৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে পাউরুটির উল্লেখ আছে

পাউরুটি হচ্ছে পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে তৈরি এক ধরনের ফাঁপা রুটি। এটি বাংলার একটি মাইগ্রেন্ট ফুড। পর্তুগিজরা এই রুটিকে বাংলায় নিয়ে এসেছে। ধারণা করা হতো, পাউরুটি তৈরির জন্য ময়দায় যে খামি মেশানো হয় তা মূলত পা দিয়ে মাখানো হয়।

তাই মানুষের মধ্যে এ রকম একটা বিশ্বাস জন্মে ছিল যে পা দিয়ে ময়দা মাখানো হচ্ছে বলেই এর নাম পাউরুটি; কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাউ শব্দটি এসেছে পর্তুগিজ Pao শব্দ থেকে, যার অর্থ রুটি। তাই বাঙালিরা পর্তুগিজদের এই রুটিকে পাউরটি বলত।

ভারতবর্ষে পাউরুটির জনপ্রিয়তা লাভ করে ব্রিটিশদের হাত ধরে। ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা এই উপমহাদেশে আসার আগে পর্যন্ত আমাদের কাছে পাউরুটি কী বস্তু তার সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না । ১৪৯৮ সালে পর্তুগিজরা এ অঞ্চলে এসে কোথাও পাউরুটি খুঁজে পাননি। পরে নিজেরাই পাউরুটি বানাতে শুরু করে।

২০১৮ সালের দিকে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পুরাতাত্ত্বিক জর্ডনের উত্তরাংশের একটি এলাকার মাটি খুঁড়তে গিয়ে একটি পোড়া পাউরুটি আবিষ্কার করেছেন। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সেই পাউরুটি ১৪ হাজার ৫০০ বছরের পুরনো।

পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, বার্লি, গম, ভুট্টা ইত্যাদি উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পাউরুটিটি। এই পাউরুটিই হচ্ছে বিশ্বের প্রথম পাউরুটি।

বর্তমানে সারা বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষের ঘরে প্রতিদিনের ডায়েট শুরু হয় পাউরুটি দিয়ে। ব্রেকফাস্টের অন্যতম আইটেম পাউরুটি। শুকনো পাউরুটি দিয়ে প্রতি ঘরে তৈরি হচ্ছে কত ভিন্ন স্বাদের ভিন্ন রকমের পদ।

সম্ভবত জার্মানি এমন এক দেশ যেখানে প্রায় ৩০০ রকমের পাউরুটি রয়েছে। অস্ট্রিয়ায় রয়েছে পাউরুটি নিয়েই এক বিশাল জাদুঘর।

পাউরুটি জনপ্রিয় হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর একটি খাবার। বেশির ভাগ পাউরুটি বানাতেই পটাসিয়াম ব্রোমেট বা আয়োডেট নামের ভয়ানক ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এই দুটি রাসায়নিকই মানব স্বাস্থ্য ধ্বংস করে,

যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই)-এর গবেষণায়। এটি ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। ২০১৫ সালে জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে পাউরুটি এবং ডিপ্রেশনের মধ্যে গভীর যোগ রয়েছে।

বিশেষত পোস্ট মেনোপজাল সময়ে মহিলাদের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে এই খাবারটি বিশেষ ভাবে দায়ী। এ ছাড়া পাউরুটি অতিরিক্ত শ্লেষ্মা সৃষ্টি করে, ওজন ও রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায়।       

J.S.C

1 thought on “৭ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে পাউরুটির উল্লেখ আছে”

Leave a Comment