Advertisement
আজকের গ্রন্থ সমালোচনা: BCS গ্রন্থ সমালোচনা অসমাপ্ত আত্মজীবনী,বাংলা গ্রন্থ সমালোচনা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, অসমাপ্ত আত্মজীবনী কাব্যের সার্থকতা আলোচনা,বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি অসমাপ্ত আত্মজীবনী,অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিসিএস গ্রন্থ সমালোচনা,অসমাপ্ত আত্মজীবনী
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, পোয়েট অব পলিটিক্স, ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তি, বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষায় আপসহীন অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (১৯২০- ১৯৭৫) ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থটির আবেদন বহুমাত্রিক। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শেষ পর্যন্ত শুধু একটি আত্মজৈবনিক গ্রন্থ হয়ে থাকেনি, হয়ে উঠেছে ১৯৩৮ থেকে ১৯৫৪/৫৫ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের, বিশেষত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের অনবদ্য, নিরপেক্ষ ও নির্মোহ দলিল। একজন হৃদয়বান নেতার এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলোকে গভীরভাবে অনুধাবন করে সেসব সমস্যা সমাধানের সংগ্রামের অসাধারণ আখ্যান ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’।
বইটির শুরুতে তিনি বলেছেন- * একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানব জাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার সম্পাদনা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রথম প্রকাশিত হয় জুন, ২০১২ সালে। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেন সমর মজুমদার, প্রকাশ করেন দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লি. এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩২৯। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৪টি ভাষায় এবং অনূদিত হয় ১৩টি ভাষায়।
ইংরেজিতে অনুবাদ করেন অধ্যাপক ফকরুল আলম, চীনা ভাষায় চাই সি. জাপানি ভাষায় কাজুহিরো ওয়ানতানাবে এবং আরবিতে অনুবাদ করেন ড. আবু রেজা মুহম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। মোবাইল অ্যাপস এর নাম- Father of the Nation (জাতির জনক)। ২০০৭ সালে তিনি সাব-জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র দীর্ঘ ভূমিকা লেখেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভূমিকা থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে জাতির পিতার লেখা জীর্ণপ্রায় এবং অস্পষ্ট চারটি খাতা আকস্মিকভাবে শেখ হাসিনার হাতে আসে। এগুলো তার ফুফাতো ভাই ‘বাংলার বাণী’র সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মণির অফিসের টেবিলের ড্রয়ারে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এটি সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং সহযোগিতা করেন সাংবাদিক বেবী মওদুদ।
আরো ও সাজেশন:-
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৭ মার্চ, ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। বাঙালি জাতিকে মুক্তির দিশা এনে দিতে আজীবন লড়াই করেছেন। ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দি থাকাকালে তিনি এ গ্রন্থটি রচনা শুরু করেন।
Advertisement
কিন্তু ১৭. জানুয়ারি, ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক করে তাকে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর লেখা বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু আত্মকথন ও আত্মস্মৃতির সবটুকু লিখে যেতে পারেননি, তাই এটি প্রকাশের সময় নামকরণ করা হয় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’।
‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ টুঙ্গিপাড়া আমের এক দুরন্ত কিশোরের সারা বাংলার মানুষের প্রতিনিধি হয়ে ওঠার এক অন্তরঙ্গ গল্প। অসাধারণ চড়াই-উতরাইয়ে ভরা লেখকের জীবনের গল্প যে কোনো রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানায়। “অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির পরিক্রমা মূলত দুইটি প্রধান কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারায় প্রবহমাণ। একটি ধারা হলো লেখকের ব্যক্তিগত জীবন এবং অপরটি রাজনৈতিক জীবন। “অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ লেখার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখেছেন, “বন্ধুবান্ধব বলে, তোমার জীবনী লেখ।
সহকর্মীরা বলে রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলো লিখে রাখ, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। আমার সহধর্মিনী একদিন জেলগেটে বসে বলল, বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবন কাহিনী।
এ বইটিতে তিনি নিজের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত আখ্যান তুলে ধরেছেন। প্রচলিত যেকোনো বইয়ের থেকে একটু ব্যতিক্রমভাবে শুরু হয়েছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী”।
[ বি:দ্র: নমুনা উত্তর দাতা: রাকিব হোসেন সজল ©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (বাংলা নিউজ এক্সপ্রেস)]
*ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট কোঠায় বসে বসে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবছি সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কথা। কেমন করে তাঁর সাথে আমার পরিচয় হলো। কেমন করে তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম।
সংস্কারবদ্ধ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাপরবশের উৎকৃষ্ট উদাহরণের মাধ্যমে গ্রন্থটি সূচনা ঘটে। বইয়ের শুরুতে লেখক তাঁর পারিবারিক ইতিহাস ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে আড়ম্বরের সাথে বিধৃত করেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির সাথে প্রথম প্রত্যক্ষ সংস্রব ঘটে ১৯৩৮ সালে। যদিও তখনও তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়নি।
সে সময় তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শের-এ বাংলা এ. কে ফজলুল হক এবং শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জে এসেছিলেন একটি সভা উপলক্ষে। সেখানেই প্রথম মিশন স্কুলে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের পরিচয় হয় এবং এর সূত্র ধরে বঙ্গবন্ধু হোসেন শহীদ সাহেবকে নিয়মিত চিঠি লেখতেন।
১৯৩৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতায় বেড়াতে গিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে সাক্ষা করেন। কলকাতা থেকে ফিরে এসে গোপালগঞ্জে মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন এবং তিনি তাঁর সম্পাদক হন। এভাবেই শুরু হয় জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবন এবং এর বিস্তৃত বর্ণনা এখানে বাহুল্য মাত্র। তবে রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে দুর্ভিক্ষ এবং এরপর বিহার ও কলকাতার দাঙ্গায় লেখকের সক্রি ভূমিকার কথা অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য। বিশেষত ১৯৪৬ সালের দাঙ্গার সময় লেখক কলকাতায় অবস্থান করেছিলেন বলে সে সময়কার কলকাতার দাঙ্গার বিবরণ বেশ বিস্তৃতভাবে এসেছে এ বইয়ে।
শেখ মুজিবুর রহমান সে সময়ে দিনরাতের ব্যবধান ভুলে গিয়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। দাঙ্গাক্রান্ত প্রতিটি আর্ত মানুষের জন্য লেখকের যে আর্দ্র আবেগ, তাদের সহায়তার জন্যে প্রতিনিয়ত নিজের জীবন বিপন্ন করে যেই সংগ্রাম, তাদের অমঙ্গল আশঙ্কায় যে ব্যক্তিগত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তা অবশ্যই স্মরণীয় ও শিক্ষণীয় । দাঙ্গার পরপরই দেশভাগের প্রসঙ্গ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার নির্ধারণী নিয়ামক হয়ে ওঠে এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
দেশভাগের প্রাক্কালে পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন তার সাথে অবশ্যই পাঠক একাত্মতা অনুভব করবেন। সে সময় লেখক দেশভাগের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত পড়াশুনাও মুলতবি রেখেছিলেন।
এ বিষয়ে জাতির পিতা বলেন যে একটি নিজস্ব দেশই যদি না পাওয়া যায় তাহলে পড়াশুনা করে কী লাভ? অবশেষে সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত পাকিস্তান পাওয়া গেল। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পারলেন যে স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন তা অধরাই থেকে যাচ্ছে। দেশভাগের
Paragraph/Composition/Application/Email/Letter/Short Stories | উত্তর লিংক |
ভাবসম্প্রসারণ/প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ/ রচনা/আবেদন পত্র/প্রতিবেদন/ চিঠি ও ইমেল | উত্তর লিংক |
পরেও শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু শহীদ সোহরাওয়ার্দী পশ্চিম বাংলার সাধারণ, নিপীড়িত মানুষদের কথা চিন্তা করে সেখানেই থেকে গেলেন। এদিকে নাজিমুদ্দিন নেতা নির্বাচিত হয়েই ঢাকায় চলে এলেন এবং মুসলিম লীগে শুরু হলো দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির কাল। এ সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর অবস্থান থেকে সব সময়ই অন্যায়ের যথাসাধ্য প্রতিবাদ করেছেন, কথা বলেছেন নিপীড়িত মানুষের পক্ষে।
এ গ্রন্থে নিখুঁতভাবে উঠে এসেছে ১৯৪৮ সালে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রথম যে আন্দোলন দানা বাঁধে তার কথা, আদমজীর দাঙ্গার কথা; আর এ সবই লেখক বর্ণনা করেছেন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে। জনগণের অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি এ সময়কালে বহুবার আটক হয়েছেন এবং জেল খেটেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের এই বহুমুখী রাজনৈতিক জীবনই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের মূল আলোচ্য ও প্রাণশক্তি।
ব্যক্তিমানুষের প্রবণতাকে কখনোই তাঁর কর্মকাণ্ড থেকে আলাদা করা যায় না। সেজন্যেই গ্রন্থটির সূক্ষ্ম পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, তিনি সমস্ত কার্যক্রমই শেষ বিচারে তাঁর কিছু আজন্ম লালিত প্রবণতার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। দুরন্তপনা, রাগ, গণমানুষের প্রতি ভালোবাসা, ন্যায়পরায়ণতা, দৃঢ়চেতা মনোভাব, ন্যায্য দাবি আদায়ে অনমনীয়তা প্রভৃতি প্রবণতাগুলো অগ্রগণ্য।
সার্বিক বিবেচনায় শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের চেয়েও ব্যক্তিগত জীবনাখ্যান বেশি আকর্ষণীয়। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে অনেক রাজনৈতিক এবং কিছু অরাজনৈতিক ব্যক্তির কথা প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে। একই মানুষকে কষ্টিপাথরের নিচে ফেলে সূক্ষ্ম পর্যালোচনা করে তার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলোকে বের করে আনা এবং সেগুলো বলিষ্ঠভাবে উল্লেখ করা লেখনীর নিরপেক্ষতার ব্যাপারেই ইঙ্গিত করে। এই নিরপেক্ষতাই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ। গ্রন্থটিতে লেখকের দার্শনিক সত্তার পরিচয় বহন করে।
Advertisement 2
বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলি বা বিষয় সম্পর্কে লেখকের যে সূক্ষ্ম, নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি তা সত্যিই চিন্তা উদ্রেককারী। লেখক এ বইটি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর স্ত্রীর অনুরোধে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেন। বইটি কিছুটা আত্মকথা, কিছুটা ডায়েরি এবং কিছুটা ঘটনাপঞ্জির আঙ্গিকে রচিত। বইয়ের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার লেখা ভূমিকা এবং বইয়ের বিভিন্ন অংশ জুড়ে দেয়া শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির টুকরো টুকরো ছবি গ্রন্থটিকে বিশেষ মাত্রা সংযোজন করেছে।
বইটি প্রকাশের পর যে সমস্ত বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো এটি শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা কি না? জবাবে শেখ হাসিনা ভূমিকা অংশে তার জবাব দিয়েছেন। এছাড়া বইটির ভাষা ও শব্দচয়ন শেখ মুজিবুর রহমানের অবিকল মুখের ভাষা যা তিনি ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে লেখা সম্ভব না।
Advertisement 2
সহজ-সরল ভাষার মাধ্যমে নিজের বক্তব্যকে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। যেমন- * আমার জীবনের ঘটনাগুলি জেনে জনসাধারণের কি কোনো কাজে লাগবে? কিছুই তো করতে পারলাম না। শুধু এটুকু বলতে পারি, নীতি ও আদর্শের জন্য সামান্য একটু ত্যাগ করতে চেষ্টা করেছি।
শব্দ আর বাক্যের ব্যবহারে পাণ্ডিত্য কিংবা উপমা ও রূপকের ব্যবহারে চমৎকারিত্ব ফুটিয়ে তুলে সহজ ও সাবলীলভাবে নির্মোহ দৃষ্টিতে বর্ণনা করে গেছেন। “সূর্য যখন অন্ত গেল, সোনালী রঙ…..। মনে হল, তাজের যেন আর একটা নতুন রূপ।”
বইটির মধ্যে ৩/৪ বার লেখকের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের বিবরণ এসেছে। ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীনে শাস্তি সম্মেলণে যোগদানের কাহিনী বর্ণনার মাধ্যমে সমগ্র চীনের সার্বিক অবস্থা বর্ণনায় মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।
“অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ১৯৩৮ থেকে শুরু করে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সময়কালের এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নির্ভরযোগ্য দর্পণ। বইটি প্রকাশের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের অনেক অজানা রহস্যের দ্বার উন্মোচন যেমন হয়েছে তেমনি পাঠকদের ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানকে নতুনভাবে চেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিটি সফল মানুষদের জীবনকথা আমাদের চেতনার মাঝে শিহরণ জাগায়, আলোকের পথে পরিচালিত করে। এ.পি.জে আবদুল কালাম এর উইংস অফ ফায়ার’, নেলসন ম্যান্ডেলা’র ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’, জহরলাল নেহেরু’র ‘অটোবায়োগ্রাফি’, ডা. মাহাথির মোহাম্মদ এর “এ ডক্টর ইন দ্য হাউস’ প্রভৃতি গ্রন্থে তাঁরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যে ইতিহাস তৈরি করেছেন, তারই বর্ণনাপত্তি তুলে ধরেছেন।
কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন একটি জাতিকে স্বাধীনতা উপহার দেয়ার জন্য তা নেলসন ম্যান্ডেলা ব্যতীত তেমনটি কেউ করেননি। তারপরও অন্যদের জীবিত অবস্থায় প্রকাশিত আত্মজীবনী থেকে জাতির পিতার অসমাপ্ত কথাগুলির সম্মিলিত রূপ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র আবেদন চেতনার পথে নিরন্তর বহ্নিশিখা ।
পরিশেষে সমালোচকের দৃষ্টি থেকে আমরা এটাই উপলব্ধি করতে পারি যে, সাহিত্যের মানদণ্ডে কালোত্তীর্ণ না হলেও রাজনৈতিক- সাহিত্যের মানদণ্ডে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ একটি শিল্পসফল আত্মকথা যেটি বহুমাত্রিক যোগসূত্রিতার কালজয়ী নিদর্শন হিসেবে প্রোজ্জ্বল। জাতির পিতার রাজনৈতিক উপলব্ধি, পর্যবেক্ষণ, সংগ্রাম, ত্যাগ, অধ্যবসায়ের মহিমা থেকে যে সত্য আমাদের সামনে উদ্ভাসিত হলো তা পরবর্তী প্রজনকে আলোর পথে পরিচালিত করার জন্য অপরিহার্য বার্তা হিসেবে জাগরূক থাকবে।
প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com
আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলোতে ও
Advertisement 5
- What do you near by Business communication?, Explain the concept of business communication
Advertisement 5
- Describe the barriers to effective communication in business organization
- সমাজদর্শন ও রাষ্ট্র দর্শনের সম্পর্ক, সমাজদর্শ ও রাষ্ট্রদর্শনের সম্পর্ক, Relation between Social Philosophy & Political Philosophy
- দর্শনের বিষয়বস্তুকে প্রধানত কয় ভাগে ভাগ করা যায়?, দর্শনের বিষয়বস্তু হিসেবে অধিবিদ্যা আলোচনা করুন।
- দর্শনের প্রকৃতি ও স্বরূপ আলোচনা কর
- দর্শন বলতে কী বোঝো?, দর্শনের বৈশিষ্ট্য ,দর্শন ও বিজ্ঞানের সাদৃশ্য ,“দর্শনের প্রত্যয়”- পাশ্চাত্য দর্শন
Advertisement 3