সকল গিফেন দ্রব্যই নিকৃষ্ট দ্রব্য কিন্তু সকল নিকৃষ্ট দ্রব্য গিফেন দ্রব্য নয় , নিকৃষ্ট ও গিফেন পণ্যের মধ্যে পার্থক্য, গিফেন দ্রব্য কি? বা গিফেন দ্রব্য কাকে বলে?, অর্থনীতিতে গিফেন দ্রব্য কী? উদাহরণ দিয়ে ব্যাখা করুন

প্রশ্ন সমাধান: সকল গিফেন দ্রব্যই নিকৃষ্ট দ্রব্য কিন্তু সকল নিকৃষ্ট দ্রব্য গিফেন দ্রব্য নয় , নিকৃষ্ট ও গিফেন পণ্যের মধ্যে পার্থক্য, গিফেন দ্রব্য কি? বা গিফেন দ্রব্য কাকে বলে?, অর্থনীতিতে গিফেন দ্রব্য কী? উদাহরণ দিয়ে ব্যাখা করুন

“সকল গিফেন দ্রব্যই নিকৃষ্ট দ্রব্য কিন্তু সকল নিকৃষ্ট দ্রব্য গিফেন দ্রব্য নয়”-ব্যাখ্যা কর। 

নিরপেক্ষ রেখা তত্ত্বের মাধ্যমে গিফেন দ্রব্যের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হিকস অ্যালেনের একটি উল্লেযােগ্য বিষয়। গিফেন দ্রব্য হল একটি বিশেষ ধরনের নিকৃষ্ট দ্রব্য যার ঋণাত্মক আয় প্রভাব এতই শক্তিশালী যে,এটা ধনাত্মক পরিবর্তক প্রভাবকে ছাড়িয়ে যায়। ফলে দ্রব্যটির দাম কমলে এর চাহিদা হাস পায় এবং দাম বাড়লে এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এ ধরণের অবস্থার অস্তিত্ব তখন দেখতে পাওয়া যয় যখন একটি দ্রব্যের উপর ভােক্তার আয়ের একটি মােট অংশ ব্যীয়ত হয়। একমাত্র তখনই দ্রব্যটির দাম হাস পেলে ভােক্তার প্রকৃত আয় কীভাবে পরিবর্তন হয়। এ ধরনের নিকৃষ্ট দ্রব্যকে ‘গিফেন দ্রব্য বলে। ব্রিটিশ পরিসংখ্যানবিদ স্যার রবার্ট গিফেন ঊনবিংশ শতাব্দীতে তত্ত্বটি আবিষ্কার। করায় এর নামানুসারে দ্রব্যটির নাম হয়েছে গিফেন দ্রব্য।

নিকৃষ্ট দ্রব্য গিফেন দ্রব্য

চিত্রে একটি নির্দিষ্ট মূল্য ভােক্তার প্রাথমিক ভারসাম্যবস্থা IC1 রেখায় Q বিন্দুতে অর্জিত হয়েছে। এখন Y দ্রব্যের দাম স্থির থেকে X দ্রব্যের দাম হ্রাস পেলে নতুন বাজেট রেখা হয় PL2। এ PL2 বাজেট রেখায় IC2, নিরপেক্ষ রেখায় R বিন্দুতে ভােক্তা ভারসাম্য লাভ করে। চিত্রানুযায়ী নতুন ভারসাম্য বিন্দুতে ভোক্তা ভােগ হ্রাস করে X দ্রব্যের OM পরিমাণের পরিবর্তে ON পরিমাণ ভােগ করবে। চিত্রে MG হল ঋণাত্মক আয় প্রভাবের ফল, যাতে ভােক্তা X দ্রব্য কম ক্রয় করতে বাধ্য হয়। ফলে পরিবর্তক প্রভাব গতিশীল হয়ে ভােক্তাকে পুণরায় GN পরিমাণ X দ্রব্য ক্রয়ের জন্য প্রবৃত্ত করবে। অতএব, ঋণাত্মক আয় প্রভাব MG পরিবর্তক প্রভাব GN অপেক্ষা বড়। এটির ফলশ্রুতিতে মূল্য হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও ভােক্তার X দ্রব্যের MN পরিমাণ চাহিদা হ্রাস পাবে। এভাবে মূল্য প্রত্যক্ষভাবে পরিবর্তনের কারণে গিফেন দ্রব্যের দাম বাড়লে চাহিদা বাড়ে এবং দাম কমলে চাহিদা কমে। তবে একটি দ্রব্যকে গিফেন দ্রব্য বলতে হলে তিনটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

