শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি কি শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি গুলো বর্ণনা করো


শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি কি শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি গুলো বর্ণনা করো

উত্তর:

দেহ, মন এবং আত্মার সর্বোচ্চ বিকাশ সাধন হচ্ছে শিক্ষা। এবং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই বিকাশ সাধন করা হয় সেটিই হচ্ছে শিক্ষা গ্রহণ।

আভিধানিক অর্থে- শিক্ষা গ্রহণ হচ্ছে নতুন জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মূল্যবোধ এবং দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন অথবা উপস্থিত চিন্তাধারা পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া।[১]

মানুষ, প্রানি, এমনকি কিছু যন্ত্রও শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে; এছাড়া কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম এমন প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে।[২] কিছু শিক্ষা পাওয়া যায় ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই (যেমন: গরম পাত্র দ্বারা হাত পুড়ে যাওয়া), কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা এবং দক্ষতা পুণরাবৃত্তিমুলক অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই অর্জন করা যায়। শিক্ষা গ্রহণের কারণে সংঘটিত পরিবর্তনগুলো‌ সারাজীবনের জন্য থেকে যায়, এবং এমনসব শিক্ষা যেগুলো হারিয়ে গেছে বলে মনে হয় সেগুলোকে ভুলে যাওয়া শিক্ষা থেকে পৃথক করা প্রায় অসম্ভব।[৩]

মানুষ এবং তাদের পরিবেশের পরস্পরের নিরন্তর মিথস্ক্রিয়ার ফলস্বরুপ মানুষ জন্মের পূর্বে থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ করতে থাকে। শিক্ষা গ্রহণের সাথে জড়িত স্বভাব এবং প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন শিক্ষাগত ক্ষেত্রে যেমন- শিক্ষাবিষয়ক মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুমনোবিজ্ঞান, পরীক্ষামূলক মনোবিজ্ঞান এবং শিক্ষাবিজ্ঞানে চর্চা করা হয়। এসব বিষয়ের উপর গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের কতকগুলো পদ্ধতি সনাক্ত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, শিক্ষা গ্রহণ হতে পারে খাপ খাওয়ানো অথবা চিরায়ত কন্ডিশনিং, সাপেক্ষ কন্ডিশনিং বা জটিল কর্মকান্ড হিসেবে খেলাধুলার মাধ্যমে, এটি শুধুমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণির মধ্যে দেখা যায়।[৪][৫]

প্রকারভেদ
অসহযোগী শিক্ষা গ্রহন
সহজ ভাষায়, অসহযোগী শিক্ষা গ্রহন বলতে “কোনো উদ্দীপক দ্বারা বাবার সাড়া জাগানোর কারণে ঐ উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দেওয়ার তীব্রতায় যে আপেক্ষিক পরিবর্তন আসে সেটিকে বোঝায়। সংবেদী অভিযোজন, ক্ষত অথবা অবসাদ কোনোভাবেই অসহযোগী শিক্ষাগ্রহন পদ্ধতির আওতায় পড়ে না।”[৬]

অসহযোগী শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতিকে খাপ খাওয়ানো এবং সংবেদনশীলতা এই দুইভাগে ভাগ করা যায়।

খাপ খাওয়ানো
খাপ খাওয়ানো অসহযোগী শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতির একটি উদাহরণ যেটিতে উদ্দীপনার পুণরাবৃত্তির কারণে সেই উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দেওয়ার প্রবণতা বা সম্ভাবনা কমে যায়। এই সাড়া দেওয়া সাধারণত অভিব্যক্তি বা স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া হয়। তাই খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়া থেকে বিলোপ সাধন প্রক্রিয়াকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা উচিত, কারণ বিলোপ সাধন এক ধরনের সহযোগী প্রক্রিয়া। অপারেন্ট বিলোপ সাধন প্রক্রিয়ায়, উদাহরনস্বরুপ, প্রতিক্রিয়া হ্রাস পায় কারণ এটি আর পুরস্কারের জন্য অনুসৃত হয় না। খাপ খাইয়ে নেয়ার উদাহরণস্বরুপ আমরা পাখিদের কথা বলতে পারি- সম্প্রতি ধরা কোনো পেঁচাকে খাঁচায় বন্দি করলে প্রথমদিকে এটি একটি আসল খেচরের মতো চেঁচামেচি করবে। কিন্তু শিঘ্রই এটির প্রতিক্রিয়া কমে যাবে কারণ এটি খাপ খাইয়ে নেবে। এখন যদি আরেকটি পেঁচাকে এটির সাথে রাখা হয় বা সেটাকেই আজাদ করে আবার বন্দি করা হয় তবে সেটি আবার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পাখিটি শুধুমাত্র একটি বিশেষ উদ্দীপকের( এক্ষেত্রে খাঁচা) প্রতি খাপ খাইয়ে নিয়েছে। খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াটি এমনসব উদ্দীপনার ক্ষেত্রে দ্রুত ঘটে যেগুলো উচ্চ হারে সংঘটিত হয়; নিম্ন হারে সংঘটিত উদ্দীপনার ক্ষেত্রে খাপ খাওয়ানো ধীর গতিতে হয়, দুর্বল এবং সবল উদ্দীপনার ক্ষেত্রেও যথাক্রমে একই কথাটি সত্য।[৭] খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াটি পৃথিবীর সকল প্রানির জন্য আবশ্যক, এমনকি অনুভূতিশীল উদ্ভিদ Mimosa pudica[৮] এবং বড় প্রটোজোয়ান Stentor coeruleus[৯] -এর জন্যও এ প্রক্রিয়া জরুরি।

সংবেদনশীলতা
সংবেদনশীলতা অসহযোগী শিক্ষা গ্রহণের একটি উদাহরণ যেটিতে উদ্দীপনার পুণরাবৃত্তির ফলে প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এই প্রত্যয়ের ভিত্তি হচ্ছে একটি ধারণা। ধারণাটি কিছুটা এমন— ক্ষতিকর বা ভয়-প্রদর্শক উদ্দীপকের সংস্পর্শে আসার কারণে অপগমন বা পরিত্রাণের মতো উদ্দীপনার প্রতিবাদী অভিব্যক্তিগুলো তীব্রতর হয়ে যায়।[১০] কোনো ব্যক্তি অবিরত হাত ঘষতে থাকলে তার প্রন্তীয় স্নায়ুতে পুণরাবৃত্তিমুলক এবং শক্তিবর্ধক যে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় তা এই প্রত্যয়ের একটি দৈনন্দিন উদাহরণ। কিছুক্ষণ পর এটি একটি উষ্ণ অনুভূতি সৃষ্টি করে যা অবশেষে যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতিতে পরিণত হয়। প্রান্তীয় স্নায়ুর স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট এই যন্ত্রণা নির্দেশ দেয় যে উদ্দীপনাটি ক্ষতিকর। সংবেদনশীলতাকে জীবের অভিযোজী এবং অনভিযোজী শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতির মাঝামাঝি এক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সক্রিয় শিক্ষা গ্রহন
পরীক্ষামুলক শিক্ষা গ্রহন পড়া বা শোনার মতো নিষ্ক্রিয় শিক্ষাগ্রহনের চেয়ে অধিক কার্যকর।[১১]
পরীক্ষামুলক শিক্ষা গ্রহন পড়া বা শোনার মতো নিষ্ক্রিয় শিক্ষাগ্রহনের চেয়ে অধিক কার্যকর।[১১]
সক্রিয় শিক্ষা গ্রহণ তখন ঘটে যখন ব্যক্তি তার শিক্ষা গ্রহণের অভিজ্ঞতার নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নেয়। যেহেতু তথ্যকে অনুধাবন করতে পারা শিক্ষা গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য, তাই একজন শিক্ষার্থীর তার বোধগম্য এবং অবোধগম্য বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক। এমনটা করার ফলে, তারা কোনো বিষয়ের প্রতি নিজেদের দক্ষতা পরিমাপ করতে পারে। সক্রিয় শিক্ষা গ্রহণ শিক্ষার্থীদেরকে তাদের মনে সংলাপ সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করে যাতে তারা বোধশক্তিকে প্রকাশ করতে পারে। এটা এবং এরকম আরো মেটাকগনিটিভ কৌশল সময়ের সাথে একটা শিশুকে শেখানো উচিত। মেটাকগনিশন নিরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, সক্রিয়ভাবে শিক্ষা গ্রহণে উচ্চমানের শিক্ষা অর্জন করা যায়।[১২] এছাড়াও শিক্ষার্থীরা শেখার প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হয় যখন শুধু তাদের শেখার পদ্ধতিই নয় বরং শেখার বিষয়বস্তুও তারা নিজেরা নির্ধারণ করে।[১৩] সক্রিয় শিক্ষা গ্রহণ ছাত্র-কেন্দ্রীক শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্য। অপরদিকে, নিষ্ক্রিয় শিক্ষা গ্রহণ এবং সরাসরি নির্দেশ শিক্ষক-কেন্দ্রিক শিক্ষার(বা গতানুগতিক শিক্ষা) মূল বৈশিষ্ট্য।

জটিল অভিযোজী প্রক্রিয়া হিসেবে মানুষের শিখন পদ্ধতির উপর পিটার বেলহলভেকের করা গবেষণায় জানা যায় যে একজন ব্যক্তির ধারণাই তার লং-টার্ম স্মৃতিতে নতুন জ্ঞান একত্রিত করতে তথ্য ধারণের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে; এটি নির্দেশ করে যে, শিক্ষা সহজাতভাবে এক স্বাধীন এবং সক্রিয়‌ প্রক্রিয়া।[১৪] ছাত্র-কেন্দ্রিক শিক্ষার একটি পদক্ষেপ হিসেবে, অভিযোজী স্বভাবকে উৎসাহিত করার জন্য “ক্রিয়া-চিন্তা-ক্রিয়া” এর আবর্তনশীল প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে ইউনিসিস্ট রিফ্লেকশন নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা শিক্ষার্থীর মনে অভিযোজী জ্ঞানীয় বস্তু স্থাপন করে।[১৫][১৬]

সহযোগী শিক্ষা গ্রহন
সহযোগী শিক্ষা গ্রহণ হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া যাতে কোনো ব্যক্তি বা প্রাণি দুইটি উদ্দীপনা অথবা ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক অনুধাবন করতে শেখে।[১৭] চিরায়ত কন্ডিশনিং-তে আগে থেকে নিরপেক্ষ উদ্দীপককে অপর একটি উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী উদ্দীপকের সাথে বারবার প্রয়োগ করা হয় যতক্ষণ না ঐ নিরপেক্ষ উদ্দীপকটি নিজে থেকে অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে। সাপেক্ষ কনডিশনিং-তে কোনো উদ্দীপকের উপস্থিতিতে যখন কোনো আচরণকে বলবৎ করা হয় বা, তার জন্য শাস্তি দেওয়া হয় তখন পরবর্তীতে সেই উদ্দীপকের উপস্থিতিতে‌ সেই আচরণ ঘটার সম্ভাবনা যথাক্রমে বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়।

সাপেক্ষ কন্ডিশনিং
সাপেক্ষ কন্ডিশনিং-তে প্রদত্ত আচরণ করার পর উৎসাহ (পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে) বা শাস্তি দেওয়ার ফলে সেই আচরণের পুণরাবৃত্তি বা রুপ বা উভয়ই পরিবর্তিত হয়। সেই আচরণ ঘটার সময়ে উপস্থিত উদ্দীপনাটি আচরণের এই অদলবদল নিয়ন্ত্রণ করে।

চিরায়ত কন্ডিশনিং
চিরায়ত কন্ডিশনিং এ একটি স্বতন্ত্র উদ্দীপককে (যেটি অব্যর্থভাবে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে) অপর একটি নিরপেক্ষ উদ্দীপকের (যেটি সাধারণত কোনো উদ্দীপনা সৃষ্টি করে না) সাথে বারবার প্রয়োগ করা হয়। এই আবেশ করার ফলে স্বতন্ত্র এবং নিরপেক্ষ (এখন সাপেক্ষ) উদ্দীপকের কারণে উক্ত উদ্দীপনাটি সৃষ্টি হয়। আবিষ্ট উদ্দীপকের কারণে সৃষ্ট এই উদ্দীপনাকে আবিষ্ট উদ্দীপনা বলে। এই প্রক্রিয়ার চিরায়ত উদাহরণ হচ্ছে ইভান পাভলভ এবং তার কুকুরগুলো।[১০] পাভলভ তার কুকুরগুলোকে মাংসচূর্ণ খেতে দিলে স্বাভাবিক কারণেই কুকুরগুলোর মুখ থেকে লালাক্ষরণ হলো। এখানে মাংসচূর্ণ হলো স্বতন্ত্র উদ্দীপক এবং লালাক্ষরণ হচ্ছে স্বতন্ত্র উদ্দীপনা। পাভলভ খাবার দেওয়ার ঠিক পূর্বমুহূর্তে ঘণ্টা বাজান। প্রথমবার ঘণ্টা বাজালে তথা নিরপেক্ষ উদ্দীপকের প্রয়োগে কুকুরগুলোর লালাক্ষরণ হলো না, কিন্তু কিছুক্ষণ পর মাংস খাওয়ার সময় তারা লালাক্ষরণ করলো। এমনভাবে বেশ কয়েকবার ঘণ্টা এবং মাংস একসাথে দেওয়ার ফলে কুকুরটি শিখে ফেললো যে ঘণ্টাধ্বনিটি মাংস আসার কথা নির্দেশ করে, এবং কুকুরগুলো ঘণ্টার ধ্বনি শুনে লালাক্ষরণ করতে শুরু করলো। একবার এটা ঘটার পর ঘণ্টাটি হয়ে গেল সাপেক্ষ উদ্দীপক এবং লালাক্ষরণ হয়ে গেল সাপেক্ষ উদ্দীপনা। চিরায়ত কন্ডিশনিং অনেকগুলো প্রজাতিতে প্রদর্শিত হয়েছে। যেমন মৌমাছির তুণ্ড বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ার দৃষ্টান্ত।[১৮] এটি সম্প্রতি বাগানের মটর উদ্ভিদেও প্রদর্শিত হয়েছে। [১৯]

পর্যবেক্ষণীয় শিক্ষা গ্রহন
পর্যবেক্ষণীয় শিক্ষা হচ্ছে সেই শিক্ষা যেটি অপরের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে অর্জন করা যায়। এটি এক ধরনের সামাজিক শিক্ষা যা বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। মানুষকে এরকম শিক্ষা গ্রহণের জন্য বেশি কিছু করতে হয় না, কিন্তু তার পরিবর্তে আমাদের আশেপাশে বাবা-মা, সহদর, বন্ধুবান্ধব এবং শিক্ষক প্রয়োজন।

মনকে প্রভাবিত করা
মনকে প্রভাবিত করা এক ধরনের শিক্ষা যেটি জীবনের একটি বিশেষ অংশে ঘটে থাকে, এটি দ্রুত এবং আচরণের প্রভাব থেকে স্বতন্ত্র একটি প্রক্রিয়া। সন্তানের ক্ষেত্রে মনকে প্রভাবিত করা এমনভাবে ঘটে যে অল্পবয়স্ক প্রাণি বিশেষ করে পাখিগুলো কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সাথে এমন বন্ধন তৈরি করে এবং প্রতিক্রিয়া দেখায় যেন সেটি তার মা হয়। ১৯৩৫ সালে একজন অস্ট্রিয়ান প্রাণিবিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন যে কিছু পাখি একটা বস্তুর সাথে বন্ধন সৃষ্টি করে এবং তাকে অনুসরণ করে যদি বস্তুটি শব্দ করে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

খেলাধুলা
খেলা সাধারণত নিজের মধ্যে অন্তহীন এক আচরণ নির্দেশ করে, কিন্তু ভবিষ্যতে একই রকম পরিস্থিতিতে কর্মদক্ষতার উন্নতি ঘটায়। এই আচরণ মানুষসহ আরো অনেক ভার্টিব্র্যাটদের মধ্যে লক্ষ করা যায়, কিন্তু এদের অধিকাংশ স্তন্যপায়ী এবং পাখি।

সংস্কৃত সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহন
প্রাসঙ্গিক শিক্ষা গ্রহন
বহুমাধ্যম শিক্ষা গ্রহন
বহুমাধ্যম শিক্ষা গ্রহনে তথ্য সংগ্রহের জন্য মানুষের দৃষ্টি এবং শ্রুতি উভয় ইন্দ্রিয় ব্যবহৃত হয়। এই প্রকারের শিক্ষা গ্রহণ ডুয়াল কোডিং থিওরির(Paivio 1971) উপর নির্ভরশীল।

ই-লার্ণিং এবং উদ্দীপ্ত শিক্ষা গ্রহন
মুখস্থ শিক্ষা গ্রহন
অর্থবহ শিক্ষা গ্রহন
ব্যক্তিগত শিক্ষা গ্রহন
ব্যক্তিগত শিক্ষা গ্রহন হচ্ছে সেই শিক্ষা যাতে একজন তার নিত্যদিনের বিভিন্ন পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা থেকে শেখে। (যেমন, রাস্তায় চলার সময় আমরা সামনের দিকে দেখে চলি কারণ আমরা শিখেছি যে এমনটি না করলে আসমরা বিপদে পড়তে পারি)। এটা হচ্ছে জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ, মা-বাবার সাথে খাবার খাওয়া, খেলা, আবিষ্কার ইত্যাদি করার সময়।

প্রমাণ-নির্ভর শিক্ষাগ্রহন
প্রমাণ-নির্ভর শিক্ষা গ্রহন হচ্ছে শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করার জন্য পরিকল্পিত বৈজ্ঞানিক অধ্যয়নের ব্যবহার। স্থানান্তর পুণরাবৃত্তির মতো তথ্য-নির্ভর শিক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের হার বৃদ্ধি করতে পারে।[২০]

আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন
অবিরাম সক্রিয় পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিত্র, en:University of Bologna, ইতালী।
অবিরাম সক্রিয় পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিত্র, en:University of Bologna, ইতালী।
আনুষ্ঠানিক শিক্ষা হলো সেই শিক্ষা যেখানে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে, অনেকটা স্কুল-কলেজের শিক্ষার মতো। এটি একটি সংঘবদ্ধভাবে পরিচালিত পদ্ধতি। শিক্ষা গ্রহণের আনুষ্ঠানিক পদ্ধতিতে বা প্রশিক্ষণে শিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট থাকে।[২১]

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন
অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা হচ্ছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা। উদাহরণস্বরুপ, বিভিন্ন ক্লাব, (আন্তর্জাতিক) যুবসংস্থা কিংবা কর্মশালায় একই রকম আগ্রহের ব্যক্তিদের সাথে দৃষ্টভঙ্গি আদান-প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার অংশ।

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন এবং মিলিত পন্থা
স্পর্শিনী শিক্ষা গ্রহন
মত বিনিময় শিক্ষা গ্রহন
মত বিনিময় শিক্ষা গ্রহন হচ্ছে মত আদান প্রদানের মাধ্যমে শেখার পদ্ধতি।

আনুষঙ্গিক শিক্ষা গ্রহন
ক্ষেত্র
বিনিময়
শিক্ষাকে প্রভাবিত করার প্রভাবক
বহিস্থ প্রভাবক
অন্তস্থ প্রভাবক
প্রাণির বিবর্তনে
উদ্ভিদে
যন্ত্রের শিক্ষা গ্রহন

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

অনুরুপ প্রশ্ন উত্তর


শিক্ষাগ্রহণ কি

উত্তর:

দেহ, মন এবং আত্মার সর্বোচ্চ বিকাশ সাধন হচ্ছে শিক্ষা। এবং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই বিকাশ সাধন করা হয় সেটিই হচ্ছে শিক্ষা গ্রহণ।

আভিধানিক অর্থে- শিক্ষা গ্রহণ হচ্ছে নতুন জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মূল্যবোধ এবং দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন অথবা উপস্থিত চিন্তাধারা পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মানুষ, প্রানি, এমনকি কিছু যন্ত্রও শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে; এছাড়া কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম এমন প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। কিছু শিক্ষা পাওয়া যায় ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই (যেমন: গরম পাত্র দ্বারা হাত পুড়ে যাওয়া), কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা এবং দক্ষতা পুণরাবৃত্তিমুলক অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই অর্জন করা যায়। শিক্ষা গ্রহণের কারণে সংঘটিত পরিবর্তনগুলো‌ সারাজীবনের জন্য থেকে যায়, এবং এমনসব শিক্ষা যেগুলো হারিয়ে গেছে বলে মনে হয় সেগুলোকে ভুলে যাওয়া শিক্ষা থেকে পৃথক করা প্রায় অসম্ভব।

মানুষ এবং তাদের পরিবেশের পরস্পরের নিরন্তর মিথস্ক্রিয়ার ফলস্বরুপ মানুষ জন্মের পূর্বে থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ করতে থাকে। শিক্ষা গ্রহণের সাথে জড়িত স্বভাব এবং প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন শিক্ষাগত ক্ষেত্রে যেমন- শিক্ষাবিষয়ক মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুমনোবিজ্ঞান, পরীক্ষামূলক মনোবিজ্ঞান এবং শিক্ষাবিজ্ঞানে চর্চা করা হয়। এসব বিষয়ের উপর গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের কতকগুলো পদ্ধতি সনাক্ত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, শিক্ষা গ্রহণ হতে পারে খাপ খাওয়ানো অথবা চিরায়ত কন্ডিশনিং, সাপেক্ষ কন্ডিশনিং বা জটিল কর্মকান্ড হিসেবে খেলাধুলার মাধ্যমে, এটি শুধুমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণির মধ্যে দেখা যায়।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]


শিক্ষা গ্রহণে তোমার জীবনে কি প্রভাব বিস্তার তুলে ধরো

উত্তর:

 শিক্ষার উদ্দেশ্য :

প্রথমেই দেখা যাক, শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে মনীষীরা কে কি বলেছেন :

জন ডিউই বলেছেন, ‌শিক্ষার উদ্দেশ্য আত্ম উপলদ্ধি।
প্লেটোর মত হলো : শরীর ও আত্মার পরিপূর্ণ বিকাশ ও উন্নতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা সবই শিক্ষার উদ্দেশ্য অন্তর্ভূক্ত।


প্লেটোর শিক্ষক সক্রেটিসের মতে : শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো মিথ্যার বিনাশ আর সত্যের আবিষ্কার।
এরিস্টোটল বলেছেন : শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্যে হলো ধর্মীয় অনুশাসনের অনুমোদিত পবিত্র কার্যক্রমের মাধ্যমে সুখ লাভ করা।
শিক্ষাবিদ জন লকের মতে, শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে সুস্থ দেহে সুস্থ মন প্রতিপালনের নীতিমালা আয়ত্বকরণ।


বিখ্যাত শিক্ষাবিদ হার্বার্ট বলেছেন : শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে শিশুর সম্ভবনা ও অনুরাগের পূর্ণ বিকাশ ও তার নৈতিক চরিত্রের প্রকাশ।


কিন্ডার গার্টেন পদ্ধতির উদ্ভাবক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফ্রোয়েবেল এর মতে : শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে সুন্দর বিশ্বাসযোগ্য ও পবিত্র জীবনের উপলব্ধি।
কমেনিয়াসের মতে : শিশুর সামগ্রিক বিকাশই শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। আর মানুষের শেষ লক্ষ্য হবে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে সুখ লাভ করা।
পার্কার বলেছেন : পূর্ণাঙ্গ মানুষের আত্ম প্রকাশের জন্যে যেসব গুনাবলী নিয়ে শিক্ষার্থী এ পৃথিবীতে আগমন করেছে, শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে সেসব গুনাবলীর যথাযথ বিকাশ সাধন।
জীন জ্যাক রুশোর মতে : সুঅভ্যাসে গড়ে তোলাই শিক্ষার উদ্দেশ্য।
Bartrand Russell এর মন্তব্য হলো :
…….The education system we must aim at producing in the future is one which gives every boy and girl an opportunity for the best that exists.
স্যার পার্সীনান বলেছেন : শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো : চরিত্র গঠন, পরিপূর্ণ জীবনের জন্য প্রস্তুতি এবং ভালো দেহ ভালো মন গড়ে তোলা।
ডা: হাসান জামান বলেছেন :প্রত্যয় দীপ্ত মহত জীবন সাধনায় সঞ্জিবনী শক্তি সঞ্চার করাই শিক্ষার উদ্দেশ্য।


ড: খুরশীদ আহমেদের মতে : স্বকীয় সংস্কৃতি ও আদর্শের ভিত্তিতে সুনাগরিক তৈরি করা………এবং জাতির ধর্ম ও সংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন হওয়া উচিত শিক্ষার উদ্দেশ্য।
আল্লামা ইকবালের মতে : পূর্ণাংগ মুসলিম তৈরি করাই হবে শিক্ষার উদ্দেশ্য।

বিখ্যাত দার্শনিক ও ইসলামী চিন্তানায়ক সাইয়েদ মওদূদী (রা) বলেন :

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মানুষ কেবল চোখ দিয়েই দেখেনা, এর পেছনে রয়েছে তার সক্রিয় মন ও মগজ। রয়েছে তার একটা দৃষ্টিভংগি ও মতামত। জীবনের একটা উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আছে তার। সমস্যাবলী নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার একটা প্রক্রিয়া তার আছে। মানুষ যা কিছু দেখে, শুনে এবং জানে, সেটাকে সে নিজের অভ্যন্তরীণ মৌলিক চিন্তা ও ধ্যান ধারণার সাথে সামঞ্জস্যশীল করে নেয়। অতপর সেই চিন্তা ও ধ্যান ধারণার ভিত্তিতেই তার জীবন পদ্ধতি গড়ে উঠে। এই জীবন পদ্ধতিই হলো সংস্কৃতি। যে জাতি একটা স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, আকিদা বিশ্বাস ও উদ্দেশ্য লক্ষ্যর অধিকারী এবং যাদের রয়েছে নিজস্ব জীবনাদর্শ, তাদেরকে অব্যশ্যি তাদের নতুন প্রজন্মকে সেই স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, আকিদা বিশ্বাস, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও জীবনাদর্শের রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার বিকাশ ও উন্নয়নের যোগ্য করে গড়ে তোলা কর্তব্য। আর সে উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করেই গড়ে তুলতে হবে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা।১০

১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতভাবে শিশু অধিকার সনদ গৃহীত হয়। এতে চুয়ান্নটি অনুচ্ছেদ রয়েছে। অনুচ্ছেদ ২৮ শিশু শিক্ষা নিশ্চিত করার দলিল। অনুচ্ছেদ ২৯/১-এ শিক্ষার লক্ষ্য বর্ণনা করা হয়েছে। অনুচ্ছেদটি নিন্মরূপ :

শিক্ষার লক্ষ্য
অনুচ্ছদ : ২৯

১. শরিক রাষ্ট্রসমূহ এ ব্যাপারে সম্মত যে, শিশুদের দিক্ষা দানের ক্ষেত্রে লক্স্য থাকবে-
ক. শিশুর ব্যক্তিত্ব, মেধা এবং মানসিক ও শারীরিক সামর্থের পরিপূর্ণ বিকাশ;
খ. মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার এবং জাতিসংঘ ষোষণায় বর্ণিত নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ :
গ. শিশুর পিতা-মাতা তার নিজস্ব সাংস্কৃতিক সত্তা, ভাষা ও মূল্যবোধ, তার মাতৃভূমি এবং অপরাপর সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ :
ঘ. সমঝোতা, শান্তি, সহিষ্ণুতা, নারী-পুরুষের সমানাধিকার এবং সকল মানুষ নৃ-গোষ্টী, জাতীয় ও ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং আদিবাসী লোকজনের মধ্যে মৈত্রীর চেতনার আলোকে একটি মুক্ত সমাজে দায়িত্বশীল জীবনের জন্য শিশুর প্রস্ততি :
ঙ. প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ।

এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণের করলে দেখা যায়, জাতি সংঘ সাধারণ পরিষদের দৃষ্টিতে শিশুর লক্ষ্য হলো :

‌১. ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশ:
২. মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ;
৩. মানসিক শক্তির পরিপূর্ণ বিকাশ;
৪. শারীরিক সামর্থের পরিপূর্ণ বিকাশ;
৫. মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
৬. মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
৭. জাতিসংঘ ঘোষণার বর্ণিত নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
৮. পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
৯. নিজস্ব সাংস্কৃতিক সত্তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
১০. নিজস্ব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
১১. নিজস্ব মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
১২. মাতৃভূমির প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
১৩. অপরাপর সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ;
১৪. সমঝোতা, শান্তি, সহিষ্ণুতা, নারী-পুরুষের সমানাধিকার এবং সকল মানুষ. নৃ-গোষ্ঠী, জাতীয় ও ধর্মীয় গোষ্ঠ এবং আদিবাসী লোকজনের মধ্যে মৈত্রীর চেতনার আলোকে একটি মুক্ত সমাজে দায়িত্বশীল জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ;
১৫. প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের বিকাশ।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

H.S.C

Leave a Comment