অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে ‘খই’

Google Adsense Ads

খই গ্রামবাংলার অতি জনপ্রিয় একটি খাবার। এটি সাধারণত আপ্যায়নে একসময় বহুল ব্যবহৃত হতো। যেকোনো ধান থেকেই খই করা সম্ভব। তবে বিন্নি ধানের খই-ই আমাদের এই উপমহাদেশে বেশি পরিচিত ছিল। আগুনের তাপে ধান ফেটে ফুলের মতো খই তৈরি হয় বলে একে ধানের ফুল বলা হয়। আম-কাঁঠালের সঙ্গে খই, দুধে ভেজানো খই, গুড় মেশানো খই খাদ্যতালিকায় অনেক আগে থেকেই আছে।

একসময় এই দেশে শুধু বিন্নি ধান দিয়ে খই ভাজা হলেও এখন এই ধান ছাড়াও কালিজিরা, বেতি, পরাঙ্গি ধানে ভালো খই হয়। ধানের পাশাপাশি ভুট্টার খই, ঢ্যাপের খই (শাপলার বৃন্ত) বলে আরো দুই রকম খই রয়েছে।

আতপ ধান কড়া রোদে শুকিয়ে খই তৈরি করা হয়। এরপর চুলায় মাটির হাঁড়ি দিয়ে ওই হাঁড়ির এক পাশে চুলার মতো একটি মুখ তৈরি করা হয়। হাঁড়িতে বালু গরম করে এর মধ্যে শুকনা ধান দিয়ে বাঁশের কাঠি ও ঝাঁটার কাঠি দিয়ে নাড়তে হয়। নাড়ার একপর্যায়ে তৈরি হয়ে যায় খই। পরে খইয়ের সঙ্গে লেগে থাকা ধানের খোসা চালনিতে চেলে আলাদা করা হয়।

ধানের খই খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়। সাধারণত যাদের হজমে সমস্যা তারা ধানের খই খেলে উপকার পাবে। ভুট্টার খইয়ে আছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘এ’ আর ফাইবার, যা পেটে অনেকক্ষণ থাকে; এবং এটা রক্তে চিনির পরিমাণ সহজে বাড়তে দেয় না।

এ কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভুট্টার খই উপকারী। গ্রামাঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি এখন কম ক্যালোরিতে পেট ভরানোর খাবার হিসেবে উচ্চবিত্ত মহলেও খইয়ের প্রচলন বাড়ছে। যাদের বারবার ক্ষুধা পায়, অথচ দিনের বেশির ভাগ সময়ে অফিসে বা বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য শরীরে ক্যালোরির চাহিদা কম, তাদের জন্য লাঞ্চ আর ডিনারের মাঝখানে বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে খই হতে পারে আদর্শ খাবার। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে খই আমাদের ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

শিক্ষা

Google Adsense Ads

Google Adsense Ads

Leave a Comment