সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় বিট লবণের উল্লেখ আছে

বিট লবণ এক ধরনের খনিজ লবণ, যা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের হিমালয়ের আশপাশের লবণসমৃদ্ধ মাটির নিচ থেকে পাথর আকারে উত্তোলন করা হয়।

এই লবণ মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড ও অল্প সোডিয়াম সালফেট, সোডিয়াম বাইসালফেট, সোডিয়াম সালফাইড, আয়রন সালফাইড এবং হাইড্রোজেন সালফাইডের অপদ্রব্য দিয়ে তৈরি।

বিট লবণের নোনতা স্বাদটি সোডিয়াম ক্লোরাইড থেকে আসে। আয়রন সালফাইডের উপস্থিতির কারণে লবণটি গাঢ় বেগুনি রঙের হয়। সালফারের মিশ্রণগুলো বিট লবণের সুস্বাদের পাশাপাশি একটি অতি বৈশিষ্ট্যসূচক গন্ধ দেয়।

পচা ডিম ও নষ্ট দুধের গন্ধের জন্য হাইড্রোজেন সালফাইড মূলত দায়ী। আম্লিক বাইসালফেট বা বাইসালফাইটগুলো একটি হালকা টক স্বাদ দেয়।

বিট লবণ আমাদের দেশে মসলা হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদে বিট লবণকে শীতল মসলা বলা হয় এবং বিরচক ও হজম সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ লবণের তুলনায় বিট লবণ বেশি উপকারী। এই লবণ খাদ্য পরিপাকজনিত সমস্যা, পেটে গ্যাস হওয়া, বুক জ্বালাপোড়া করা, এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

ওজন কমানোর জন্যও বিট লবণ ভালো একটি সহায়ক হিসেবে কাজ করে। কারণ এই লবণ ঘন ঘন ক্ষুধাভাব কমায়। সাদা লবণ যেখানে রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, সেখানে বিট লবণ উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সে জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাদা লবণের পরিবর্তে বিট লবণ খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। এই লবণ ঘুমের সমস্যার জন্য দায়ী মেলাটোনিনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সাইনাসের সমস্যা, শুকনা কাশি, গলাব্যথা বা ঠাণ্ডা-সর্দির সমস্যায় গরম পানির সঙ্গে বিট লবণ মিশিয়ে গার্গল করলে উপকার পাওয়া যায়।

বিট লবণ স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্যও উপকারী। এই লবণ ত্বকের উপরিভাগের ময়লা ও মরা চামড়া দূর করতে প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া বন্ধ লোমকূপ খুলে ভেতরের ময়লা দূর করে ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দিতেও দারুণ কার্যকর।

তবে মাত্রারিক্ত বিট লবণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই চিকিৎসকরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৮ গ্রাম বিট লবণ খাওয়ার পরামর্শ দেন। অতিরিক্ত বিট লবণ শরীরের জন্য বিষ। সৃষ্টি করে ফ্লুরোসিসের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি।

S.S.C

J.S.C