মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুয়েজ খালের ভূমিকা আলোচনা করো

৩. মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুয়েজ খালের ভূমিকা আলোচনা করো।

সুয়েজ খাল কি।
সুয়েজ খালের মানচিত্র।
সুয়েজ খালের গুরুত্ব।

উত্তর সমূহ:

সুয়েজ খাল কি।

উত্তর:

সুয়েজ খাল পৃথিবীর দীর্ঘতম কৃত্রিম সামুদ্রিক খাল, যা মিশরের সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিমে অবস্থিত । এই খালটি উত্তরে ভূমধ্যসাগর ও দক্ষিনে লোহিত সাগরকে যুক্ত করেছে । ২০১০ সালে গৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০ কিমি, প্রস্থ প্রায় ২০৫ মিটার এবং গভীরতা প্রায় ২৪ মিটার । এই খালের প্রবেশপথে ভূমধ্যসাগরের তীরে পোর্ট সৈয়দ এবং শেষপ্রান্তে লোহিত সাগরের তীরে পোর্ট সুয়েজ অবস্থিত ।

এটি একটি একলেন বিশিষ্ট খাল, যাতে জলতল নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো লকগেট নেই । সমুদ্রের জল এই খালের ভিতর দিয়ে অবাধে প্রবাহিত হয় । ফরাসি প্রকৌশলী ফার্দিনান্দ দে লেসেপ্স – এর তত্ত্বাবধানে ১৮৫৯ সালে এই খালের নির্মাণকার্য শুরু হয়, যা ১৮৬৯ সালে সম্পন্ন হওয়ার পর নৌ-চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় । এই খালের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা মিশরের সুয়েজ ক্যানাল অথরিটির উপরে ন্যাস্ত ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 


সুয়েজ খালের মানচিত্র।

উত্তর:

এই খালটি উত্তরে ভূমধ্যসাগর ও দক্ষিনে লোহিত সাগরকে যুক্ত করেছে । ২০১০ সালে গৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০ কিমি, প্রস্থ প্রায় ২০৫ মিটার এবং গভীরতা প্রায় ২৪ মিটার । এই খালের প্রবেশপথে ভূমধ্যসাগরের তীরে পোর্ট সৈয়দ এবং শেষপ্রান্তে লোহিত সাগরের তীরে পোর্ট সুয়েজ অবস্থিত ।

4307073 orig
suez khal
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 


সুয়েজ খালের গুরুত্ব।

উত্তর:

এই খাল তৈরির আগে কোনো জাহাজকে ইউরোপ থেকে দক্ষিণ এশিয়া আসতে হলে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে আসতে হতো । যার ফলে পৃথিবীর বড় বড় জাহাজ কোম্পানিগুলোকে জ্বালানি তেল বাবদ গুনতে হতো মোটা অঙ্কের টাকা।তাছারাও নৌপথে পণ্য বহনকারী জাহাজ গুলও ভারত মহাদেশ থেকে ইউরোপে যেতে সময় নিত প্রায় ৪০-৫০ দিন ।

এ খালের কারণে ইউরোপ ও ভারতের মাঝে সমুদ্রপথের দূরত্ব প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার কমে গেছে। আগে যেখানে লাগত ৪০-৫০ দিন এখন সেখানে মাত্র ২০ দিনেই জাহাজ পৌঁছে যেতে পারে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে। বর্তমান বিশ্বের সমুদ্র বাণিজ্যের ৫ ভাগ আসে এই সুয়েজ খাল থেকে। ইজিপ্ট সুয়েজ খাল অথরিটির ২০০৩ এর রিপোর্ট অনুযায়ী সে বছর ১৭ হাজার ২২৪টি জাহাজ সুয়েজ খাল দিয়ে পার হয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর শিপিং ট্রাফিকের শতকরা ৮ ভাগই হয়েছে খালটি দিয়ে।

অন্য এক জরিপে দেখা গেছে ২০১২ সালে সুয়েজ খাল দিয়ে ১৭,২২৫টি জাহাজ যাতায়াত করেছে অর্থাৎ দিনে গড়ে ৪৭টি।বর্তমানে এ খালের সাথে আরও প্রায় ৩৫ কিলোমিটার বাইপাস খনন করা হয়েছে যার ফলে সুয়েজ খালে প্রবেশের সময় জাহাজগুলোর অপেক্ষার সময় ১৮ ঘণ্টা থেকে ১১ ঘণ্টায় নেমে এসেছে। ধারনা করা হচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যে দৈনিক ৯৭টি জাহাজ যেতে পারবে এই খাল দিয়ে ।যার ফলে মিশরের অর্থনীতে যোগ হবে ১৩২০ কোটি ডলার।

সুদূর অতীতে উত্তরে ইউরোপ ও দক্ষিণে এশিয়া মহাদেশের বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগে জলপথে পরিবহণ করতে গেলে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে তা সম্পন্ন করতে হত । এর ফলে একদিকে যে শুধু পরিবহণ খরচ ও সময়ই বহুলাংশে বৃদ্ধি পেত তা নয়,

সেইসাথে জাহাজগুলিকে উত্তমাশা অন্তরীপসংশ্লিষ্ট দূর্যোগপূর্ণ বিপজ্জনক আবহাওয়ার মধ্য দিয়েও চলাচল করতে হত । কখনও কখনও পণ্য জাহাজ থেকে নামিয়ে মিশরের স্থলপথ অতিক্রম করে , ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগরে এবং লোহিত সাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজে পারাপার করা হত ।

যা সমাধানের উদ্দেশ্যে ১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর তা নৌ-চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ায় সরাসরি উত্তরে ইউরোপের সাথে দক্ষিণে এশিয়া মহাদেশের নৌ-যোগাযোগ অনেক সহজতর হয়েছে । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর মধ্যে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ স্থাপন করে এই খালটি কলকাতা ও লন্ডনের মধ্যে প্রায় ৫৬০০ কিমি, মুম্বই ও লন্ডনের মধ্যে প্রায় ৭০০০ কিমি এবং সিঙ্গাপুর ও লন্ডনের মধ্যে প্রায় ৫৩০০ কিমি দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে ।

সুয়েজ খাল (Suez Canal)

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 
  1. সুবিধা / গুরুত্বঃ সুয়েজ খাল – এর সুবিধা / গুরুত্বগুলি হল নিম্নরূপ –
  2. এই খালটি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে ।
  3. সুয়েজ খালের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ২০% পণ্যদ্রব্য পরিবাহিত হয়, যে কারণে এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব অপরিসীম ।
  4. শুধুমাত্র পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেই নয়, যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ ।
  5. প্রাচ্যের দেশগুলি থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার কৃষিদ্রব্য এবং খনিজ দ্রব্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে বিভিন্ন প্রকার শিল্পজাত দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয় ।
  6. সুয়েজ খালের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, রাশিয়া ও রোমানিয়া অঞ্চলের খনিজ তেল বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন করা হয় ।
  7. পশ্চিম ইউরোপের কয়লা ও মধ্যপ্রাচ্যের খনিজ তেল এই খালপথে চলাচলকারী জাহাজগুলির জ্বালানি হিসাবে সরবরাহ করা হয় ।
  8. নিকটবর্তী অঞ্চল জনবহুল ও উন্নত এবং বন্দরের সংখ্যাও যথেষ্ট বেশী, যা নৌ-চলাচল ও মেরামতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনের জন্য সহায়ক ।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)] 

শিক্ষা

Leave a Comment