BCS গ্রন্থ সমালোচনা রক্তাক্ত প্রান্তর,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা রক্তাক্ত প্রান্তর, রক্তাক্ত প্রান্তর কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি রক্তাক্ত প্রান্তর

আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা রক্তাক্ত প্রান্তর,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা রক্তাক্ত প্রান্তর, রক্তাক্ত প্রান্তর কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি রক্তাক্ত প্রান্তর,রক্তাক্ত প্রান্তর বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,রক্তাক্ত প্রান্তর

রক্তাক্ত প্রান্তর

প্রিলি+লিখিত প্রস্তুতি

২ মিনিট সময় নিয়ে অবশ্যই পড়ুন।

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার এক্সামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রন্থ-সমালোচনা। আবার ইদানীং বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর চরিত্র থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন আসতে দেখা যাচ্ছে।
গল্প/উপন্যাস/নাটক পড়া না থাকলে চরিত্র মনে রাখা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে গ্রন্থের কাহিনি জানলে একসাথে প্রিলি এবং লিখিত গ্রন্থ সমালোচনার জন্য কাজে দিবে।

রক্তাক্ত প্রান্তর
লেখক: মুনীর চৌধুরী

প্রধাণ চরিত্র: জোহরা, ইব্রাহিম কার্দি, নজীবদ্দৌলা, সুজাউদ্দোলা, আহমদ শাহ আবদালী। অপ্রধান চরিত্রগুলাের মধ্যে রয়েছে- হিরণবালা, আতাখা, জরিনা বেগম, রহিম শেখ, বশির খা ।

‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ মুনীর চৌধুরীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক এবং বাংলা নাট্যসাহিত্যে একটি উল্লেখযােগ্য শিল্পসফল প্রয়াস। ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত হয় ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকের পটভূমি। এই পানিপথের প্রান্তরে ভারতের তিনটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। প্রথম যুদ্ধটি সংঘটিত হয় বাবুরের সঙ্গে সুলতান ইব্রাহীম লােদীর ১৫২৬ সালে। দ্বিতীয় যুদ্ধটি সংঘটিত হয় মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে হিমুর ১৫৫৬ সালে।


আরো ও সাজেশন:-

তৃতীয় যুদ্ধটি শুরু হয় কাবুল অধিপতি আহমদ শাহ আবদালীর সঙ্গে নব প্রতিষ্ঠিত মারাঠা শক্তির। পানিপথের এই তৃতীয় সংঘর্ষকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’।

রক্তাক্ত প্রান্তর নাটকের বিষয়বস্তু তিনি কায়কোবাদের মহাকাব্য মহাশ্মশান থেকে নিয়েছেন। মুনীর চৌধুরী এই নাটকের প্রথম প্রদর্শনীর স্যুভেনিরে উল্লেখ করেছেন- ‘কাহিনির সারাংশ আমি কায়কোবাদের মহাশ্মশান কাব্য থেকে সংগ্রহ করি। মহাশ্মশান কাব্য বিপুলায়তন কাব্য। তাতে অনেক ঘটনা, অনেক চরিত্র। আমি তা থেকে কয়েকটি মাত্র বেছে নিয়েছি। তবে নাটকে স্বভাব ও অন্তরের আরচণ ও উক্তির বিশিষ্ট রূপায়ণে আমি অন্যের নিকট ঋণী নই। আমার নাটকের চরিত্র চিত্রণ, ঘটনা-সংস্থাপন ও সংলাপ নির্মাণের কৌশল আমার নিজস্ব ।’

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

পানিপথ প্রান্তরে মুসলিম শক্তি ও মারাঠা শক্তি যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য দুর্গ স্থাপন করে প্রতীক্ষা করছে। মুসলিম শক্তির নেতৃত্ব দিচ্ছে আহমদ শাহ্ আবদালী,অপরদিকে মারাঠা শক্তির অধিনায়ক হচ্ছে ইব্রাহিম কার্দি। কার্দি এক সময়ে ফরাসীদের কাছে আধুনিক রণবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করেও ঘটনাচক্রে ভারতের কোন মুসলিম রাষ্ট্রপতিদের অধীনে চাকুরী না পেয়ে বাধ্য হয়েই মারাঠাধিপতি পেশােয়ার অধীনে চাকুরী গ্রহণ করে এবং নিজ কর্মদক্ষতায় সৈন্যাধিক পদে অধিষ্ঠিত হয়। ইব্রাহীম কার্দির স্ত্রীর নাম জোহরা বেগম।

জোহরার পিতা মেহেদী বেগকে মারাঠাগণ হত্যা করেছিল। তাই তার প্রতিশােধের উদ্দেশ্যে সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী স্বামীর প্রতি হীন অপবাদ আরােপ করে গৃহত্যাগ করেছে এবং পিতৃহন্তা মারাঠাদের বিপক্ষে আবদালীর সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে যােগ দিয়েছে। এই বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমই ছদ্মবেশধারী মন্নু বেগ।‌ পানিপথ প্রান্তরে যখন মুসলিম ও মারাঠারা মুখােমুখি, তখন জোহরা বেগম ছদ্মবেশে মারাঠা কন্যা হিরণবালার সহযােগিতায় স্বামীর কাছে আসে এবং তাকে মারাঠা-পক্ষ ত্যাগ করতে অনুরােধ করে।

