হাঁড়ি-পাতিল ধুতে ছাই ব্যবহার করে।

P.S.C

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Comment