১। দ্রব্যটি শক্তিশালী ঋণাত্মক আয় প্রভাব সম্পন্ন হতে হবে। 

২। পরিবর্তক প্রভাব ছােট হবে। 

৩। নিকষ্ট দ্রব্যের উপর ভােক্তার আয়-ব্যয়ের অনুপাত অত্যন্ত বেশি হতে হবে। 

উপরিউক্ত আলােচনায় তাই প্রতীয়মান যে, একটি দ্রব্যকে গিফেন দ্রব্য হতে হলে তাকে অবশ্যই নিকৃষ্ট দ্রব্য হতে হবে এবং একটি নিকৃষ্ট দ্রব্য কতিপয় শর্ত সাপেক্ষ গিফেন দ্রব্যের রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ প্রামণিত হল “সকল গিফেন দ্রব্য নিকৃষ্ট দ্রব্য কিন্তু সকল নিকৃষ্ট দ্রব্য গিফেন দ্রব্য নয়।


আরো ও সাজেশন:-

ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ রবার্ট গিফেন অর্থনীতিতে গিফেন দ্রব্যের ধারণাটি সম্পৃক্ত করেন। গিফেন দ্রব্য বলতে তিনি এমন কিছু সস্তা ও নিকৃষ্ট দ্রব্যকে বুঝান, যা সাধারণত সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা ভোগ করে থাকে। চাহিদা বিধি অনুসারে কোনো দ্রব্যের দাম হ্রাস পেলে চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দাম বৃদ্ধি পেলে চাহিদা হ্রাস পায়। কিন্তু গিফেন দ্রব্যের ক্ষেত্রে চাহিদা বিধির এ নিয়ম প্রতিফলিত হয় না। গিফেন দ্রব্যের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত দাম ভোগ রেখা (PCC) সাধারণ দ্রব্যের PCC রেখা থেকে ভিন্ন হয়।

গিফেন দ্রব্যঃ জীবনধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নিকৃষ্ট দ্রব্য; যেমন-মোটা চাল, মোটা কাপড় প্রভৃতির দাম বৃদ্ধি পেলে দরিদ্র জনসাধারণ অন্যান্য উৎকৃষ্ট দ্রব্য; যেমন- মাছ, মাংস প্রভৃতির ভোগ কমিয়ে দিয়ে এসব চড়া দামের নিকৃষ্ট দ্রব্যগুলি বেশি পরিমাণে ক্রয় করে। সুতরাং এসব দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম বাড়লে চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দাম কমলে চাহিদা হ্রাস পায়। অর্থাৎ এসব দ্রব্যের ক্ষেত্রে চাহিদা বিধি কার্য্কর হয় না। স্যার রবার্ট গিফেন এসব দ্রব্যের কথা প্রথম উল্লেখ করেন বলে তার নামানুসারে এগুলোকে গিফেন দ্রব্য বলা হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

স্বাভাবিক দ্রব্যের ক্ষেত্রে আয় প্রভাব ধনাত্মক হয়। কিন্তু নিকৃষ্ট দ্রব্যের ক্ষেত্রে আয় প্রভাব ঋণাত্মক হয়ে থাকে। আয় প্রভাব বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে ঋণাত্মক হলেও পরিবর্তক প্রভাব কখনোই ঋণাত্মক হয় না। অর্থাৎ পরিবর্তক প্রভাব সব ক্ষেত্রেই ধনাত্মক হয়ে থাকে। গিফেন দ্রব্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তক প্রভাব ধনাত্মক হলে ঋণাত্মক আয় প্রভাব তা অপেক্ষা বেশি শক্তিশালী হয়। ফলে এসব ক্ষেত্রে দাম প্রভাব ঋণাত্মক হয়। চাহিদাও হ্রাস পায়। সুতরাং যেসব নিকৃষ্ট দ্রব্যের ক্ষেত্রে ধনাত্মক পরিবর্তক প্রভাব অপেক্ষা ঋণাত্মক আয় প্রভাব অধিকতর শক্তিশালী হয়, সেসব দ্রব্যকে গিফেন দ্রব্য বলে।

কোনো দ্রব্যের মূল্যের পরিবর্তন ঘটলে ভোক্তার দ্রব্য ক্রয়ে পরিবর্তন আসে। একে দাম/মূল্য প্রভাব বলে মূল্য প্রভাব হলো আয় ও বিকল্পন প্রভাবের সমষ্টি। গিফেন দ্রব্য হলো একটি বিশেষ ধরনের নিকৃষ্ট দ্রব্য, যা দ্রব্যের দাম ও চাহিদার সাথে একমুখী সম্পর্ক নির্দেশ করে। স্যার রবার্ট গিফেন মূলত সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর লোকদের অভাববোধ ও চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখেই এ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন।

নিকৃষ্ট দ্রব্য কি?

যেসব দ্রব্য সামগ্রী দরিদ্র জনসাধারণ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকে। যেমন- মোটা চাল, মোট কাপড়, নিম্ন মানের খাদ্য সামগ্রী ইত্যাদিকে নিকৃষ্ট দ্রব্য বলা চলে। তবে অন্য পরিভাষায় গিফেন দ্রব্যকেই নিকৃষ্ট দ্রব্য বলা হয়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment