BCS গ্রন্থ সমালোচনা কারাগারের রোজনামচা,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা কারাগারের রোজনামচা, কারাগারের রোজনামচা কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি কারাগারের রোজনামচা

আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা কারাগারের রোজনামচা,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা কারাগারের রোজনামচা, কারাগারের রোজনামচা কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি কারাগারের রোজনামচা,কারাগারের রোজনামচা বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,কারাগারের রোজনামচা

পোয়েট অव পলিটিক্স, বাঙালির ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তি, বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষায় আপসহীন অবিসংবাদিত নেতা, হাজার বছরের বাঙালি, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের মুকুটহীন সম্রাট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (১৯২০-১৯৭৫) কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থটি ইতিহাসের অমর দলিল। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছেন বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে, ক্ষুধা ও দারিদ্রা থেকে মুক্তি দিতে।

তিনি বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবনের সব আরাম- আয়েশ ত্যাগ করে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ফলে তাকে জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে বন্দি জীবন যাপন করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ২ জুন থেকে ৬৭ সালের ২২ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুর্মিটোলা সেনানিবাসে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় প্রতিদিন ডায়েরি লিখতেন। সেই ডায়েরির পরিমার্জিত রূপ ‘কারাগারের রোজনামচা” । গ্রন্থটির নামকরণ করেন বঙ্গবছর কন্যা শেখ রেহানা।

“কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থটি জাতির পিতার ৯৭তম জন্মদিন ১৭ মার্চ, ২০১৭ সালে প্রকাশিত। এটির প্রকাশক বাংলা একাডেমি, প্রচ্ছদ করেন তারিক সুজাত, পৃষ্ঠা ৩৩২ এবং মূল্য ৪০০ টাকা। গ্রন্থটি ২টি ভাষায় (ইংরেজি, অসমিয়া) অনূদিত হয়।

ভাষা আন্দোলন থেকে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা অর্জনের সোপানগুলি যে কত বন্ধুর পথ অতিক্রম করে এখতে হয়েে তার আংশিক বর্ণনা আমরা পাই ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি থেকে। স্বাধীন বাংলাদেশ ও স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা বাঙালি পেয়েছে যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ো, সেই সংগ্রামে অনেক ব্যথা- বেদনা, অভ্র ও রক্তের ইতিহাস রয়েছে। মহান ত্যাগের মধ্য দিয়ে মহৎ অর্জন করে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর।

১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঘটনাবহুল জেল-জীবনচিত্র এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন, জেল-যন্ত্রণা, কয়েদিদের অজানা কথা, অপরাধীদের কথা, কেন তারা এই অপরাধ জগতে পা দিয়েছিল, তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দুঃখ-দুর্দশা,

গণমাধ্যমের অবস্থা, শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতন, ৬ দফার আবেগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রকৃতি প্রেম, পিতৃ-মাতৃ ভক্তি, কারাগারে পাগলদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না এ গ্রন্থে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

“কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর ৯৭তম জন্মদিনে প্রকাশ করা হয়। এ প্রকাশনা উৎসবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন- “যে খাতা দুটো নিয়ে এ বইটি লেখা, সেই খাতা দু’টি বাজেয়াপ্ত ছিল। জেলখানায় বাজেয়াপ্ত করা হয়। আর সে তথ্যটি পেয়েছিলাম এসবি রিপোর্ট থেকে। ৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে রেখেছিলাম। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে খাতা দুটো খুঁজে বের করার চেষ্টা করে ২০১৪ সালে ঐ খাতা দু’টি উদ্ধার করি। খাতা দুটোর মলাটের ওপর লেখা ‘থালা-বাটি কম্বল, জেলখানার अ যা বঙ্গবন্ধু নিজেই নিয়ে গিয়েছিলেন।”

গ্রন্থের শুরুতে জাতির পিতা থালা-বাটি কম্বল, জেলখানার সম্বল।” শীর্ষক লেখায় হৃদয়গ্রাহী ভাষায় জেলখানার নিয়মাবলি। তুলে ধরেছেন। ‘জেলে যারা যায় নাই, জেল যারা খাটে নাই তারা জানে স। বাইরে থেকে মানুষ যে ধারণা জেল সম্বন্ধে ভিতরে তার একদম উল্টো।… জেলের ভিতর অনেক ছোট ছোট জেল আছে।”

জাতির পিতার কারাজীবনের দিনলিপিতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়েছে রাজনৈতিক নানান ঘটনাবলি। বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, সকল প্রকার শোষণ থেকে মুক্তি লাভের জন্য, স্বাধিকার অর্জনের ইতিহাসে ছয় দফা আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি বাঙালির প্রাণের দাবি, বাঁচার দাবি হিসেবে পরিগণিত হতো। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেছেন- ‘এটা ক্ষমতা দখলের সংগ্রাম না, জনগণকে শোষণের হাত থেকে বাচানো।”

কিন্তু প্রগতির পালকধারী কিছু বামপন্থি দেশপ্রেমিক(!) ছয়দফাকে বিচ্ছিন্নতাবাদের সাথে তুলনা করেছেন। ন্যাপের নেতাদের প্রসঙ্গে জাতির পিতা লেখেন- ‘জনগণ জানে এই দলটির কিছু সংখ্যক নেতা কীভাবে কৌশলে আইয়ুব সরকারের অপকর্মকে সমর্থন করছে। আবার নিজেদের বিরোধী দল হিসেবে দাবি করে এরা


আরো ও সাজেশন:-

জনগণকে ধোঁকা দিতে চেষ্টা করছে। এরা নিজেদের চীনপন্থি বলেও থাকেন। একজন এক দেশের নাগরিক কেমন করে অন্য দেশপন্থী, প্রগতিবাদী হয়? বাঙালির চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে যেমন বীরের জাত বলেছেন তেমনি বাঙালি যে পরশ্রীকাতর, সেটিও বলতে ভুল করেননি। বাঙালিরা অন্যের দুঃখে ব্যধিত হয়, আবার এই বাঙালিই অন্যের ভালো দেখতে পারে না। আবার কিছু বাঙালি ছিল বিশ্বাসঘাতক।

সে বিষয়টিও বঙ্গবন্ধু তাঁর ডায়েরিতে তুলে ধরেছেন। ‘বাংলাদেশ শুধু কিছু বেঈমান ও বিশ্বাসঘাতকদের জন্যই সারাজীবন দুঃখ ভোগ করলো। আমরা সাধারণত মীর জাফর আলী খাঁর কথাই বলে থাকি। কিন্তু এর পূর্বেও ১৫৭৬ সালে বাংলার স্বাধীন রাজা ছিল দাউদ কারানী। দাউদ কারানীর উজির শ্রীহরি বিক্রম আদিত্য এবং সেনাপতি কাদলু লোহানী বেঈমানী করে মোগলদের দলে যোগদান করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালির কল্যাণে নিজেকে পরিব্যাপ্ত রাখেননি। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তাঁর চিন্তা-চেতনার ছিল অবাধ বিচরণ। পাকিস্তানের সাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রের বৈদেশিক সম্পর্ক, সাহায্য-সহযোগিতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন। ভারত ও পাকিস্তানের জনগণের স্বার্থে উভয় দেশের কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করেছেন। তিনি ভারতের একগুয়েমিকে দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন-

*ভারতের উচিত ছিল গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মেনে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটা শান্তি চুক্তি করে নেয়া ‘কারাগারের রোজনামচা’য় রাজনৈতিক ঘটনাবলির বাইরে আমরা ব্যক্তি মুজিবকে পাই একজন মানবতাবাদী দয়ালু বন্ধুবৎসল ব্যক্তি হিসেবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বেগম মুজিব যেদিন জেলগেটে আসতেন, সাথে করে অনেক প্রকার খাবার নিয়ে আসতেন। বঙ্গবন্ধু একাই সে খাবার না খেয়ে সকলকে ভাগ করে দিতেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন-

“আমি যাহা খাই ওদের না দিয়ে খাই না। আমার বাড়িতেই একই নিয়ম। জেলখানায় আমার জন্য কাজ করবে, আমার জন্য পাক করবে, আমার সাথে এক পাক হবে না।”

কারাগারের চার দেয়ালে বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু নিসর্গের যে বিবরণ দিয়েছেন তা অত্যন্ত মাধুর্যপূর্ণ ভঙ্গিতে ফুটে উঠেছে আলোচ্য গ্রন্থে। পশু-পাখি ও প্রকৃতির যে অনিন্দ্য বর্ণনা তিনি দিয়েছেন তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতি প্রেমের দিকটি উজ্জ্বলতর হয়েছে। ১৯৫৮ সালে তিনি জেলে একজোড়া হলদে পাখি দেখেন। দীর্ঘ আট বছর পর ঐ পাখি দুটি দেখার জন্য তীব্র বাসনা ও ব্যাকুলতার কথা প্রকাশ করেছেন-

[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]

“বড় ব্যথা পাব ওরা ফিরে না আসলে। পাখি দুইটা যে আমার কত বড় বন্ধু যারা কারাগারে একাকী বন্দি থাকেন নাই তারা বুঝতে পারবেন না।…. গাছপালা, হলদে পাখি, চড়ুই পাখি আর কাকই তো আমার বন্ধু এই নির্জন প্রকোষ্ঠে বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র মতো ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থে অনেক স্থানে বেগম মুজিবের প্রতি গভীর ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস ও পরম নির্ভরতার কথা উল্লেখ করেছেন। প্রায় চল্লিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে বেগম মুজিব সন্তান-সন্ততি নিয়ে প্রচণ্ড কষ্ট করলেও স্বামীর প্রতি কোনো অভিমান করেননি। এ সম্পর্কে শেখ মুজিবুর রহমান দিনলিপিতে উল্লেখ করেছেন- ‘রেণু আমাকে যখন একাকী পেল, বলল, জেলে থাক আপত্তি নাই, তবে স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখ। … তোমার বোঝা উচিত আমার দুনিয়ায় কেউ নাই। তোমার কিছু হলে বাঁচব কী করে?

ভাগ্য বিড়ম্বিত বাঙালি অনাহারে থাকে, বাংলার মানুষের মুখে হাসি নাই, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নির্যাতনে সকলেই জর্জরিত। সেই ক্রান্তিকালকে মোকাবেলা করে বাঙালির মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর একমাত্র ব্রত। তাই তিনি নিজের জন্মদিনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে বলেছেন- “আমি একজন মানুষ, আর আমার আবার জন্মদিবস।

সাধারণত দৈনন্দিন কার্যাবলি সাহিত্যিক দৃষ্টিতে যেভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়, তার যথাযথ প্রয়োগ এ দিনলিপিতে না ঘটলেও সাহিত্যের বিচারে তা হয়তো সমাদৃত নয়। কিন্তু জেল জীবনের নিদারুণ বাস্তবতায় সময়ের প্রয়োজনে যেভাবে জাতির পিতা বাস্তবকে মননে ধারণ করে দৈনন্দিন ইতিহাস তুলে ধরেছেন তা অনন্য ও নন্দিত। সুফিয়া কামালের ‘একাত্তরের ডায়েরী’ বা শহিদ জননী জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি’ যে ভঙ্গিতে লেখা হয়েছে তা হয়তো ‘কারাগারের রোজনামচা’য় উল্লিখিত হয়নি। কিন্তু ক্রান্তিকাল সময়ের মানদণ্ডে জাতির পিতার লেখনি সাহিত্যের ইতিহাসে অসামান্য সংযোজন।

এ দিনলিপি রচনা করার সময় লেখক সচেতনভাবে যথাযথ শব্দের প্রয়োগ ঘটিয়ে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। গ্রন্থটি পাঠ করতে গিয়ে পাঠক যেন কোনোরকম শব্দ বিভ্রান্তিতে না পড়ে, তার জন্য বঙ্গবন্ধু দিনলিপি লেখার পূর্বেই কারাগারের অভ্যন্তরে প্রচলিত শব্দগুলো অর্থ ঘটনার বিবরণীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। যেমন- হাজতিদফা, ছোকরাদফা, রাইটারদফা, চৌকিদফা, ডালচাকিদফা, আইনদফা ইত্যাদি।

জেলখানার নির্মম বাস্তবতা, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ, অধিকার সচেতনতা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে তিনি প্রবাদ প্রবচনেরও সার্থক ব্যবহার ঘটিয়েছেন সেই সংকটকালের দিনলিপিতে।


Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Storiesউত্তর লিংক
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেলউত্তর লিংক

“যেইনা মাথার চুল তার আবার লাল ফিতা। * পড়েছি পাঠানের হাতে খানা খেতে হবে সাথে।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ব্যক্তিকে ছাপিয়ে সমষ্টির জন্য তাঁর যে ক্রন্দন তা ফুটে উঠেছে “কারাগারের রোজনামচা’র প্রত্যেকটি শব্দের মাঝে। সত্য কঠিন জেনেও তিনি সেই সত্যকে ভালোবেসে নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করে সার্থকতার পরিচয় দিয়েছেন।

বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তথা স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকারের জন্য তিনি নিজের জীবনের স্বর্ণালি সময়কে বায় করেছেন, যা রাজনীতির ইতিহাসে অমর ও অক্ষয় হয়ে থাকবে।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও

Leave a Comment