সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবেই বেঁচে থাকার জন্য একটি খাদ্য তালিকা নির্দেশিকা প্রস্তুতকরণ কি


সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবেই বেঁচে থাকার জন্য একটি খাদ্য তালিকা নির্দেশিকা প্রস্তুতকরণ কি।


সুস্থ্যজীবন কি

উত্তর:

একটু সুস্থ চিন্তা, একটু স্বাস্থ্যসচেতনতা আর একটু মানসিক দৃঢ়তা যদি আমাদের একটি সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনযাপনের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে, তাহলে আমরা তা করি না কেন? আসলে আমরা হয়তো ও রকমই। দাঁত থাকতে দাঁতের মূল্য বুঝি না। গুটিকয়েক নিয়ম মেনে চললে জীবনকে আমরা সত্যি সুস্থ-সুন্দর রাখতে পারি। অস্বাভাবিক জীবনযাপন ও নিয়ম না মানার কারণে আমরা নানা রোগে আক্রান্ত হই। অসুস্থ হলে চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হয়, হরেক রকম ওষুধে অভ্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। অসুস্থ হলে জীবন স্বাভাবিক নিয়মে চলে না। সর্বক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, জীবনের সুখ-শান্তি নষ্ট হয়, টাকা-পয়সার অপচয় হয়। জীবনে নেমে আসে চরম কষ্ট আর দুর্ভোগ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে আমার এ লেখায় কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করব। যুক্তিসংগত ও ভালো মনে হলে আপনারাও তা অভ্যাস করতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি, পরামর্শগুলো মেনে চললে অবশ্যই সুফল পাবেন। তবে হতাশার কথা হলো, এ রকম আশার বাণী শোনার পর পরই অনেকেই প্রায়ই ঝটপট নিচের নিয়মগুলো মেনে চলার শপথ নিয়ে ফেলেন। কিন্তু মানসিক দৃঢ়তার অভাবে শেষ পর্যন্ত এসব অভ্যাস অনেকের জন্য আর পালন করা হয়ে ওঠে না।

সুস্থ শরীরের জন্য সুষম খাবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো খাবারই বেশি খাওয়া ঠিক নয়। পরিমিত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এখন রোজার মাস। এই মাসে আমরা ইফতার ও সেহরিতে ভাজা-পোড়া, তৈলাক্ত খাবার বেশি পছন্দ করি। এসব খাবার খেতে সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে বেশি করে ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত। দিন দীর্ঘ ও গরমের কারণে আমাদের শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। তাই ইফতার ও সেহরির মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করা দরকার। সচরাচর আমাদের দেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেসব খাবার পরিবেশিত হয়, তা খেতে সুস্বাদু হলেও মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিশেষ করে ৪০ থেকে ৪৫ বয়সোর্ধ্ব মানুষের জন্য। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও ক্যান্সার জাতীয় প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে হলে বিয়েশাদি ও অন্যান্য সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে ঘি, মাখন, ডালডা, চর্বি বা প্রচুর তেলসমৃদ্ধ পোলাও, রোস্ট, বিরিয়ানি, খাসি ও গরুর গোশত খাওয়া কমাতে হবে। জাংকফুড স্বাস্থ্যকর নয়। এসব খাবারে পুষ্টি কম, চর্বি বেশি। এ ছাড়া এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর লবণ, চিনি, মেয়নেজ সোডিয়াম গ্লুটামেট ও ট্রাটাজিন জাতীয় বিতর্কিত খাদ্যোপকরণ। অন্যান্য দরকারি খাবারের মতো জাংকফুডে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও আঁশ কম থাকে। ম্যাকডোনাল্ড, বার্গারকিং, কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন, পিৎজা, হ্যামবার্গার, ফ্রেঞ্চফ্রাই জাংকফুডের কিছু উদাহরণ। জাংকফুডে প্রচুর চিনি ও চর্বি থাকে বলে এমন খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াসহ উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, ক্যান্সারের মতো বহু জটিল রোগের উৎপত্তি হতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। খাবার হতে হবে কম ক্যালরিযুক্ত ও বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ। জৈব খাবার শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। জৈব খাদ্য বলতে বোঝায়, যা কীটনাশক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই উৎপাদন করা হয়। আমাদের খাবারে কম করে হলেও অর্ধেক হতে হবে জৈব শাকসবজি ও ফলমূল। বাকি খাদ্যের মধ্যে থাকতে হবে অর্গানিক ভুসিসমৃদ্ধ শস্য, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বিচি ও তেল। সবচেয়ে ভালো তেল হলো তিসি বিচির তেল, জলপাই থেকে প্রাপ্ত তেল, যাকে আমরা অলিভ অয়েল বলে থাকি। সয়াবিন তেলই আমরা বেশি খাই অন্যান্য তেলের দাম বেশি বলে। পরিশোধিত বা পরিমার্জিত শর্করা, চিনি, সাদা রুটি, ময়দা, কেক, কুকিজ, পিৎজা ও পেস্ট্রি বর্জন করে অঙ্কুরিত ও সমপূর্ণ পেস্তা বা আটা খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত বাঞ্ছনীয়। খাসি ও গরুর মাংস কম খেতে হবে। প্রোটিন হিসেবে মাছ ও মুরগির মাংস উৎকৃষ্ট। মাংসের চেয়ে শরীরের জন্য মাছ ভালো। ট্রান্সফ্যাট হৃদরোগ সৃষ্টির সহায়ক। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দেওয়া দরকার। অর্গানিক ডিম, দুধ ও দই স্বাস্থ্যকর খাবার। ভিটামিন-সি, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-ই, সেলেনিয়াম ও পলিফেনোল শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। সব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎকৃষ্ট উৎস ফলমূল, শাকসবজি ও সবুজ চা। মনে রাখবেন, ওষুধ কম্পানি কর্তৃক উৎপাদিত ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের চেয়ে প্রাকৃতিক ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অনেক বেশি কার্যকর ও সস্তা। কোমল পানীয়তে চিনি ও ক্যাফেইনের উপস্থিতি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে ওজন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়াসহ বহু রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পেপসি, কোকা-কোলা জাতীয় পানীয় প্রচণ্ড এসিডিক হয় ফসফরিক এসিডের উপস্থিতির কারণে। শিশুদের জন্য এসব পানীয় ভীষণ ক্ষতিকর; যদিও বাচ্চারা তা খুবই পছন্দ করে। সবার মনে রাখা দরকার, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও শরীরের ওপর অত্যাচারের কারণে আমাদের সবারই কোনো না কোনো সময় অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতি হওয়ার আগেই সাবধান হলে জীবন হবে সুস্থ, সুন্দর ও উপভোগ্য। অজ্ঞতা, অসচেতনতা, অবহেলা ও ছোটখাটো ভুলের জন্য আমরা অনেক সময় বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে খুব ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। পচা, বাসি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করুন। সম্ভব হলে ঘরের বাইরের খাবার না খাওয়াই উত্তম। বাইরে খেতেই যদি হয় তবে খাবারের মান যাচাই করুন। বাজারে প্রচলিত ময়লা টাকা-পয়সায় বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকে। টাকা-পয়সা লেনদেনের পর হাত ভালো করে না ধুয়ে খাবার মুখে দেবেন না। ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিবার খাবারের আগে হাত ভালো করে ধুয়ে হাতের পানি পরিষ্কার টিস্যু বা টাওয়েল দিয়ে মুছে ফেলুন। এ সতর্কতা পালন করলে আপনি বহু মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাবেন। সালাদ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক। সালাদ অনেক সময় জীবাণু সংক্রমণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