কিন্তু‌, দৃঢ়চেতা কার্দি বলে, যে ফিরে যাবে সে আমি হবাে না। সে হবে বিশ্বাসঘাতক। সে হবে ইব্রাহীম কার্দির লাশ।… ভারতে মুসলিম শক্তি জয়যুক্ত হােক, তার পূর্বগৌরব সে ফিরে পাক-বিশ্বাস করাে এ কামনা আমার মনে অহরহ জ্বলছে। কিন্তু ভাগ্য আমাকে প্রতারিত করেছে। সে গৌরবে অংশগ্রহণের অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছে। আমার সঙ্কটের দিনে যারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে, সে মারাঠাদের বিপদের দিনে আমি চুপ করে বসে থাকবাে? পদত্যাগ করবাে? দলত্যাগ করবাে? সে হয় না জোহরা। আমি নিশ্চিত জানি, জয়-পরাজয় যাই আসুক, মৃত্যু আমার মুক্তির অন্য কোনও পথ নেই ।

জোহরা বেগম ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। নির্দিষ্ট দিনে শুরু হয় মারাঠা ও মুসলিম বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ। যুদ্ধে উভয়পক্ষের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে মুসলিম বাহিনীর জয় হয়। ইব্রাহীম কাদি গুরুতররূপে আহতাবস্থায় মুসলিম বাহিনীর হাতে বন্দি হয় এবং কারাগারে জোহরার সঙ্গে পুনর্মিলনের আগেই আততায়ীর হাতে নিহত হয়। জোহরার জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ শূন্যতা। এখানেই নাটকের যবনিকাপাত হয়েছে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকের কাহিনি ইতিহাস থেকে গ্রহণ করলেও তা ঐতিহাসিক নাটক নয়। কারণ ঐতিহাসিক নাটক লেখা লেখকের উদ্দেশ্য নয়। যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ণয় করার পরিবর্তে নাট্যকার দৃষ্টি নিবন্ধ করেছেন ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরা বেগমের আদর্শগত দ্বন্দ্ব রূপায়ণে। ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরা নিজ নিজ আদর্শে অবিচল থাকায় তাদের দাম্পত্য সংকট তীব্র হয় এবং বিচ্ছেদ ও করুণ পরিণতি অনিবার্য হয়ে উঠে। এই অনিবার্য করুণ পরিণতিকে ফুটিয়ে তোলাই নাট্যকারের মূল লক্ষ্য।

নাট্যকারের ভাষায়- ‘আমি নাটকের বশ, ইতিহাসের দাস নই।’ এ জন্য ইতিহাসের ঘটনার বিশদ বিবরণের চাইতে ব্যক্তি হৃদয়ের দ্বন্দ্ব ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ একটি দ্বন্দ্বমুখর নাটক। এখানে মারাঠাদের সঙ্গে মুসলিমদের দ্বন্দ্ব। আদর্শগত কারণে ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরা বেগমের দ্বন্দ্ব। অংশত দিলীপের সঙ্গে আতা খার, জোহরাকে ঘিরে নজীব ও জরিনার দ্বন্দ্ব। তবে মূল ট্রাজেডি। ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরা বেগমের দ্বন্দ্বই। তাদের প্রেম অটুট কিন্তু যুদ্ধ তাদের আলাদা করে দিয়েছে। দুজনই গোপনে এক। কিন্তু আদর্শ ত্যাগ করতে পারে না।

ইব্রাহিম কার্দির ভাষ্য- ‘কতোদিন তোমাকে দেখিনি। তৃষ্ণায় দুচোখ আমার পুড়ে খাক হয়ে গেছে। কতোকাল তোমার এই রূপ আমি দেখিনি। অশ্ব পৃষ্ঠে নয়, মাটির উপরে দাঁড়িয়ে তুমি। রক্তাক্ত তরবারি হাতে নয়, হাতে তোমার মেহেদীপাতার রঙ। ঐ আনত মুখ, ঐ নির্মিলিত চোখ– এর রূপ তোমার, একবার মুখ তুলে তাকাও আমার দিকে।

‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকে ইতিহাসের ঘটনা মুখ্য নয়, মুখ্য রক্তাক্ত হৃদয়। ফলে যুদ্ধের অবসান ঘটলেও নাটকের সমাপ্তি হয় না। কারণ পনিপথের জাতিগত দ্বন্দ্ব এবং যুদ্ধ সমাপ্ত হলেও ব্যক্তি হৃদয়ের দ্বন্দ্ব ইব্রাহিম কার্দি ও জোহরার অন্তর্গত দ্বন্দ্বের শেষ হয় না। অপেক্ষা করতে হয় কার্দির মৃত্যু ও জোহরার বুকফাটা আর্তনাদ পর্যন্ত। এ বিষয়টি ঠিক ঐতিহাসিক নয়, রোমান্টিক। ঐতিহাসিক চেতনার চাইতে রোমান্টিক বেদনাই এখানে মূর্ত হয়ে উঠেছে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment