৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে সেতারের উল্লেখ আছে

উচ্চাঙ্গসংগীতে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে সেতার বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এটি বীণাজাতীয় বাদ্যযন্ত্রবিশেষ। অনেকটা তানপুরার মতো দেখতে সেতার অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফকির আমীর খসরু উদ্ভাবন করেন। পারস্য ভাষায় ‘সে’ মানে ‘তিন’। তিনটি তারের সমন্বয়ে তৈরি বলে আমীর খসরু এর নাম দেন সেতার। প্রথম দিকে সেতার তিনটি তার সহযোগে বাজানো হতো; কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এর রূপ পাল্টাতে থাকে।

সেতারের নিম্নভাগের বড় গোলাকার বস্তুটিকে বলা হয় তুম্বা। এটি প্রকৃতপক্ষে বৃহদাকার লাউয়ের খোলস। তুম্বার ওপরে কাঠের তৈরি লম্বা যে অংশটি থাকে তাকে বলে তবলি। তবলি সাধারণত সেগুন বা তুন কাঠের হয়ে থাকে।

বর্তমানে সেতারে কমবেশি ১৮টি তার থাকতে পারে। তিনটি থাকে বাজানোর জন্য, যেগুলো মা সা পা-তে সুর বাঁধা থাকে। এর পর চতুর্থটি থাকে বেইজ তার। এতে সা-তে সুর বাঁধা। এর পর থাকে কমপক্ষে তিনটি সংগতকারী তার, যেগুলোকে চিকারির তার বলা হয়ে থাকে। এগুলো সা সা গা-তে সুর বাঁধা থাকে। এ ছাড়া ৯ থেকে ১৩টি তার থাকে মূর্ছনা ধরে রাখার জন্য। এগুলোকে তরফের তারও বলা হয়। সব শ্রেণির তারই তুম্বার উপরিস্থিত বায়ার এক প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে ডান্ডির উপরিভাগে গিয়ে শেষ হয়। অনেকটা চাবির মতো দেখতে কুন্তি দিয়ে এই তারগুলোকে আটকে রাখা হয়।

সেতার দুই প্রকার, সাধারণ ও তরফদার। সাধারণ সেতারে সাতটি তার থাকে। প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা এ ধরনের সেতার ব্যবহার করে। তরফদার সেতারে সাধারণ সেতারের মতো সাতটি তার ছাড়াও আরো ১১টি তার সংযুক্ত থাকে। এগুলো অনুরণনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই সেতারের উপরিভাগে একটি অতিরিক্ত ছোট লাউয়ের খোলস থাকে।

যিনি সেতার বাজাতে জানেন, তিনি সেতারি বা সেতারবাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ওস্তাদ এনায়েত খান, ওস্তাদ বেলায়েত খান, ওস্তাদ ইমরাত খান, পণ্ডিত রবি শংকরসহ বর্তমান প্রজন্মে বিখ্যাত সেতারবাদকদের মধ্যে আছেন বুধাদিত্য মুখার্জি, সুজাত খান, নিশাত খান, সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এ ছাড়া পাশ্চাত্যে সেতারবাদক হিসেবে আছেন কলিন ওয়ালকট, প্যাট্রিক মন্টাল, গিয়ানি রিচ্চিজি প্রমুখ।  

সাস্থ্য

Leave a Comment