যদি কেউ নিয়মিত ব্যায়াম করে, প্রয়োজনীয় ঘুমসহ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয় ও বদ-অভ্যাস ত্যাগ করে, তবে তার হৃদরোগের ঝুঁকি ৮০ শতাংশ, ডায়াবেটিস ৯০ শতাংশ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়। সুস্থ জীবনের জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। অলস জীবন মানেই অসংখ্য রোগের আশঙ্কা।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


সুষম খাদ্য কি

উত্তর:

সুষম খাদ্য বলতে বুঝায় সঠিক অনুপাতে বিভিন্ন ধরণের খাবার খাওয়া এবং শরীরের স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন করতেএবং সুস্থ্য রাখতে সঠিক পরিমাণে খাবার এবং পানীপান করা। সুষম খাদ্য শর্করা, ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং তরল পদার্থ যথাযথ অনুপাত সরবরাহ করে। সর্বোত্তম স্বাস্থ্য এবং ওজন বজায় রাখার জন্য, একটি সামগ্রিক ভারসাম্যযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণের ফলে আপনি আপনার মনকে দৃঢ় ও সুস্থ রাখতে পারবেন এবং রোগ এবং স্বাস্থ্যগত জটিলতা থেকে মুক্তি পাবেন, তাছাড়া স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে, দেহের মেদ কমাতে, আপনার শরীরকে শক্তি সরবরাহ করবে, ভাল ঘুম সরবরাহ করে।

সুষম খাদ্যের তালিকা:

  • শাকসবজি এবং শিম (মটরশুটি)
  • শস্য বা দানা জাতীয় খাদ্য(গম, ভুট্টা, ভুট্টা, বাজরা, ওট, চাল, আটা, পাস্তা ইত্যাদি)
  • নিয়মিত ফল গ্রহণ করুন
  • চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, বাদাম জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন
  • দুধ, পনির, দই জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সুষম খাদ্যের উপাদান ৬টি:

  1. আমিষ/প্রোটিন
  2. শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
  3. চর্বি
  4. ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ
  5. খনিজ উপাদান
  6. পানি

সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা:

  • এটি আমাদের দেহে সমস্ত প্রয়োজনীয় শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।সুষম খাবার আমাদের শরীরকে অসংখ্য রোগ থেকে রক্ষা করে।দেহ বৃদ্ধি এবং মেরামতে কাজ করে। তাছাড়া নতুন কোষ গঠনের জন্য এটিতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ আকারে পুষ্টি প্রয়োজন যা আমরা সুষম খাদ্য হতে পাই।এটি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।সুষম খাবার স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

H.S.C

Leave a Comment