BCS গ্রন্থ সমালোচনা পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়

আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়

গ্রন্থ সমালোচনা: পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
লেখক: সৈয়দ শামসুল হক

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার এক্সামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রন্থ-সমালোচনা। লিখিত পরীক্ষায় গ্রন্থ সমালোচনার উপর ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

আবার ইদানীং দেখা যাচ্ছে বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর চরিত্র থেকে প্রিলিতে প্রশ্ন থাকে। গল্প/উপন্যাস না পড়া থাকলে চরিত্র মনে রাখা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে উপন্যাসের কাহিনি জানলে একসাথে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার জন্য কাজে দিবে।
”পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” নাটকটি সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম কাব্যনাট্য ।
“পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” নাটকের চরিত্র হিসাবে রয়েছে মাতবর, পীর সাহেব, মাতবরের মেয়ে , পাইক, গ্রামবাসী, তরুণ দল ও মুক্তিযোদ্ধারা।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাদের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠাকে কেন্দ্র করেই নাটকের পটভূমি তৈরি হয়েছে । নাটকে আলাদা আলাদা কোনো দৃশ্য বিভক্ত করা নেই । শুরু থেকে শেষ, নাটকটি মূলত কোনো ধরনের পর্ব ছাড়াই একটানা লিখিত হয়েছে ।
কাব্যনাট্যটি মূলত মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও শুরুর সময়কার ঘটনাকে উপজীব্য করে রচিত । নাটকের চরিত্রগুলোর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভীষিকা, নারী নির্যাতন , পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অনাচার, রাজাকারদের পাকিস্তানি সেনাতোষণ, সাধারণ মানুষের বিপ্লব ও জেগে ওঠার বার্তাই ফুটে উঠেছে । “পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়” কাব্যনাট্যটি বাংলা সাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি হিসেবেই পরিগণিত হচ্ছে ।


আরো ও সাজেশন:-

মুক্তিযুদ্ধ চলছে । কালীপুর, হাজীগঞ্জ কিংবা ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী থেকে মানুষ আসছে । দলে দলে । “মানুষ আসতে আছে যমুনার বানের লাহান/ মানুষ আসতে আছে মহররমে ধূলার সমান”। নারী, পুরুষ, শিশু- সবাই । আসেন একজন পীর সাহেবও । সবাই জড়ো হয় গ্রামের মাতবরের বাড়িতে । উৎকণ্ঠিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে সবািই মাতবরের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে । এই মাতবরই হচ্ছেন নাটকের প্রধান চরিত্র । তিনি মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী, অর্থাৎ রাজাকার । গ্রামবাসীর সংলাপের মধ্যে দিয়ে নাটকটি শুরু হয় । তাদের সংলাপেই ধরা পড়ে তৎকালীন সময় আর প্রতিকূল-পরিস্থিতি ।

হতবিহ্বল গ্রামবাসী মুক্তিযুদ্ধকালে নিজেদের করণীয় কিংবা বাঁচার উপায় মাতবরের কাছে জানতে চায় । গ্রামবাসী পাকিস্তানিদের ভয়াবহতার বিষয়টি মাতবরের কাছে উপস্থাপন করে । কিন্তু মাতবর যে পাকিস্তানপন্থী, সেটা গ্রামের সহজ-সরল মানুষ শুরুতে আন্দাজ করতে পারে না । গ্রামবাসীর ধারণা, মাতবর ক্ষমতার অধিকারী । তাই একমাত্র তিনিই পারেন ভয়াবহ এ বিপদ থেকে সবাইকে রক্ষা করতে ।

মাতবর একপর্যায়ে তাদের আশ্বস্ত করেন, গত রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তার দেখা ও আলাপ হয়েছে । তাই মাতবর সবাইকে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ভরসা রাখার জন্য বলেছেন । পাশাপাশি মুক্তিবাহিনী থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন । তবে মাতবরের আশ্বাসের পরও গ্রামবাসীর মনের দ্বিধা দূর হয় না । এমনই এক সময়ে মাতবরের মেয়ে ঘরের বাইরে এসে জানায়, তার বাবা মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর। জোর করে গত রাতে তাকেও মাতবর পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

মাতবর ও তার মেয়ে এবং গ্রামবাসীর একের পর এক সংলাপে মুক্তিসংগ্রামের বিষয়গুলো পরিস্ফুটিত হতে থাকে । মাতবর গ্রামবাসীকে জানান, তার মেয়েকে তিনি এক রাতের জন্য হলেও পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের কাছে বিয়ে দিয়েছিলেন । একপর্যায়ে মাতবরের মেয়ে অপমানে -লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যা করে ।

ঘটনা এগোতে থাকে । গ্রামের মানুষ মাতবরের মৃত্যু চায় । এদিকে মাতবরের কানে বারবার পায়ের আওয়াজ ভেসে আসতে থাকে । এই আওয়াজ আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের পদধ্বনি । মাতবর সংলাপ আওড়ান, “আমারে মারলেই হবে গেরামের বিপদ উদ্বার?/ আমার তো সকলই গ্যাছে, কিছু নাই আর । / গুলির আওয়াজ শুনি নিকটে এবার/ পায়ের আওয়াজ শুনি মাঠ হয়া পার/…./ আমার জীবন নিয়া তবে কও কি হবে তোমার?

পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক হলেও এতে মুক্তিযুদ্ধের তেমন কোন দৃশ্য নাই, তবে যুদ্ধের আবহ আছে। নেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, আছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলার মানুষের পক্ষ-বিপক্ষের যুক্তি অবস্থান। এ নাটকে মাতবর সেই শ্রেণীর প্রতিনিধি যারা ধর্মকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। যার এদেশীয় হয়েও পাকিস্তানীদের সাহায্য করেছে। কিন্তু যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে তাদের আত্মবিশ্বাসে চির ধরে। মিথ্যা, চলচাতুরী করেও তাদের শেষ রক্ষা হয় নি।
এ নাটকে নাট্যকারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল সমস্ত ঘটনাকে গ্রামবাসীর মধ্য দিয়ে। সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া। এ নাটকের নায়ক একক কোন ব্যক্তি নয় ৬৮ হাজার গ্রামবাসীর মধ্য দিয়ে তার প্রকাশ ঘটেছে।

কাব্যনাট্যে মেয়ে চরিত্রটি প্রাণবন্ত। তার উপস্থিতিতে নাটক অন্য দিকে মোড় নিয়েছে একাত্তরের যে সকল মেয়ে নিপীড়িত হয়েছে সে তাদের প্রতিনিধি গ্রামবাসী প্রতীকী অর্থে বাংলাদেশের জনগণ। প্রতিবাদী চরিত্র।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

কাব্যনাট্যের জটিল আবহ সৃষ্টিতে পীর চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। নাটকের প্রথম দিকে তাকে মাতবরের সহায়ক মনে হলেও পরবর্তীতে বুঝা যায় মাতবরের কুকীর্তিতে তার কোন অংশগ্রহণ ছিল না। কয়েক পুরুষ ধরে পীরেরা মাতবরদের। আশ্রয়ে ছিলেন। তাই মাতবর আশা করছিলেন পীর মাতবরের পক্ষে থাকবেন।

কিন্তু পীর সত্য ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন। নাটকের শেষে গ্রামবাসী মাতবরকে গ্রামে কবর দিতে না চাইলে পীরকে বলতে দেখা যায়- ‘দাগ, একটা দাগ রাইখা যায়। কারণ পীর জানে শত্রুর বিনাশ নাই। একজন চলে গেলে তার পরিবর্তে আরেকজন আসবে। তাদের উত্তরাধিকার থাকবেই। এর মধ্য দিয়ে লেখক পাঠককে একটি বার্তা দিয়েছেন। যার ফলে পাঠকের আত্মোপলব্ধি সঞ্চার হবে। তাদের বিবেক, বুদ্ধি জাগ্রত হবে।

এ নাটকের সংলাপ সৃষ্টিতে নাট্যকার সফলতা দেখিয়েছেন। কবিতার ভাষায় সংলাপ রচনা করতে তিনি সিদ্ধহস্ত। কবিতার মতই তিনি একটি বাক্যের দ্বিরুক্তি বা পুনরুক্তি করেছেন যা এ নাটকে সার্থক করে তুলতে ভুমিকা রেখেছে।

যেমন‘গ্রামবাসী আমাদের গ্রামের লাশ/ চৌষট্টি হাজার লাশ/ খুনী কে?/ খুনী কে?/”। ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটককে অনেকে অতি সরলীকরণ করে শুধু মুক্তিযুদ্ধের নাটক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন। নিঃসন্দেহে নাটকটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এবং নাটকটির ঘটনা মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে প্রবাহিত। তবে এই নাটকে জীবনের মৌল জিজ্ঞাসাগুলো প্রথিত হয়েছে এক অনন্য কুশলতায় । গ্রামীণ পটভূমিতে বিধৃত কাহিনিতে তিনি চরিত্রের মুখে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছেন।

চরিত্রের প্রয়োজনে উপমা, রূপক অলঙ্কার ব্যবহার করেছেন। রূপালঙ্কার ও উপমা ব্যবহারে সৈয়দ শামসুল হকের দক্ষতা নাটকটি পাঠ মাত্রেই উপলব্ধি করা যায়। আঞ্চলিক ভাষার যথার্থ ব্যবহারে যে নাট্যকার পারঙ্গম, তার উৎকৃষ্ট সব উদাহরণ নাটকে সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment