নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার’

পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কারাগার। কেরানীগঞ্জে কারাগারটি স্থানান্তরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নামে পরিচিত ছিল।

পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দীন রোডের চানখাঁরপুলের এই কারাগারটি দেশের প্রাচীনতম কারাগারও। ঢাকা বিভাগের এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের এখানে দণ্ড প্রদানের জন্য আটক রাখা হতো। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন থানার মামলায় বিচারাধীন লোকদের বিচারের সময় আটক রাখার স্থান হিসেবেও কারাগারটি ব্যবহৃত হতো।

প্রায় ২২৮ বছরের পুরনো এই কারাগারের সঙ্গে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ও ঐতিহাসিক ঘটনার পাশাপাশি কারাগারকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরও অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এই কারাগারে আটক জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

মোগল সুবাদার ইব্রাহিম খান ঢাকার চকবাজারে (নাজিমুদ্দীন রোড) একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির আমলে ১৭৮৮ সালে ওই দুর্গের ভেতরে অপরাধী রাখার জন্য একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড নির্মাণ করা হয়।

এই দুর্গকেই একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ১৮৩৩ সালের রেকর্ডে দেখা যায়, তখন এই কারাগারে ৮০০ জন বন্দি থাকার সক্ষমতা ছিল। তবে কারাগারে প্রতিদিন গড়ে ৫২৬ জন বন্দি থাকত।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তর এলাকা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত ছিল। অপ্রাপ্তবয়স্ক, বৃদ্ধ ও মহিলাদের পৃথক রাখা হতো। বিদেশি নাগরিকদের জন্যও পৃথক স্থান ছিল।

সময়ের ব্যবধানে প্রাচীন কারা ভবনটি হয় জরাজীর্ণ ও বসবাসের অযোগ্য। ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই এ কারাগারটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পূর্ব পাশে নতুন করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ করা হয়। এই কেন্দ্রীয় কারাগারটি ৩১ একর জমিতে নির্মিত এবং চার হাজার ৫৯০ জন বন্দি এতে থাকতে পারে।

জুলাই ২০১৬ সালে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এই নতুন কারাগারে কারাবন্দিদের স্থানান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারটি উদ্বোধন করেন।

অন্যদিকে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারটিকে জাদুঘর বানানোর পরিকল্পনা নেয় সরকার। ৬০৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারটি পুরান ঢাকার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে।

নিয়োগ পরিক্ষা

জানা অজানা

1 thought on “নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার’”

Leave a Comment