জলবায়ু পরিবর্তনের ধারণা ও কারণ উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মােকাবেলায় সমাজকর্মীর ভূমিকা তুলে ধরুন, এইচএসসি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দ্বাদশ/১২শ শ্রেণির ৩য় অ্যাসাইনমেন্ট সকল উত্তর 2021

শ্রেণি: ১২শ/ hsc/ উন্মুক্ত-2021 বিষয়: সমাজকর্ম ( ২য় পত্র ) এসাইনমেন্টেরের উত্তর 2021
এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 03 বিষয় কোডঃ 2862
বিভাগ: মানবিক শাখা
বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

এসাইনমেন্ট শিরোনামঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ধারণা ও কারণ উল্লেখ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মােকাবেলায় সমাজকর্মীর ভূমিকা তুলে ধরুন।

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

জলবায়ু পরিবর্তনের ধারণা

বর্তমান বিশে^ জলবায়ু পরিবর্তন বা পষরসধঃব পযধহমব পদবাচ্যটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। শিল্পবিপ্লবের পর থেকে অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ¦ালানী ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজনস্তর ক্ষয় ও আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির বর্ধিত হারে ভূ-পৃষ্ঠে অধিগ্রহণের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আধুনিকালে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।

জলবায়ু পরিবর্তন হলো বহুকালব্যপী আবহাওয়ার বণ্টনের পরিসংখ্যানগত পরিবর্তন যা কয়েক দশক হতে অনেক লক্ষ বছর হতে পারে।

এই পরিবর্তন আবহাওয়ার গড় অবস্থা অথবা আবহাওয়ার উপাদানসমূহের বণ্টনের মধ্যে হতে পারে। অর্থাৎ গড় বৃষ্টিপাত অথবা গড় তাপমাত্রার পরিবর্তন কিংবা সামগ্রিক আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ প্রদত্ত সংজ্ঞাতে বলা হয়েছে,

“তুলনাযোগ্য সময়ের মধ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের কার্যাবলী বৈশ্বিক বায়ুমণ্ডলীয় মিশ্রণে যে পরিবর্তন ঘটায় এবং যা প্রাকৃতিকভাবে জলবায়ুগত তারতম্য হিসেবে পর্যবেক্ষিত হয় তা জলবায়ুগত পরিবর্তন নামে অভিহিত

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ

জলবায়ু গঠনের ক্ষেত্রে জলবায়ু শক্তি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। জলবায়ু শক্তি বলতে বুঝায় বিকিরণ, পৃথিবীর কক্ষপথের বিচ্যুতি, পর্বত গঠন ও মহীসঞ্চারণ এবং গ্রীনহাউজ গ্যাসের পরিবর্তন। এই অবস্থাগুলি প্রাথমিক জলবায়ু গঠনকারী নিয়ামকগুলোর কার্যকারিতা ত্বরান্বিত অথবা হ্রাসপ্রাপ্ত করে। আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতে জলবায়ু পরবর্তনের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো:

১. প্লেট টেকটনিক: লক্ষ লক্ষ বছর যাবৎ প্লেট গতির তারতম্যজনিত কারণে ভূ-ত্বক ও মহাসাগরের বিন্যাসে পরিবর্তন আসছে এবং নতুন ভূ-প্রকৃতি সৃষ্টি অথবা অবলুপ্ত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় এবং বৈশি^ক জলবায়ুর ধরন বদলাতে থাকে।

২. সৌরশক্তি উৎপাদন: বিভিন্ন শতাব্দীতে সৌরতাপের কার্যকারিতার তারতম্য জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শক্তি হিসেবে কাজ করে চলছে। সৌরজগতের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী তারতম্য বৈশি^ক জলবায়ুর ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে এবং শীতলীকরণ প্রভাব ও বৈশি^ক উষ্ণায়নে সহায়তা করে।

৩. কক্ষপথের পরিবর্তনশীলতা: পৃথিবীর কক্ষপথের সামান্য পরিবর্তন বিভিন্ন ঋতুতে সূর্যালোকের তারতম্য নিশ্চিত করে। স্থানিক গড় সূর্যকিরণ ও বার্ষিক গড় সূর্যকিরণের মধ্যে সামান্য পরিবর্তন থাকলেও ভৌগোলিক ও ঋতুগত বণ্টনে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।

৪. ক্রমিক ঋতু ও আকস্মিক স্থানান্তর: পরিবর্তক শক্তির ক্রমাগত ক্রিয়ায় হঠাৎ জলবায়ুপরিবর্তন লক্ষ করা যায়। ১৯৯৭ সালে আমাজান বেসিন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নিরক্ষীয় অরণ্যে দাবানলে সৃষ্ট ধ্বংস থেকে বায়ুমণ্ডলে অতিমাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড সঞ্চিত হয় এবং সারাবিশে^ দ্রুত চরম আবহাওয়া অনুভূত হয়। এছাড়া মহাসাগরীয় স্রোতচক্রের মাধ্যমেও আকস্মিক জলবায়ু স্থানান্তর ঘটে থাকে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৫. অগ্ন্যুৎপাত: অগ্ন্যুৎপাত হলো ভূ-গর্ভ থেকে উত্তপ্ত গলিত সান্দ্র অথবা বায়বীয় পদার্থ ভূ-পৃষ্ঠে উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া। অগ্ন্যুৎপাত বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থ, জলীয় বাষ্প, ধুলিকণা, ভষ্ম ইত্যাদি নিক্ষেপ করে থাকে। অগ্ন্যুৎপাতের সময় নিক্ষিপ্ত পদার্থের প্রায় ৯০% জলীয় বাষ্প। একারণে ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাতের সময় সন্নিহিত অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। প্রতি শতাব্দীতেই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জলবায়ু অনেকখানি প্রভাবিত হয়।

৬. মহাসাগরের পরিবর্তনশীলতা: মহাসাগরগুলো জলবায়ুর অন্যতম নিয়ন্ত্রক বা মৌলিক অংশ। স্বল্পমেয়াদী সামুদ্রিক প্রবাহের তারতম্য জলবায়ুর আঞ্চলিক প্রভেদ সৃষ্টি করে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী তাপ জলীয়প্রবাহ এবং অক্ষাংশ থেকে আরেক অক্ষাংশে তাপ পরিবহনের কাজ করে থাকে এবং জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে।

৭. প্রকৃতির উপর মানুষের হস্তক্ষেপ: মানুষের কার্যকলাপে বতর্মান বিশে^ জলবায়ু পরিবর্তন সৃষ্টি হচ্ছে। বিগত ও বর্তমান শতাব্দীতে চলমান বৈশি^ক উষ্ণায়ন প্রকৃতির উপর মানুষের অসংস্কৃত হস্তক্ষেপের ফল। জীবাশ্ম জ¦ালানির যথেচ্ছ ব্যবহার, বায়ুমণ্ডলে অতিমাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড সংযোজন, সিএফসি, মিথেন ও সালফার-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ, ক্রমাগত নির্বনায়ন এবং শিল্পকারখানা ও মারণাস্ত্রের ব্যাপক প্রসার পৃথকভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে জলবায়ুর নিয়ামকসমূহের উপর প্রভাব বিস্তার করছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

পৃথিবীর অন্যতম ব-দ্বীপ অঞ্চল বাংলাদেশ। বৈশি^ক উষ্ণয়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সমুদ্রতলের পরিবর্তনে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। বৃহত্তর ব-দ্বীপ অঞ্চল সমুদ্রগর্ভে চলে যাবে। বিপুলসংখ্যক জনগণ কর্মহীন ও উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকার জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য প্রভাব নিম্নে তুলে ধরা হলো:

১. বৈশি^ক উষ্ণায়নের প্রভাবে ভবিষ্যতে পানির সমস্যা প্রকট হয়ে উঠবে। পানি লবণাক্ত হয়ে পড়বে এবং অনাহারে ও চাষাবাদের জন্য তীব্র পানি সংকট দেখা দিবে।

২. জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে এ দেশে বৃষ্টিপাতের বিন্যাসে পরিবর্তন আসবে। তীব্র পানি সংকটের পাশাপাশি কোথাও বৃষ্টিপাত বাড়বে আবার কোথাও অনাবৃষ্টি দেখা দিবে।

৩. বৃষ্টিপাতের বিন্যাস ও বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের ফলে শস্যাবর্তনেরও পরিবর্তন আসবে এবং বাস্তু অবস্থার পরিবর্তনে জীবকুলের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কৃষি উৎপাদনে বিপর্যয় সৃষ্টি হবে এবং কৃষির উপর নির্ভরশীল বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবিকা অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

৪. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশে^র বিভিন্ন অঞ্চলে রোগব্যাধির প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এই প্রভাব মহামারি রূপ পরিগ্রহ করার আশঙ্কা রয়েছে।

৫. সবুজঘর গ্যাসের প্রভাবে জলবায়ু গড় পরিবর্তনের ফলে শস্য ক্ষেত্রের উপর বিরূপ প্রভাব লক্ষণীয়। ধান, জব, ভুট্টাসহ বেশ কিছু শস্যাদির উপর ঈঙ২ বৃদ্ধির প্রভাব নেতিবাচক।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় সমাজকর্মীর ভূমিকা

বর্তমানে বৈশি^ক প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তন ও তার সম্পৃক্ত ফলাফল সারা পৃথিবীর ন্যায় বাংলাদেশকেও অত্যন্ত ভাবিয়ে তুলেছে। ধারণা করা হচেছ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হবে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত যে সকল সমস্যা উদ্ভুত হবে তা মোকাবিলায় সমাজকর্মী যে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:

১. বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বন্যার প্রকোপ আরো বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে দেশের অর্ধেক রাস্তাঘাট, কৃষিজমি ও বাঁধ ডুবে যেতে পারে। এ কারণে বিদ্যমান এসব অবকাঠামো সচল রাখতে উঁচুকরতে হবে এবং সবধরনের আবহাওয়ায় যাতে টিকে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করতে সমাজকর্মী প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।

২. এদেশে পানি নিষ্কাশনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। রয়েছে অপ্রতুল কালভার্ট ও রেগুলেটর। বন্যার সময় পানি চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সমাজকর্মী উদ্যোগ নিতে পারেন।

৩. দক্ষিণ অঞ্চলের জমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে বিপুলসংখ্যক কৃষি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়তে পারে। তাদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমাজকর্মী ভূমিকা রাখতে পারেন।

৪. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এদেশের উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হলে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুহীন হতে পারে। তাদের পুনর্বাসন সমস্যা মোকাবিলা ও নতুন জীবনে খাপ-খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সমাজকর্মী ভূমিকা রাখতে পারেন।

৫. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উপকূলীয় এলাকায় পানীয় জলের সংকট হতে পারে তা মোকাবিলায় সমাজকর্মী ভূমিকা রাখতে পারেন।

এছাড়াও যেসকল মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে তা নিরাময়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং অধিক কার্বন নিঃসরণকারী শিল্পউন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাপ প্রয়োগ করতে সরকারকে উদ্ধুদ্ধ করতে পারে।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

সবার আগে Assignment আপডেট পেতে Follower ক্লিক করুন

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে Google News <>YouTube : Like Page ইমেল : assignment@banglanewsexpress.com

অন্য সকল ক্লাস এর অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর সমূহ :-

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় SSC এসাইনমেন্ট :

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় HSC এসাইনমেন্ট :

বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস// https://www.banglanewsexpress.com/

Leave a Comment